ওয়াহীর জ্ঞান সূচীপত্রঃ
`
ভূমিকা।
=========
প্রথম অধ্যায়ঃ
=========
• ওয়াহী।
• ওয়াহীর জ্ঞান।
• আমাদেরকে একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করতে হবে।
• আমাদেরকে আল্লাহর ওয়াহী দ্বারা আইন ও বিচার করতে হবে।
• আল্লাহর ওয়াহী সত্য আর তা গ্রহণ করতে হবে।
=========
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ
=========
• তাওহীদ
• তাওহীদ কী ও কত প্রকার? কুরআনে তাওহীদ
• তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত
• তাওহীদুল আসমায়ে ওয়াস-সিফাত।
• তাওহীদূল উলুহিয়্যাত।
• কুরআনে আল্লাহর একত্বের বিবরণ।
• একই আয়াতে তিন প্রকার তাওহীদ।
==========
তৃতীয় অধ্যায়ঃ
==========
• তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত
• কুরআনে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত
• কুরআনে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাতের ব্যাখ্যা।
• ধর্মহীন নাস্তিকসহ সবার কাছে আল্লাহর জিজ্ঞাসা।
• আল্লাহই সর্বময় ক্ষমতার অধিপতি।
• রাজত্ব, কর্তৃত্ব, শাসনক্ষমতা আল্লাহর।
• বিধানদাতা/হুকুমদাতা একমাত্র আল্লাহ।
• সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।
=========
চতুর্থ অধ্যায়ঃ
=========
•তাওহীদুল আসমায়ে ওয়াস-সিফাত।
•কুরআনে তাওহীদুল আসমায়ে ওয়াস-সিফাত।
•কুরআনের আয়াতে আল্লাহর নাম ও গুণাবলীসমূহ।
•আল্লাহর জ্ঞান সর্বত্র বিরাজমান।
•আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান নয় বরং আল্লাহ আরশে সমুন্নত আছেন।
•সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহ কোথায়?।
•আল্লাহ নিরাকার নন।
•মুমিনগণের আল্লাহকে দেখা।
•আল্লাহর ভালবাসা ও অপছন্দ/অসন্তুষ্টি।
•একমাত্র আল্লাহই গায়েব সম্পর্কে অবগত।
•কুরআনের আয়াতে তাক্বদির।
=========
পঞ্চম অধ্যায়ঃ
=========
•তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ।
•কুরআনে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ বা •তাওহীদে ইবাদত।
•উপাসনা করার ক্ষেত্রে তাওহীদে ইবাদত।
•আনুগত্য ও অনুসরণ করার ক্ষেত্রে তাওহীদে ইবাদত।
•কুরআনে ﺍﻟﺼِّﺮَﺍﻁَ ﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻘِﻴﻢ তথা সরল-সঠিক পথ।
ইলাহ বা উপাস্য একমাত্র আল্লাহ।
•সেজদা একমাত্র আল্লাহর জন্য।
•আল্লাহর কাছে কিভাবে দু‘আ করব?।
•আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দু‘আ করা যাবে না।
•আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া ও তাওবা করা।
•আল্লাহর শোকর আদায় করা।
•আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া।
•আল্লাহর নিকট সাহায্য চাওয়া।
•আল্লাহর উপর ভরসা করা, নির্ভর করা।
•কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে সবর/ধৈর্যধারণ।
=========
ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ
=========
•রাসূল (ﷺ) সম্পর্কে জানা।
•কুরআনের বাক্য দিয়ে রাসূলের আনুগত্য।
•কুরআনে রাসূলের আনুগত্য, অনুসরণ, মানা।
•রাসূলের অনুসরণের ফলাফল।
•রাসূল (ﷺ) কিসের তৈরী?।
•(বাশার) মানুষ কিসের তৈরী।
•নূর মানে কি নূরের তৈরী?।
•রাসূল (ﷺ)মারা গেছেন।
•সহীহুল বুখারীর আলোকে রাসূল (ﷺ)-এর মৃত্যু।
•শহীদগণের পরকালীন জীবন।
•শহীদগণ জীবিত আছেন কিন্তু আমাদের মত জীবিত নন।
•ঈসা (আঃ) মারা যাননি।
•রাসূল (ﷺ) কি হাজির-নাজির?।
•আমাদের ইমাম বা নেতা।
=========
সপ্তম অধ্যায়ঃ
=========
•পরকালে বিশ্বাস।
•কুরআনের আলোকে পুনর্জন্ম, পুনরুত্থান।
•আল্লাহ মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন।
•মানুষের মৃত্যুর অবস্থা।
•কিয়ামাত কখন হবে?।
•কিয়ামাত সংঘটিত হলে কী হবে?।
•যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে অতঃপর কী হবে?।
•যেদিন মানুষ কবর থেকে বের হয়ে আসবে।
•আমলের দাঁড়িপাল্লা।
•জাহান্নাম এবং জাহান্নামীদের জন্য •অপেক্ষমান বিভিন্ন শাস্তি।
•জান্নাত ও জান্নাতীদের জন্য অপেক্ষমান কিছু নিয়ামত।
•অল্প সংখ্যক লোক নাজাতপ্রাপ্ত।
=========
অষ্টম অধ্যায়ঃ
=========
•সত্য-মিথ্যার স্বরূপ বিশ্লেষণ।
•কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা মিথ্যার স্বরূপ বিশ্লেষণ।
•মিথ্যারোপকারীদের জাহান্নামের শাস্তির বিবরণ।
•যারা নিজেরা মিথ্যা বলে এবং মিথ্যাকে অনুসরণ করে।
•সত্যবাদিতা ও তার ফলাফল।
•সত্যবাদীদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন।
•আমলনামায় সবকিছুই লেখা হচ্ছে।
=========
নবম অধ্যায়ঃ
=========
•ভ্রান্ত পথ ও মত।
•শয়তান ও তার শয়তানি কাজ-কারবারসমূহের কিছু বিবরণ।
•সঠিক দ্বীন মানার ব্যাপারে বাপ-দাদাদের দোহাই।
•আমাদের কি প্রবৃত্তির অনুসরণ করা উচিত?।
•ইজমা বা সংখ্যাধিক্য লোকের মতামত।
•কিয়াস, ধারণা, অনুমান বা যুক্তি।
=========
দশম অধ্যায়ঃ
=========
•ঈমান বিধ্বংসী বিষয়।
•তাগুত কী? তাগুত সম্পর্কে কিছু আলোচনা।
•শির্ক কী? শির্কের পারিভাষিক অর্থ।
•শির্ক সম্পর্কে কুরআনের বিবরণ।
•কবর ও মাযারে ইবাদত।
=========
একাদশ অধ্যায়ঃ
=========
•ঈমান ও মুমিন।
•ঈমান কী? ঈমানের সংজ্ঞা।
•ঈমানের রোকন।
•ঈমানের শাখা।
•ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি।
•কুরআনের আলোকে মুমিনদের পরিচয়।
•মুমিনদের বৈশিষ্ট্য।
•মুমিনদের স্তর।
•প্রকৃত মুমিন কারা?।
•আল-কুরআনে মুমিনদের প্রতিদান।
•ওলী কে? কুরআনের আলোকে ওলী ও তার বৈশিষ্ট্য।
=========
দ্বাদশ অধ্যায়ঃ
=========
•ইসলাম ও মুসলিম।
•ইসলাম কী?।
•ইসলামের রোকন।
•ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক।
•আল্লাহর নিকট ইসলাম।
•আমরা আত্মসমর্পণকারী মুসলিম।
•আমাদের নাম মুসলিম তবে আমরা শুধুই মুসলিম নই।
•সহীহ হাদীসের আলোকে মুসলিম।
=========
ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ
=========
•ঈমান, মুনাফেকী ও কুফরি।
•আল-কুরআনে মুনাফেক সম্পর্কিত আলোচনা।
•কুরআনে কুফরী সম্পর্কিত আলোচনা।
•ঈমান ও কুফরির প্রতিদান।
•ঈমান আনার পর কুফরী করলে তার প্রতিদান।
•কুরআনে ঈমান ও সৎ আমলের প্রতিদান।
=========
চতুর্দশ অধ্যায়ঃ
=========
•তাক্বওয়া ও মুত্তাকী।
•তাকওয়ার পরিচিতি।
•তাকওয়ার স্তরসমূহ।
•মুসলিম মনীষীদের দৃষ্টিতে তাকওয়া ও মুত্তাকী।
•তাকওয়ার দাবী।
•আল-কুরআনে তাকওয়া।
•তাকওয়ার ফলাফল।
•কুরআনে ‘তাকওয়াল্লাহ’ আল্লাহকে ভয় করা।
•আল্লাহকে ভয় কর এবং সেই কঠিন দিবসের শাস্তিকে ভয় কর।
•কতক আয়াতের শেষাংশে আল্লাহকে ভয় করার আহবান!।
•আল্লাহকে ভয় করার ফলাফল।
•কুরআনের আলোকে মুত্তাকীদের পরিচয়।
•মুত্তাকীদের জন্য কী আছে?।
•মুত্তাকীদের জন্য জান্নাত ও তাদের জান্নাতের কিছু বিবরণ।
•যাদের ভয় ও চিন্তা নেই।
•মুহসিনিন এর বৈশিষ্ট্য, কুরআনের আয়াতে মুহসিনিন।
=========
পঞ্চদশ অধ্যায়ঃ
=========
•কুরআন।
•বিসমিল্লাহ কুরআনের কয় জায়গায় আছে?।
•কুরআন সম্পর্কে কুরআন কী বলে?।
•কুরআনকে আল্লাহ সহজভাবে বর্ণনা করেছেন।
•কুরআনকে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
•কুরআনকে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন যেন আমরা তা বুঝতে
পারি।
•কুরআনের মধ্যে আল্লাহ সকল বিষয়ে বর্ণনা করেছেন।
•কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করতে হবে।
•কুরআন আল্লাহর উপদেশ।
•কুরআন দ্বারা মানুষকে উপদেশ দিতে হবে।
•কুরআনের একটি প্রশ্ন ও তার উত্তর।
•কুরআন হেদায়াত ও সুসংবাদ।
•কুরআন মুমিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমত।
•কুরআন মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমত।
•কুরআন পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী।
=========
ষোড়শ অধ্যায়ঃ
=========
•সুন্নাহ ও হাদীস।
•আমাদেরকে রাসূলের সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে।
•কুরআনের আয়াতে ﺳُﻨَّﺔ [সুন্নাহ] ও ]তান্নুস[ ﺳُﻨَّﺖ
হাদীছ শব্দ দ্বারা কুরআনকেও বুঝানো হয়েছে।
•আস্-সালাফ আস্-সালেহীন এর মানহাজ।
•আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত।
=========
সপ্তদশ অধ্যায়ঃ
=========
•যাকাত ও সদাকাহ।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে যাকাত।
•ওশর বা উৎপাদিত ফসলের যাকাত।
•যাকাতুল ফিতর।
•নজর বা মানত।
•কুরবানী।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে নফল সদাকাহ/দান।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রিবা/সুদ।
=========
অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ
=========
•বিবিধ।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পবিত্রতা।
•আযানের মর্মার্থ।
•একই আয়াতে সালাত ও যাকাত।
•কুরআনে মানব সৃষ্টি।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে যৌনকর্ম।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও
প্রতিকার।
•কুরআন খেলা সম্পর্কে কী বলে?।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে •মুরতাদের শাস্তির বিধান।
•নবীদের দু‘আ।
•কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দু‘আ।
•রোগমুক্তি কামনায় ও ঝাড়-ফুঁকে ব্যবহৃত কিছু দু`আ।
• সহায়ক গ্রন্থসমূহ।
`
=======================
|||||||||||||||||||||||
=======================
=======∞∞∞============
`
<<<<< ভূমিকা >>>>>
ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢِ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟﻠﻪِ ، ﻧَﺤْﻤَﺪُﻩُ ُﻭَﻧَﺴْﺘَﻌِﻴْﻨُﻪ ُﻭَﻧَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻩ ، ﻭَﻧَﻌُـﻮْﺫُ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻣِﻦْ
ﺷُﺮُﻭْﺭِ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻨَﺎ ، ﻭَﻣِﻦْ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺕِ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟِﻨَﺎ ، ﻣَﻦْ ﻳَّﻬْﺪِﻩِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﻼَ ﻣُﻀِﻞَّ ﻟَﻪُ ،
ﻭَﻣَﻦْ ﻳُّﻀْﻠِﻞِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﻼَ ﻫَﺎﺩِﻱَ ﻟَﻪُ ، ﻭَﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻻَّ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ
ﺷَﺮِﻳْﻚَ ﻟَﻪُ ، ﻭَﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﻋَﺒْﺪُﻩُ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟُﻪُ
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। নিশ্চয়ই
যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি ও
তাঁর নিকট সাহায্য চাচ্ছি, তাঁর নিকট আমাদের পাপসমূহের জন্য ক্ষমা
চাচ্ছি, নিজেদের প্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং নিজেদের অপকর্মসমূহ থেকে
আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যাকে আল্লাহ হেদায়াত দান করেন
তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারবে না আর যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন
তাকে কেউ হেদায়াত দান করতে পারবে না। আর আমি সাক্ষ্য দিচিছ যে,
আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো
শরিক নেই আর আমি আরো সাক্ষ্য দিচিছ মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা এবং রাসূল। অসংখ্য স্বলাত ও সালাম
বর্ষিত হোক নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর
পরিবার-পরিজন এবং তাঁর সাহাবীদের উপর আর যারা কিয়ামত অবধি
ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করে তাদের উপর।
আলহামদুলিল্লাহ, আমার বইয়ের নাম দিলাম “ওয়াহীর জ্ঞান” কারণ
সর্বপ্রথম যে ওয়াহী আল্লাহ অবতীর্ণ করেন তাহলো -
ﺍﻗْﺮَﺃْ ﺑِﺎﺳْﻢِ ﺭَﺑِّﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺧَﻠَﻖَ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥَ ﻣِﻦْ ﻋَﻠَﻖٍ ﺍﻗْﺮَﺃْ ﻭَﺭَﺑُّﻚَ
ﺍﻷﻛْﺮَﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻋَﻠَّﻢَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻠَﻢِ ﻋَﻠَّﻢَ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﻠَﻢْ
পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে
জমাট-বাঁধা রক্তপিন্ড থেকে। পড়, আর তোমার রব বড়ই অনুগ্রহশীল।
যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে
জানত না। আল-আলাক্ক, ৯৬/১-৫
জানতে হলে অবশ্যই জ্ঞান অর্জন করতে হবে আর আল্লাহর ওয়াহীর
জ্ঞান হল সঠিক-সত্য জ্ঞান যা মানুষকে সঠিক পথের দিকে পরিচালিত
করে। আল্লাহ বলেন -
ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﺟِﺌْﻨَﺎﻫُﻢْ ﺑِﻜِﺘَﺎﺏٍ ﻓَﺼَّﻠْﻨَﺎﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﻋِﻠْﻢٍ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔً ﻟِﻘَﻮْﻡٍ
ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ
আর অবশ্যই আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব এনে দিয়েছি যা পূর্ণ
জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদভাবে বিবৃত, তা বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথ
নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। আল-আ‘রাফ, ৭/৫২
আর আল্লাহর ওয়াহী হল নূর তথা আলো। আল্লাহ বলেন -
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻗَﺪْ ﺟَﺎﺀَﻛُﻢْ ﺑُﺮْﻫَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺭَﺑِّﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧْﺰَﻟْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻜُﻢْ ﻧُﻮﺭًﺍ ﻣُﺒِﻴﻨًﺎ
ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ْﻭَﺍﻋْﺘَﺼَﻤُﻮﺍ ﺑِﻪِ ﻓَﺴَﻴُﺪْﺧِﻠُﻬُﻢ ﻓِﻲ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻣِﻨْﻪُ
ﻭَﻓَﻀْﻞٍ ﻭَﻳَﻬْﺪِﻳﻬِﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺻِﺮَﺍﻃًﺎ ﻣُﺴْﺘَﻘِﻴﻤًﺎ
হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে
দলিল প্রমাণ এসেছে আর আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নূর (তথা
কুরআন) অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে
এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করে, ফলে শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত
ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এবং তাঁর সরল-সঠিক পথের দিকে
পরিচালিত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৭৪-১৭৫
অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াহীর জ্ঞান অর্জন করে তা অনুসরণ
করবে, সে ব্যক্তি সরল-সঠিক পথে পরিচালিত হবে আর আমাদের
সবাইকে সরল-সঠিক পথে চলার জন্য আল্লাহর ওয়াহীর বিধানের দিকে
ফিরে আসতে হবে। হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে আপনার ওয়াহীর
জ্ঞান অর্জন করার ও তাঁর বিধানের দিকে ফিরে আসার তাওফিক দান
করুন আর আমাদের থেকে আমাদের এই কাজকে কবুল করুন। রাব্বানা-
তাকাব্বাল্ মিন্না--- ইন্নাকা আন্তাস্ সামী-‘উল ‘আলী---ম্
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আল্লাহ সত্য ও তাঁর প্রেরিত ওয়াহী সত্য ও নির্ভুল, এ
ছাড়া কোন মানুষ বা অন্য কোন কিছুই তাঁর সমতুল্য ও ভুলের ঊর্ধ্বে
নয়। সুতরাং আমার সংগ্রহ ও অনুবাদে অনিচ্ছাকৃত ভুল দৃষ্টিগোচর হলে
ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে ও তা সংশোধনের নিমিত্তে জানালে খুশি
হবো ও পরবর্তী সংস্করণে নির্ভুল ছাপানোর প্রয়াস পাবো, ইন্শা-
আল্লাহু আজিজ।
বিনীত-
সংরক্ষণঃ মোহাম্মদ সাইদুর রহমান।
সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোজামেল হক।
`
=================
`
প্রথম অধ্যায়ঃ ওয়াহী,
===============
বিষয়ঃ ওয়াহীর জ্ঞান;
===============
`
>>> ইলম, আলেম শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণ <<<
(ইলম) عِلْم শব্দটি (ع ل م) ধাতু থেকে এসেছে। শব্দটি মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল عَلِمَ (আলিমা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল يَعْلَمُ (ইয়া‘লামু) অর্থ জানা, জ্ঞাত হওয়া, অবগত হওয়া, অবহিত হওয়া, ভালভাবে জানা। এর Verbal Noun عِلْم (ইলম) যার অর্থ জ্ঞান, তথ্য, বিদ্যা, বিজ্ঞান, শাস্ত্র, তত্ত্ব। এর বহুবচন হচ্ছে- عُلُوم (উলুম)। এর active participle عَالِم (আলেম) যার অর্থ জ্ঞানী, বিদ্বান, পন্ডিত, শিক্ষিত, বিজ্ঞানী, বৈজ্ঞানিক। এর passive participle مَعْلُوم (মা‘লুম) অর্থ জ্ঞাত, পরিচিত, সুবিদিত, জ্ঞাত বিষয়, নির্দিষ্ট বিষয়। এর nominal عَلِيم (আলীম) যার অর্থ জ্ঞানী, পন্ডিত, বিজ্ঞ। এর noun أَعْلَٰم (আ‘লাম) যার অর্থ অধিকতর জ্ঞানী, অধিকতর জ্ঞানের অধিকারী, অধিক অবগত, সর্বাধিক অবগত।
এর form II মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল عَلَّمَ (আল্লামা) এবং form II মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল يُعَلَّمُ (ইউ‘আল্লেমু) যার অর্থ শেখানো, শিক্ষা দেওয়া, জানানো, অবগত করা, অবহিত করা। form II Verval Noun تَعْلِيْم (তা‘লিম) যার অর্থ শিক্ষা, উপদেশ, নির্দেশ, শিক্ষাদান, শিক্ষকতা, অধ্যাপনা। form II active participle مُعَلَّم (মুয়াল্লেম) অর্থ শিক্ষক, শিক্ষাদানকারী। এর form II passive participle مُعَلَّم (মুয়াল্লাম) শিক্ষাপ্রাপ্ত, শিখানো।
>>> জ্ঞানের ভিত্তিতে আল্লাহ ওয়াহী নাযিল করেছেন <<<
لَكِنِ اللَّهُ يَشْهَدُ بِمَا أَنْزَلَ إِلَيْكَ أَنْزَلَهُ بِعِلْمِهِ وَالْمَلائِكَةُ يَشْهَدُونَ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তিনি তোমার নিকট যা নাযিল করেছেন তা তাঁর জ্ঞানের ভিত্তিতেই নাযিল করেছেন এবং ফেরেশতাগণও সাক্ষ্য দিচ্ছে আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। আন-নিসা, ৪/১৬৬
فَاعْلَمُوا أَنَّمَا أُنْزِلَ بِعِلْمِ اللَّهِ وَأَنْ لا إِلَهَ إِلا هُوَ فَهَلْ أَنْتُمْ مُسْلِمُونَ
তবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর জ্ঞান অনুসারেই তা নাযিল করা হয়েছে আর তিনি ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তাহলে তোমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) হবে কি? হুদ, ১১/১৪
>>> ওয়াহীর জ্ঞান সঠিক পথে পরিচালিত করে <<<
وَلَقَدْ جِئْنَاهُمْ بِكِتَابٍ فَصَّلْنَاهُ عَلَى عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আর অবশ্যই আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব এনে দিয়েছি যা পূর্ণ জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদভাবে বিবৃত, তা বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথ নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। আল-আ‘রাফ, ৭/৫২
وَيَرَى الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ الَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ هُوَ الْحَقَّ وَيَهْدِي إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জানে যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা সত্য এবং তা মহাপরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর পথের দিকে পথ নির্দেশ করে। সাবা, ৩৪/৬
وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
যাতে, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তারা জানতে পারে, এটা আপনার রবের পক্ষ থেকে (প্রেরিত) সত্য, অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাসী হয় এবং তাদের অন্তরসমূহ যেন এর প্রতি অনুগত হয় আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদেরকে সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আল-হাজ্জ, ২২/৫৪
>>> কুরআন জ্ঞানী লোকদের জন্য সুস্পষ্ট নিদর্শন <<<
بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلا الظَّالِمُونَ
বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে এটি (কুরআন) সুস্পষ্ট নিদর্শন। আর যালিমরা ছাড়া অন্য কেউ আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না। আন-কাবুত, ২৯/৪৯
كِتَابٌ فُصِّلَتْ آيَاتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
এটা এক কিতাব আরবী কোরআনরূপে তার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, জ্ঞানী লোকদের জন্য। ফুসসিলাত, ৪১/৩
قُلْ آمِنُوا بِهِ أَوْ لا تُؤْمِنُوا إِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلأذْقَانِ سُجَّدًا
তুমি বল, ‘তোমরা এতে (কুরআনে) বিশ্বাস কর কিংবা বিশ্বাস না কর, নিশ্চয় এর পূর্বে যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয় তখন তারা সেজদাবনত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। আল-ইস্রা, ১৭/১০৭
>>> ঈমানদার জ্ঞানীদেরকে আল্লাহ মর্যাদায় সমুন্নত করবেন <<<
الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে আর যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুন্নত করবেন আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত। ৫৮/১১
>>> জ্ঞানীদের বৈশিষ্ট্য <<<
لَكِنِ الرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ مِنْهُمْ وَالْمُؤْمِنُونَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ وَالْمُقِيمِينَ الصَّلاةَ وَالْمُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالْمُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أُولَئِكَ سَنُؤْتِيهِمْ أَجْرًا عَظِيمًا
কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে পরিপক্ক এবং মুমিনগণ ঈমান আনে যা আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে আর যা আপনার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে এবং তারা সালাত প্রতিষ্ঠাকারী ও যাকাত প্রদানকারী আর তারা আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনয়নকারী, তাদেরকে অচিরেই আমি মহাপুরস্কার প্রদান করব। আন-নিসা, ৪/১৬২
إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল আল্লাহকে ভয় করে, নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল। ফাত্বির, ৩৫/ ২৮
>>>> আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞানী <<<
وَفَوْقَ كُلِّ ذِي عِلْمٍ عَلِيمٌ
আর সকল জ্ঞানীর উপর রয়েছে এক মহাজ্ঞানী। ইউসুফ, ১২/৭৬
وَإِنَّكَ لَتُلَقَّى الْقُرْآنَ مِنْ لَدُنْ حَكِيمٍ عَلِيمٍ
আর প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাকে কোরআন প্রদান করা হয়েছে। আন্-নাম্ল, ২৭/৬
>>> আল্লাহই ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন <<<
الرَّحْمَنُ عَلَّمَ الْقُرْآنَ خَلَقَ الإنْسَانَ عَلَّمَهُ الْبَيَانَ
পরম করুণাময়, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন, তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে। আর-রহমান, ৫৫/১-৪
وَاتَّقُوا اللَّهَ وَيُعَلِّمُكُمُ اللَّهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
আর আল্লাহকে ভয় কর আর আল্লাহ তোমাদেরকে শিক্ষা দেন এবং আল্লাহ সর্ববিষয়ে মহাজ্ঞানী। আল-বাকারাহ, ২/২৮২
وَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ
আর আল্লাহ তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছেন কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ) আর তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা তুমি জানতে না। আন-নিসা, ৪/১১৩
>>> রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সর্বপ্রথম যে ওয়াহী অবতীর্ণ হয় <<<
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ خَلَقَ الإنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ اقْرَأْ وَرَبُّكَ الأكْرَمُ الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ عَلَّمَ الإنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট-বাঁধা রক্তপিন্ড থেকে। পড়, আর তোমার রব বড়ই অনুগ্রহশীল। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। আল-আলাক্ক, ৯৬/১-৫
উপরের আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় আল্লাহ মানুষকে ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, আল্লাহ কি সরাসরি শিক্ষা দিয়েছেন নাকি কোন মাধ্যম দিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন? তার উত্তর-
>>> কোন মানুষের সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেন না <<<
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلا وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ
কোন মানুষের এ মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন ওয়াহীর মাধ্যম, পর্দার আড়াল অথবা কোন দূত পাঠানো ছাড়া; তারপর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তাই ওয়াহী প্রেরণ করেন, তিনি তো মহীয়ান, প্রজ্ঞাময়। আশ্-শূরা, ৪২/৫১
>>> মুসা আলাইহিস সালাম এর সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেছেন <<<
وَكَلَّمَ اللَّهُ مُوسَى تَكْلِيمًا
আর আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন সরাসরি। আন-নিসা, ৪/১৬৪
وَلَمَّا جَاءَ مُوسَى لِمِيقَاتِنَا وَكَلَّمَهُ رَبُّهُ
আর যখন আমার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মূসা এসে উপস্থিত হল আর তার সাথে তার রব কথা বললেন। আল-আ‘রাফ, ৭/১৪৩
يَا مُوسَى إِنِّي أَنَا رَبُّكَ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ إِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى وَأَنَا اخْتَرْتُكَ فَاسْتَمِعْ لِمَا يُوحَى
হে মূসা! ‘নিশ্চয় আমি তোমার রব; সুতরাং তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেল, নিশ্চয় তুমি পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় রয়েছ। আর আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, সুতরাং যা তোমার প্রতি ওয়াহীরূপে পাঠানো হচ্ছে তা মনোযোগ দিয়ে শুন’। ত্ব-হা, ২০/১১-১৩
>>> জিব্রীল আলাইহিস সালাম রাসূলকে সরাসরি ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন <<<
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلا وَحْيٌ يُوحَى عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَى
আর সে (রাসূল) মনগড়া কথা বলে না। এটা তো (কোরআন) কেবল ওয়াহী, যা প্রত্যাদেশ করা হয়। তাকে শিক্ষা দান করে প্রবল শক্তিধর (ফেরেশতা)। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৩-৫
>>> রাসূল সাহাবীদেরকে সরাসরি ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন <<<
لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولا مِنْ أَنْفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ
অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যখন তিনি তাদের নিজেদেরই মধ্য হতে তাদের কাছে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ) শিক্ষা দেয়। আলে‘ইমরান, ৩/১৬৪
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الأمِّيِّينَ رَسُولا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلالٍ مُبِينٍ
তিনিই নিরক্ষরদের মাঝে তাদের মধ্য হতে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে পাঠ করে তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করে এবং তাদেরকে শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ) আর যদিও ইতঃপূর্বে তারা স্পষ্ট গোমরাহীতে ছিল। আল-জুমু‘য়াহ, ৬২/২
كَمَا أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولا مِنْكُمْ يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُمْ مَا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ
যেমন, আমি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের কাছে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত (সুন্নাহ) শিক্ষা দেয় আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু, যা তোমরা জানতে না। আল-বাকারাহ, ২/১৫১
>>> ওয়াহীর জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছাতে রাসূল কার্পণ্য করেননি <<<
وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ
আর সে (রাসূল) অদৃশ্যের জ্ঞান (অর্থাৎ ওয়াহীর মাধ্যমে যে বাণী জানতে পান তা) পৌঁছে দিতে কৃপণতা করেন না। আত-তাকভীর, ৮১/২৪
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ
হে রাসূল! তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা তুমি পৌঁছে দাও। আল-মায়িদাহ, ৫/৬৭
>>> আল্লাহর ওয়াহীর জ্ঞান আসার পরও মানুষ মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে <<<
إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الإسْلامُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَنْ يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
নিশ্চয় আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দীন (জীবন-বিধান) হল ইসলাম আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরই তারা পরস্পর বিদ্বেষবশত মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে নিশ্চয়ই আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। আলে‘ইমরান, ৩/১৯
وَآتَيْنَاهُمْ بَيِّنَاتٍ مِنَ الأمْرِ فَمَا اخْتَلَفُوا إِلا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আর আমি তাদেরকে দীনের যাবতীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি দিয়েছি, কিন্তু তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরও তারা শুধু নিজেদের মধ্যে বাড়াবাড়ির কারণে তারা মতবিরোধ করছে, তারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করত, তোমার রব কিয়ামতের দিবসে সেসব বিষয়ে মীমাংসা করে দেবেন। আল-জাসিয়া, ৪৫/১৭
وَمَا تَفَرَّقُوا إِلا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَلَوْلا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِنْ رَبِّكَ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ وَإِنَّ الَّذِينَ أُورِثُوا الْكِتَابَ مِنْ بَعْدِهِمْ لَفِي شَكٍّ مِنْهُ مُرِيبٍ
আর তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরও তারা কেবল নিজেদের মধ্যকার বিদ্বেষের কারণে মতভেদ করছে; একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফয়সালা হয়ে যেত আর তাদের পরে যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে, তারা সে সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। আশ-শুরা, ৪২/১৪
>>> ওয়াহীর জ্ঞান ছাড়া অনেক মানুষ তর্ক করে <<<<
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে কোন জ্ঞান ছাড়া, কোন পথ নির্দেশনা ছাড়া আর কোন দীপ্তিমান কিতাব ছাড়া। সে তর্ক করে ঘাড় বাঁকিয়ে আল্লাহর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্যে, তার জন্য দুনিয়ায় রয়েছে লাঞ্ছনা আর কিয়ামতের দিবসে আমি তাকে দহণ যন্ত্রণা আস্বাদন করাবো। আল-হাজ্জ, ২২/৮-৯
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ الشَّيْطَانُ يَدْعُوهُمْ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে কোন জ্ঞান ছাড়া, কোন পথ নির্দেশনা ছাড়া, আর কোন দীপ্তিমান কিতাব ছাড়া। আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ কর, তখন তারা বলে বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব; শয়তান যদি তাদেরকে কঠোর শাস্তির দিকে ডাকে, তবুও কি? লুকমান, ৩১/২০-২১
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَرِيدٍ كُتِبَ عَلَيْهِ أَنَّهُ مَنْ تَوَلاهُ فَأَنَّهُ يُضِلُّهُ وَيَهْدِيهِ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে কোন জ্ঞান ছাড়া, আর তারা প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের অনুসরণ করে। তার সম্পর্কে নির্ধারণ হয়েছে, যে তার সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাকে অবশ্যই বিভ্রান্ত করবে আর তাকে প্রজ্জ্বলিত আগুনের শাস্তির দিকে পরিচালিত করবে। আল-হাজ্জ, ২২/৩-৪
فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ كَذِبًا لِيُضِلَّ النَّاسَ بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
সুতরাং তার চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারে, যে কোন জ্ঞান ছাড়াই মানুষকে পথভ্রষ্ট/বিভ্রান্ত করার জন্য আল্লাহর উপর মিথ্যা রচনা করে? নিশ্চয় আল্লাহ যালেম লোকদেরকে হিদায়াত করেন না। আল-আন‘আম, ৬/১৪৪
وَالَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا سَنَسْتَدْرِجُهُمْ مِنْ حَيْثُ لا يَعْلَمُونَ
আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যারোপ করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে ধীরে ধীরে এমনভাবে পাকড়াও করব যে, তারা জানতেও পারবে না। আল-আ’রাফ, ৭/১৮২
>>> বেহুদা কথা দ্বারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে <<<
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব। লুকমান, ৩১/৬
>>> অল্প বিদ্যার কারণে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করে <<<
ذَلِكَ مَبْلَغُهُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَى
এটাই তাদের জ্ঞানের শেষসীমা, নিশ্চয় তোমার রব খুব ভাল করেই জানেন কে তাঁর পথ থেকে গুমরাহ হয়ে গেছে আর তিনি ভাল করেই জানেন কে সঠিক পথে আছে। আন-নাজম, ৫৩/৩০
>>> আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার পরও অনেকে জ্ঞানের অহংকার করে <<<
فَإِذَا مَسَّ الإنْسَانَ ضُرٌّ دَعَانَا ثُمَّ إِذَا خَوَّلْنَاهُ نِعْمَةً مِنَّا قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ بَلْ هِيَ فِتْنَةٌ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لا يَعْلَمُونَ
অতঃপর মানুষকে বিপদাপদ স্পর্শ করলে সে আমাকে ডাকতে থাকে এরপর যখন তিনি তাকে নিজের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ দান করেন, তখন সে বলে, ‘জ্ঞানের কারণেই তা আমাকে দেয়া হয়েছে’, বরং এটা একটা পরীক্ষা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না। আয-যুমার, ৩৯/৪৯
>>> জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষ ধারণা-অনুমানের অনুসরণ করে <<<
وَمِنْهُمْ أُمِّيُّونَ لا يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلا أَمَانِيَّ وَإِنْ هُمْ إِلا يَظُنُّونَ
আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে। আল-বাকারাহ, ২/৭৮
وَمَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلا الظَّنَّ وَإِنَّ الظَّنَّ لا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا
আর যে বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা কেবলমাত্র ধারণা অনুমানের অনুসরণ করে আর সত্যের মোকাবেলায় ধারণা অনুমান কোন কাজে আসবে না। আন্-নাজ্ম, ৫৩/২৮
وَلا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولا
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ের পিছনে ছুটো না, নিশ্চয়ই কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটি সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করা হবে। আল-ইসরা, ১৭/৩৬
>>>জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষ তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে <<<
وَإِنَّ كَثِيرًا لَيُضِلُّونَ بِأَهْوَائِهِمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِينَ
এবং নিশ্চয়ই অনেকে জ্ঞান ছাড়া তাদের প্রবৃত্তি (খেয়াল-খুশি) দ্বারা অন্যকে পথভ্রষ্ট করে, নিশ্চয় তোমার রব সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে ভালভাবেই অবগত আছেন। আল-আন‘আম, ৬/১১৯
>>> প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশির) অনুসরণ করা যাবে না <<<
وَكَذَلِكَ أَنْزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ بَعْدَمَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلا وَاقٍ
আর এভাবেই আমি একে (কুরআনকে) আরবী ভাষায় বিধানরূপে অবতীর্ণ করেছি আর তোমার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পরও যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশির) অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহর মোকাবিলায় তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষাকারী থাকবে না। রা’দ, ১৩/৩৭
قُلْ إِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الْهُدَى وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ بَعْدَ الَّذِي جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلا نَصِيرٍ
তুমি বল, নিশ্চয় আল্লাহর হিদায়াত হল সঠিক হিদায়াত আর তোমার কাছে যে জ্ঞান এসে পৌঁছেছে তারপর যদি তুমি তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাসমূহের (প্রবৃত্তির) অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহর মোকাবিলায় তোমার কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী থাকবে না। আল-বাকারাহ, ২/১২০
وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ إِنَّكَ إِذًا لَمِنَ الظَّالِمِينَ
আর তোমার নিকট জ্ঞান আসার পরও যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশির) অনুসরণ কর, তাহলে নিশ্চয় তুমি তখন যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আল-বাক্বারাহ, ২/১৪৫
>>>> খেয়াল খুশী অনুসরণ করা যাবে না >>>
أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَى سَمْعِهِ وَقَلْبِهِ وَجَعَلَ عَلَى بَصَرِهِ غِشَاوَةً فَمَنْ يَهْدِيهِ مِنْ بَعْدِ اللَّهِ أَفَلا تَذَكَّرُونَ
তবে কি তুমি ভেবে দেখেছ, যে তার নিজ প্রবৃত্তিকে (খেয়াল-খুশীকে) মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? আর আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, এবং তার কানে ও অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন আর তার চোখের উপর আবরণ রেখেছেন, তাই আল্লাহ ছাড়া কে তাকে হিদায়াত করবে? তবুও কি তোমরা চিন্তাভাবনা করবে না? আল-জাসিয়া, ৪৫/২৩
>>> জেনে বুঝে আল্লাহর ক্বালাম বিকৃত করে <<<
أَفَتَطْمَعُونَ أَنْ يُؤْمِنُوا لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلامَ اللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِنْ بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
তবে কি তোমরা আশা কর যে তোমাদের (দাওয়াতের) কারণে তারা ঈমান আনবে? আর তাদের মধ্যে একটি দল অবশ্যই আছে যারা আল্লাহর ক্বালাম শুনে অতঃপর তারা তা বুঝে নেয়ার পরও বিকৃত করে আর তারা তা অবগত আছে। আল-বাকারাহ, ২/৭৫
>>> আল্লাহর ক্বালাম গোপন করে <<<
قُلْ أَأَنْتُمْ أَعْلَمُ أَمِ اللَّهُ وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَهُ مِنَ اللَّهِ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
তুমি বল, ‘তোমরা অধিক জ্ঞানী নাকি আল্লাহ’? আর তার চেয়ে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে যে সাক্ষ্য রয়েছে তা গোপন করে? আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন। আল-বাকারাহ, ২/১৪০
>>> আল্লাহর আয়াত নিয়ে পরিহাস করে <<<
وَإِذَا عَلِمَ مِنْ آيَاتِنَا شَيْئًا اتَّخَذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
যখন আমার কোন আয়াত সে অবগত হয় তখন সে তা নিয়ে পরিহাস করে, তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। আল-জাসিয়াহ ৪৫/৯
>>>> যারা বিনা ইলমে ফতোয়াবাজী করে তাদের থেকে সাবধানঃ <<<
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
إِنَّ اللَّهَ لَا يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالًا فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوا وَأَضَلُّوا
আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে দ্বীনি ইলমকে টেনে বের করে নিবেন না। কিন্তু ইলমকে উঠিয়ে নিবেন আলেমদেরকে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে। শেষ পর্যন্ত যখন কোন আলেম জীবিত থাকবে না, মানুষেরা তখন মূর্খ লোকদেরকে নিজেদের নেতা বানিয়ে নেবে। তাদেরকে দ্বীনের কোন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বিনা ইলমে ফতোয়াবাজীতে লিপ্ত হবে। ফলে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হবে এবং লোকদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে। সহীহুল বুখারী : ১০০, ৭৩০৭, সহিহ মুসলিম: ৬৬৮৯, ৬৬৯২
>>> আল্লাহর ওয়াহীর জ্ঞানই মানুষকে সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করে <<<
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمْ بُرْهَانٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُبِينًا فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَاعْتَصَمُوا بِهِ فَسَيُدْخِلُهُمْ فِي رَحْمَةٍ مِنْهُ وَفَضْلٍ وَيَهْدِيهِمْ إِلَيْهِ صِرَاطًا مُسْتَقِيمًا
হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে দলিল প্রমাণ এসেছে আর আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নূর (তথা কুরআন) অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করে, ফলে শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এবং তাঁর সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৭৪-১৭৫
>>> এই বিষয়ে দু‘আ <<<
رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا রাব্বি যিদ্ নি- ‘ইল্ মা-
হে আমার রব! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও। ত্ব-হা, ২০/১১৪
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
আল্লা-হুম্মা ইন্নী- আস্আলুকা ‘ইল্মান্ না-ফি‘আ- ওয়া রিয্কান্ ত্বোইয়িবা- ওয়া আমালান্ মুতাক্বাব্বালা
হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র আহার, এবং কবুল আমলের প্রার্থনা করছি। (ইবনে মাজাহ: ৯২৫)
رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
রাব্বি হাব্লি- হুক্মাও ওয়াল্ হিক্কনি- বিস্ সো-লিহি---ন
হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিত করুন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/৮৩
****---
****---
>>> ওয়াহীর জ্ঞান সঠিক পথে পরিচালিত করে <<<
وَلَقَدْ جِئْنَاهُمْ بِكِتَابٍ فَصَّلْنَاهُ عَلَى عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আর অবশ্যই আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব এনে দিয়েছি যা পূর্ণ জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদভাবে বিবৃত, তা বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথ নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। আল-আ‘রাফ, ৭/৫২
وَيَرَى الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ الَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ هُوَ الْحَقَّ وَيَهْدِي إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জানে যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা সত্য এবং তা মহাপরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর পথের দিকে পথ নির্দেশ করে। সাবা, ৩৪/৬
وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
যাতে, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তারা জানতে পারে, এটা আপনার রবের পক্ষ থেকে (প্রেরিত) সত্য, অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাসী হয় এবং তাদের অন্তরসমূহ যেন এর প্রতি অনুগত হয় আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদেরকে সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আল-হাজ্জ, ২২/৫৪
بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلا الظَّالِمُونَ
বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে এটি (কুরআন) সুস্পষ্ট নিদর্শন। আর যালিমরা ছাড়া অন্য কেউ আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না। আন-কাবুত, ২৯/৪৯
قُلْ آمِنُوا بِهِ أَوْ لا تُؤْمِنُوا إِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلأذْقَانِ سُجَّدًا
তুমি বল, ‘তোমরা এতে (কুরআনে) বিশ্বাস কর কিংবা বিশ্বাস না কর, নিশ্চয় এর পূর্বে যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয় তখন তারা সেজদাবনত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। আল-ইস্রা, ১৭/১০৭
كِتَابٌ فُصِّلَتْ آيَاتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
এটা এক কিতাব আরবী কোরআনরূপে তার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, জ্ঞানী লোকদের জন্য। ফুসসিলাত, ৪১/৩
`````
"
* আমাদেরকে একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করতে হবে।
*
মানব জীবন আজ অজস্র সমস্যায় নিপতিত, অসংখ্য মত আর ইজম অকটোপাসের মত আঁকড়ে ধরেছে। এসব বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে আল্লাহর ওয়াহীর বিধানের দিকে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ বলেন- إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ يَهْدِي لِلَّتِي هِيَ أَقْوَمُ নিশ্চয়ই এ কুরআন সেই দিকে পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল। আল-ইস্রা, ১৭/৯
>>> ওয়াহী শব্দের অর্থ <<<
ওয়াহী শব্দটি (و ح ي) ধাতু থেকে এসেছে। ওয়াহী শব্দের form I verb হল وَحَى (ওয়াহা) যার অর্থ ওয়াহী প্রেরণ করা, প্রত্যাদেশ পাঠানো, বার্তা পাঠানো, অবহিত করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া। এর noun وَحْى (ওয়াহই) যার অর্থ ওয়াহী, প্রত্যাদেশ, আকাশবাণী, বার্তা, অনুপ্রেরণা, আদেশ, শিক্ষা। এর form IV verb হল أَوْحَى (আওহা) যার অর্থ প্রত্যাদেশ পাঠানো, ওয়াহী প্রেরণ করা, ওয়াহী পাঠানো, অবহিত করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া।
>>> আল-কুরআনে সব কিছুরই বর্ণনা আছে <<<
مَا فَرَّطْنَا فِي الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ
আমি এ কিতাবটিতে (কুরআনে) কোন কিছুই লিপিবদ্ধ করতে ছাড়িনি। আল-আন‘আম, ৬/৩৮
وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ
আর আমি আপনার প্রতি এ কিতাব অবতীর্ণ করেছি যাতে প্রত্যেকটি জিনিসের বর্ণনা আছে। আন্-নাহ্ল, ১৬/৮৯
উক্ত আয়াত দুটি প্রমাণ করে যে, শরীয়াতী এমন কোন বিধান নেই যার বর্ণনা কুরআনে নেই। বরং সবকিছুর বর্ণনা কুরআনে আছে।
>>> ওয়াহী কত প্রকার? <<<
প্রথমত ওয়াহী দুই প্রকার, (১) আল্লাহর ওয়াহী ও (২) শয়তানের ওয়াহী।
(১) কুরআন আল্লাহর ওয়াহী। আল্লাহ বলেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلا وَحْيٌ يُوحَى
আর সে (রাসূল) মনগড়া কথা বলে না। এটা তো (কুরআন) কেবল ওয়াহী, যা প্রত্যাদেশ করা হয়। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৩-৪
وَمَا تَنَزَّلَتْ بِهِ الشَّيَاطِينُ وَمَا يَنْبَغِي لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ
আর তা (কুরআন) নিয়ে শয়তানরা অবতরণ করেনি। তারা এ কাজের যোগ্য নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখে না। আশ্-শু‘আরা, ২৬/২১০-২১১
نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ أَحْسَنَ الْقَصَصِ بِمَا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ هَذَا الْقُرْآنَ وَإِنْ كُنْتَ مِنْ قَبْلِهِ لَمِنَ الْغَافِلِينَ
আমি তোমার কাছে সর্বোত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি, এ কুরআন আমার (অর্থাৎ আল্লাহর) ওয়াহী হিসেবে তোমার কাছে প্রেরণ করার মাধ্যমে, যদিও তুমি এর পূর্বে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। ইউসুফ, ১২/৩
وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِتُنْذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنْذِرَ يَوْمَ الْجَمْعِ لا رَيْبَ فِيهِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ
আর এভাবেই আমি তোমার কাছে আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করেছি যাতে তুমি (উম্মুল কুরা) মক্কা ও তার আশপাশের জনগণকে সতর্ক করতে পার, আর সতর্ক কর একত্রিত হওয়ার দিন সম্পর্কে যাতে কোন সন্দেহ নেই, সেদিন একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল থাকবে জ্বলন্ত আগুনে। আশ্-শূরা, ৪২/৭
كَذَلِكَ يُوحِي إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ اللَّهُ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
এমনিভাবে মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওয়াহী প্রেরণ করেন । আশ্-শূরা, ৪২/৩
>>> কুরআন পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী <<<
وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ هُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ إِنَّ اللَّهَ بِعِبَادِهِ لَخَبِيرٌ بَصِيرٌ
আর (হে নবী) যে কিতাবটি আমি তোমার কাছে ওয়াহী করেছি তা সত্য, এটা তার পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক অবহিত, সর্বদ্রষ্টা। ফাত্বির, ৩৫/৩১
>>> আল্লাহর ওয়াহী কত প্রকার? <<<
আল্লাহর ওয়াহী দুই প্রকার। ১. ওয়াহীয়ে মাতলু। ও ২. ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু। আল্লাহ বলেন-
إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَهُ وَقُرْآنَهُ فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ
নিশ্চয় এর সংরক্ষণ ও পাঠ করানো আমারই দায়িত্ব। তাই আমি যখন তা পাঠ করি তুমি সেই পাঠের অনুসরণ কর। অতঃপর এর বিশদ ব্যাখ্যা করাও আমারই দায়িত্ব। আল-ক্বিয়া-মাহ, ৭৫/১৭-১৯
উক্ত আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, ওয়াহীর একটি দিক এমন আছে, যা আল্লাহ তাঁর ফিরিশতা জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) এর মাধ্যমে পড়ে শোনান। এরই নাম কুরআন। এই ওয়াহী আবৃত্তি করে শোনান হয় বলে ইসলামী বিদ্বানদের পরিভাষায় এ ওয়াহীর নাম ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আবৃত্তি করা আকাশবাণী।
(১) ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আল-কুরআনের আয়াতগুলো দু’প্রকার
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلا اللَّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِنْ عِنْدِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلا أُولُو الألْبَابِ
তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তার মধ্যে মুহকাম (অর্থাৎ সুস্পষ্ট) আয়াতসমূহ রয়েছে; সেগুলো কিতাবের মূল, আর অন্যগুলো মুতাশাবিহ (অস্পষ্ট); কিন্তু যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে; অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না; আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে এসেছে আর বিবেকসম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে। আলে‘ইমরান, ৩/৭
মুতাশাবিহ্ আয়াত এর উদাহরণ। কুরআনের অনেক সূরার প্রথমে: الم, الر, ن, ق, يس, حمعص, ص, আছে। এগুলো হল মুতাশাবিহ্ আয়াত আর আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না।
>>> ওয়াহীয়ে মাতলু (তথা কুরআন) তিলাওয়াত করা হয় <<<
وَاتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنْ كِتَابِ رَبِّكَ لا مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَلَنْ تَجِدَ مِنْ دُونِهِ مُلْتَحَدًا
আর তুমি তিলাওয়াত কর যা তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার কাছে যে ওয়াহী করা হয়েছে, তাঁর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই আর তাঁকে (আল্লাহকে) ছাড়া তুমি কক্ষনো অন্য কাউকে আশ্রয়স্থল হিসেবে পাবে না।আল-কাহ্ফ, ১৮/২৭
اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلاةَ إِنَّ الصَّلاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
তুমি তিলাওয়াত কর কিতাব থেকে যা তোমার কাছে ওয়াহী করা হয়েছে, সালাত কায়েম কর, নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ; আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর। আল-আনকাবূত, ২৯/৪৫
كَذَلِكَ أَرْسَلْنَاكَ فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهَا أُمَمٌ لِتَتْلُوَ عَلَيْهِمُ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَنِ قُلْ هُوَ رَبِّي لا إِلَهَ إِلا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ
এমনিভাবে আমি এমন এক জাতির নিকট তোমাকে পাঠিয়েছি, যার পূর্বে অনেক জাতি গত হয়েছে, যেন আমি তোমার প্রতি যা ওয়াহী করেছি, তা তাদের নিকট তিলাওয়াত কর অথচ তারা রহমানকে অস্বীকার করে; তুমি বল, ‘তিনি আমার রব, তিনি ছাড়া আর কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তাঁরই উপর আমি তাওয়াক্কুল করেছি এবং তাঁরই দিকে আমার প্রত্যাবর্তন’। আর-রাদ, ১৩/৩০
>>> (২) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু <<<
ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ
অতঃপর এর বিশদ ব্যাখ্যা করাও আমারই দায়িত্ব। আল-ক্বিয়া-মাহ, ৭৫/১৯
উক্ত আয়াতটিতে আল্লাহ বলেছেন যে, এ ওয়াহীর বিশদ ব্যাখ্যা করা আমারই দায়িত্ব। ওয়াহীয়ে মাতলুর বিশ্লেষণ যে ওয়াহী দ্বারা করা হয় তার নাম ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু। ইসলামী বিদ্বানদের পরিভাষায় ওয়াহীয়ে গাইর মাতলুকে হাদীস বলা হয়।
কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের থেকে কোন কথা বলতেন না। আল্লাহ বলেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلا وَحْيٌ يُوحَى
আর সে (রাসূল) মনগড়া কথা বলে না। এটা তো (কুরআন) কেবল ওয়াহী, যা প্রত্যাদেশ করা হয়। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৩-৪
>>> ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু কত প্রকার? <<<
ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু দু’প্রকার। (১) স্বয়ং আল্লাহর কিছু কথা আল-কুরআনে পাওয়া যায় না, বরং তা হাদীসে পাওয়া যায়। এরূপ ওয়াহীকে ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু এবং এ ওয়াহীর নাম হল হাদীসে কুদসী। এইরূপ একটি ওয়াহীর উদাহরণ হলঃ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
قَالَ اللَّهُ إِذَا أَحَبَّ عَبْدِي لِقَائِي أَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ، وَإِذَا كَرِهَ لِقَائِي كَرِهْتُ لِقَاءَهُ
আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার সাক্ষাৎ পছন্দ করলে আমিও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করি। আর সে আমার সাক্ষাতকে অপছন্দ করলে, আমিও তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করি। (বুখারী: ৭৫০৪) হাদীসে কুদসী আকারে ওয়াহীয়ে গাইর মাতলুর সংখ্যা আটশো তেষট্টিরও বেশী। [উলুমুল হাদীস: ৪১ পৃষ্ঠা।]
(২) ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আল-কুরআন দ্বারা যেসব বিধান আল্লাহ দিয়েছেন তার বিস্তারিত বিবরণ কুরআনে নেই। যেমন, কুরআনে বলা হয়েছে:
أَقِيمُوا الصَّلاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর। এই বাক্য কুরআনের ৮ জায়গায় রয়েছে। ২/৪৩, ২/৮৩, ২/১১০, ৪/৭৭, ২২/৭৮, ২৪/৫৬, ৫৮/১৩, ৭৩/২০
কুরআনের ২৬টি আয়াতে সালাত ও যাকাত এর কথা একই সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঐ সালাত কখন পড়তে হবে এবং কত রাকআত পড়তে হবে আর কিভাবে পড়তে হবে তার বর্ণনা কুরআন নেই। উক্ত ওয়াহীয়ে মাতলু أَقِيمُوا الصَّلاةَ (আকীমুস সালাত) এর বিবরণ ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেমন- ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু) এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, (আম্মানী জিবরায়ীলু ইনদাল বাইতি মার্রাতাইনি) অর্থাৎ জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) বাইতুল্লাহর কাছে আমাকে দু‘বার নামাযের ইমামতী করেন। (আবূ দাউদ, হা/৩৯৩, আত-তিরমিযী হা/১৪৯, মুসনাদে আহমদ, ১/১৯৩, মিশকাত)
ঐ ইমামতীর দ্বারা জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে সালাতের নিয়ম-কানুন শিখিয়ে দিয়েছেন। এটা ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু তথা হাদীসে রাসূল।
উক্ত বর্ণনাগুলো দ্বারা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর তরফ থেকে যে ওয়াহী অবতীর্ণ হয় তা দু’প্রকারঃ
(১) ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আল-কুরআন (২) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলূ তথা রাসূলের হাদীস। আবার (১) ওয়াহীয়ে মাতলু দু’প্রকার (ক) মুহকাম আয়াত (খ) মুতাশাবিহ আয়াত। এবং (২) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু দু’প্রকার (ক) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু হাদীসে কুদসী ও (খ) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু হাদীসে রাসূল।
>>> শয়তানের ওয়াহী <<<
আল্লাহর ওয়াহী ছাড়া আরও এক প্রকার ওয়াহী আছে যেগুলো হল শয়তানের ওয়াহী। আল্লাহ বলেন-
وَإِنَّ الشَّيَاطِينَ لَيُوحُونَ إِلَى أَوْلِيَائِهِمْ لِيُجَادِلُوكُمْ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ
আর নিশ্চয় শয়তানেরা তাদের বন্ধুদেরকে ওয়াহী করে থাকে যাতে তারা তোমাদের সাথে বিবাদ করে; আর যদি তোমরা তাদের (আকীদা-বিশ্বাসে ও কাজ-কর্মে) আনুগত্য কর তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে। আল-আন‘আম, ৬/১২১
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الإنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ
আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শয়তানদেরকে শত্রু বানিয়েছি মানুষের ও জিনের মধ্য থেকে, তারা একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথা দ্বারা ওয়াহী করে থাকে যেন একে অপরকে ধোকা দিতে পারে, আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন তাহলে তারা তা করতে পারত না সুতরাং তাদেরকে এবং তারা যা রচনা করে, তা বর্জন কর। আল-আন‘আম, ৬/১১২
>>> রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কেবল আল্লাহর ওয়াহী অনুসরণ করতেন <<<
قُلْ إِنَّمَا أَتَّبِعُ مَا يُوحَى إِلَيَّ مِنْ رَبِّي هَذَا بَصَائِرُ مِنْ رَبِّكُمْ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
(হে নবী) তুমি বল, ‘আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার রবের পক্ষ থেকে আমার নিকট ওয়াহী করা হয়; এটি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে উজ্জ্বল আলো আর হিদায়াত ও রহমত সে লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে’। আল-আ‘রাফ, ৭/২০৩
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
আর (হে নবী) তোমার প্রতি তোমার রবের কাছ থেকে যা ওয়াহী করা হয় তুমি তার অনুসরণ কর, নিশ্চয় তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ পূর্ণরূপে অবহিত। আস-সাজদাহ, ৩৩/২
فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِي أُوحِيَ إِلَيْكَ إِنَّكَ عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
সুতরাং তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়েছে তা তুমি সুদৃঢ়ভাবে ধারণ কর; নিশ্চয় তুমি সরল পথে আছো। আয-যুখ্রুফ, ৪৩/৪৩
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর (হে নবী) তোমার প্রতি যে ওয়াহী করা হয়েছে, তুমি তার অনুসরণ কর এবং ধৈর্যধারণ কর, যতক্ষণ না আল্লাহ ফয়সালা করেন আর তিনি সর্বোত্তম ফয়সালাকারী। ইউনুস, ১০/১০৯
بَدِيعُ اتَّبِعْ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
(হে নবী) তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে তুমি তার অনুসরণ কর, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই, আর মুশরিকদের থেকে তুমি মুখ ফিরিয়ে নাও। আল-আন‘আম, ৬/১০৬
قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلا نَذِيرٌ مُبِينٌ
(হে নবী) তুমি বল, ‘আমি রাসূলদের মধ্যে নতুন নই আর আমি এও জানি না আমার ও তোমাদের সাথে কী ব্যবহার করা হবে; আমি কেবল তারই অনুসরণ করি যা আমার প্রতি ওয়াহী করা হয় আর আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’। আল-আহকাফ, ৪৬/৯
قُلْ لا أَقُولُ لَكُمْ عِنْدِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ إِنْ أَتَّبِعُ إِلا مَا يُوحَى إِلَيَّ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَفَلا تَتَفَكَّرُونَ
তুমি বল, আমি তোমাদেরকে এ কথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন ভান্ডার রয়েছে আর আমি গায়েব জানি না এবং আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা; আমি কেবল তাই অনুসরণ করি যা আমার কাছে ওয়াহী রূপে পাঠানো হয়, তুমি (তাদেরকে) জিজ্ঞেস কর অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? সুতরাং তোমরা কেন চিন্তা ভাবনা করবে না? আল-আন‘আম, ৬/৫০
>>> আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করা কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের উপর ফরয <<<
قُلِ اللَّهُ شَهِيدٌ بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ لأنْذِرَكُمْ بِهِ وَمَنْ بَلَغَ
(হে রাসূল) তুমি বলে দাও, আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী আর আমার কাছে এই কুরআন ওয়াহী করে পাঠানো হয়েছে, যেন আমি তোমাদেরকে এবং যাদের নিকট এটি পৌঁছবে তাদের সকলকে এর দ্বারা সতর্ক করি। আল-আন‘আম, ৬/১৯
>>> রাসূল একজন সতর্ককারী মাত্র <<<
إِنْ يُوحَى إِلَيَّ إِلا أَنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ
আমার কাছে তো এই ওয়াহী এসেছে যে, আমি একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র। সোয়াদ, ৩৮/৭০
قُلْ إِنَّمَا أُنْذِرُكُمْ بِالْوَحْيِ وَلا يَسْمَعُ الصُّمُّ الدُّعَاءَ إِذَا مَا يُنْذَرُونَ
তুমি বল, ‘আমি কেবলমাত্র ওয়াহী দ্বারাই তোমাদেরকে সতর্ক করি’, কিন্তু যারা বধির তাদেরকে যখন সতর্ক করা হয়, তখন তারা সে আহবান শোনে না। আল-আম্বিয়া, ২১/৪৫
>>> মানুষের মধ্য থেকেই একজন রাসূলের নিকট আল্লাহ ওয়াহী করেছেন <<<
أَكَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا أَنْ أَوْحَيْنَا إِلَى رَجُلٍ مِنْهُمْ أَنْ أَنْذِرِ النَّاسَ وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا أَنَّ لَهُمْ قَدَمَ صِدْقٍ عِنْدَ رَبِّهِمْ قَالَ الْكَافِرُونَ إِنَّ هَذَا لَسَاحِرٌ مُبِينٌ
মানুষের কাছে কি এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, আমি তাদের মধ্য হতে একজনের নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছি যে, তুমি মানুষকে সতর্ক কর এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর যে, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদা; কাফিররা বলে, ‘এ ব্যক্তি তো স্পষ্ট যাদুকর’। ইউনুস, ১০/২
>>> কেবলমাত্র পুরুষ মানুষদেরকেই আল্লাহ রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন <<<
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلا رِجَالا نُوحِي إِلَيْهِمْ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى
আর তোমার পূর্বে জনপদবাসীদের মধ্য হতে যাদের কাছে আমি ওয়াহী প্রেরণ করতাম তারা কেবল পুরুষ মানুষ ব্যতীত ছিল না। ইউসুফ, ১২/১০৯
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلا رِجَالا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
আর আমি তোমার পূর্বে পুরুষ মানুষ ছাড়া কাউকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করিনি যাদের প্রতি আমি ওয়াহী পাঠিয়েছি; সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো। আন্-নাহ্ল, ১৬/৪৩
وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلا رِجَالا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
আর আমি তোমার পূর্বে পুরুষ মানুষ ছাড়া কাউকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করিনি যাদের প্রতি আমি ওয়াহী পাঠিয়েছি; সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো। আল-আম্বিয়া, ২১/৭
>>> যাদের প্রতি আল্লাহ ওয়াহী করেছেন তাদের কয়েকজন <<<
إِنَّا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ كَمَا أَوْحَيْنَا إِلَى نُوحٍ وَالنَّبِيِّينَ مِنْ بَعْدِهِ وَأَوْحَيْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَعِيسَى وَأَيُّوبَ وَيُونُسَ وَهَارُونَ وَسُلَيْمَانَ وَآتَيْنَا دَاوُدَ زَبُورًا
(হে নবী) নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ওয়াহী পাঠিয়েছি, যেমন ওয়াহী পাঠিয়েছি নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট এবং আমি ওয়াহী পাঠিয়েছিলাম ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূন ও সুলায়মানের নিকট এবং দাঊদকে যাবূর প্রদান করেছি। আন-নিসা, ৪/১৬৩
>>> আল্লাহ রাসূল প্রেরণ করেছেন যাতে মানুষ একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করে <<<
এ বিষয় সূরার আয়াতসমূহ দেখুনঃ আল-আম্বিয়া, ২১/২৫, ২১/১০৮, আল-কাহাফ, ১৮/১১০, ফুসসিলাত, ৪১/৬, আন্-নাহ্ল, ১৬/১২৩
>>> সকল নবীকে শির্ক থেকে আল্লাহ সাবধান করছেন <<<
এ বিষয় সূরার আয়াত দেখুনঃ আয-যুমার, ৩৯/৬৫
قُلْ إِنْ ضَلَلْتُ فَإِنَّمَا أَضِلُّ عَلَى نَفْسِي وَإِنِ اهْتَدَيْتُ فَبِمَا يُوحِي إِلَيَّ رَبِّي إِنَّهُ سَمِيعٌ قَرِيبٌ
তুমি বল, ‘যদি আমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাই তবে আমার নিজের জন্যই পথভ্রষ্ট হব, আর যদি আমি হিদায়াত প্রাপ্ত হই তবে তা এ কারণে যে, আমার রব আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরণ করেন, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা ও অতি নিকটবর্তী’। সাবা, ৩৪/৫০
আমাদের প্রত্যেকের জন্য উচিত একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করা আর এটিই সঠিক পথ।
✔
✔
✔
* আমাদেরকে আল্লাহর ওয়াহী দ্বারা আইন ও বিচার করতে হবে;
*
`
আল্লাহর ওয়াহীর বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত বিধান দিয়ে মানুষ বিচার ফায়সালা করে। নিজেরা আইন রচনা করে, সেই আইনের আলোকে মানুষের মাঝে বিচার মিমাংসা করে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের রচিত আইন তারাই মানে না। তাই নিজেদের প্রয়োজনে আবার সেই আইন নিজেরাই পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে। সাধারণ মানুষকে সেই আইনের কাছেই বিচার প্রার্থী হতে হয়। এটি হল মানুষের দুনিয়ার জীবনে। আবার ধর্মীয় জীবনেও মানুষ অন্যের বিধান কামনা করে। আল্লাহ ওয়াহীর বিধান বাদ দিয়ে নিজেদের রচিত মাযহাব, তরিকা, ইজমা, কিয়াস ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষার ও খেয়াল-খুশী অনুসরণ করে। আল্লাহর রাসূলকে বিচারক বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তদাতা হিসেবে গ্রহণ না করে, নিজেদের পছন্দীয় ইমাম, সর্দার, নেতা ও পীরকে চূড়ান্ত বিচারক হিসেবে মান্য করে, তাদের রচিত রায় বা মাস‘আলা তারা গ্রহণ করে। আল্লাহ বলেন-
يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلالا بَعِيدًا
তারা যে তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায় অথচ তাদেরকে নির্দেশ দেয়াই হয়েছে তাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য কিন্তু শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট করে বহুদূরে নিয়ে যেতে চায়। আন-নিসা, ৪/৬০
إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلا تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا
(হে নবী) নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি যেন, যা আল্লাহ তোমাকে জানিয়েছেন, তুমি সে অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা কর আর তুমি খিয়ানতকারীদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না। আন-নিসা, ৪/১০৫
وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ وَلا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ عَمَّا جَاءَكَ مِنَ الْحَقِّ
আর (হে নবী) আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা পূর্ববতী কিতাব সমূহের সত্যায়নকারী ও তার উপর সংরক্ষণকারীরূপে; সুতরাং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তুমি তার মাধ্যমে তাদের মাঝে বিচার ফায়সালা কর এবং তোমার কাছে যে মহাসত্য (কুরআন) এসেছে তা বাদ দিয়ে তাদের খেয়াল খুশির (প্রবৃত্তির) অনুসরণ কর না। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৮
وَأَنِ احْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ وَلا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَاحْذَرْهُمْ أَنْ يَفْتِنُوكَ عَنْ بَعْضِ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ إِلَيْكَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَاعْلَمْ أَنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ أَنْ يُصِيبَهُمْ بِبَعْضِ ذُنُوبِهِمْ وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ لَفَاسِقُونَ
আর আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা তাদের মাঝে বিচার ফায়সালা কর আর তাদের খেয়াল খুশির (প্রবৃত্তির) অনুসরণ কর না এবং তাদের থেকে সতর্ক থাকবে যেন, আল্লাহ তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তার কিছু অংশ থেকে যেন তোমাকে বিচ্যুত করতে না পারে, তারপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ, তাদের পাপসমূহের কিছু পাপের কারণে আল্লাহ তাদেরকে আযাব দিতে চান আর অবশ্যই মানুষের মধ্যে অনেকেই নাফরমান। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৯
أَفَغَيْرَ اللَّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا وَهُوَ الَّذِي أَنْزَلَ إِلَيْكُمُ الْكِتَابَ مُفَصَّلا وَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَعْلَمُونَ أَنَّهُ مُنَزَّلٌ مِنْ رَبِّكَ بِالْحَقِّ فَلا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
তুমি বল, তবে কি আমি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিচারক হিসেবে তালাশ করব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেন আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা জানে যে, এটি তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্যসহ অবতীর্ণ করা হয়েছে সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। আল-আন‘আম, ৬/১১৪
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর (হে নবী) তোমার নিকট যে ওয়াহী করা হয়েছে, তুমি তার অনুসরণ কর আর ধৈর্যধারণ কর, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ ফায়সালা করেন, আর তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। ইউনুস, ১০/১০৯
>>> চূড়ান্ত রায় বা সিদ্ধান্তদাতা আল্লাহর রাসূল <<<
فَلا وَرَبِّكَ لا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
তোমার রবের কসম! তারা মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে (রাসূলকে) বিচারক হিসেবে মেনে নেয়; অতঃপর তুমি যে রায়/ফায়সালা দেবে সে ব্যাপারে তাদের নিজেদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়। আন-নিসা, ৪/৬৫
>>> মুমিনদের বক্তব্য, “আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম” <<<
إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
মুমিনদেরকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করার জন্য তখন তারা বলে, “আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম” আর তারাই সফলকাম। আন-নূর, ২৪/৫১
>>>> একটি দল রাসুলের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে অথচ নিজেদের পক্ষে হলে মনে নেয় <<<
وَإِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِنْهُمْ مُعْرِضُونَ وَإِنْ يَكُنْ لَهُمُ الْحَقُّ يَأْتُوا إِلَيْهِ مُذْعِنِينَ
আর যখন তাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় যাতে করে তাদের মাঝে পারস্পরিক বিচার মীমাংসা করা যায় তখন তাদের মধ্যে একটি দল মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর সত্য যদি তাদের পক্ষে থাকে তাহলে পূর্ণ বিনয়ী হয়ে তারা তাঁর দিকে ছুটে আসে। আন-নূর, ২৪/৪৮-৪৯
>>> রাসুলের রায় না মেনে যারা অন্যের রায় মানতে চায় তারা তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায় <<<
أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
তবে কি তারা জাহিলিয়্যাতের বিধান চায়? আর দৃঢ় বিশ্বাসী লোকদের জন্য আইন-বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক শ্রেষ্ঠ? আল-মায়িদাহ, ৫/৫০
فَلا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلا وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
কাজেই তোমরা মানুষকে ভয় কর না আর আমাকেই ভয় কর, আমার আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় কর না আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৪
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই যালিম। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৫
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই ফাসেক। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৭
>>> বিচার করতে হবে ইনসাফের সাথে <<<
وَإِنْ حَكَمْتَ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِالْقِسْطِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
আর যদি তুমি বিচার ফায়সালা কর, তবে তাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করবে ইনসাফের সাথে; নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন। আল-মায়িদাহ, ৫/৪২
وَإِذَا حَكَمْتُمْ بَيْنَ النَّاسِ أَنْ تَحْكُمُوا بِالْعَدْلِ إِنَّ اللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُمْ بِهِ إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا
আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা করবে তখন ইনসাফের সাথে বিচার ফায়সালা করবে; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম উপদেশ দিচ্ছেন; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। আন-নিসা, ৪/৫৮
>>> কিয়ামতের দিনে আল্লাহ সকল বিষয় ফায়সালা করে দিবেন <<<
إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ بِحُكْمِهِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْعَلِيمُ
নিশ্চয় তোমার রব তাঁর বিধান অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন আর তিনি পরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী। আন্-নাম্ল, ২৭/৭৮
وَإِنَّ رَبَّكَ لَيَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আর নিশ্চয় তোমার রব কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে। আন্-নাহ্ল, ১৬/১২৪
فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
সুতরাং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে। আল-বাকারাহ, ২/১১৩
اللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كُنْتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
আল্লাহ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন সে বিষয়ে তোমরা মতবিরোধ করছ। আল-হাজ্জ, ২২/৬৯
فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلا
সুতরাং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার করে দিবেন আর আল্লাহ কখনো মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদের জন্য (জয়লাভের) পথ করে দিবেন না। আন-নিসা, ৪/১৪১
إِنَّ اللَّهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِي مَا هُمْ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي مَنْ هُوَ كَاذِبٌ كَفَّارٌ
নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন যে ব্যাপারে তারা মতবিরোধ করছে, যে মিথ্যাবাদী ও কাফির, অবশ্যই আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন না। আয-যুমার, ৩৯/৩
قُلِ اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِي مَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
তুমি বল, হে আল্লাহ! আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, অদৃশ্যের ও দৃশ্যের জ্ঞানী, আপনিই আপনার বান্দাদের মাঝে ফায়সালা করে দিবেন, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে। আয-যুমার, ৩৯/৪৬
الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَأُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
সেই (বিচারের) দিন কর্তৃত্ব ও আধিপত্য হবে আল্লাহরই, তিনিই তাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করে দিবেন; অতএব যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা থাকবে নে‘আমতপূর্ণ জান্নাতে। আর যারা অবিশ্বাস করেছে ও আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। আল-হাজ্জ, ২২/৫৬-৫৭
>>> আল্লাহ বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক <<<
أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ
আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন? আত-তীন. ৯৫/৮
وَأَنْتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِينَ
আর আপনি বিচারকদের সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। হুদ, ১১/৪৫
وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। আল-আ‘রাফ, ৭/৮৭, ১০/১০৯, ১২/৮০
إِنَّكَ أَنْتَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ
নিশ্চয় আপনি মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আল-বাকারাহ, ২/৩২
وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ৪/২৬, ৮/৭১, ৯/১৫, ৯/৬০, ৯/৯৭, ৯/১০৬, ৯/১১০, ২২/৫২, ২৪/১৮, ২৪/৫৮, ২৪/৫৯, ৪৯/৮, ৬০/১০,
إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ২/১২৯, ৫/১১৮, ৪০/৮, ৬০/৫
هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ৩/৬, ৩/১৮, ৩/৬২, ১৪/৪, ১৬/৬০, ২৯/২৬, ২৯/৪২, ৩০/২৭, ৩১/৯, ৩৫/২, ৪৫/৩৭, ৫৭/১, ৫৯/১, ৫৯/২৪, ৬১/১, ৬২/৩
إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْقَصَصُ الْحَقُّ وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلا اللَّهُ وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
নিশ্চয় এটি সত্য বিবরণ, আর আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং নিশ্চয় আল্লাহ, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আলে'ইমরান, ৩/৬২
>>> এই বিষয়ে দু‘আ <<<
رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
রাব্বি হাব্লি- হুক্মাও ওয়াল্ হিক্কনি- বিস্ সো-লিহি---ন
হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিত করুন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/৮৩
পরিশেষে বলব, সকল বিধান বাতিল করে একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর বিধানের কাছে ফিরে আসলেই মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব। আর কুরআনকে সংবিধান করলেই দুনিয়া ও আখেরাতে আমাদের মুক্তি সম্ভব। আল্লাহ বলেন-
إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ يَهْدِي لِلَّتِي هِيَ أَقْوَمُ
নিশ্চয়ই এ কুরআন সেই দিকে পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল। আল-ইস্রা, ১৭/৯
✔
✔
✔
<<<<আল্লাহর ওয়াহী সত্য আর তা গ্রহণ করতে হবে>>>>
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَنْ ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَا أَنَا عَلَيْكُمْ بِوَكِيلٍ
তুমি বল, ‘হে মানবসকল’, অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে, তাই যে সঠিক পথ গ্রহণ করবে, আসলে সে নিজের জন্যই সঠিক পথ গ্রহণ করবে আর যে পথভ্রষ্ট থাকবে, সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট থাকবে আর আমাকে (রাসূলকে) তোমাদের উপর দায়িত্বশীল করা হয়নি। ইউনুস, ১০/১০৮
مَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَنْ ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَلا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
যে সঠিক পথ অবলম্বন করবে সে কেবল তার নিজের জন্যই সঠিক পথ অবলম্বন করবে এবং যে গুমরাহ হবে তবে তার গুমরাহীর পরিণাম তার নিজের উপরেই পড়বে আর কোন বোঝা বহনকারী অন্যের (পাপের) বোঝা বহন করবে না। আল-ইস্রা, ১৭/১৫
وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنْ شَاءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيَكْفُرْ
আর তুমি বল, ‘সত্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে অতএব যার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক এবং যার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করুক; আল-কাহাফ, ১৮/২৯
بَلْ أَتَيْنَاهُمْ بِالْحَقِّ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ
বরং আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি; আর অবশ্যই তারা মিথ্যাবাদী। আল-মু‘মিনূন, ২৩/৯০
اللَّهُ الَّذِي أَنْزَلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَالْمِيزَانَ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ قَرِيبٌ
আল্লাহ, যিনি সত্যসহ কিতাব এবং ইনসাফের মানদন্ড নাযিল করেছেন আর কিসে তোমাকে জানাবে সম্ভবত কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী? আশ্-শূরা, ৪২/১৭
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি এটাকে সকল দীনের উপর বিজয়ী করতে পারেন আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। আল-ফাত্হ, ৪৮/২৮
أَفَمَنْ يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَى إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الألْبَابِ
যে ব্যক্তি জানে তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা সত্য তবে সে কি তার মত যে অন্ধ? প্রকৃতপক্ষে বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিরাই উপদেশ গ্রহণ করবে। আর-রাদ, ১৩/১৯
وَلَمَّا جَاءَهُمُ الْحَقُّ قَالُوا هَذَا سِحْرٌ وَإِنَّا بِهِ كَافِرُونَ
আর যখন তাদের কাছে প্রকৃত সত্য আসল তখন তারা বলল, ‘এতো যাদু এবং নিশ্চয় আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।’ আয্-যুখরুফ, ৪৩/১৯
بَلْ كَذَّبُوا بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُمْ فَهُمْ فِي أَمْرٍ مَرِيجٍ
বস্তুত যখনই তাদের কাছে সত্য এসেছে তখনই তারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই তারা সংশয়ের মধ্যে পড়ে আছে। ক্কাফ, ৫০/৫
وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ ائْذَنْ لِي وَلا تَفْتِنِّي أَلا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُوا وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমাকে অব্যাহতি দিন এবং আমাকে ফিতনায় ফেলবেন না’; শুনে রাখ, তারা ফিতনায় পড়েই আছে আর অবশ্যই জাহান্নাম অবিশ্বাসীদেরকে ঘিরে রেখেছে। আত্-তাওবাহ, ৯/৪৯
`
ভূমিকা।
=========
প্রথম অধ্যায়ঃ
=========
• ওয়াহী।
• ওয়াহীর জ্ঞান।
• আমাদেরকে একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করতে হবে।
• আমাদেরকে আল্লাহর ওয়াহী দ্বারা আইন ও বিচার করতে হবে।
• আল্লাহর ওয়াহী সত্য আর তা গ্রহণ করতে হবে।
=========
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ
=========
• তাওহীদ
• তাওহীদ কী ও কত প্রকার? কুরআনে তাওহীদ
• তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত
• তাওহীদুল আসমায়ে ওয়াস-সিফাত।
• তাওহীদূল উলুহিয়্যাত।
• কুরআনে আল্লাহর একত্বের বিবরণ।
• একই আয়াতে তিন প্রকার তাওহীদ।
==========
তৃতীয় অধ্যায়ঃ
==========
• তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত
• কুরআনে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাত
• কুরআনে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাতের ব্যাখ্যা।
• ধর্মহীন নাস্তিকসহ সবার কাছে আল্লাহর জিজ্ঞাসা।
• আল্লাহই সর্বময় ক্ষমতার অধিপতি।
• রাজত্ব, কর্তৃত্ব, শাসনক্ষমতা আল্লাহর।
• বিধানদাতা/হুকুমদাতা একমাত্র আল্লাহ।
• সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।
=========
চতুর্থ অধ্যায়ঃ
=========
•তাওহীদুল আসমায়ে ওয়াস-সিফাত।
•কুরআনে তাওহীদুল আসমায়ে ওয়াস-সিফাত।
•কুরআনের আয়াতে আল্লাহর নাম ও গুণাবলীসমূহ।
•আল্লাহর জ্ঞান সর্বত্র বিরাজমান।
•আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান নয় বরং আল্লাহ আরশে সমুন্নত আছেন।
•সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহ কোথায়?।
•আল্লাহ নিরাকার নন।
•মুমিনগণের আল্লাহকে দেখা।
•আল্লাহর ভালবাসা ও অপছন্দ/অসন্তুষ্টি।
•একমাত্র আল্লাহই গায়েব সম্পর্কে অবগত।
•কুরআনের আয়াতে তাক্বদির।
=========
পঞ্চম অধ্যায়ঃ
=========
•তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ।
•কুরআনে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ বা •তাওহীদে ইবাদত।
•উপাসনা করার ক্ষেত্রে তাওহীদে ইবাদত।
•আনুগত্য ও অনুসরণ করার ক্ষেত্রে তাওহীদে ইবাদত।
•কুরআনে ﺍﻟﺼِّﺮَﺍﻁَ ﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻘِﻴﻢ তথা সরল-সঠিক পথ।
ইলাহ বা উপাস্য একমাত্র আল্লাহ।
•সেজদা একমাত্র আল্লাহর জন্য।
•আল্লাহর কাছে কিভাবে দু‘আ করব?।
•আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দু‘আ করা যাবে না।
•আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া ও তাওবা করা।
•আল্লাহর শোকর আদায় করা।
•আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া।
•আল্লাহর নিকট সাহায্য চাওয়া।
•আল্লাহর উপর ভরসা করা, নির্ভর করা।
•কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে সবর/ধৈর্যধারণ।
=========
ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ
=========
•রাসূল (ﷺ) সম্পর্কে জানা।
•কুরআনের বাক্য দিয়ে রাসূলের আনুগত্য।
•কুরআনে রাসূলের আনুগত্য, অনুসরণ, মানা।
•রাসূলের অনুসরণের ফলাফল।
•রাসূল (ﷺ) কিসের তৈরী?।
•(বাশার) মানুষ কিসের তৈরী।
•নূর মানে কি নূরের তৈরী?।
•রাসূল (ﷺ)মারা গেছেন।
•সহীহুল বুখারীর আলোকে রাসূল (ﷺ)-এর মৃত্যু।
•শহীদগণের পরকালীন জীবন।
•শহীদগণ জীবিত আছেন কিন্তু আমাদের মত জীবিত নন।
•ঈসা (আঃ) মারা যাননি।
•রাসূল (ﷺ) কি হাজির-নাজির?।
•আমাদের ইমাম বা নেতা।
=========
সপ্তম অধ্যায়ঃ
=========
•পরকালে বিশ্বাস।
•কুরআনের আলোকে পুনর্জন্ম, পুনরুত্থান।
•আল্লাহ মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন।
•মানুষের মৃত্যুর অবস্থা।
•কিয়ামাত কখন হবে?।
•কিয়ামাত সংঘটিত হলে কী হবে?।
•যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে অতঃপর কী হবে?।
•যেদিন মানুষ কবর থেকে বের হয়ে আসবে।
•আমলের দাঁড়িপাল্লা।
•জাহান্নাম এবং জাহান্নামীদের জন্য •অপেক্ষমান বিভিন্ন শাস্তি।
•জান্নাত ও জান্নাতীদের জন্য অপেক্ষমান কিছু নিয়ামত।
•অল্প সংখ্যক লোক নাজাতপ্রাপ্ত।
=========
অষ্টম অধ্যায়ঃ
=========
•সত্য-মিথ্যার স্বরূপ বিশ্লেষণ।
•কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা মিথ্যার স্বরূপ বিশ্লেষণ।
•মিথ্যারোপকারীদের জাহান্নামের শাস্তির বিবরণ।
•যারা নিজেরা মিথ্যা বলে এবং মিথ্যাকে অনুসরণ করে।
•সত্যবাদিতা ও তার ফলাফল।
•সত্যবাদীদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন।
•আমলনামায় সবকিছুই লেখা হচ্ছে।
=========
নবম অধ্যায়ঃ
=========
•ভ্রান্ত পথ ও মত।
•শয়তান ও তার শয়তানি কাজ-কারবারসমূহের কিছু বিবরণ।
•সঠিক দ্বীন মানার ব্যাপারে বাপ-দাদাদের দোহাই।
•আমাদের কি প্রবৃত্তির অনুসরণ করা উচিত?।
•ইজমা বা সংখ্যাধিক্য লোকের মতামত।
•কিয়াস, ধারণা, অনুমান বা যুক্তি।
=========
দশম অধ্যায়ঃ
=========
•ঈমান বিধ্বংসী বিষয়।
•তাগুত কী? তাগুত সম্পর্কে কিছু আলোচনা।
•শির্ক কী? শির্কের পারিভাষিক অর্থ।
•শির্ক সম্পর্কে কুরআনের বিবরণ।
•কবর ও মাযারে ইবাদত।
=========
একাদশ অধ্যায়ঃ
=========
•ঈমান ও মুমিন।
•ঈমান কী? ঈমানের সংজ্ঞা।
•ঈমানের রোকন।
•ঈমানের শাখা।
•ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি।
•কুরআনের আলোকে মুমিনদের পরিচয়।
•মুমিনদের বৈশিষ্ট্য।
•মুমিনদের স্তর।
•প্রকৃত মুমিন কারা?।
•আল-কুরআনে মুমিনদের প্রতিদান।
•ওলী কে? কুরআনের আলোকে ওলী ও তার বৈশিষ্ট্য।
=========
দ্বাদশ অধ্যায়ঃ
=========
•ইসলাম ও মুসলিম।
•ইসলাম কী?।
•ইসলামের রোকন।
•ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক।
•আল্লাহর নিকট ইসলাম।
•আমরা আত্মসমর্পণকারী মুসলিম।
•আমাদের নাম মুসলিম তবে আমরা শুধুই মুসলিম নই।
•সহীহ হাদীসের আলোকে মুসলিম।
=========
ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ
=========
•ঈমান, মুনাফেকী ও কুফরি।
•আল-কুরআনে মুনাফেক সম্পর্কিত আলোচনা।
•কুরআনে কুফরী সম্পর্কিত আলোচনা।
•ঈমান ও কুফরির প্রতিদান।
•ঈমান আনার পর কুফরী করলে তার প্রতিদান।
•কুরআনে ঈমান ও সৎ আমলের প্রতিদান।
=========
চতুর্দশ অধ্যায়ঃ
=========
•তাক্বওয়া ও মুত্তাকী।
•তাকওয়ার পরিচিতি।
•তাকওয়ার স্তরসমূহ।
•মুসলিম মনীষীদের দৃষ্টিতে তাকওয়া ও মুত্তাকী।
•তাকওয়ার দাবী।
•আল-কুরআনে তাকওয়া।
•তাকওয়ার ফলাফল।
•কুরআনে ‘তাকওয়াল্লাহ’ আল্লাহকে ভয় করা।
•আল্লাহকে ভয় কর এবং সেই কঠিন দিবসের শাস্তিকে ভয় কর।
•কতক আয়াতের শেষাংশে আল্লাহকে ভয় করার আহবান!।
•আল্লাহকে ভয় করার ফলাফল।
•কুরআনের আলোকে মুত্তাকীদের পরিচয়।
•মুত্তাকীদের জন্য কী আছে?।
•মুত্তাকীদের জন্য জান্নাত ও তাদের জান্নাতের কিছু বিবরণ।
•যাদের ভয় ও চিন্তা নেই।
•মুহসিনিন এর বৈশিষ্ট্য, কুরআনের আয়াতে মুহসিনিন।
=========
পঞ্চদশ অধ্যায়ঃ
=========
•কুরআন।
•বিসমিল্লাহ কুরআনের কয় জায়গায় আছে?।
•কুরআন সম্পর্কে কুরআন কী বলে?।
•কুরআনকে আল্লাহ সহজভাবে বর্ণনা করেছেন।
•কুরআনকে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
•কুরআনকে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন যেন আমরা তা বুঝতে
পারি।
•কুরআনের মধ্যে আল্লাহ সকল বিষয়ে বর্ণনা করেছেন।
•কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করতে হবে।
•কুরআন আল্লাহর উপদেশ।
•কুরআন দ্বারা মানুষকে উপদেশ দিতে হবে।
•কুরআনের একটি প্রশ্ন ও তার উত্তর।
•কুরআন হেদায়াত ও সুসংবাদ।
•কুরআন মুমিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমত।
•কুরআন মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমত।
•কুরআন পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী।
=========
ষোড়শ অধ্যায়ঃ
=========
•সুন্নাহ ও হাদীস।
•আমাদেরকে রাসূলের সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে।
•কুরআনের আয়াতে ﺳُﻨَّﺔ [সুন্নাহ] ও ]তান্নুস[ ﺳُﻨَّﺖ
হাদীছ শব্দ দ্বারা কুরআনকেও বুঝানো হয়েছে।
•আস্-সালাফ আস্-সালেহীন এর মানহাজ।
•আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত।
=========
সপ্তদশ অধ্যায়ঃ
=========
•যাকাত ও সদাকাহ।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে যাকাত।
•ওশর বা উৎপাদিত ফসলের যাকাত।
•যাকাতুল ফিতর।
•নজর বা মানত।
•কুরবানী।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে নফল সদাকাহ/দান।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রিবা/সুদ।
=========
অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ
=========
•বিবিধ।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পবিত্রতা।
•আযানের মর্মার্থ।
•একই আয়াতে সালাত ও যাকাত।
•কুরআনে মানব সৃষ্টি।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে যৌনকর্ম।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে কথা বলার আদব-কায়দা।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আল্লাহর আযাব এবং তার কারণ ও
প্রতিকার।
•কুরআন খেলা সম্পর্কে কী বলে?।
•কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে •মুরতাদের শাস্তির বিধান।
•নবীদের দু‘আ।
•কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দু‘আ।
•রোগমুক্তি কামনায় ও ঝাড়-ফুঁকে ব্যবহৃত কিছু দু`আ।
• সহায়ক গ্রন্থসমূহ।
`
=======================
|||||||||||||||||||||||
=======================
=======∞∞∞============
`
<<<<< ভূমিকা >>>>>
ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢِ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟﻠﻪِ ، ﻧَﺤْﻤَﺪُﻩُ ُﻭَﻧَﺴْﺘَﻌِﻴْﻨُﻪ ُﻭَﻧَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻩ ، ﻭَﻧَﻌُـﻮْﺫُ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻣِﻦْ
ﺷُﺮُﻭْﺭِ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻨَﺎ ، ﻭَﻣِﻦْ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺕِ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟِﻨَﺎ ، ﻣَﻦْ ﻳَّﻬْﺪِﻩِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﻼَ ﻣُﻀِﻞَّ ﻟَﻪُ ،
ﻭَﻣَﻦْ ﻳُّﻀْﻠِﻞِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﻼَ ﻫَﺎﺩِﻱَ ﻟَﻪُ ، ﻭَﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻻَّ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ
ﺷَﺮِﻳْﻚَ ﻟَﻪُ ، ﻭَﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﻋَﺒْﺪُﻩُ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟُﻪُ
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। নিশ্চয়ই
যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি ও
তাঁর নিকট সাহায্য চাচ্ছি, তাঁর নিকট আমাদের পাপসমূহের জন্য ক্ষমা
চাচ্ছি, নিজেদের প্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং নিজেদের অপকর্মসমূহ থেকে
আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যাকে আল্লাহ হেদায়াত দান করেন
তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারবে না আর যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন
তাকে কেউ হেদায়াত দান করতে পারবে না। আর আমি সাক্ষ্য দিচিছ যে,
আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো
শরিক নেই আর আমি আরো সাক্ষ্য দিচিছ মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা এবং রাসূল। অসংখ্য স্বলাত ও সালাম
বর্ষিত হোক নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর
পরিবার-পরিজন এবং তাঁর সাহাবীদের উপর আর যারা কিয়ামত অবধি
ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করে তাদের উপর।
আলহামদুলিল্লাহ, আমার বইয়ের নাম দিলাম “ওয়াহীর জ্ঞান” কারণ
সর্বপ্রথম যে ওয়াহী আল্লাহ অবতীর্ণ করেন তাহলো -
ﺍﻗْﺮَﺃْ ﺑِﺎﺳْﻢِ ﺭَﺑِّﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺧَﻠَﻖَ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥَ ﻣِﻦْ ﻋَﻠَﻖٍ ﺍﻗْﺮَﺃْ ﻭَﺭَﺑُّﻚَ
ﺍﻷﻛْﺮَﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻋَﻠَّﻢَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻠَﻢِ ﻋَﻠَّﻢَ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﻠَﻢْ
পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে
জমাট-বাঁধা রক্তপিন্ড থেকে। পড়, আর তোমার রব বড়ই অনুগ্রহশীল।
যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে
জানত না। আল-আলাক্ক, ৯৬/১-৫
জানতে হলে অবশ্যই জ্ঞান অর্জন করতে হবে আর আল্লাহর ওয়াহীর
জ্ঞান হল সঠিক-সত্য জ্ঞান যা মানুষকে সঠিক পথের দিকে পরিচালিত
করে। আল্লাহ বলেন -
ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﺟِﺌْﻨَﺎﻫُﻢْ ﺑِﻜِﺘَﺎﺏٍ ﻓَﺼَّﻠْﻨَﺎﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﻋِﻠْﻢٍ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔً ﻟِﻘَﻮْﻡٍ
ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ
আর অবশ্যই আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব এনে দিয়েছি যা পূর্ণ
জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদভাবে বিবৃত, তা বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথ
নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। আল-আ‘রাফ, ৭/৫২
আর আল্লাহর ওয়াহী হল নূর তথা আলো। আল্লাহ বলেন -
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻗَﺪْ ﺟَﺎﺀَﻛُﻢْ ﺑُﺮْﻫَﺎﻥٌ ﻣِﻦْ ﺭَﺑِّﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧْﺰَﻟْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻜُﻢْ ﻧُﻮﺭًﺍ ﻣُﺒِﻴﻨًﺎ
ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ْﻭَﺍﻋْﺘَﺼَﻤُﻮﺍ ﺑِﻪِ ﻓَﺴَﻴُﺪْﺧِﻠُﻬُﻢ ﻓِﻲ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻣِﻨْﻪُ
ﻭَﻓَﻀْﻞٍ ﻭَﻳَﻬْﺪِﻳﻬِﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺻِﺮَﺍﻃًﺎ ﻣُﺴْﺘَﻘِﻴﻤًﺎ
হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে
দলিল প্রমাণ এসেছে আর আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নূর (তথা
কুরআন) অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে
এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করে, ফলে শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত
ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এবং তাঁর সরল-সঠিক পথের দিকে
পরিচালিত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৭৪-১৭৫
অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াহীর জ্ঞান অর্জন করে তা অনুসরণ
করবে, সে ব্যক্তি সরল-সঠিক পথে পরিচালিত হবে আর আমাদের
সবাইকে সরল-সঠিক পথে চলার জন্য আল্লাহর ওয়াহীর বিধানের দিকে
ফিরে আসতে হবে। হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে আপনার ওয়াহীর
জ্ঞান অর্জন করার ও তাঁর বিধানের দিকে ফিরে আসার তাওফিক দান
করুন আর আমাদের থেকে আমাদের এই কাজকে কবুল করুন। রাব্বানা-
তাকাব্বাল্ মিন্না--- ইন্নাকা আন্তাস্ সামী-‘উল ‘আলী---ম্
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আল্লাহ সত্য ও তাঁর প্রেরিত ওয়াহী সত্য ও নির্ভুল, এ
ছাড়া কোন মানুষ বা অন্য কোন কিছুই তাঁর সমতুল্য ও ভুলের ঊর্ধ্বে
নয়। সুতরাং আমার সংগ্রহ ও অনুবাদে অনিচ্ছাকৃত ভুল দৃষ্টিগোচর হলে
ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে ও তা সংশোধনের নিমিত্তে জানালে খুশি
হবো ও পরবর্তী সংস্করণে নির্ভুল ছাপানোর প্রয়াস পাবো, ইন্শা-
আল্লাহু আজিজ।
বিনীত-
সংরক্ষণঃ মোহাম্মদ সাইদুর রহমান।
সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোজামেল হক।
`
=================
`
প্রথম অধ্যায়ঃ ওয়াহী,
===============
বিষয়ঃ ওয়াহীর জ্ঞান;
===============
`
>>> ইলম, আলেম শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণ <<<
(ইলম) عِلْم শব্দটি (ع ل م) ধাতু থেকে এসেছে। শব্দটি মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল عَلِمَ (আলিমা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল يَعْلَمُ (ইয়া‘লামু) অর্থ জানা, জ্ঞাত হওয়া, অবগত হওয়া, অবহিত হওয়া, ভালভাবে জানা। এর Verbal Noun عِلْم (ইলম) যার অর্থ জ্ঞান, তথ্য, বিদ্যা, বিজ্ঞান, শাস্ত্র, তত্ত্ব। এর বহুবচন হচ্ছে- عُلُوم (উলুম)। এর active participle عَالِم (আলেম) যার অর্থ জ্ঞানী, বিদ্বান, পন্ডিত, শিক্ষিত, বিজ্ঞানী, বৈজ্ঞানিক। এর passive participle مَعْلُوم (মা‘লুম) অর্থ জ্ঞাত, পরিচিত, সুবিদিত, জ্ঞাত বিষয়, নির্দিষ্ট বিষয়। এর nominal عَلِيم (আলীম) যার অর্থ জ্ঞানী, পন্ডিত, বিজ্ঞ। এর noun أَعْلَٰم (আ‘লাম) যার অর্থ অধিকতর জ্ঞানী, অধিকতর জ্ঞানের অধিকারী, অধিক অবগত, সর্বাধিক অবগত।
এর form II মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল عَلَّمَ (আল্লামা) এবং form II মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল يُعَلَّمُ (ইউ‘আল্লেমু) যার অর্থ শেখানো, শিক্ষা দেওয়া, জানানো, অবগত করা, অবহিত করা। form II Verval Noun تَعْلِيْم (তা‘লিম) যার অর্থ শিক্ষা, উপদেশ, নির্দেশ, শিক্ষাদান, শিক্ষকতা, অধ্যাপনা। form II active participle مُعَلَّم (মুয়াল্লেম) অর্থ শিক্ষক, শিক্ষাদানকারী। এর form II passive participle مُعَلَّم (মুয়াল্লাম) শিক্ষাপ্রাপ্ত, শিখানো।
>>> জ্ঞানের ভিত্তিতে আল্লাহ ওয়াহী নাযিল করেছেন <<<
لَكِنِ اللَّهُ يَشْهَدُ بِمَا أَنْزَلَ إِلَيْكَ أَنْزَلَهُ بِعِلْمِهِ وَالْمَلائِكَةُ يَشْهَدُونَ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তিনি তোমার নিকট যা নাযিল করেছেন তা তাঁর জ্ঞানের ভিত্তিতেই নাযিল করেছেন এবং ফেরেশতাগণও সাক্ষ্য দিচ্ছে আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। আন-নিসা, ৪/১৬৬
فَاعْلَمُوا أَنَّمَا أُنْزِلَ بِعِلْمِ اللَّهِ وَأَنْ لا إِلَهَ إِلا هُوَ فَهَلْ أَنْتُمْ مُسْلِمُونَ
তবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর জ্ঞান অনুসারেই তা নাযিল করা হয়েছে আর তিনি ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তাহলে তোমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) হবে কি? হুদ, ১১/১৪
>>> ওয়াহীর জ্ঞান সঠিক পথে পরিচালিত করে <<<
وَلَقَدْ جِئْنَاهُمْ بِكِتَابٍ فَصَّلْنَاهُ عَلَى عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আর অবশ্যই আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব এনে দিয়েছি যা পূর্ণ জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদভাবে বিবৃত, তা বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথ নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। আল-আ‘রাফ, ৭/৫২
وَيَرَى الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ الَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ هُوَ الْحَقَّ وَيَهْدِي إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জানে যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা সত্য এবং তা মহাপরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর পথের দিকে পথ নির্দেশ করে। সাবা, ৩৪/৬
وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
যাতে, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তারা জানতে পারে, এটা আপনার রবের পক্ষ থেকে (প্রেরিত) সত্য, অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাসী হয় এবং তাদের অন্তরসমূহ যেন এর প্রতি অনুগত হয় আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদেরকে সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আল-হাজ্জ, ২২/৫৪
>>> কুরআন জ্ঞানী লোকদের জন্য সুস্পষ্ট নিদর্শন <<<
بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلا الظَّالِمُونَ
বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে এটি (কুরআন) সুস্পষ্ট নিদর্শন। আর যালিমরা ছাড়া অন্য কেউ আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না। আন-কাবুত, ২৯/৪৯
كِتَابٌ فُصِّلَتْ آيَاتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
এটা এক কিতাব আরবী কোরআনরূপে তার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, জ্ঞানী লোকদের জন্য। ফুসসিলাত, ৪১/৩
قُلْ آمِنُوا بِهِ أَوْ لا تُؤْمِنُوا إِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلأذْقَانِ سُجَّدًا
তুমি বল, ‘তোমরা এতে (কুরআনে) বিশ্বাস কর কিংবা বিশ্বাস না কর, নিশ্চয় এর পূর্বে যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয় তখন তারা সেজদাবনত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। আল-ইস্রা, ১৭/১০৭
>>> ঈমানদার জ্ঞানীদেরকে আল্লাহ মর্যাদায় সমুন্নত করবেন <<<
الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে আর যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুন্নত করবেন আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত। ৫৮/১১
>>> জ্ঞানীদের বৈশিষ্ট্য <<<
لَكِنِ الرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ مِنْهُمْ وَالْمُؤْمِنُونَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ وَالْمُقِيمِينَ الصَّلاةَ وَالْمُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالْمُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أُولَئِكَ سَنُؤْتِيهِمْ أَجْرًا عَظِيمًا
কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে পরিপক্ক এবং মুমিনগণ ঈমান আনে যা আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে আর যা আপনার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে এবং তারা সালাত প্রতিষ্ঠাকারী ও যাকাত প্রদানকারী আর তারা আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনয়নকারী, তাদেরকে অচিরেই আমি মহাপুরস্কার প্রদান করব। আন-নিসা, ৪/১৬২
إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল আল্লাহকে ভয় করে, নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল। ফাত্বির, ৩৫/ ২৮
>>>> আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞানী <<<
وَفَوْقَ كُلِّ ذِي عِلْمٍ عَلِيمٌ
আর সকল জ্ঞানীর উপর রয়েছে এক মহাজ্ঞানী। ইউসুফ, ১২/৭৬
وَإِنَّكَ لَتُلَقَّى الْقُرْآنَ مِنْ لَدُنْ حَكِيمٍ عَلِيمٍ
আর প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাকে কোরআন প্রদান করা হয়েছে। আন্-নাম্ল, ২৭/৬
>>> আল্লাহই ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন <<<
الرَّحْمَنُ عَلَّمَ الْقُرْآنَ خَلَقَ الإنْسَانَ عَلَّمَهُ الْبَيَانَ
পরম করুণাময়, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন, তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে। আর-রহমান, ৫৫/১-৪
وَاتَّقُوا اللَّهَ وَيُعَلِّمُكُمُ اللَّهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
আর আল্লাহকে ভয় কর আর আল্লাহ তোমাদেরকে শিক্ষা দেন এবং আল্লাহ সর্ববিষয়ে মহাজ্ঞানী। আল-বাকারাহ, ২/২৮২
وَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ
আর আল্লাহ তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছেন কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ) আর তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা তুমি জানতে না। আন-নিসা, ৪/১১৩
>>> রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সর্বপ্রথম যে ওয়াহী অবতীর্ণ হয় <<<
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ خَلَقَ الإنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ اقْرَأْ وَرَبُّكَ الأكْرَمُ الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ عَلَّمَ الإنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট-বাঁধা রক্তপিন্ড থেকে। পড়, আর তোমার রব বড়ই অনুগ্রহশীল। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। আল-আলাক্ক, ৯৬/১-৫
উপরের আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় আল্লাহ মানুষকে ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, আল্লাহ কি সরাসরি শিক্ষা দিয়েছেন নাকি কোন মাধ্যম দিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন? তার উত্তর-
>>> কোন মানুষের সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেন না <<<
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلا وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ
কোন মানুষের এ মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন ওয়াহীর মাধ্যম, পর্দার আড়াল অথবা কোন দূত পাঠানো ছাড়া; তারপর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তাই ওয়াহী প্রেরণ করেন, তিনি তো মহীয়ান, প্রজ্ঞাময়। আশ্-শূরা, ৪২/৫১
>>> মুসা আলাইহিস সালাম এর সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেছেন <<<
وَكَلَّمَ اللَّهُ مُوسَى تَكْلِيمًا
আর আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন সরাসরি। আন-নিসা, ৪/১৬৪
وَلَمَّا جَاءَ مُوسَى لِمِيقَاتِنَا وَكَلَّمَهُ رَبُّهُ
আর যখন আমার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মূসা এসে উপস্থিত হল আর তার সাথে তার রব কথা বললেন। আল-আ‘রাফ, ৭/১৪৩
يَا مُوسَى إِنِّي أَنَا رَبُّكَ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ إِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى وَأَنَا اخْتَرْتُكَ فَاسْتَمِعْ لِمَا يُوحَى
হে মূসা! ‘নিশ্চয় আমি তোমার রব; সুতরাং তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেল, নিশ্চয় তুমি পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় রয়েছ। আর আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, সুতরাং যা তোমার প্রতি ওয়াহীরূপে পাঠানো হচ্ছে তা মনোযোগ দিয়ে শুন’। ত্ব-হা, ২০/১১-১৩
>>> জিব্রীল আলাইহিস সালাম রাসূলকে সরাসরি ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন <<<
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلا وَحْيٌ يُوحَى عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَى
আর সে (রাসূল) মনগড়া কথা বলে না। এটা তো (কোরআন) কেবল ওয়াহী, যা প্রত্যাদেশ করা হয়। তাকে শিক্ষা দান করে প্রবল শক্তিধর (ফেরেশতা)। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৩-৫
>>> রাসূল সাহাবীদেরকে সরাসরি ওয়াহীর জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন <<<
لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولا مِنْ أَنْفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ
অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যখন তিনি তাদের নিজেদেরই মধ্য হতে তাদের কাছে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ) শিক্ষা দেয়। আলে‘ইমরান, ৩/১৬৪
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الأمِّيِّينَ رَسُولا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلالٍ مُبِينٍ
তিনিই নিরক্ষরদের মাঝে তাদের মধ্য হতে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে পাঠ করে তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করে এবং তাদেরকে শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ) আর যদিও ইতঃপূর্বে তারা স্পষ্ট গোমরাহীতে ছিল। আল-জুমু‘য়াহ, ৬২/২
كَمَا أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولا مِنْكُمْ يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُمْ مَا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ
যেমন, আমি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের কাছে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত (সুন্নাহ) শিক্ষা দেয় আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু, যা তোমরা জানতে না। আল-বাকারাহ, ২/১৫১
>>> ওয়াহীর জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছাতে রাসূল কার্পণ্য করেননি <<<
وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ
আর সে (রাসূল) অদৃশ্যের জ্ঞান (অর্থাৎ ওয়াহীর মাধ্যমে যে বাণী জানতে পান তা) পৌঁছে দিতে কৃপণতা করেন না। আত-তাকভীর, ৮১/২৪
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ
হে রাসূল! তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা তুমি পৌঁছে দাও। আল-মায়িদাহ, ৫/৬৭
>>> আল্লাহর ওয়াহীর জ্ঞান আসার পরও মানুষ মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে <<<
إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الإسْلامُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَنْ يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
নিশ্চয় আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দীন (জীবন-বিধান) হল ইসলাম আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরই তারা পরস্পর বিদ্বেষবশত মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে নিশ্চয়ই আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। আলে‘ইমরান, ৩/১৯
وَآتَيْنَاهُمْ بَيِّنَاتٍ مِنَ الأمْرِ فَمَا اخْتَلَفُوا إِلا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আর আমি তাদেরকে দীনের যাবতীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি দিয়েছি, কিন্তু তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরও তারা শুধু নিজেদের মধ্যে বাড়াবাড়ির কারণে তারা মতবিরোধ করছে, তারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করত, তোমার রব কিয়ামতের দিবসে সেসব বিষয়ে মীমাংসা করে দেবেন। আল-জাসিয়া, ৪৫/১৭
وَمَا تَفَرَّقُوا إِلا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَلَوْلا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِنْ رَبِّكَ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ وَإِنَّ الَّذِينَ أُورِثُوا الْكِتَابَ مِنْ بَعْدِهِمْ لَفِي شَكٍّ مِنْهُ مُرِيبٍ
আর তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরও তারা কেবল নিজেদের মধ্যকার বিদ্বেষের কারণে মতভেদ করছে; একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফয়সালা হয়ে যেত আর তাদের পরে যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে, তারা সে সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। আশ-শুরা, ৪২/১৪
>>> ওয়াহীর জ্ঞান ছাড়া অনেক মানুষ তর্ক করে <<<<
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে কোন জ্ঞান ছাড়া, কোন পথ নির্দেশনা ছাড়া আর কোন দীপ্তিমান কিতাব ছাড়া। সে তর্ক করে ঘাড় বাঁকিয়ে আল্লাহর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্যে, তার জন্য দুনিয়ায় রয়েছে লাঞ্ছনা আর কিয়ামতের দিবসে আমি তাকে দহণ যন্ত্রণা আস্বাদন করাবো। আল-হাজ্জ, ২২/৮-৯
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلا هُدًى وَلا كِتَابٍ مُنِيرٍ وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ الشَّيْطَانُ يَدْعُوهُمْ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে কোন জ্ঞান ছাড়া, কোন পথ নির্দেশনা ছাড়া, আর কোন দীপ্তিমান কিতাব ছাড়া। আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ কর, তখন তারা বলে বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব; শয়তান যদি তাদেরকে কঠোর শাস্তির দিকে ডাকে, তবুও কি? লুকমান, ৩১/২০-২১
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَرِيدٍ كُتِبَ عَلَيْهِ أَنَّهُ مَنْ تَوَلاهُ فَأَنَّهُ يُضِلُّهُ وَيَهْدِيهِ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে কোন জ্ঞান ছাড়া, আর তারা প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের অনুসরণ করে। তার সম্পর্কে নির্ধারণ হয়েছে, যে তার সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাকে অবশ্যই বিভ্রান্ত করবে আর তাকে প্রজ্জ্বলিত আগুনের শাস্তির দিকে পরিচালিত করবে। আল-হাজ্জ, ২২/৩-৪
فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ كَذِبًا لِيُضِلَّ النَّاسَ بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
সুতরাং তার চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারে, যে কোন জ্ঞান ছাড়াই মানুষকে পথভ্রষ্ট/বিভ্রান্ত করার জন্য আল্লাহর উপর মিথ্যা রচনা করে? নিশ্চয় আল্লাহ যালেম লোকদেরকে হিদায়াত করেন না। আল-আন‘আম, ৬/১৪৪
وَالَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا سَنَسْتَدْرِجُهُمْ مِنْ حَيْثُ لا يَعْلَمُونَ
আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যারোপ করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে ধীরে ধীরে এমনভাবে পাকড়াও করব যে, তারা জানতেও পারবে না। আল-আ’রাফ, ৭/১৮২
>>> বেহুদা কথা দ্বারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে <<<
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব। লুকমান, ৩১/৬
>>> অল্প বিদ্যার কারণে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করে <<<
ذَلِكَ مَبْلَغُهُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَى
এটাই তাদের জ্ঞানের শেষসীমা, নিশ্চয় তোমার রব খুব ভাল করেই জানেন কে তাঁর পথ থেকে গুমরাহ হয়ে গেছে আর তিনি ভাল করেই জানেন কে সঠিক পথে আছে। আন-নাজম, ৫৩/৩০
>>> আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার পরও অনেকে জ্ঞানের অহংকার করে <<<
فَإِذَا مَسَّ الإنْسَانَ ضُرٌّ دَعَانَا ثُمَّ إِذَا خَوَّلْنَاهُ نِعْمَةً مِنَّا قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ بَلْ هِيَ فِتْنَةٌ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لا يَعْلَمُونَ
অতঃপর মানুষকে বিপদাপদ স্পর্শ করলে সে আমাকে ডাকতে থাকে এরপর যখন তিনি তাকে নিজের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ দান করেন, তখন সে বলে, ‘জ্ঞানের কারণেই তা আমাকে দেয়া হয়েছে’, বরং এটা একটা পরীক্ষা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না। আয-যুমার, ৩৯/৪৯
>>> জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষ ধারণা-অনুমানের অনুসরণ করে <<<
وَمِنْهُمْ أُمِّيُّونَ لا يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلا أَمَانِيَّ وَإِنْ هُمْ إِلا يَظُنُّونَ
আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে। আল-বাকারাহ, ২/৭৮
وَمَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلا الظَّنَّ وَإِنَّ الظَّنَّ لا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا
আর যে বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা কেবলমাত্র ধারণা অনুমানের অনুসরণ করে আর সত্যের মোকাবেলায় ধারণা অনুমান কোন কাজে আসবে না। আন্-নাজ্ম, ৫৩/২৮
وَلا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولا
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ের পিছনে ছুটো না, নিশ্চয়ই কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটি সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করা হবে। আল-ইসরা, ১৭/৩৬
>>>জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষ তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে <<<
وَإِنَّ كَثِيرًا لَيُضِلُّونَ بِأَهْوَائِهِمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِينَ
এবং নিশ্চয়ই অনেকে জ্ঞান ছাড়া তাদের প্রবৃত্তি (খেয়াল-খুশি) দ্বারা অন্যকে পথভ্রষ্ট করে, নিশ্চয় তোমার রব সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে ভালভাবেই অবগত আছেন। আল-আন‘আম, ৬/১১৯
>>> প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশির) অনুসরণ করা যাবে না <<<
وَكَذَلِكَ أَنْزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ بَعْدَمَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلا وَاقٍ
আর এভাবেই আমি একে (কুরআনকে) আরবী ভাষায় বিধানরূপে অবতীর্ণ করেছি আর তোমার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পরও যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশির) অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহর মোকাবিলায় তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষাকারী থাকবে না। রা’দ, ১৩/৩৭
قُلْ إِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الْهُدَى وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ بَعْدَ الَّذِي جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلا نَصِيرٍ
তুমি বল, নিশ্চয় আল্লাহর হিদায়াত হল সঠিক হিদায়াত আর তোমার কাছে যে জ্ঞান এসে পৌঁছেছে তারপর যদি তুমি তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাসমূহের (প্রবৃত্তির) অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহর মোকাবিলায় তোমার কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী থাকবে না। আল-বাকারাহ, ২/১২০
وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ إِنَّكَ إِذًا لَمِنَ الظَّالِمِينَ
আর তোমার নিকট জ্ঞান আসার পরও যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির (খেয়াল খুশির) অনুসরণ কর, তাহলে নিশ্চয় তুমি তখন যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আল-বাক্বারাহ, ২/১৪৫
>>>> খেয়াল খুশী অনুসরণ করা যাবে না >>>
أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ وَخَتَمَ عَلَى سَمْعِهِ وَقَلْبِهِ وَجَعَلَ عَلَى بَصَرِهِ غِشَاوَةً فَمَنْ يَهْدِيهِ مِنْ بَعْدِ اللَّهِ أَفَلا تَذَكَّرُونَ
তবে কি তুমি ভেবে দেখেছ, যে তার নিজ প্রবৃত্তিকে (খেয়াল-খুশীকে) মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? আর আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, এবং তার কানে ও অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন আর তার চোখের উপর আবরণ রেখেছেন, তাই আল্লাহ ছাড়া কে তাকে হিদায়াত করবে? তবুও কি তোমরা চিন্তাভাবনা করবে না? আল-জাসিয়া, ৪৫/২৩
>>> জেনে বুঝে আল্লাহর ক্বালাম বিকৃত করে <<<
أَفَتَطْمَعُونَ أَنْ يُؤْمِنُوا لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلامَ اللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِنْ بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
তবে কি তোমরা আশা কর যে তোমাদের (দাওয়াতের) কারণে তারা ঈমান আনবে? আর তাদের মধ্যে একটি দল অবশ্যই আছে যারা আল্লাহর ক্বালাম শুনে অতঃপর তারা তা বুঝে নেয়ার পরও বিকৃত করে আর তারা তা অবগত আছে। আল-বাকারাহ, ২/৭৫
>>> আল্লাহর ক্বালাম গোপন করে <<<
قُلْ أَأَنْتُمْ أَعْلَمُ أَمِ اللَّهُ وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَهُ مِنَ اللَّهِ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
তুমি বল, ‘তোমরা অধিক জ্ঞানী নাকি আল্লাহ’? আর তার চেয়ে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে যে সাক্ষ্য রয়েছে তা গোপন করে? আর তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন। আল-বাকারাহ, ২/১৪০
>>> আল্লাহর আয়াত নিয়ে পরিহাস করে <<<
وَإِذَا عَلِمَ مِنْ آيَاتِنَا شَيْئًا اتَّخَذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
যখন আমার কোন আয়াত সে অবগত হয় তখন সে তা নিয়ে পরিহাস করে, তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। আল-জাসিয়াহ ৪৫/৯
>>>> যারা বিনা ইলমে ফতোয়াবাজী করে তাদের থেকে সাবধানঃ <<<
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
إِنَّ اللَّهَ لَا يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالًا فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوا وَأَضَلُّوا
আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে দ্বীনি ইলমকে টেনে বের করে নিবেন না। কিন্তু ইলমকে উঠিয়ে নিবেন আলেমদেরকে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে। শেষ পর্যন্ত যখন কোন আলেম জীবিত থাকবে না, মানুষেরা তখন মূর্খ লোকদেরকে নিজেদের নেতা বানিয়ে নেবে। তাদেরকে দ্বীনের কোন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বিনা ইলমে ফতোয়াবাজীতে লিপ্ত হবে। ফলে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হবে এবং লোকদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে। সহীহুল বুখারী : ১০০, ৭৩০৭, সহিহ মুসলিম: ৬৬৮৯, ৬৬৯২
>>> আল্লাহর ওয়াহীর জ্ঞানই মানুষকে সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করে <<<
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمْ بُرْهَانٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُبِينًا فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَاعْتَصَمُوا بِهِ فَسَيُدْخِلُهُمْ فِي رَحْمَةٍ مِنْهُ وَفَضْلٍ وَيَهْدِيهِمْ إِلَيْهِ صِرَاطًا مُسْتَقِيمًا
হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে দলিল প্রমাণ এসেছে আর আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নূর (তথা কুরআন) অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করে, ফলে শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত ও অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এবং তাঁর সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করবেন। আন-নিসা, ৪/১৭৪-১৭৫
>>> এই বিষয়ে দু‘আ <<<
رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا রাব্বি যিদ্ নি- ‘ইল্ মা-
হে আমার রব! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও। ত্ব-হা, ২০/১১৪
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
আল্লা-হুম্মা ইন্নী- আস্আলুকা ‘ইল্মান্ না-ফি‘আ- ওয়া রিয্কান্ ত্বোইয়িবা- ওয়া আমালান্ মুতাক্বাব্বালা
হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র আহার, এবং কবুল আমলের প্রার্থনা করছি। (ইবনে মাজাহ: ৯২৫)
رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
রাব্বি হাব্লি- হুক্মাও ওয়াল্ হিক্কনি- বিস্ সো-লিহি---ন
হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিত করুন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/৮৩
****---
****---
>>> ওয়াহীর জ্ঞান সঠিক পথে পরিচালিত করে <<<
وَلَقَدْ جِئْنَاهُمْ بِكِتَابٍ فَصَّلْنَاهُ عَلَى عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আর অবশ্যই আমি তাদের নিকট এমন এক কিতাব এনে দিয়েছি যা পূর্ণ জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদভাবে বিবৃত, তা বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথ নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। আল-আ‘রাফ, ৭/৫২
وَيَرَى الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ الَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ هُوَ الْحَقَّ وَيَهْدِي إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জানে যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা সত্য এবং তা মহাপরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর পথের দিকে পথ নির্দেশ করে। সাবা, ৩৪/৬
وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
যাতে, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তারা জানতে পারে, এটা আপনার রবের পক্ষ থেকে (প্রেরিত) সত্য, অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাসী হয় এবং তাদের অন্তরসমূহ যেন এর প্রতি অনুগত হয় আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদেরকে সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আল-হাজ্জ, ২২/৫৪
بَلْ هُوَ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ فِي صُدُورِ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ وَمَا يَجْحَدُ بِآيَاتِنَا إِلا الظَّالِمُونَ
বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে এটি (কুরআন) সুস্পষ্ট নিদর্শন। আর যালিমরা ছাড়া অন্য কেউ আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না। আন-কাবুত, ২৯/৪৯
قُلْ آمِنُوا بِهِ أَوْ لا تُؤْمِنُوا إِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلأذْقَانِ سُجَّدًا
তুমি বল, ‘তোমরা এতে (কুরআনে) বিশ্বাস কর কিংবা বিশ্বাস না কর, নিশ্চয় এর পূর্বে যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট যখন এটা পাঠ করা হয় তখন তারা সেজদাবনত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। আল-ইস্রা, ১৭/১০৭
كِتَابٌ فُصِّلَتْ آيَاتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
এটা এক কিতাব আরবী কোরআনরূপে তার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, জ্ঞানী লোকদের জন্য। ফুসসিলাত, ৪১/৩
`````
"
* আমাদেরকে একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করতে হবে।
*
মানব জীবন আজ অজস্র সমস্যায় নিপতিত, অসংখ্য মত আর ইজম অকটোপাসের মত আঁকড়ে ধরেছে। এসব বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে আল্লাহর ওয়াহীর বিধানের দিকে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ বলেন- إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ يَهْدِي لِلَّتِي هِيَ أَقْوَمُ নিশ্চয়ই এ কুরআন সেই দিকে পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল। আল-ইস্রা, ১৭/৯
>>> ওয়াহী শব্দের অর্থ <<<
ওয়াহী শব্দটি (و ح ي) ধাতু থেকে এসেছে। ওয়াহী শব্দের form I verb হল وَحَى (ওয়াহা) যার অর্থ ওয়াহী প্রেরণ করা, প্রত্যাদেশ পাঠানো, বার্তা পাঠানো, অবহিত করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া। এর noun وَحْى (ওয়াহই) যার অর্থ ওয়াহী, প্রত্যাদেশ, আকাশবাণী, বার্তা, অনুপ্রেরণা, আদেশ, শিক্ষা। এর form IV verb হল أَوْحَى (আওহা) যার অর্থ প্রত্যাদেশ পাঠানো, ওয়াহী প্রেরণ করা, ওয়াহী পাঠানো, অবহিত করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া।
>>> আল-কুরআনে সব কিছুরই বর্ণনা আছে <<<
مَا فَرَّطْنَا فِي الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ
আমি এ কিতাবটিতে (কুরআনে) কোন কিছুই লিপিবদ্ধ করতে ছাড়িনি। আল-আন‘আম, ৬/৩৮
وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ
আর আমি আপনার প্রতি এ কিতাব অবতীর্ণ করেছি যাতে প্রত্যেকটি জিনিসের বর্ণনা আছে। আন্-নাহ্ল, ১৬/৮৯
উক্ত আয়াত দুটি প্রমাণ করে যে, শরীয়াতী এমন কোন বিধান নেই যার বর্ণনা কুরআনে নেই। বরং সবকিছুর বর্ণনা কুরআনে আছে।
>>> ওয়াহী কত প্রকার? <<<
প্রথমত ওয়াহী দুই প্রকার, (১) আল্লাহর ওয়াহী ও (২) শয়তানের ওয়াহী।
(১) কুরআন আল্লাহর ওয়াহী। আল্লাহ বলেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلا وَحْيٌ يُوحَى
আর সে (রাসূল) মনগড়া কথা বলে না। এটা তো (কুরআন) কেবল ওয়াহী, যা প্রত্যাদেশ করা হয়। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৩-৪
وَمَا تَنَزَّلَتْ بِهِ الشَّيَاطِينُ وَمَا يَنْبَغِي لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ
আর তা (কুরআন) নিয়ে শয়তানরা অবতরণ করেনি। তারা এ কাজের যোগ্য নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখে না। আশ্-শু‘আরা, ২৬/২১০-২১১
نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ أَحْسَنَ الْقَصَصِ بِمَا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ هَذَا الْقُرْآنَ وَإِنْ كُنْتَ مِنْ قَبْلِهِ لَمِنَ الْغَافِلِينَ
আমি তোমার কাছে সর্বোত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি, এ কুরআন আমার (অর্থাৎ আল্লাহর) ওয়াহী হিসেবে তোমার কাছে প্রেরণ করার মাধ্যমে, যদিও তুমি এর পূর্বে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। ইউসুফ, ১২/৩
وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِتُنْذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنْذِرَ يَوْمَ الْجَمْعِ لا رَيْبَ فِيهِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ
আর এভাবেই আমি তোমার কাছে আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করেছি যাতে তুমি (উম্মুল কুরা) মক্কা ও তার আশপাশের জনগণকে সতর্ক করতে পার, আর সতর্ক কর একত্রিত হওয়ার দিন সম্পর্কে যাতে কোন সন্দেহ নেই, সেদিন একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল থাকবে জ্বলন্ত আগুনে। আশ্-শূরা, ৪২/৭
كَذَلِكَ يُوحِي إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ اللَّهُ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
এমনিভাবে মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তোমার কাছে এবং তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে ওয়াহী প্রেরণ করেন । আশ্-শূরা, ৪২/৩
>>> কুরআন পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী <<<
وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ هُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ إِنَّ اللَّهَ بِعِبَادِهِ لَخَبِيرٌ بَصِيرٌ
আর (হে নবী) যে কিতাবটি আমি তোমার কাছে ওয়াহী করেছি তা সত্য, এটা তার পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক অবহিত, সর্বদ্রষ্টা। ফাত্বির, ৩৫/৩১
>>> আল্লাহর ওয়াহী কত প্রকার? <<<
আল্লাহর ওয়াহী দুই প্রকার। ১. ওয়াহীয়ে মাতলু। ও ২. ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু। আল্লাহ বলেন-
إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَهُ وَقُرْآنَهُ فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ
নিশ্চয় এর সংরক্ষণ ও পাঠ করানো আমারই দায়িত্ব। তাই আমি যখন তা পাঠ করি তুমি সেই পাঠের অনুসরণ কর। অতঃপর এর বিশদ ব্যাখ্যা করাও আমারই দায়িত্ব। আল-ক্বিয়া-মাহ, ৭৫/১৭-১৯
উক্ত আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, ওয়াহীর একটি দিক এমন আছে, যা আল্লাহ তাঁর ফিরিশতা জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) এর মাধ্যমে পড়ে শোনান। এরই নাম কুরআন। এই ওয়াহী আবৃত্তি করে শোনান হয় বলে ইসলামী বিদ্বানদের পরিভাষায় এ ওয়াহীর নাম ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আবৃত্তি করা আকাশবাণী।
(১) ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আল-কুরআনের আয়াতগুলো দু’প্রকার
هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلا اللَّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِنْ عِنْدِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلا أُولُو الألْبَابِ
তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তার মধ্যে মুহকাম (অর্থাৎ সুস্পষ্ট) আয়াতসমূহ রয়েছে; সেগুলো কিতাবের মূল, আর অন্যগুলো মুতাশাবিহ (অস্পষ্ট); কিন্তু যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে; অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না; আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে এসেছে আর বিবেকসম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে। আলে‘ইমরান, ৩/৭
মুতাশাবিহ্ আয়াত এর উদাহরণ। কুরআনের অনেক সূরার প্রথমে: الم, الر, ن, ق, يس, حمعص, ص, আছে। এগুলো হল মুতাশাবিহ্ আয়াত আর আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না।
>>> ওয়াহীয়ে মাতলু (তথা কুরআন) তিলাওয়াত করা হয় <<<
وَاتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنْ كِتَابِ رَبِّكَ لا مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَلَنْ تَجِدَ مِنْ دُونِهِ مُلْتَحَدًا
আর তুমি তিলাওয়াত কর যা তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার কাছে যে ওয়াহী করা হয়েছে, তাঁর বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই আর তাঁকে (আল্লাহকে) ছাড়া তুমি কক্ষনো অন্য কাউকে আশ্রয়স্থল হিসেবে পাবে না।আল-কাহ্ফ, ১৮/২৭
اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلاةَ إِنَّ الصَّلاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
তুমি তিলাওয়াত কর কিতাব থেকে যা তোমার কাছে ওয়াহী করা হয়েছে, সালাত কায়েম কর, নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ; আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর। আল-আনকাবূত, ২৯/৪৫
كَذَلِكَ أَرْسَلْنَاكَ فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهَا أُمَمٌ لِتَتْلُوَ عَلَيْهِمُ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَنِ قُلْ هُوَ رَبِّي لا إِلَهَ إِلا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ مَتَابِ
এমনিভাবে আমি এমন এক জাতির নিকট তোমাকে পাঠিয়েছি, যার পূর্বে অনেক জাতি গত হয়েছে, যেন আমি তোমার প্রতি যা ওয়াহী করেছি, তা তাদের নিকট তিলাওয়াত কর অথচ তারা রহমানকে অস্বীকার করে; তুমি বল, ‘তিনি আমার রব, তিনি ছাড়া আর কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তাঁরই উপর আমি তাওয়াক্কুল করেছি এবং তাঁরই দিকে আমার প্রত্যাবর্তন’। আর-রাদ, ১৩/৩০
>>> (২) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু <<<
ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ
অতঃপর এর বিশদ ব্যাখ্যা করাও আমারই দায়িত্ব। আল-ক্বিয়া-মাহ, ৭৫/১৯
উক্ত আয়াতটিতে আল্লাহ বলেছেন যে, এ ওয়াহীর বিশদ ব্যাখ্যা করা আমারই দায়িত্ব। ওয়াহীয়ে মাতলুর বিশ্লেষণ যে ওয়াহী দ্বারা করা হয় তার নাম ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু। ইসলামী বিদ্বানদের পরিভাষায় ওয়াহীয়ে গাইর মাতলুকে হাদীস বলা হয়।
কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের থেকে কোন কথা বলতেন না। আল্লাহ বলেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلا وَحْيٌ يُوحَى
আর সে (রাসূল) মনগড়া কথা বলে না। এটা তো (কুরআন) কেবল ওয়াহী, যা প্রত্যাদেশ করা হয়। আন্-নাজ্ম, ৫৩/৩-৪
>>> ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু কত প্রকার? <<<
ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু দু’প্রকার। (১) স্বয়ং আল্লাহর কিছু কথা আল-কুরআনে পাওয়া যায় না, বরং তা হাদীসে পাওয়া যায়। এরূপ ওয়াহীকে ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু এবং এ ওয়াহীর নাম হল হাদীসে কুদসী। এইরূপ একটি ওয়াহীর উদাহরণ হলঃ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
قَالَ اللَّهُ إِذَا أَحَبَّ عَبْدِي لِقَائِي أَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ، وَإِذَا كَرِهَ لِقَائِي كَرِهْتُ لِقَاءَهُ
আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার সাক্ষাৎ পছন্দ করলে আমিও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করি। আর সে আমার সাক্ষাতকে অপছন্দ করলে, আমিও তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করি। (বুখারী: ৭৫০৪) হাদীসে কুদসী আকারে ওয়াহীয়ে গাইর মাতলুর সংখ্যা আটশো তেষট্টিরও বেশী। [উলুমুল হাদীস: ৪১ পৃষ্ঠা।]
(২) ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আল-কুরআন দ্বারা যেসব বিধান আল্লাহ দিয়েছেন তার বিস্তারিত বিবরণ কুরআনে নেই। যেমন, কুরআনে বলা হয়েছে:
أَقِيمُوا الصَّلاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত প্রদান কর। এই বাক্য কুরআনের ৮ জায়গায় রয়েছে। ২/৪৩, ২/৮৩, ২/১১০, ৪/৭৭, ২২/৭৮, ২৪/৫৬, ৫৮/১৩, ৭৩/২০
কুরআনের ২৬টি আয়াতে সালাত ও যাকাত এর কথা একই সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঐ সালাত কখন পড়তে হবে এবং কত রাকআত পড়তে হবে আর কিভাবে পড়তে হবে তার বর্ণনা কুরআন নেই। উক্ত ওয়াহীয়ে মাতলু أَقِيمُوا الصَّلاةَ (আকীমুস সালাত) এর বিবরণ ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেমন- ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু) এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, (আম্মানী জিবরায়ীলু ইনদাল বাইতি মার্রাতাইনি) অর্থাৎ জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) বাইতুল্লাহর কাছে আমাকে দু‘বার নামাযের ইমামতী করেন। (আবূ দাউদ, হা/৩৯৩, আত-তিরমিযী হা/১৪৯, মুসনাদে আহমদ, ১/১৯৩, মিশকাত)
ঐ ইমামতীর দ্বারা জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে সালাতের নিয়ম-কানুন শিখিয়ে দিয়েছেন। এটা ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু তথা হাদীসে রাসূল।
উক্ত বর্ণনাগুলো দ্বারা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর তরফ থেকে যে ওয়াহী অবতীর্ণ হয় তা দু’প্রকারঃ
(১) ওয়াহীয়ে মাতলু তথা আল-কুরআন (২) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলূ তথা রাসূলের হাদীস। আবার (১) ওয়াহীয়ে মাতলু দু’প্রকার (ক) মুহকাম আয়াত (খ) মুতাশাবিহ আয়াত। এবং (২) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু দু’প্রকার (ক) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু হাদীসে কুদসী ও (খ) ওয়াহীয়ে গাইর মাতলু হাদীসে রাসূল।
>>> শয়তানের ওয়াহী <<<
আল্লাহর ওয়াহী ছাড়া আরও এক প্রকার ওয়াহী আছে যেগুলো হল শয়তানের ওয়াহী। আল্লাহ বলেন-
وَإِنَّ الشَّيَاطِينَ لَيُوحُونَ إِلَى أَوْلِيَائِهِمْ لِيُجَادِلُوكُمْ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ
আর নিশ্চয় শয়তানেরা তাদের বন্ধুদেরকে ওয়াহী করে থাকে যাতে তারা তোমাদের সাথে বিবাদ করে; আর যদি তোমরা তাদের (আকীদা-বিশ্বাসে ও কাজ-কর্মে) আনুগত্য কর তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে। আল-আন‘আম, ৬/১২১
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الإنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ
আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শয়তানদেরকে শত্রু বানিয়েছি মানুষের ও জিনের মধ্য থেকে, তারা একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথা দ্বারা ওয়াহী করে থাকে যেন একে অপরকে ধোকা দিতে পারে, আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন তাহলে তারা তা করতে পারত না সুতরাং তাদেরকে এবং তারা যা রচনা করে, তা বর্জন কর। আল-আন‘আম, ৬/১১২
>>> রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কেবল আল্লাহর ওয়াহী অনুসরণ করতেন <<<
قُلْ إِنَّمَا أَتَّبِعُ مَا يُوحَى إِلَيَّ مِنْ رَبِّي هَذَا بَصَائِرُ مِنْ رَبِّكُمْ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
(হে নবী) তুমি বল, ‘আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার রবের পক্ষ থেকে আমার নিকট ওয়াহী করা হয়; এটি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে উজ্জ্বল আলো আর হিদায়াত ও রহমত সে লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে’। আল-আ‘রাফ, ৭/২০৩
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
আর (হে নবী) তোমার প্রতি তোমার রবের কাছ থেকে যা ওয়াহী করা হয় তুমি তার অনুসরণ কর, নিশ্চয় তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ পূর্ণরূপে অবহিত। আস-সাজদাহ, ৩৩/২
فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِي أُوحِيَ إِلَيْكَ إِنَّكَ عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
সুতরাং তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়েছে তা তুমি সুদৃঢ়ভাবে ধারণ কর; নিশ্চয় তুমি সরল পথে আছো। আয-যুখ্রুফ, ৪৩/৪৩
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর (হে নবী) তোমার প্রতি যে ওয়াহী করা হয়েছে, তুমি তার অনুসরণ কর এবং ধৈর্যধারণ কর, যতক্ষণ না আল্লাহ ফয়সালা করেন আর তিনি সর্বোত্তম ফয়সালাকারী। ইউনুস, ১০/১০৯
بَدِيعُ اتَّبِعْ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
(হে নবী) তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে তুমি তার অনুসরণ কর, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই, আর মুশরিকদের থেকে তুমি মুখ ফিরিয়ে নাও। আল-আন‘আম, ৬/১০৬
قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِنَ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلا نَذِيرٌ مُبِينٌ
(হে নবী) তুমি বল, ‘আমি রাসূলদের মধ্যে নতুন নই আর আমি এও জানি না আমার ও তোমাদের সাথে কী ব্যবহার করা হবে; আমি কেবল তারই অনুসরণ করি যা আমার প্রতি ওয়াহী করা হয় আর আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’। আল-আহকাফ, ৪৬/৯
قُلْ لا أَقُولُ لَكُمْ عِنْدِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ إِنْ أَتَّبِعُ إِلا مَا يُوحَى إِلَيَّ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأعْمَى وَالْبَصِيرُ أَفَلا تَتَفَكَّرُونَ
তুমি বল, আমি তোমাদেরকে এ কথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন ভান্ডার রয়েছে আর আমি গায়েব জানি না এবং আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা; আমি কেবল তাই অনুসরণ করি যা আমার কাছে ওয়াহী রূপে পাঠানো হয়, তুমি (তাদেরকে) জিজ্ঞেস কর অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? সুতরাং তোমরা কেন চিন্তা ভাবনা করবে না? আল-আন‘আম, ৬/৫০
>>> আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করা কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের উপর ফরয <<<
قُلِ اللَّهُ شَهِيدٌ بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ لأنْذِرَكُمْ بِهِ وَمَنْ بَلَغَ
(হে রাসূল) তুমি বলে দাও, আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী আর আমার কাছে এই কুরআন ওয়াহী করে পাঠানো হয়েছে, যেন আমি তোমাদেরকে এবং যাদের নিকট এটি পৌঁছবে তাদের সকলকে এর দ্বারা সতর্ক করি। আল-আন‘আম, ৬/১৯
>>> রাসূল একজন সতর্ককারী মাত্র <<<
إِنْ يُوحَى إِلَيَّ إِلا أَنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ
আমার কাছে তো এই ওয়াহী এসেছে যে, আমি একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র। সোয়াদ, ৩৮/৭০
قُلْ إِنَّمَا أُنْذِرُكُمْ بِالْوَحْيِ وَلا يَسْمَعُ الصُّمُّ الدُّعَاءَ إِذَا مَا يُنْذَرُونَ
তুমি বল, ‘আমি কেবলমাত্র ওয়াহী দ্বারাই তোমাদেরকে সতর্ক করি’, কিন্তু যারা বধির তাদেরকে যখন সতর্ক করা হয়, তখন তারা সে আহবান শোনে না। আল-আম্বিয়া, ২১/৪৫
>>> মানুষের মধ্য থেকেই একজন রাসূলের নিকট আল্লাহ ওয়াহী করেছেন <<<
أَكَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا أَنْ أَوْحَيْنَا إِلَى رَجُلٍ مِنْهُمْ أَنْ أَنْذِرِ النَّاسَ وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا أَنَّ لَهُمْ قَدَمَ صِدْقٍ عِنْدَ رَبِّهِمْ قَالَ الْكَافِرُونَ إِنَّ هَذَا لَسَاحِرٌ مُبِينٌ
মানুষের কাছে কি এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, আমি তাদের মধ্য হতে একজনের নিকট ওয়াহী প্রেরণ করেছি যে, তুমি মানুষকে সতর্ক কর এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর যে, তাদের রবের নিকট তাদের জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদা; কাফিররা বলে, ‘এ ব্যক্তি তো স্পষ্ট যাদুকর’। ইউনুস, ১০/২
>>> কেবলমাত্র পুরুষ মানুষদেরকেই আল্লাহ রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন <<<
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلا رِجَالا نُوحِي إِلَيْهِمْ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى
আর তোমার পূর্বে জনপদবাসীদের মধ্য হতে যাদের কাছে আমি ওয়াহী প্রেরণ করতাম তারা কেবল পুরুষ মানুষ ব্যতীত ছিল না। ইউসুফ, ১২/১০৯
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلا رِجَالا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
আর আমি তোমার পূর্বে পুরুষ মানুষ ছাড়া কাউকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করিনি যাদের প্রতি আমি ওয়াহী পাঠিয়েছি; সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো। আন্-নাহ্ল, ১৬/৪৩
وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلا رِجَالا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
আর আমি তোমার পূর্বে পুরুষ মানুষ ছাড়া কাউকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করিনি যাদের প্রতি আমি ওয়াহী পাঠিয়েছি; সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো। আল-আম্বিয়া, ২১/৭
>>> যাদের প্রতি আল্লাহ ওয়াহী করেছেন তাদের কয়েকজন <<<
إِنَّا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ كَمَا أَوْحَيْنَا إِلَى نُوحٍ وَالنَّبِيِّينَ مِنْ بَعْدِهِ وَأَوْحَيْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَعِيسَى وَأَيُّوبَ وَيُونُسَ وَهَارُونَ وَسُلَيْمَانَ وَآتَيْنَا دَاوُدَ زَبُورًا
(হে নবী) নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ওয়াহী পাঠিয়েছি, যেমন ওয়াহী পাঠিয়েছি নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট এবং আমি ওয়াহী পাঠিয়েছিলাম ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূন ও সুলায়মানের নিকট এবং দাঊদকে যাবূর প্রদান করেছি। আন-নিসা, ৪/১৬৩
>>> আল্লাহ রাসূল প্রেরণ করেছেন যাতে মানুষ একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করে <<<
এ বিষয় সূরার আয়াতসমূহ দেখুনঃ আল-আম্বিয়া, ২১/২৫, ২১/১০৮, আল-কাহাফ, ১৮/১১০, ফুসসিলাত, ৪১/৬, আন্-নাহ্ল, ১৬/১২৩
>>> সকল নবীকে শির্ক থেকে আল্লাহ সাবধান করছেন <<<
এ বিষয় সূরার আয়াত দেখুনঃ আয-যুমার, ৩৯/৬৫
قُلْ إِنْ ضَلَلْتُ فَإِنَّمَا أَضِلُّ عَلَى نَفْسِي وَإِنِ اهْتَدَيْتُ فَبِمَا يُوحِي إِلَيَّ رَبِّي إِنَّهُ سَمِيعٌ قَرِيبٌ
তুমি বল, ‘যদি আমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাই তবে আমার নিজের জন্যই পথভ্রষ্ট হব, আর যদি আমি হিদায়াত প্রাপ্ত হই তবে তা এ কারণে যে, আমার রব আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরণ করেন, নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা ও অতি নিকটবর্তী’। সাবা, ৩৪/৫০
আমাদের প্রত্যেকের জন্য উচিত একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর অনুসরণ করা আর এটিই সঠিক পথ।
✔
✔
✔
* আমাদেরকে আল্লাহর ওয়াহী দ্বারা আইন ও বিচার করতে হবে;
*
`
আল্লাহর ওয়াহীর বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত বিধান দিয়ে মানুষ বিচার ফায়সালা করে। নিজেরা আইন রচনা করে, সেই আইনের আলোকে মানুষের মাঝে বিচার মিমাংসা করে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের রচিত আইন তারাই মানে না। তাই নিজেদের প্রয়োজনে আবার সেই আইন নিজেরাই পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে। সাধারণ মানুষকে সেই আইনের কাছেই বিচার প্রার্থী হতে হয়। এটি হল মানুষের দুনিয়ার জীবনে। আবার ধর্মীয় জীবনেও মানুষ অন্যের বিধান কামনা করে। আল্লাহ ওয়াহীর বিধান বাদ দিয়ে নিজেদের রচিত মাযহাব, তরিকা, ইজমা, কিয়াস ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষার ও খেয়াল-খুশী অনুসরণ করে। আল্লাহর রাসূলকে বিচারক বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তদাতা হিসেবে গ্রহণ না করে, নিজেদের পছন্দীয় ইমাম, সর্দার, নেতা ও পীরকে চূড়ান্ত বিচারক হিসেবে মান্য করে, তাদের রচিত রায় বা মাস‘আলা তারা গ্রহণ করে। আল্লাহ বলেন-
يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلالا بَعِيدًا
তারা যে তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায় অথচ তাদেরকে নির্দেশ দেয়াই হয়েছে তাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য কিন্তু শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট করে বহুদূরে নিয়ে যেতে চায়। আন-নিসা, ৪/৬০
إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلا تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا
(হে নবী) নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি যেন, যা আল্লাহ তোমাকে জানিয়েছেন, তুমি সে অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা কর আর তুমি খিয়ানতকারীদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না। আন-নিসা, ৪/১০৫
وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ وَلا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ عَمَّا جَاءَكَ مِنَ الْحَقِّ
আর (হে নবী) আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা পূর্ববতী কিতাব সমূহের সত্যায়নকারী ও তার উপর সংরক্ষণকারীরূপে; সুতরাং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তুমি তার মাধ্যমে তাদের মাঝে বিচার ফায়সালা কর এবং তোমার কাছে যে মহাসত্য (কুরআন) এসেছে তা বাদ দিয়ে তাদের খেয়াল খুশির (প্রবৃত্তির) অনুসরণ কর না। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৮
وَأَنِ احْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ وَلا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَاحْذَرْهُمْ أَنْ يَفْتِنُوكَ عَنْ بَعْضِ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ إِلَيْكَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَاعْلَمْ أَنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ أَنْ يُصِيبَهُمْ بِبَعْضِ ذُنُوبِهِمْ وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ لَفَاسِقُونَ
আর আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা তাদের মাঝে বিচার ফায়সালা কর আর তাদের খেয়াল খুশির (প্রবৃত্তির) অনুসরণ কর না এবং তাদের থেকে সতর্ক থাকবে যেন, আল্লাহ তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তার কিছু অংশ থেকে যেন তোমাকে বিচ্যুত করতে না পারে, তারপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ, তাদের পাপসমূহের কিছু পাপের কারণে আল্লাহ তাদেরকে আযাব দিতে চান আর অবশ্যই মানুষের মধ্যে অনেকেই নাফরমান। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৯
أَفَغَيْرَ اللَّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا وَهُوَ الَّذِي أَنْزَلَ إِلَيْكُمُ الْكِتَابَ مُفَصَّلا وَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَعْلَمُونَ أَنَّهُ مُنَزَّلٌ مِنْ رَبِّكَ بِالْحَقِّ فَلا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
তুমি বল, তবে কি আমি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিচারক হিসেবে তালাশ করব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেন আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা জানে যে, এটি তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্যসহ অবতীর্ণ করা হয়েছে সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। আল-আন‘আম, ৬/১১৪
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর (হে নবী) তোমার নিকট যে ওয়াহী করা হয়েছে, তুমি তার অনুসরণ কর আর ধৈর্যধারণ কর, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ ফায়সালা করেন, আর তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। ইউনুস, ১০/১০৯
>>> চূড়ান্ত রায় বা সিদ্ধান্তদাতা আল্লাহর রাসূল <<<
فَلا وَرَبِّكَ لا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
তোমার রবের কসম! তারা মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে (রাসূলকে) বিচারক হিসেবে মেনে নেয়; অতঃপর তুমি যে রায়/ফায়সালা দেবে সে ব্যাপারে তাদের নিজেদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়। আন-নিসা, ৪/৬৫
>>> মুমিনদের বক্তব্য, “আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম” <<<
إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
মুমিনদেরকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করার জন্য তখন তারা বলে, “আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম” আর তারাই সফলকাম। আন-নূর, ২৪/৫১
>>>> একটি দল রাসুলের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে অথচ নিজেদের পক্ষে হলে মনে নেয় <<<
وَإِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِنْهُمْ مُعْرِضُونَ وَإِنْ يَكُنْ لَهُمُ الْحَقُّ يَأْتُوا إِلَيْهِ مُذْعِنِينَ
আর যখন তাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় যাতে করে তাদের মাঝে পারস্পরিক বিচার মীমাংসা করা যায় তখন তাদের মধ্যে একটি দল মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর সত্য যদি তাদের পক্ষে থাকে তাহলে পূর্ণ বিনয়ী হয়ে তারা তাঁর দিকে ছুটে আসে। আন-নূর, ২৪/৪৮-৪৯
>>> রাসুলের রায় না মেনে যারা অন্যের রায় মানতে চায় তারা তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায় <<<
أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
তবে কি তারা জাহিলিয়্যাতের বিধান চায়? আর দৃঢ় বিশ্বাসী লোকদের জন্য আইন-বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক শ্রেষ্ঠ? আল-মায়িদাহ, ৫/৫০
فَلا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلا وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
কাজেই তোমরা মানুষকে ভয় কর না আর আমাকেই ভয় কর, আমার আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় কর না আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৪
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই যালিম। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৫
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না, তারাই ফাসেক। আল-মায়িদাহ, ৫/৪৭
>>> বিচার করতে হবে ইনসাফের সাথে <<<
وَإِنْ حَكَمْتَ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِالْقِسْطِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
আর যদি তুমি বিচার ফায়সালা কর, তবে তাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করবে ইনসাফের সাথে; নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন। আল-মায়িদাহ, ৫/৪২
وَإِذَا حَكَمْتُمْ بَيْنَ النَّاسِ أَنْ تَحْكُمُوا بِالْعَدْلِ إِنَّ اللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُمْ بِهِ إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا
আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা করবে তখন ইনসাফের সাথে বিচার ফায়সালা করবে; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম উপদেশ দিচ্ছেন; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। আন-নিসা, ৪/৫৮
>>> কিয়ামতের দিনে আল্লাহ সকল বিষয় ফায়সালা করে দিবেন <<<
إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ بِحُكْمِهِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْعَلِيمُ
নিশ্চয় তোমার রব তাঁর বিধান অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন আর তিনি পরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী। আন্-নাম্ল, ২৭/৭৮
وَإِنَّ رَبَّكَ لَيَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আর নিশ্চয় তোমার রব কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে। আন্-নাহ্ল, ১৬/১২৪
فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
সুতরাং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে। আল-বাকারাহ, ২/১১৩
اللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كُنْتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
আল্লাহ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন সে বিষয়ে তোমরা মতবিরোধ করছ। আল-হাজ্জ, ২২/৬৯
فَاللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلا
সুতরাং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার করে দিবেন আর আল্লাহ কখনো মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদের জন্য (জয়লাভের) পথ করে দিবেন না। আন-নিসা, ৪/১৪১
إِنَّ اللَّهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِي مَا هُمْ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي مَنْ هُوَ كَاذِبٌ كَفَّارٌ
নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিবেন যে ব্যাপারে তারা মতবিরোধ করছে, যে মিথ্যাবাদী ও কাফির, অবশ্যই আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন না। আয-যুমার, ৩৯/৩
قُلِ اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالأرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِي مَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
তুমি বল, হে আল্লাহ! আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, অদৃশ্যের ও দৃশ্যের জ্ঞানী, আপনিই আপনার বান্দাদের মাঝে ফায়সালা করে দিবেন, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে। আয-যুমার, ৩৯/৪৬
الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَأُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
সেই (বিচারের) দিন কর্তৃত্ব ও আধিপত্য হবে আল্লাহরই, তিনিই তাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করে দিবেন; অতএব যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা থাকবে নে‘আমতপূর্ণ জান্নাতে। আর যারা অবিশ্বাস করেছে ও আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। আল-হাজ্জ, ২২/৫৬-৫৭
>>> আল্লাহ বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক <<<
أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ
আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন? আত-তীন. ৯৫/৮
وَأَنْتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِينَ
আর আপনি বিচারকদের সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। হুদ, ১১/৪৫
وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। আল-আ‘রাফ, ৭/৮৭, ১০/১০৯, ১২/৮০
إِنَّكَ أَنْتَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ
নিশ্চয় আপনি মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আল-বাকারাহ, ২/৩২
وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ৪/২৬, ৮/৭১, ৯/১৫, ৯/৬০, ৯/৯৭, ৯/১০৬, ৯/১১০, ২২/৫২, ২৪/১৮, ২৪/৫৮, ২৪/৫৯, ৪৯/৮, ৬০/১০,
إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ২/১২৯, ৫/১১৮, ৪০/৮, ৬০/৫
هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ৩/৬, ৩/১৮, ৩/৬২, ১৪/৪, ১৬/৬০, ২৯/২৬, ২৯/৪২, ৩০/২৭, ৩১/৯, ৩৫/২, ৪৫/৩৭, ৫৭/১, ৫৯/১, ৫৯/২৪, ৬১/১, ৬২/৩
إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْقَصَصُ الْحَقُّ وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلا اللَّهُ وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
নিশ্চয় এটি সত্য বিবরণ, আর আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং নিশ্চয় আল্লাহ, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আলে'ইমরান, ৩/৬২
>>> এই বিষয়ে দু‘আ <<<
رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ
রাব্বি হাব্লি- হুক্মাও ওয়াল্ হিক্কনি- বিস্ সো-লিহি---ন
হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিত করুন। আশ্-শু‘আরা, ২৬/৮৩
পরিশেষে বলব, সকল বিধান বাতিল করে একমাত্র আল্লাহর ওয়াহীর বিধানের কাছে ফিরে আসলেই মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব। আর কুরআনকে সংবিধান করলেই দুনিয়া ও আখেরাতে আমাদের মুক্তি সম্ভব। আল্লাহ বলেন-
إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ يَهْدِي لِلَّتِي هِيَ أَقْوَمُ
নিশ্চয়ই এ কুরআন সেই দিকে পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল। আল-ইস্রা, ১৭/৯
✔
✔
✔
<<<<আল্লাহর ওয়াহী সত্য আর তা গ্রহণ করতে হবে>>>>
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَنْ ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَا أَنَا عَلَيْكُمْ بِوَكِيلٍ
তুমি বল, ‘হে মানবসকল’, অবশ্যই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্য এসেছে, তাই যে সঠিক পথ গ্রহণ করবে, আসলে সে নিজের জন্যই সঠিক পথ গ্রহণ করবে আর যে পথভ্রষ্ট থাকবে, সে নিজের ক্ষতির জন্য পথভ্রষ্ট থাকবে আর আমাকে (রাসূলকে) তোমাদের উপর দায়িত্বশীল করা হয়নি। ইউনুস, ১০/১০৮
مَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَنْ ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَلا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
যে সঠিক পথ অবলম্বন করবে সে কেবল তার নিজের জন্যই সঠিক পথ অবলম্বন করবে এবং যে গুমরাহ হবে তবে তার গুমরাহীর পরিণাম তার নিজের উপরেই পড়বে আর কোন বোঝা বহনকারী অন্যের (পাপের) বোঝা বহন করবে না। আল-ইস্রা, ১৭/১৫
وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنْ شَاءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيَكْفُرْ
আর তুমি বল, ‘সত্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে অতএব যার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক এবং যার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করুক; আল-কাহাফ, ১৮/২৯
بَلْ أَتَيْنَاهُمْ بِالْحَقِّ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ
বরং আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি; আর অবশ্যই তারা মিথ্যাবাদী। আল-মু‘মিনূন, ২৩/৯০
اللَّهُ الَّذِي أَنْزَلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَالْمِيزَانَ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ قَرِيبٌ
আল্লাহ, যিনি সত্যসহ কিতাব এবং ইনসাফের মানদন্ড নাযিল করেছেন আর কিসে তোমাকে জানাবে সম্ভবত কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী? আশ্-শূরা, ৪২/১৭
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি এটাকে সকল দীনের উপর বিজয়ী করতে পারেন আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। আল-ফাত্হ, ৪৮/২৮
أَفَمَنْ يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَى إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الألْبَابِ
যে ব্যক্তি জানে তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা সত্য তবে সে কি তার মত যে অন্ধ? প্রকৃতপক্ষে বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিরাই উপদেশ গ্রহণ করবে। আর-রাদ, ১৩/১৯
وَلَمَّا جَاءَهُمُ الْحَقُّ قَالُوا هَذَا سِحْرٌ وَإِنَّا بِهِ كَافِرُونَ
আর যখন তাদের কাছে প্রকৃত সত্য আসল তখন তারা বলল, ‘এতো যাদু এবং নিশ্চয় আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।’ আয্-যুখরুফ, ৪৩/১৯
بَلْ كَذَّبُوا بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُمْ فَهُمْ فِي أَمْرٍ مَرِيجٍ
বস্তুত যখনই তাদের কাছে সত্য এসেছে তখনই তারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই তারা সংশয়ের মধ্যে পড়ে আছে। ক্কাফ, ৫০/৫
وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ ائْذَنْ لِي وَلا تَفْتِنِّي أَلا فِي الْفِتْنَةِ سَقَطُوا وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِيطَةٌ بِالْكَافِرِينَ
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমাকে অব্যাহতি দিন এবং আমাকে ফিতনায় ফেলবেন না’; শুনে রাখ, তারা ফিতনায় পড়েই আছে আর অবশ্যই জাহান্নাম অবিশ্বাসীদেরকে ঘিরে রেখেছে। আত্-তাওবাহ, ৯/৪৯
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন