মৃত ব্যক্তিকে গোসল কাফন,দাফন , জানাযা দেয়ার নিয়ম - Quran and Hadith

Latest

BANNER 728X90

শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬

মৃত ব্যক্তিকে গোসল কাফন,দাফন , জানাযা দেয়ার নিয়ম

মৃত ব্যক্তিকে গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফন করার নিয়ম। 
(মানুষ মারা গেলে তার প্রতি করণীয়, মৃতকে গোসল দেয়া, কাফন
দেয়া, জানাযার সালাত  আদায় ও দাফনের পদ্ধতি)
ক) ভূমিকা: মৃত্যু অবধারিত সত্য। মৃত্যু থেকে পালাবার কোন পথ নেই।
আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ করেন:
ﻛُﻞُّ ﻧَﻔْﺲٍ ﺫﺍَﺋِﻘَﺔُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕِ
“প্রত্যেক প্রাণকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে।” (আল ইমরান- ১৮৫)
তিনি আরো বলেন: “মৃত্যু যন্ত্রনা সত্যসত্যই আগমণ করবে, যা থেকে
তুমি অব্যাহতি চাচ্ছিলে।” (ক্বাফ- ১৯)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলনে: “কখনই নয়, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে
এবং বলা হবে কে তাকে (রক্ষা করার জন্য) ঝাড়-ফুঁক করবে। আর সে
মনে করবে যে, বিদায়ের সময় এসে গেছে।” (ক্বিয়ামাহ্- ২৬-২৮)




নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
ﺃﻛْﺜِﺮُﻭﺍْ ﻣِﻦْ ﺫِﻛْﺮِ ﻫﺎَﺩِﻡِ ﺍﻟﻠَّﺬَّﺍﺕِ
“জীবনের স্বাদ বিনষ্টকারী (মৃত্যুর) কথা তোমরা বেশী বেশী স্মরণ
কর।” (তিরমিযী, নাসাঈ, ইরউয়া- ৬৮২)
তাই প্রতিটি মুসলমানের
কর্তব্য হল অধিকহারে সৎআমল করা এবং মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ
করা।
খ) কোন মুসলিম মৃত্যু বরণ করলে উপস্থিত জীবিতদের উপর নিম্ন
লিখিত কাজগুলো আবশ্যক হয়ে যায়:
১) মৃতের চোখ দুটি বন্ধ করে দিবে। যখন আবূ সালমা (রা:) মৃত্যু বরণ
করেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চোখ দুটি
বন্ধ করে দিয়ে বলেন:
ﺇﻥَّ ﺍﻟﺮُّﻭﺡَ ﺇﺫﺍَ ﻗُﺒِﺾَ ﺗَﺒِﻌَﻪُ ﺍﻟْﺒَﺼَﺮُ
“যখন জান কবজ করা হয়, তখন দৃষ্টি তার অনুসরণ করে।” (মুসলিম) ২)
তার জোড় সমূহ নরম করে দিবে, যাতে করে তা শক্ত না হয়ে যায়। আর
পেটের উপর ভারী কিছু রেখে দিবে যাতে করে তা ফুলে না যায়।
৩) বড় একটি কাপড় দিয়ে সমস্ত শরীর ঢেকে দিবে। আয়েশা (রা:)
বলেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওফাতের
পর তাঁকে নকশা খচিত একটি কাপড় দিয়ে ঢেঁকে দেয়া হয়। (বুখারী ও
মুসলিম)
৪) ছহীহ্ হাদীছের নির্দেশ মোতাবেক মৃত ব্যক্তিকে গোসল,
জানাযা ছালাত এবং দাফনের ক্ষেত্রে দ্রুততা অবলম্বন করবে।
(বুখারী ও মুসলিম)
৫) যে এলাকায় তার মৃত্যু হবে সেখানেই তাকে দাফন করা। কেননা
ওহুদ যুদ্ধের শহীদদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সেখানেই দাফন করেছিলেন। (সুনান গ্রন্থ)
গ) মৃতকে গোসল দেয়ার পদ্ধতি:
১. মৃতের গোসল, কাফন, জানাযার ছালাত এবং দাফন করা ফরযে
কেফায়া।
২. গোসল দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম সেই ব্যক্তি হকদার, যার
ব্যাপারে মৃত ব্যক্তি ওছিয়ত করে গিয়েছে। তারপর তার পিতা।
তারপর অপরাপর নিকটাত্মীয়। আর মহিলার গোসলে প্রথম হকদার হল
তার ওছিয়তকৃত মহিলা। তারপর তার মা। তারপর তার মেয়ে। তারপর
অন্যান্য নিকটাত্মীয় মহিলাগণ।
৩. স্বামী-স্ত্রী পরষ্পরকে গোসল দিতে পারবে। রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা (রা:)কে বলেন:
“তোমার কোন অসুবিধা নেই, তুমি যদি আমার আগে মৃত্যু বরণ কর,
তবে আমি তোমার গোসল দিব।” (আহমাদ হাদীছ ছহীহ্) আর আবু বকর
(রা:) ওছিয়ত করেছিলেন যে, তার স্ত্রী যেন তাঁকে গোসল দেয়।
(মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক- হা/৬১৬৭)

৪. মৃত ব্যক্তি নারী হোক বা পুরুষ তার বয়স যদি সাত বছরের কম হয়,
তবে যে কোন পুরুষ বা মহিলা তার গোসল দিতে পারবে।
৫. গোসলের জন্য পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ আর নারীর ক্ষেত্রে নারী যদি
না পাওয়া যায় তবে তার গোসল দিবে না। বরং তাকে তায়াম্মুম
করিয়ে দিবে। এর পদ্ধতি হল, উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন তার
হাত দুটি পাক মাটিতে মারবে। তারপর তা দ্বারা মৃতের মুখমন্ডল ও
উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করে দিবে।
৬. কোন কাফেরকে গোসল দেয়া এবং দাফন করা মুসলমানের উপর
হারাম। আল্লাহ্ বলেন:
ﻭﻻَ ﺗُﺼَﻞِّ ﻋَﻠﻰَ ﺃﺣَﺪٍ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻣﺎَﺕَ ﺃﺑَﺪﺍً
৭. “আপনি তাদের (কাফের ও মুনাফেকদের) কখনই জানাযা ছালাত
আদায় করবেন না।” (তওবাহ্- ৪৮)
৮. গোসল দেয়ার সুন্নাত হল, প্রথমে তার লজ্জাস্থান ঢেঁকে দেবে,
তারপর তার সমস্ত কাপড় খুলে নিবে। 
অত:পর তার মাথাটা বসার মত করে উপরের দিকে উঠাবে এবং আস্তে
করে পেটে চাপ দিবে, যাতে করে পেটের ময়লা বেরিয়ে যায়। 

এরপর বেশী করে পানি ঢেলে তা পরিস্কার করে নিবে। তারপর
হাতে কাপড় জড়িয়ে বা হাত মুজা পরে তা দিয়ে উভয় লজ্জা
স্থানকে (নযর না দিয়ে) ধৌত করবে।
তারপর ‘বিসমিল্লাহ্’ বলবে এবং ছালাতের ন্যায় ওযু করাবে। তবে
মুখে ও নাকে পানি প্রবেশ করাবে না। বরং ভিজা কাপড় আঙ্গুলে
জড়িয়ে তা দিয়ে তার উভয় ঠোঁটের ভিতর অংশ ও দাঁত পরিস্কার
করবে। একইভাবে নাকের ভিতরও পরিস্কার করবে।
৯. পানিতে কুল পাতা মিশিয়ে তা ফুটিয়ে গোসল দেয়া মুস্তাহাব।
বরই পাতা দিয়ে ফোটানো পানি
দ্বারা মৃতের মাথা ও দাঁড়ি ধৌত করতে হবে।
প্রথমে শরীরের ডান পাশের সামনের দিক ধৌত করবে। 
তারপর পিছন দিক তারপর বাম দিক ধৌত করবে। 
এভাবে তিনবার গোসল দিবে। প্রতিবার হালকা ভাবে পেটে হাত
বুলাবে এবং ময়লা কিছু বের হলে পরিস্কার করে নিবে।
১০. গোসলের সময় সাবান ব্যবহার করতে পারে এবং প্রয়োজন
মোতাবেক তিনবারের বেশী সাত বা ততোধিক গোসল দিতে পারে।
শেষবার কর্পুর মিশ্রিত করে গোসল দেয়া সুন্নাত। কেননা নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কন্যা যায়নাবের (রা:)
শেষ গোসলে কর্পুর মিশ্রিত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারী ও
মুসলিম)
১১. মৃতের মোচ বা নখ যদি বেশী বড় থাকে তবে তা কেটে দেয়া
মুস্তাহাব। তবে বগল বা নাভীর নীচের চুল কাটা যাবে না।
১২. সাত বার গোসল দেয়ার পরও যদি পেট থেকে ময়লা (পেশাব বা
পায়খানা) বের হতেই থাকে তবে উক্ত স্থান ধুয়ে সেখানে তুলা বা
কাপড় জড়িয়ে দিবে। তারপর তাকে ওযু করাবে।
১৩. কাফন পরানোর পরও যদি ময়লা বের হয়, তবে আর গোসল না দিয়ে
সেভাবেই রেখে দিবে। কেননা তা অসুবিধার ব্যাপার।
১৪. মৃতের চুল আঁচড়ানোর দরকার নেই। তবে নারীর ক্ষেত্রে তার
চুলগুলোতে তিনটি বেণী বেঁধে তা পিছনে ছড়িয়ে দিবে।
১৫. হজ্জ বা ওমরায় গিয়ে ইহরাম অবস্থায় যদি কেউ মারা যায়, তবে
তাকে কুল পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দিবে। কিন্তু কোন
সুগন্ধি ব্যবহার করবে না এবং পুরুষ হলে কাফনের সময় তার মাথা
ঢাঁকবে না। বিদায় হজ্জে জনৈক ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় মৃত্যু বরণ
করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তাকে কোন
সুগন্ধি লাগাবে না, এবং তার মাথা ঢাঁকবে না। কেননা সে
ক্বিয়ামত দিবসে তালবিয়া পাঠ করতে করতে উত্থিত হবে।” (বুখারী
ও মুসলিম)
১৬. ব্যক্তিকে গোসল দিবে না, এবং তাকে তার সাথে সংশ্লিষ্ট
কাপড়েই দাফন করবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম “ওহুদের শহীদদের ব্যাপারে আদেশ দিয়েছিলেন যে,
তাদেরকে গোসল ছাড়া তাদের পরিহিত কাপড়ে দাফন করা
হবে।” (বুখারী) “এমনিভাবে তাদের ছালাতে জানাযাও পড়েন
নি।” (বুখারী ও মুসলিম)
১৭. গর্ভস্থ  সন্তান যদি চার মাস অতিক্রম হওয়ার পর পড়ে যায়, তবে
তার গোসল ও জানাযার ছালাত আদায় করবে। কেননা নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “মাতৃগর্ভে সন্তানের
বয়স যখন চার মাস অতিক্রম করে তখন সেখানে একজন ফেরেস্তা
প্রেরণ করা হয়। সে তাতে রূহ ফুঁকে দেয়।” (মুসলিম) আর তার বয়স যদি
চার মাসের কম হয়, তবে তাতে প্রাণ না থাকার কারণে সাধারণ
একটি মাংশের টুকরা গণ্য হবে। যা কোন গোসল বা জানাযা ছাড়াই
যে কোন স্থানে মাটিতে গেড়ে দেয়া হবে।
১৮. মৃত ব্যক্তি আগুনে পুড়ে যাওয়ার কারণে, তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খণ্ড-
বিখণ্ড হওয়ার কারণে বা পানি না পাওয়ার কারণে যদি তাকে
গোসল দেয়া সম্ভব না হয়, তবে পূর্ব নিয়মে তাকে তায়াম্মুম করিয়ে
দিবে।
ঘ) কাফন দেয়ার পদ্ধতি:
১. মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরানো ওয়াজিব। আর তা হবে তার
পরিত্যাক্ত সম্পত্তি থেকে। যাবতীয় ঋণ, ওছিয়ত এবং মীরাছ
বন্টনের আগে কাফনের খরচ তার সম্পত্তি থেকে গ্রহণ করতে হবে।
২. মৃতের সম্পত্তি থেকে যদি কাফনের খরচ না হয় তবে তার পিতা বা
ছেলে বা দাদার উপর দায়িত্ব বর্তাবে। যদি এমন কাউকে না পাওয়া
যায় তবে বায়তুল মাল থেকে প্রদান করবে। তাও যদি না পাওয়া যায়
তবে যে কোন মুসলমান প্রদান করতে পারে।
৩. পুরুষকে তিনটি লেফাফা বা কাপড়ে কাফন পরানো মুস্তাহাব।
কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সুতী সাদা
তিনটি কাপড়েই কাফন দেয়া হয়েছিল। (বুখারী ও মুসলিম) কাফনের
কাপড়ে সুগন্ধি মিশ্রিত করা মুস্তাহাব। প্রথমে সাতটি ফিতা
বিছিয়ে দিবে। তারপর (ফিতাগুলোর উপর) কাপড় তিনটি একটির উপর
অন্যটি বিছাবে।
অত:পর মাইয়্যেতকে চিৎ করে শুইয়ে দিবে। এসময় তার লজ্জাস্থানের
উপর একটি অতিরিক্ত কাপড় রেখে দিবে।
তার নাক, কান, লজ্জাস্থান প্রভৃতি জায়গায় সুগন্ধি যুক্ত তুলা
লাগিয়ে দেয়া মুস্তাহাব। সম্ভব হলে সমস্ত শরীরে সুগন্ধি
লাগাবে। তারপর প্রথম কাপড়টির ডান দিক আগে উঠাবে, এরপর বাম
দিকের কাপড়। এভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় কাপড়ে করবে। 
তারপর অতিরিক্ত কাপড়টি টেনে নিবে এবং ফিতাগুলো দিয়ে
গিরা দিবে। আর তা কবরে রাখার পর খুলে দিবে। ফিতার সংখ্যা
সাতের কম হলেও অসুবিধা নেই। 
এভাবে মৃত ব্যক্তিকে
৭টি বাঁধন দিবে
৪. মহিলাকে পাঁচটি কাপড়ে কাফন দিবে। লুংগি যা নীচের দিকে
থাকবে, খেমার বা ওড়না যা দিয়ে মাথা ঢাঁকবে, কামীছ (জামা)
এবং দুটি বড় লেফাফা বা কাপড়। (অবশ্য তিন কাপড়েও তাকে কাফন
দেয়া জায়েয)।
ঙ) জানাযার ছালাত আদায় করার পদ্ধতি:
১. জানাযার ছালাত আদায় করা ফরযে কেফায়া।
২. জানাযা পড়ার সময় সুন্নাত হল, ইমাম পুরুষের মাথা বরাবর
দাঁড়াবে। 
আর মহিলার মধ্যবর্তী স্থান বরাবর দাঁড়াবে।
৩. চার তাকবীরের সাথে জানাযা আদায় করতে হয়। অন্তরে নিয়্যত
করে দাঁড়াবে। (আরবীতে বা বাংলায় মুখে নিয়ত বলা বা শিখিয়ে
দেয়া বিদআত।)
৪. প্রথম তাকবীর দিয়ে আঊযুবিল্লাহ্… বিসমিল্লাহ্… পাঠ করে সূরা
ফাতিহা তারপর ছোট কোন সূরা পাঠ করবে। (ছানা পাঠ করার কোন
ছহীহ্ হাদীছ নেই)
★ দ্বিতীয় তাকবীর দিয়ে দরূদে ইবরাহীম (যা
ছালাতে পাঠ করতে হয়) পাঠ করবে। এরপর তৃতীয় তাকবীর দিয়ে
জানাযার জন্য বর্ণিত যে কোন দুআ পাঠ করবে। এই দু’আটি পাঠ করা
যেতে পারে:
ﺍﻟﻠﻬﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﺤَﻴِّﻨﺎَ ﻭَﻣَﻴِّﺘِﻨَﺎ ﻭَﺷﺎَﻫِﺪِﻧﺎَ ﻭَﻏَﺎﺋِﺒِﻨﺎَ ، ﻭَﺻَﻐِﻴْﺮَﻧﺎَ ﻭَﻛَﺒِﻴْﺮِﻧﺎَ، ﻭَﺫَﻛَﺮِﻧﺎَ ﻭَﺃُﻧْﺜﺎَﻧﺎَ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻣَﻦْ ﺃَﺣْﻴَﻴْﺘَﻪُ ﻣِﻨﺎَّ ﻓَﺄَﺣْﻴِﻪِ ﻋَﻠَﻰ
ﺍﻹﺳْﻼَﻡِ، ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﻮَﻓَّﻴْﺘَﻪُ ﻣِﻨﺎَّ ﻓَﺘَﻮَﻓَّﻪُ ﻋَﻠﻰَ ﺍﻹﻳْﻤَﺎﻥِ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻻَﺗَﺤْﺮِﻣْﻨﺎَ ﺃﺟْﺮَﻩُ ﻭَﻻَﺗُﻀِﻠَّﻨﺎَ ﺑَﻌْﺪَﻩُ
“হে আল্লাহ্! আপনি আমাদের জীবিত-মৃত, উপস্থিত, অনুপস্থিত,
ছোট ও বড় নর ও নারীদেরকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ্! আমাদের মাঝে
যাদের আপনি জীবিত রেখেছেন তাদেরকে ইসলামের উপরে জীবিত
রাখুন, এবং যাদেরকে মৃত্যু দান করেন তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু
দান করুন। হে আল্লাহ্! আমাদেরকে তার ছওয়াব হতে বঞ্চিত করবেন
না এবং তার মৃত্যুর পর আমাদেরকে পথ ভ্রষ্ট করবেন না।” (ইবনে
মাজাহ্, আবূ দাঊদ)
এবং এই দু’আটিও পড়তে পারে:
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻪُ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻪُ، ﻭَﻋﺎَﻓِﻪِ ﻭﺍَﻋْﻒُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻭَﺃَﻛْﺮِﻡْ ﻧُﺰُﻟَﻪُ، ﻭَﻭَﺳِّﻊْ ﻣُﺪْﺧَﻠَﻪُ، ﻭَﺍﻏْﺴِﻠْﻪُ ﺑِﺎﻟْﻤﺎَﺀِ ﻭَﺍﻟﺜَّﻠْﺞِ ﻭَﺍﻟْﺒَﺮْﺩِ، ﻭَﻧَﻘِّﻪِ ﻣِﻦْ
ﺍﻟْﺨَﻄﺎَﻳﺎَ ﻛَﻤَﺎ ﻳُﻨَﻘَّﻯﺎﻟﺜَّﻮْﺏُ ﺍﻷﺑْﻴَﺾُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺪَّﻧَﺲِ، ﻭَﺃَﺑْﺪِﻟْﻪُ ﺩَﺍﺭًﺍ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻣِّﻦْ ﺩَﺍﺭِﻩِ، ﻭَﺃَﻫْﻼً ﺧَﻴْﺮﺍً ﻣِّﻦْ ﺃَﻫْﻠِﻪِ، ﻭَﺯَﻭْﺟﺎً ﺧَﻴْﺮﺍً ﻣِﻦْ ﺯَﻭْﺟِﻪِ،
ﻭَﺃَﺩْﺧِﻠْﻪُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ، ﻭَﺃَﻋِﺬْﻩُ ﻣِﻦْ ﻋَﺬﺍَﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ، ﻭَﻋَﺬﺍَﺏِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
“হে আল্লাহ্! আপনি তাকে ক্ষমা করুন, তার প্রতি দয়া করুন, তাকে
পূর্ণ নিরাপত্তায় রাখুন। তাকে মাফ করে দিন। তার আতিথেয়তা
সম্মান জনক করুন। তার বাসস্থানকে প্রশস্থ করে দিন। আপনি তাকে
ধৌত করুন পানি, বরফ ও শিশির দিয়ে। তাকে গুনাহ হতে এমন ভাবে
পরিস্কার করুন যেমন করে সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিস্কার করা
হয়। তাকে তার (দুনিয়ার) ঘরের পরিবর্তে উত্তম ঘর দান করুন। তার
(দুনিয়ার) পরিবার অপেক্ষা উত্তম পরিবার দান করুন। আরো তাকে
দান করুন (দুনিয়ার) স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম স্ত্রী। তাকে বেহেস্তে
প্রবেশ করিয়ে দিন, আর কবরের আযাব ও জাহান্নামের আযাব হতে
পরিত্রাণ দিন। (ছহীহ্ মুসলিম ২/৬৬৩)
৬. মৃত যদি চার মাস বা তার উর্ধের শিশু হয়, তাদের জন্য ১ম দু’আটি
পাঠ করা যেতে পারে।
৭. এরপর চতুর্থ তাকবীর দিয়ে সামান্য একটু চুপ থেকে ডান দিকে
সালাম ফিরাবে। বাম দিকেও সালাম ফেরাতে পারে।
৮. কারো যদি জানাযার কিছু অংশ ছুটে যায়, তবে সে ইমামের
অনুসরণ করবে। আর ইমামের সালাম ফেরানোর পর লাশ উঠানোর
আগে যদি সম্ভব হয় তবে বাকী তাকবীর কাযা আদায় করে নিবে।
সম্ভব না হলে ইমামের সাথেই সালাম ফিরিয়ে দিবে।
৯. ‘কারো যদি জানাযা ছুটে যায় তবে তার এবং কিবলার মাঝে
কবরকে রেখে পূর্ব নিয়মে কবরের উপর জানাযা আদায় করতে
পারে।’ (বুখারী ও মুসলিম)
জানাযার নামায ছুটে যাওয়ায় কবরে
গিয়ে জানাযা পড়া হচ্ছে
১০. গায়েবী জানাযা সেই ব্যক্তির জন্য পড়া যাবে যে অন্য কোন
দেশে মৃত্যু বরণ করেছে এবং তার জানাযা আদায় করা হয়নি।
১১. ‘মসজিদের মধ্যেও জানাযার ছালাত আদায় করা
জায়েয।’ (মুসলিম)
১২. জানাযার জন্য গোরস্থানের নিকটবর্তী কোন স্থানকে নির্ধারণ
করা মুস্তাহাব।
১৩. আত্মহত্যাকারী, ডাকাত ইত্যাদির উপরও জানাযার ছালাত
আদায় করবে। তবে দেশের আমীর এবং আলেম ব্যক্তি মানুষকে ভয়
দেখানোর জন্য এবং শিক্ষা দেয়ার জন্য তা থেকে বিরত থাকবে।

চ) দাফনের পদ্ধতি:
১. মৃতের খাটিয়া কাঁধে রেখে বহণ করা মুস্তাহাব। হাদীছের
নির্দেশ মোতাবেক ‘লাশ দ্রুত বহণ করা সুন্নাত’। সে সময় মানুষ
লাশের সামনে, পিছনে, ডাইনে, বামে যে কোন দিক দিয়ে চলতে
পারবে। (আহকামুল জানায়েয- আলবানী- পৃ:৭৩)
লাশ গোরস্থানে নিয়ে
যাওয়া হচ্ছে
২. যে ব্যক্তি লাশের সাথে চলবে তার জন্য খাটিয়া মাটিতে রাখার
আগে বসা মাকরূহ।
৩. তিনটি সময়ে ছালাত আদায় করতে এবং মুরদা দাফন করতে
হাদীছে নিষেধ করা হয়েছে। ১- সূর্য উদয়ের সময়, যে পর্যন্ত তা কিছু
উপরে না উঠে যায়। ২- সূর্য মাথার উপর থাকার সময়, যে পর্যন্ত তা
পশ্চিমাকাশে ঢলে না যায়। ৩- সূর্য অস্ত যাওয়ার সময়, যে পর্যন্ত তা
পুরাপুরি ডুবে না যায়। (মুসলিম)
৪. রাতে বা দিনে যে কোন সময় লাশ দাফন করা যায়। মহিলার লাশ
কবরে প্রবেশ করানোর সময় আলাদা কাপড় দিয়ে ঢেঁকে দিবে।
৫. সুন্নাত হল কবরের পায়ের দিক থেকে লাশকে কবরে নামানো।
পায়ের দিকে দিয়ে লাশ
কররে রাখা হচ্ছে।
সম্ভব না হলে, ক্বিবলার দিক থেকে কবরে নামাবে।
কিবলার দিক থেকে লাশ কবরে রাখা হচ্ছে।
৬. লাহাদ তথা বুগলী কবর হল উত্তম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেন: “লাহাদ (বুগলী কবর) হল আমাদের জন্য আর শাক্ব বা
বাক্স কবর হল অন্যদের জন্য।” (আবূ দাঊদ)
লাহাদ বা বুগলী কবর
শাক্ব বা বক্স কবর৭. হিংস্র প্রাণী
এবং লাশের দুর্গন্ধ বের হওয়া থেকে হেফাযত করার জন্য কবরকে
বেশী গভীর করে খনন করা সুন্নাত।
৮. যারা লাশ কবরে নামাবে তাদের জন্য সুন্নাত হল, এই দু’আ পড়া:
( ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﻋَﻠﻰَ ﺳُﻨَّﺔِ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ) উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি ওয়া ‘আলা সুন্নাতি
রাসূলিল্লাহ। অর্থ: আল্লাহর নাম নিয়ে রাসূলের সুন্নাত এর উপর।
অথবা এটা পড়বে: ( ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﻋَﻠﻰَ ﻣِﻠَّﺔِ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ) উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি ওয়া
‘আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ অর্থ: “আল্লাহর নাম নিয়ে রাসূলের
তাঁর মিল্লাতের উপর।” (আবূ দাঊদ)
৯. লাশকে কবরের মধ্যে কিবলা মুখী করে ডান কাতের উপর করে
রাখা সুন্নাত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
“জীবিত এবং মৃত সব অবস্থায় তোমাদের কিবলা হল
কা’বা।” (বাইহাকী আহকামুল জানায়েয, আলবানী- ১৫২)
১০. লাশের মাথার নীচে কোন বালিশ বা ইট-পাথর রাখবে না এবং
তার চেহারার কাপড়ও খুলবে না।
১১. তারপর কবরের মুখ ইট এবং মাটি দিয়ে বা বাঁশ/চাটাই ও মাটি
দিয়ে পূর্ণ করে দিবে।
১২. উপস্থিত মুসলমানদের জন্য সুন্নাত হল, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুসরণে প্রত্যেকে উক্ত কবরে তিন খাবল
করে মাটি দিবে। (ইবনু মাজাহ্ আহকামুল জানায়েয আলবানী- ১৫৫)
১৩. সুন্নাত হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরের
মত- কবরকে উটের চুঁড়ার মত মাত্র অর্ধ হাত পরিমাণ উঁচা করা।
(বুখারী)
১৪. এরপর কবরের উপর কিছু পাথর কুচি ছড়িয়ে দিয়ে তার উপর পানি
ছিটিয়ে দিবে। (আবূ দাঊদ, ইরউয়াউল গালীল ৩/২০৬) শেষে কবরের
মাথার দিকে একটি পাথর রেখে দিবে যাতে করে তা চেনা যায়
এবং তার অবমাননা না হয়। যেমনটি করেছিলেন রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঊছমান বিন মাযঊন (রা:) এর
কবরে। (ছহীহ্ আবূ দাঊদ)
১৫. কবরকে পাকা করা, তার উপর ঘর উঠানো, তার নাম পরিচয় লিখা,
তার উপর বসা, চলা, হেলান দিয়ে বসা সবই ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী
হারাম কাজ। (মুসলিম, আবূ দাঊদ প্রভৃতি)
১৬. অধিক প্রয়োজন ছাড়া এক কবরে একের অধিক ব্যক্তিকে দাফন
করা মাকরূহ।
১৭. মৃতের পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরী করে তাদের কাছে প্রেরণ করা
মুস্তাহাব। হযরত জাফর বিন আবী তালেবের শাহাদাতের সংবাদে
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন: “তোমরা
জাফর পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরী কর, কেননা তারা বিপদগ্রস্থ
হয়েছে।” (ছহীহ্ আবূ দাঊদ)
১৮. মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে মানুষের জন্য খানা প্রস্তুত করা
জায়েয নয়। ‘ছাহাবায়ে কেরাম (রা:) মানুষের জন্য খানা প্রস্তুত
করা এবং শোক বাণী জানানোর জন্য মৃতের বাড়ীতে একত্রিত
হওয়াকে নিষিদ্ধ নিয়াহা বা মৃতের জন্য বিলাপের মধ্যে গণ্য
করতেন।’ (আহমাদ)
১৯. পুরুষদের জন্য শুধু মাত্র উপদেশ গ্রহণ এবং মৃতের জন্য দু’আ করার
উদ্দেশ্যে কবর যিয়ারত করা সুন্নাত। এরশাদ হচ্ছে: “পূর্বে আমি
তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা
তা যিয়ারত করতে পার। কেননা তা তোমাদেরকে আখেরাতের কথা
স্মরণ করাবে।” (মুসলিম)
২০. তবে নারীরা অধিকহারে কবর যিয়ারত করবে না। কেননা নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক কবর
যিয়ারতকারীনীদের লা’নত করেছেন। (সুনান গ্রন্থ)
২১. কবর যিয়ারতের সময় এই দু’আ পাঠ করবে:
ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺩﺍَﺭَ ﻗَﻮْﻡٍ ﻣُّﺆْﻣِﻨِﻴْﻦَ ﻭﺇﻧﺎَّ ﺇﻥْ ﺷﺎَﺀَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺑِﻜُﻢْ ﻟَﻼَﺣِﻘُﻮْﻥَ ﻧَﺴْﺄَﻝُ ﺍﻟﻠﻪَ ﻟَﻨﺎَ ﻭَﻟَﻜُﻢُ ﺍﻟْﻌﺎَﻓِﻴَﺔَ
উচ্চারণ: আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বওমিম মু’মিনীন। ওয়া ইন্না
ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকূন। নাসআলুল্লাহা লানা ওয়া লাকুমুল
আ’ফিয়াহ।
অর্থ: “হে কবরের অধিবাসী মু’মিনগণ! আপনাদের প্রতি শান্তি
ধারা বর্ষিত হোক। নিশ্চয় আমরাও আপনাদের সাথে এসে মিলিত হব
ইনশাআল্লাহ্। আমরা আমাদের জন্য ও আপনাদের জন্য আল্লাহ্র
কাছে নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি।’ (মুসলিম)
২২. মুসলিম ব্যক্তি কবর যিয়ারতে খুবই সতর্ক থাকবে। তা স্পর্শ করবে
না, তাযীম করবে না, বরকত হাছিলের কারণ মনে করবে না, দু’আ
চাইবে না। কেননা এগুলো শির্ক বা শির্কের মাধ্যম।
২৩. মৃতের পরিবারকে শোক বার্তা জানানোর সময় এই দু’আ করা
সুন্নাত:
ﺇﻥَّ ِﻟﻠﻪِ ﻣﺎَ ﺃﺧَﺬَ ﻭَﻟَﻪُ ﻣﺎَ ﺃﻋْﻄﻰَ ﻭﻛُﻞُّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺑِﺄﺟَﻞٍ ﻣُّﺴَﻤﻰَّ ﻓﺎَﺻْﺒِﺮْ ﻭﺍَﺣْﺘَﺴِﺐْ
উচ্চারণ: ইন্না লিল্লাহি মা আখাযা ওয়া লাহু মা আ’ত্বা। ওয়া কুল্লু
শাইয়িন ’ইনদাহু বি আজালিম মুসাম্মা। ফাসবির ওয়াহতাসিব।
অর্থ: “তিনি যা নেন এবং দান করেন তার অধিকারী একমাত্র
আল্লাহ। তাঁর নিকট প্রতিটি বস্তুর একটি নির্দষ্ট সময় রয়েছে। তাই
তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং আল্লাহর নিকট থেকে এর প্রতিদান
প্রার্থনা কর।” (বুখারী ও মুসলিম)
২৪. মৃতের জন্য শুধু তিন দিন শোক পালন করা বৈধ। তবে মৃতের স্ত্রীর
জন্য চার মাস দশ দিন শোক পালন করা ওয়াজিব, আর সে গর্ভবতী
হলে সন্তান প্রসব পর্যন্ত শোক পালন করবে।
২৫. মৃতের জন্য উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা, মাতম করা, কপোল চাপড়ানো,
চুল, জামা-কাপড় ছেড়া ইত্যাদি সবই হারাম কাজ- যা থেকে বেঁচে
থাকা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য।
পরিশেষে আল্লাহ তায়ালার বরগাহে দুয়া করি, হে আল্লাহ, মৃত্যু
বরণ করার আগে তুমি আমাদেরকে পাথেয় সংগ্রহ করার তাওফীক দান
কর। আমীন।

অনুবাদঃ
মুহাঃ আবদুল্লাহ্ আল্ কাফী
দাঈ, জুবাইল দাওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সঊদী আরব।






২টি মন্তব্য: