তৃতীয় অধ্যায়
সালাতুত তারাবীহ
রমযানে ঈমান ও সাওয়াবের আশায় যে রাত জেগে
ইবাদত করে তার ফযীলত:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা
করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ، ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »
“যে ব্যক্তি রমযানের রাতে সওয়াবের আশায় রাত
জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে
দেওয়া হয়”। [244]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান সম্পর্কে বলতে
শুনেছি,
« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻣَﻪُ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ، ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায়
কিয়ামে রমযান অর্থ্যাৎ তারাবীর সালাত আদায়
করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া
হবে”। [245]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন
যে, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ، ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »، ﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺷِﻬَﺎﺏٍ: ﻓَﺘُﻮُﻓِّﻲَ
ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﺍﻷَﻣْﺮُ ﻋَﻠَﻰ ﺫَﻟِﻚَ، ﺛُﻢَّ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻷَﻣْﺮُ ﻋَﻠَﻰ ﺫَﻟِﻚَ ﻓِﻲ ﺧِﻼَﻓَﺔِ
ﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻭَﺻَﺪْﺭًﺍ ﻣِﻦْ ﺧِﻼَﻓَﺔِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ »
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায়
তারাবীর সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী
গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। হাদীসের
বর্ণনাকারী ইবন শিহাব রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল
করেন এবং তারাবীর ব্যাপারটি এ ভাবেই চালু ছিল।
এমনকি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর খিলাফতকালে
ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর খিলাফতের প্রথম
ভাগে এরূপই ছিল।” [246]
উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﻠَّﻰ ﺫَﺍﺕَ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺑِﺼَﻼَﺗِﻪِ ﻧَﺎﺱٌ،
ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻰ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻘَﺎﺑِﻠَﺔِ، ﻓَﻜَﺜُﺮَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ، ﺛُﻢَّ ﺍﺟْﺘَﻤَﻌُﻮﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔِ ﺃَﻭِ ﺍﻟﺮَّﺍﺑِﻌَﺔِ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺨْﺮُﺝْ
ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﻗَﺎﻝَ: « ﻗَﺪْ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺻَﻨَﻌْﺘُﻢْ ﻭَﻟَﻢْ
ﻳَﻤْﻨَﻌْﻨِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺨُﺮُﻭﺝِ ﺇِﻟَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧِّﻲ ﺧَﺸِﻴﺖُ ﺃَﻥْ ﺗُﻔْﺮَﺽَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
রাতে মসজিদে সালাত আদায় করছিলেন, কিছু লোক
তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলো। পরবর্তী রাতেও
তিনি সালাত আদায় করলেন এবং লোক আরো বেড়ে
গেল। এরপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতে লোকজন
সমবেত হলেন; কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন না। সকাল হলে
তিনি বললেন, তোমাদের কার্যকলাপ আমি লক্ষ্য
করেছি। তোমাদের কাছে বেরিয়ে আসার ব্যাপারে
শুধু এ আশংকাই আমাকে বাধা দিয়েছে
যে, তোমাদের ওপর তা ফরয হয়ে যাবে। আর ঘটনাটি
ছিল রমযান মাসের (তারাবীর সালাতের)।” [247]
‘আব্দুর রাহমান ইবন ‘আবদ আল-ক্বারী রহ. থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻣَﻊَ ﻋُﻤَﺮَ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺨَﻄَّﺎﺏِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﺃَﻭْﺯَﺍﻉٌ ﻣُﺘَﻔَﺮِّﻗُﻮﻥَ، ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ، ﻭَﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻓَﻴُﺼَﻠِّﻲ ﺑِﺼَﻼَﺗِﻪِ ﺍﻟﺮَّﻫْﻂُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ:
ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺭَﻯ ﻟَﻮْ ﺟَﻤَﻌْﺖُ ﻫَﺆُﻻَﺀِ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﺎﺭِﺉٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ، ﻟَﻜَﺎﻥَ ﺃَﻣْﺜَﻞَ » ﺛُﻢَّ ﻋَﺰَﻡَ، ﻓَﺠَﻤَﻌَﻬُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺃُﺑَﻲِّ ﺑْﻦِ
ﻛَﻌْﺐٍ، ﺛُﻢَّ ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻣَﻌَﻪُ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﺃُﺧْﺮَﻯ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺼَﻼَﺓِ ﻗَﺎﺭِﺋِﻬِﻢْ، ﻗَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ: ﻧِﻌْﻢَ ﺍﻟﺒِﺪْﻋَﺔُ
ﻫَﺬِﻩِ، ﻭَﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻨَﺎﻣُﻮﻥَ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﻣِﻦَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ » ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺁﺧِﺮَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ
ﺃَﻭَّﻟَﻪُ »
“আমি রমযানের এক রাতে উমার ইবনুল খাত্তাব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সঙ্গে মসজিদে নববীতে গিয়ে
দেখতে পাই যে, লোকেরা বিক্ষিপ্ত জামা‘আতে
বিভক্ত। কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আবার
কোনো ব্যক্তি সালাত আদায় করছে এবং তার
ইক্তেদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি মনে করি যে, এই
লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে
একত্রিত করে দিই, তবে তা উত্তম হবে। এরপর তিনি
উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর পিছনে সকলকে
একত্রিত করে দিলেন। পরে আর এক রাতে আমি তাঁর
(উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর) সঙ্গে বের হই। তখন
লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত আদায়
করছিল। উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, কত না
সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা! তোমরা রাতের যে অংশে
ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে
অংশে তোমরা সালাত আদায় কর, এর দ্বারা তিনি
শেষ রাত বুঝিয়েছেন, কেননা তখন রাতের প্রথম
ভাগে লোকেরা সালাত আদায় করত”। [248]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে (সনদসহ)
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺷِﻬَﺎﺏٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﻋُﺮْﻭَﺓُ، ﺃَﻥَّ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﺗْﻪُ: ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺧَﺮَﺝَ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻣِﻦْ ﺟَﻮْﻑِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻭَﺻَﻠَّﻰ ﺭِﺟَﺎﻝٌ
ﺑِﺼَﻼَﺗِﻪِ، ﻓَﺄَﺻْﺒَﺢَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻓَﺘَﺤَﺪَّﺛُﻮﺍ، ﻓَﺎﺟْﺘَﻤَﻊَ ﺃَﻛْﺜَﺮُ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻓَﺼَﻠَّﻮْﺍ ﻣَﻌَﻪُ، ﻓَﺄَﺻْﺒَﺢَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﻓَﺘَﺤَﺪَّﺛُﻮﺍ، ﻓَﻜَﺜُﺮَ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔِ، ﻓَﺨَﺮَﺝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻓَﺼَﻠَّﻮْﺍ ﺑِﺼَﻼَﺗِﻪِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻧَﺖِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﺮَّﺍﺑِﻌَﺔُ ﻋَﺠَﺰَ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪُ ﻋَﻦْ ﺃَﻫْﻠِﻪِ، ﺣَﺘَّﻰ ﺧَﺮَﺝَ ﻟِﺼَﻼَﺓِ
ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻰ ﺍﻟﻔَﺠْﺮَ ﺃَﻗْﺒَﻞَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ، ﻓَﺘَﺸَﻬَّﺪَ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻣَّﺎ ﺑَﻌْﺪُ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﻢْ ﻳَﺨْﻒَ
ﻋَﻠَﻲَّ ﻣَﻜَﺎﻧُﻜُﻢْ، ﻭَﻟَﻜِﻨِّﻲ ﺧَﺸِﻴﺖُ ﺃَﻥْ ﺗُﻔْﺘَﺮَﺽَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ، ﻓَﺘَﻌْﺠِﺰُﻭﺍ ﻋَﻨْﻬَﺎ »، ﻓَﺘُﻮُﻓِّﻲَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﺍﻷَﻣْﺮُ ﻋَﻠَﻰ ﺫَﻟِﻚَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
গভীর রাতে বের হয়ে মসজিদে সালাত আদায়
করেন, কিছু সংখ্যক পুরুষ তাঁর পিছনে সালাত আদায়
করেন। সকালে লোকেরা এ সম্পর্কে আলোচনা
করেন, ফলে লোকেরা অধিক সংখ্যায় সমবেত হন।
তিনি সালাত আদায় করেন এবং লোকেরা তাঁর
সঙ্গে সালাত আদায় করেন। সকালে তাঁরা এ বিষয়ে
আলাপ আলেঅচনা করেন। তৃতীয় রাতে মসজিদে
মুসল্লীর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এরপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে
সালাত আদায় করেন ও লোকেরা তাঁর সঙ্গে সালাত
আদায় করেন। চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লীর
সংকুলান হলো না। কিন্তু তিনি রাতে আর বের না
হয়ে ফজরের সালাতে বেরিয়ে আসলেন এবং সালাত
শেষে লোকদের দিকে ফিরে প্রথমে তাওহীদ ও
রিসালতের সাক্ষ্য দেওয়ার পর বললেন, শোন!
তোমাদের (গত রাতের) অবস্থান আমার অজানা ছিল
না; কিন্তু আমি এই সালাত তোমাদের ওপর ফরয হয়ে
যাবার আশংকা করছি (বিধায় বের হই নাই)। কেননা
তোমরা তা আদায় করায় অপারগ হয়ে পড়তে।
রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
মৃত্যু হলো আর ব্যাপারটি এভাবেই থেকে যায়।” [249]
আবু সালামা ইবন ‘আব্দুর রাহমান রহ. থেকে
বর্ণিত, তিনি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে
জিজ্ঞাসা করেন যে,
«ﻛَﻴْﻒَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺻَﻼَﺓُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ؟ ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺰِﻳﺪُ
ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻭَﻻَ ﻓِﻲ ﻏَﻴْﺮِﻩِ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﺭَﻛْﻌَﺔً، ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ، ﻓَﻼَ ﺗَﺴَﻞْ ﻋَﻦْ ﺣُﺴْﻨِﻬِﻦَّ
ﻭَﻃُﻮﻟِﻬِﻦَّ، ﺛُﻢَّ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ، ﻓَﻼَ ﺗَﺴَﻞْ ﻋَﻦْ ﺣُﺴْﻨِﻬِﻦَّ ﻭَﻃُﻮﻟِﻬِﻦَّ، ﺛُﻢَّ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺛَﻼَﺛًﺎ » ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﺗَﻨَﺎﻡُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺗُﻮﺗِﺮَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ، ﺇِﻥَّ ﻋَﻴْﻨَﻲَّ ﺗَﻨَﺎﻣَﺎﻥِ ﻭَﻻَ ﻳَﻨَﺎﻡُ ﻗَﻠْﺒِﻲ »
“রমযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সালাত কিরূপ ছিল? তিনি
বললেন, রমযান মাসে ও রমযান ছাড়া অন্য সময়ে
(রাতে) তিনি এগারো রাকা‘আত থেকে বৃদ্ধি
করতেন না। তিনি চার রাকা‘আত সালাত আদায়
করতেন, সে চার রাকা‘আতের সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য ছিল
প্রশ্নাতীত। এরপর চার রাক‘আত সালাত আদায়
করতেন, সে চার রাকা‘আতের সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য ছিল
প্রশ্নাতীত। এরপর তিন রাকা‘আত সালাত আদায়
করতেন। আমি (‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা)
বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বিতর আদায়ের
আগে ঘুমিয়ে যাবেন? তিনি বললেন, হে ‘আয়েশা!
আমার দু’চোখ ঘুমায় বটে; কিন্তু আমার কালব
নিদ্রাভিভূত হয় না।” [250]
আবু যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
« ﺻُﻤْﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻠَﻢْ ﻳُﺼَﻞِّ ﺑِﻨَﺎ، ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﻘِﻲَ ﺳَﺒْﻊٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ،
ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺑِﻨَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﺫَﻫَﺐَ ﺛُﻠُﺚُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳَﻘُﻢْ ﺑِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺎﺩِﺳَﺔِ، ﻭَﻗَﺎﻡَ ﺑِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺨَﺎﻣِﺴَﺔِ،
ﺣَﺘَّﻰ ﺫَﻫَﺐَ ﺷَﻄْﺮُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻓَﻘُﻠْﻨَﺎ ﻟَﻪُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻟَﻮْ ﻧَﻔَّﻠْﺘَﻨَﺎ ﺑَﻘِﻴَّﺔَ ﻟَﻴْﻠَﺘِﻨَﺎ ﻫَﺬِﻩِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﻧَّﻪُ
ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﻣَﻊَ ﺍﻹِﻣَﺎﻡِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻨْﺼَﺮِﻑَ ﻛُﺘِﺐَ ﻟَﻪُ ﻗِﻴَﺎﻡُ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ , ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳُﺼَﻞِّ ﺑِﻨَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﻘِﻲَ ﺛَﻼَﺙٌ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ، ﻭَﺻَﻠَّﻰ ﺑِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔِ، ﻭَﺩَﻋَﺎ ﺃَﻫْﻠَﻪُ ﻭَﻧِﺴَﺎﺀَﻩُ، ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺑِﻨَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺨَﻮَّﻓْﻨَﺎ ﺍﻟﻔَﻼَﺡَ، ﻗُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ:
ﻭَﻣَﺎ ﺍﻟﻔَﻼَﺡُ، ﻗَﺎﻝَ: ﺍﻟﺴُّﺤُﻮﺭُ.
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সঙ্গে আমরা সাওম পালন করেছি। তিনি রমযান
মাসে আমাদের নিয়ে (নফল) সালাত আদায় করেন
নি। অবশেষে সাত দিন বাকী তিনি আমাদের নিয়ে
সালাত দাড়ালেন। এমনকি রাতের এক তৃতীয়াংশ
এতে অতিবাহিত হয়ে গেল। এরপর আর ষষ্ঠ রাত
আমাদের নিয়ে সালাতে দাড়ালেন না। কিন্তু প্রথম
রাত থাকতে আবার আমাদের নিয়ে সালাতে
দাঁড়ালেন। এমনকি এতে অর্ধেক রাত অতিবাহিত
হয়ে গেল। আমরা তাঁকে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ!
আমাদের অবশিষ্ট রাতটিও যদি নফল আদায় করে
অতিবাহিত করে দিতেন! তিনি বললেন, কেউ যদি
ইমামের সঙ্গে (ফরয) সালাতে দাঁড়ায় এবং ইমামের
শেষ করা পর্যন্ত তার সাথে দাঁড়ায় তবে তার জন্য
সারারাত (নফল) সালাত আদায়ের সওয়াব লেখা হয়।
এরপর তিন মাসের তিন রাত অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত
আমাদের নিয়ে সালাতে দাঁড়ালেন না। তৃতীয় (২৭
শে) রাত থাকতে আবার তিনি আমাদের নিয়ে
সালাতে দাঁড়ালেন। এই রাত তিনি তাঁর পরিজন ও
স্ত্রীগণকেও ডেকে তুললেন। অনন্তর তিনি এত
দীর্ঘক্ষণ সালাত আদায় করলেন যে, আমাদের
ফালাহ এর ব্যাপারে এর আশংকা সৃষ্টি হয়ে গেল।
বর্ণনাকারী জুবাইর ইবন নুফাইর রহ. বলেন যে, আমি
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললাম, ফালাহ
কি? তিনি বললেন, সাহরী খাওয়া।” [251]
যায়িদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﺗَّﺨَﺬَ ﺣُﺠْﺮَﺓً ﻗَﺎﻝَ: ﺣَﺴِﺒْﺖُ ﺃَﻧَّﻪُ ﻗَﺎﻝَ ﻣِﻦْ ﺣَﺼِﻴﺮٍ ﻓِﻲ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻟَﻴَﺎﻟِﻲَ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺑِﺼَﻼَﺗِﻪِ ﻧَﺎﺱٌ ﻣِﻦْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻋَﻠِﻢَ ﺑِﻬِﻢْ ﺟَﻌَﻞَ ﻳَﻘْﻌُﺪُ،
ﻓَﺨَﺮَﺝَ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻗَﺪْ ﻋَﺮَﻓْﺖُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺻَﻨِﻴﻌِﻜُﻢْ، ﻓَﺼَﻠُّﻮﺍ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻢْ،
ﻓَﺈِﻥَّ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺻَﻼَﺓُ ﺍﻟﻤَﺮْﺀِ ﻓِﻲ ﺑَﻴْﺘِﻪِ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔَ ﻗَﺎﻝَ ﻋَﻔَّﺎﻥُ: ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻭُﻫَﻴْﺐٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﻣُﻮﺳَﻰ، ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺃَﺑَﺎ ﺍﻟﻨَّﻀْﺮِ، ﻋَﻦْ ﺑُﺴْﺮٍ، ﻋَﻦْ ﺯَﻳْﺪٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
রমযান মাসে একটি ছোট কামরা বানালেন। তিনি
(বুসর ইবন সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, মনে
হয়, যায়িদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
কামরাটি চাটাইর তৈরি ছিল বলে উল্লেখ
করেছিলেন। তিনি সেখানে কয়েক রাত সালাত
আদায় করেন। আর তাঁর সাহাবীগণের মধ্যে কিছু
সাহাবীও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন। তিনি
যখন তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন, তখন তিনি
বসে থাকলেন। পড়ে তিনি তাদের কাছে এসে
বললেন, তোমাদের কার্যকলাপ দেখে আমি বুঝতে
পেরেছি। হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরেই
সালাত আদায় কর। কেননা, ফজর সালাত ব্যতীত
লোকেরা ঘরে যে সালাত আদায় করে তা-ই উত্তম।
আফফান রহ. যায়িদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে অনুরূপ বলেছেন।” [252]
রমযানে রাতে কত রাকা‘আত সালাত?
আবু সালামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
«ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺃَﻱْ ﺃُﻣّﻪْ ﺃَﺧْﺒِﺮِﻳﻨِﻲ ﻋَﻦْ ﺻَﻠَﺎﺓِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ،
ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺻَﻠَﺎﺗُﻪُ ﻓِﻲ ﺷَﻬْﺮِ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻭَﻏَﻴْﺮِﻩِ ﺛَﻠَﺎﺙَ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺭَﻛْﻌَﺘَﺎ
ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ »
“আমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে গিয়ে
বললাম, হে আম্মাজান! আমাকে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত
সস্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, তাঁর সালাত
ছিল রমযান এবং রমযান ছাড়া অন্যান্য মাসে
রাতের বেলায় তের রাকা‘আত। এর মধ্যে ফজরের
দু’রাকা‘আত (সুন্নাত) ও রয়েছে । ”[253]
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﺳَﺄَﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻼَﺓِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ: ﺻَﻼَﺓُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻣَﺜْﻨَﻰ ﻣَﺜْﻨَﻰ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺧَﺸِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢُ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﺻَﻠَّﻰ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً ﺗُﻮﺗِﺮُ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ
ﻗَﺪْ ﺻَﻠَّﻰ »
“এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নিকট রাতের সালাত সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, রাতের সালাত দুই দুই
রাকা’আত করে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ফজর
হওয়ার আশংকা করে, সে যেন এক রাকা’আত মিলিয়ে
সালাত আদায় করে নেয়। আর সে যে সালাত আদায়
করল, তা তার জন্য বিতর হয়ে যাবে।” [254]
আবু সালমা ইবন ‘আবদুর রাহমান রহ. থেকে বর্ণিত
যে, তিনি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে
জিজ্ঞাসা করলেন,
«ﻛَﻴْﻒَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺻَﻼَﺓُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺰِﻳﺪُ
ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻭَﻻَ ﻓِﻲ ﻏَﻴْﺮِﻩِ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﺭَﻛْﻌَﺔً، ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺃَﺭْﺑَﻊَ ﺭَﻛَﻌَﺎﺕٍ، ﻓَﻼَ ﺗَﺴْﺄَﻝْ ﻋَﻦْ
ﺣُﺴْﻨِﻬِﻦَّ ﻭَﻃُﻮﻟِﻬِﻦَّ، ﺛُﻢَّ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ، ﻓَﻼَ ﺗَﺴْﺄَﻝْ ﻋَﻦْ ﺣُﺴْﻨِﻬِﻦَّ ﻭَﻃُﻮﻟِﻬِﻦَّ، ﺛُﻢَّ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺛَﻼَﺛًﺎ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ:
ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺗَﻨَﺎﻡُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺗُﻮﺗِﺮَ؟ ﻗَﺎﻝَ: «ﺗَﻨَﺎﻡُ ﻋَﻴْﻨِﻲ ﻭَﻻَ ﻳَﻨَﺎﻡُ ﻗَﻠْﺒِﻲ »
“রমযান মাসে (রাতে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত কীভাবে ছিল?
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে ও
অন্যান্য সব মাসের রাতে এগারো রাকা’আতের
বেশি সালাত আদায় করতেন না। প্রথমে চার
রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। এ চার রাকা’আত
আদায়ের সৌন্দর্য ও দৈঘ্যের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করো না (ইহা বর্ণনাতীত)। তারপর আরো চার
রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। তারপর তিন
রাকা’আত (বিতর) আদায় করতেন। তখন আমি
বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বিতর সালাত
আদয়ের পূর্বে ঘুমিয়ে পড়েন? নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার চক্ষু ঘুমায়
তবে আমার অন্তর ঘুমায় না।” [255]
লাইলাতুল কদরের মর্যাদা
﴿ﺇِﻧَّﺎٓ ﺃَﻧﺰَﻟۡﻨَٰﻪُ ﻓِﻲ ﻟَﻴۡﻠَﺔِ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ١ ﻭَﻣَﺎٓ ﺃَﺩۡﺭَﻯٰﻚَ ﻣَﺎ ﻟَﻴۡﻠَﺔُ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ٢ ﻟَﻴۡﻠَﺔُ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ﺧَﻴۡﺮٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻟۡﻒِ ﺷَﻬۡﺮٖ
٣ ﺗَﻨَﺰَّﻝُ ﭐﻟۡﻤَﻠَٰٓﺌِﻜَﺔُ ﻭَﭐﻟﺮُّﻭﺡُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺑِﺈِﺫۡﻥِ ﺭَﺑِّﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﻛُﻞِّ ﺃَﻣۡﺮٖ ٤ ﺳَﻠَٰﻢٌ ﻫِﻲَ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻣَﻄۡﻠَﻊِ ﭐﻟۡﻔَﺠۡﺮِ
٥﴾ [ﺍﻟﻘﺪﺭ: ١، ٥]
“নিশ্চয় আমরা এটি (কুরআন) নাযিল
করেছি ‘লাইলাতুল কদরে। তোমাকে কিসে
জানাবে ‘লাইলাতুল কদর’ কী? ‘লাইলাতুল
কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে
ফিরিশতারা ও রূহ (জিবরীল) তাদের রবের
অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে।
শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।” [সূরা
আল-কাদর, আয়াত: ১-৫]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ، ﻭَﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ
ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »، ﺗَﺎﺑَﻌَﻪُ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥُ ﺑْﻦُ ﻛَﺜِﻴﺮٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﺰُّﻫْﺮِﻱِّ »
“যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে ও সাওয়াব
লাভের আশায় সাওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী
গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি
ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল
কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার
পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়। সুলায়মান
ইবন কাসীর রহ. যুহরী রহ. থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন।” [256]
শেষ সাত রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করবে
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺭِﺟَﺎﻟًﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃُﺭُﻭﺍ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﻨَﺎﻡِ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺴَّﺒْﻊِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺃَﺭَﻯ ﺭُﺅْﻳَﺎﻛُﻢْ ﻗَﺪْ ﺗَﻮَﺍﻃَﺄَﺕْ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺴَّﺒْﻊِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻓَﻤَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﺘَﺤَﺮِّﻳﻬَﺎ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺤَﺮَّﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺒْﻊِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতিপয়
সাহাবীকে স্বপ্নযোগে রমযানের শেষের সাত
রাতে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়। (এ শোনে)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, আমাকেও তোমাদের স্বপ্নের অনুরূপ
দেখানো হয়েছে। (তোমাদের দেখা ও আমার দেখা)
শেষ সাত দিনের ক্ষেত্রে মিলে গেছে। অতএব, যে
ব্যক্তি এর সন্ধান প্রত্যাশী, সে যেন শেষ সাত
রাতে সন্ধান করে”। [257]
আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺍﻋْﺘَﻜَﻔْﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭْﺳَﻂَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﺨَﺮَﺝَ ﺻَﺒِﻴﺤَﺔَ
ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻓَﺨَﻄَﺒَﻨَﺎ، ﻭَﻗَﺎﻝَ: «ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﺭِﻳﺖُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻧْﺴِﻴﺘُﻬَﺎ - ﺃَﻭْ ﻧُﺴِّﻴﺘُﻬَﺎ - ﻓَﺎﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ
ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻓِﻲ ﺍﻟﻮَﺗْﺮِ، ﻭَﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺃَﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﻣَﺎﺀٍ ﻭَﻃِﻴﻦٍ، ﻓَﻤَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ
ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻠْﻴَﺮْﺟِﻊْ » ، ﻓَﺮَﺟَﻌْﻨَﺎ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺮَﻯ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﻗَﺰَﻋَﺔً،
ﻓَﺠَﺎﺀَﺕْ ﺳَﺤَﺎﺑَﺔٌ ﻓَﻤَﻄَﺮَﺕْ ﺣَﺘَّﻰ ﺳَﺎﻝَ ﺳَﻘْﻒُ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻣِﻦْ ﺟَﺮِﻳﺪِ ﺍﻟﻨَّﺨْﻞِ، ﻭَﺃُﻗِﻴﻤَﺖِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ،
ﻓَﺮَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺴْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺎﺀِ ﻭَﺍﻟﻄِّﻴﻦِ، ﺣَﺘَّﻰ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺃَﺛَﺮَ ﺍﻟﻄِّﻴﻦِ
ﻓِﻲ ﺟَﺒْﻬَﺘِﻪِ
“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সঙ্গে রমযানের মধ্যক দশকে ই‘তিকাফ করি। তিনি
বিশ তারিখের সকালে বের হয়ে আমাদেরকে
সম্বোধন করে বললেন, “আমাকে লাইলাতুল কদর (এর
সঠিক তারিখ) দেখানো হয়েছিল, পরে আমাকে তা
ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা শেষ দশকের
বেজোড় রাতে তার সন্ধান কর। আমি দেখতে
পেয়েছি যে, আমি (ঐ রাতে) কাদা পানিতে
সিজদা করছি। অতএব, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে
ই‘তিকাফ করেছে সে যেন ফিরে আসে (মসজিদ
থেকে বের হয়ে না যায়)। আমরা সকালে ফিরে
আসলাম (থেকে গেলাম)। আমরা আকাশে হালকা
মেঘ খন্ডও দেখতে পাই নাই। পরে মেঘ দেখা দিল ও
এমন জোরে বৃষ্টি হলো যে, খেজুরের শাখায় তৈরি
মসজিদের ছাদ দিয়ে পানি ঝরতে লাগল। সালাত শুরু
করা হলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে কাদা পানিতে সিজদা করতে
দেখলাম। পরে তাঁর কপালে আমি কাঁদার চিহ্ন
দেখতে পাই”। [258]
শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ
করা
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« ﺗَﺤَﺮَّﻭْﺍ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ﻓِﻲ ﺍﻟﻮِﺗْﺮِ، ﻣِﻦَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“তোমরা রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে
লাইলাতুল কদরের সন্ধান কর”। [259]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﺠَﺎﻭِﺭُ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻓِﻲ ﻭَﺳَﻂِ
ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺣِﻴﻦَ ﻳُﻤْﺴِﻲ ﻣِﻦْ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﺗَﻤْﻀِﻲ، ﻭَﻳَﺴْﺘَﻘْﺒِﻞُ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﺭَﺟَﻊَ
ﺇِﻟَﻰ ﻣَﺴْﻜَﻨِﻪِ، ﻭَﺭَﺟَﻊَ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺠَﺎﻭِﺭُ ﻣَﻌَﻪُ، ﻭَﺃَﻧَّﻪُ ﺃَﻗَﺎﻡَ ﻓِﻲ ﺷَﻬْﺮٍ ﺟَﺎﻭَﺭَ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻛَﺎﻥَ
ﻳَﺮْﺟِﻊُ ﻓِﻴﻬَﺎ، ﻓَﺨَﻄَﺐَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ، ﻓَﺄَﻣَﺮَﻫُﻢْ ﻣَﺎ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ: ﻛُﻨْﺖُ ﺃُﺟَﺎﻭِﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺪْ
ﺑَﺪَﺍ ﻟِﻲ ﺃَﻥْ ﺃُﺟَﺎﻭِﺭَ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ، ﻓَﻤَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻣَﻌِﻲ ﻓَﻠْﻴَﺜْﺒُﺖْ ﻓِﻲ ﻣُﻌْﺘَﻜَﻔِﻪِ، ﻭَﻗَﺪْ
ﺃُﺭِﻳﺖُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔَ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻧْﺴِﻴﺘُﻬَﺎ، ﻓَﺎﺑْﺘَﻐُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻭَﺍﺑْﺘَﻐُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﻭِﺗْﺮٍ، ﻭَﻗَﺪْ
ﺭَﺃَﻳْﺘُﻨِﻲ ﺃَﺳْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﻣَﺎﺀٍ ﻭَﻃِﻴﻦٍ، ﻓَﺎﺳْﺘَﻬَﻠَّﺖِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀُ ﻓِﻲ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔِ ﻓَﺄَﻣْﻄَﺮَﺕْ، ﻓَﻮَﻛَﻒَ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪُ
ﻓِﻲ ﻣُﺼَﻠَّﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻓَﺒَﺼُﺮَﺕْ ﻋَﻴْﻨِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﻧَﻈَﺮْﺕُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ ﻭَﻭَﺟْﻬُﻪُ ﻣُﻤْﺘَﻠِﺊٌ ﻃِﻴﻨًﺎ ﻭَﻣَﺎﺀً »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযান মাসের মাঝের দশকে ই‘তিকাফ করেন। বিশ
তারিখ অতীত হওয়ার সন্ধ্যায় এবং একুশ তারিখের
শুরুতে তিনি এবং তাঁর সঙ্গে যারা ই‘তিকাফ
করেছিলেন সকলেই নিজ নিজ বাড়ীতে প্রস্থান
করেন। এরপর তিনি যে মাসে ই‘তিকাফ করেন ঐ
মাসের যে রাতে ফিরে যান সে রাতে লোকদের
সামনে ভাষণ দেন। আর তাতে
মাশাআল্লাহ, তাদেরকে বহু নির্দেশ দান করেন।
তারপর বলেন যে, আমি এ দশকে ই‘তিকাফ
করেছিলাম। এরপর আমি সিদ্ধান্ত করেছি যে, শেষ
দশকে ই‘তিকাফ করব। যে আমার সঙ্গে ই‘তিকাফ
করেছিল সে যেন তার ই‘তিকাফ স্থলে থেকে যায়।
আমাকে সে রাত দেখানো হয়েছিল, পরে তা ভুলিয়ে
দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, শেষ দশকে ঐ রাতের তালাশ
কর এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তা তালাশ কর।
আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, মসজিদে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের
স্থানেও বৃষ্টির পানি পড়তে থাকে। এটা ছিল একুশ
তারিখের রাত। যখন তিনি ফজরের সালাত শেষে
ফিরে বসেন তখন আমি তাঁর দিয়ে তাকিয়ে দেখতে
পাই যে, তাঁর মুখমণ্ডল কাদা-পানি মাখা।” [260]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে,
« ﺍﻟﺘَﻤِﺴُﻮﺍ »
“তোমরা (লাইলাতুল কদর) তালাশ কর”। [261]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﺠَﺎﻭِﺭُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ:
ﺗَﺤَﺮَّﻭْﺍ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করতেন এবং বলতেন,
তোমরা শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ কর”। [262]
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত
যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন:
«ﺍﻟﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ، ﻓِﻲ ﺗَﺎﺳِﻌَﺔٍ ﺗَﺒْﻘَﻰ، ﻓِﻲ ﺳَﺎﺑِﻌَﺔٍ
ﺗَﺒْﻘَﻰ، ﻓِﻲ ﺧَﺎﻣِﺴَﺔٍ ﺗَﺒْﻘَﻰ »
“তোমরা তা (লাইলাতুল কাদর) রমযানের শেষ দশকে
তালাশ কর। লাইলাতুল কাদর (শেষ দিক থেকে
গনণায়) নবম, সপ্তম বা পঞ্চম রাত অবশিষ্ট থাকে”।
[263]
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻫِﻲَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻫِﻲَ ﻓِﻲ ﺗِﺴْﻊٍ ﻳَﻤْﻀِﻴﻦَ، ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺳَﺒْﻊٍ ﻳَﺒْﻘَﻴْﻦَ » ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ،
ﻭَﻋَﻦْ ﺧَﺎﻟِﺪٍ، ﻋَﻦْ ﻋِﻜْﺮِﻣَﺔَ، ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺍﻟﺘَﻤِﺴُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺃَﺭْﺑَﻊٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ
“তা শেষ দশকে, তা অতিবাহিত নবম রাতে অথবা
অবশিষ্ট সপ্তম রাতে অর্থাৎ লাইলাতুল কদর।
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে অন্য সূত্রে
বর্ণিত যে, তোমরা ২৪ তম রাতে তালাশ কর”। [264]
সালিম রহ. তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি
(পিতা) বলেন,
« ﺭَﺃَﻯ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃَﻥَّ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺳَﺒْﻊٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺃَﺭَﻯ
ﺭُﺅْﻳَﺎﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻓَﺎﻃْﻠُﺒُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻮِﺗْﺮِ ﻣِﻨْﻬَﺎ »
“এক ব্যক্তি (রমযানের) ২৭তম রাতে লাইলাতুল কদর
দেখতে পেল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাকেও তোমাদের মতো
স্বপ্ন দেখানো হয়েছে যে, তা রমযানের শেষ দশকে
নিহিত আছে। অতএব, এর বেজোড় রাতগুলোতে তা
অনুসন্ধ্যান কর”। [265]
সালিম ইবন ‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রহ. থেকে (সনদসহ)
বর্ণিত, তার পিতা ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বলেছেন,
« ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺷِﻬَﺎﺏٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺳَﺎﻟِﻢُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ، ﺃَﻥَّ ﺃَﺑَﺎﻩُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻗَﺎﻝَ:
ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻟِﻠَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ: ﺇِﻥَّ ﻧَﺎﺳًﺎ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻗَﺪْ ﺃُﺭُﻭﺍ ﺃَﻧَّﻬَﺎ
ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺒْﻊِ ﺍﻟْﺄُﻭَﻝِ، ﻭَﺃُﺭِﻱَ ﻧَﺎﺱٌ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺒْﻊِ ﺍﻟْﻐَﻮَﺍﺑِﺮِ، ﻓَﺎﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ
ﺍﻟْﻐَﻮَﺍﺑِﺮِ »
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে লাইলাতুল কদর সস্পর্কে বলতে
শুনেছি, তোমাদের কতিপয় লোককে দেখানো হলো
যে, তা রমযানের প্রথম সাত দিনের মধ্যে, আবার
কতিপয় লোককে দেখানো হয়েছে যে, তা শেষ সাত
দিনের মধ্যে। অতএব, (রমযানের) শেষ দশকের মধ্যে
তা অন্বেষণ কর”। [266]
‘উকবা ইবন হুরাইস রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে বলতে
শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺍﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﻓَﺈِﻥْ ﺿَﻌُﻒَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺃَﻭْ ﻋَﺠَﺰَ، ﻓَﻠَﺎ ﻳُﻐْﻠَﺒَﻦَّ
ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺴَّﺒْﻊِ ﺍﻟْﺒَﻮَﺍﻗِﻲ »
“তোমরা রমযানের শেষ দশদিনে কদরের রাত
অনুসন্ধান কর। তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা
অপারগ হয়ে পরে, তবে সে যেন শেষ সাত রাতে
অলসতা না করে”। [267]
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﺗَﺤَﻴَّﻨُﻮﺍ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ » ﺃَﻭْ ﻗَﺎﻝَ « ﻓِﻲ ﺍﻟﺘِّﺴْﻊِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ »
“তোমরা (রমযানের) শেষ দশকে কদরের রাত
অনুসন্ধান কর অথবা তিনি বলেছেন, শেষের সাত
রাতে”। [268]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
« ﺃُﺭِﻳﺖُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ، ﺛُﻢَّ ﺃَﻳْﻘَﻈَﻨِﻲ ﺑَﻌْﺾُ ﺃَﻫْﻠِﻲ، ﻓَﻨُﺴِّﻴﺘُﻬَﺎ ﻓَﺎﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ
ﺍﻟْﻐَﻮَﺍﺑِﺮِ ﻭﻗَﺎﻝَ ﺣَﺮْﻣَﻠَﺔُ: ﻓَﻨَﺴِﻴﺘُﻬَﺎ »
“আমাকে স্বপ্নে কদরের রাত দেখনি হয়েছিল।
অতঃপর আমার পরিবারের কেউ আমাকে ঘুম থেকে
জাগানোর ফলে আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুতরাং তোমরা তা শেষ দশকে অম্বেষণ কর”।
বর্ণনাকারী হারমালা রহ. বলেছেন, আমি তা ভুলে
গেছি।” [269]
‘আব্দুল্লাহ ইবন উনায়স রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন,
« ﺃُﺭِﻳﺖُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻧْﺴِﻴﺘُﻬَﺎ، ﻭَﺃَﺭَﺍﻧِﻲ ﺻُﺒْﺤَﻬَﺎ ﺃَﺳْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﻣَﺎﺀٍ ﻭَﻃِﻴﻦٍ » ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﻤُﻄِﺮْﻧَﺎ ﻟَﻴْﻠَﺔَ
ﺛَﻠَﺎﺙٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺑِﻨَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺎﻧْﺼَﺮَﻑَ ﻭَﺇِﻥَّ ﺃَﺛَﺮَ ﺍﻟْﻤَﺎﺀِ
ﻭَﺍﻟﻄِّﻴﻦِ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﺒْﻬَﺘِﻪِ ﻭَﺃَﻧْﻔِﻪِ ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦُ ﺃُﻧَﻴْﺲٍ ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﺛَﻠَﺎﺙٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ »
“আমাকে কদরের রাত দেখান হয়েছিল। অতঃপর তা
ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাকে ঐ রাতের ভোর
সম্পর্কে স্বপ্নে আরও দেখান হয়েছে যে, আমিপানি
ও কাদার মধ্যে সিজদা করছি। বর্ণনাকারী
বলেন, অতএব, ২৩তম রাতে বৃষ্টি হলো এবং
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাদের সাথে (ফজরের) সালাত আদায় করে যখন
ফিরলেন, তখন আমরা তাঁর কপাল ও নাকের ডগায়
কাদা ও পানির চিহ্ন দেখতে পেলাম। বর্ণনাকারী
বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবন উনায়স রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বলতেন, তা ছিল ২৩তম।” [270]
উয়াইনা ইবন আবদুর রহমান বলেন, আমার পিতা
আবদুর রহমান বলেন,
ﺫُﻛِﺮَﺕْ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ﻋِﻨْﺪَ ﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮَﺓَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻣُﻠْﺘَﻤِﺴُﻬَﺎ ﻟِﺸَﻲْﺀٍ ﺳَﻤِﻌْﺘُﻪُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻻَّ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺳَﻤِﻌْﺘُﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﺍﻟﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺗِﺴْﻊٍ
ﻳَﺒْﻘَﻴْﻦَ، ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺳَﺒْﻊٍ ﻳَﺒْﻘَﻴْﻦَ، ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺧَﻤْﺲٍ ﻳَﺒْﻘَﻴْﻦَ، ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺛَﻼَﺙِ ﺃَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮَﺓَ
ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻛَﺼَﻼَﺗِﻪِ ﻓِﻲ ﺳَﺎﺋِﺮِ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮُ ﺍﺟْﺘَﻬَﺪَ.
আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে একবার
লাইলাতুল ক্বাদর সম্পর্কে আলোচনা হলো। তিনি
বললেন, আমি লাইলাতুল ক্বাদর রামাযানের শেষ দশ
দিন ছাড়া অন্য কোনো রাতে অনুসন্ধান করব না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছ থেকে একটি বাণী শোনার কারণে তাকে বলতে
শুনেছি যে, তোমরা এ রাতটিকে রমযানের নয় দিন
বাকী থাকতে বা সাতদিন বাকী থাকতে বা পাঁচ
দিন বাকী থাকতে বা তিন দিন বাকী থাকতে বা
এর শেষ রাতে অণ্বেষণ কর। বর্ণনাকারী বলেন, আবু
বাকরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রামাযানের বিশ দিন
পর্যন্ত অন্যান্য সুন্নাতের মতোই সালাত আদায়
করতেন। কিন্তু শেষ দশ দিনের ক্ষেত্রে খুবই
প্রচেষ্টা চালাতেন।” [271]
মানুষের ঝগড়ার কারণে লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট
তারিখ হারিয়ে যায়
‘উবাদা ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺧَﺮَﺝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟِﻴُﺨْﺒِﺮَﻧَﺎ ﺑِﻠَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ﻓَﺘَﻼَﺣَﻰ ﺭَﺟُﻼَﻥِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ
ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻟِﺄُﺧْﺒِﺮَﻛُﻢْ ﺑِﻠَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ، ﻓَﺘَﻼَﺣَﻰ ﻓُﻼَﻥٌ ﻭَﻓُﻼَﻥٌ، ﻓَﺮُﻓِﻌَﺖْ ﻭَﻋَﺴَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﺧَﻴْﺮًﺍ
ﻟَﻜُﻢْ، ﻓَﺎﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻌَﺔِ، ﻭَﺍﻟﺴَّﺎﺑِﻌَﺔِ، ﻭَﺍﻟﺨَﺎﻣِﺴَﺔِ »
“একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাদেরকে লাইলাতুল কাদরের (নির্দিষ্ট
তারিখের) অবহিত করার জন্য বের হয়েছিলেন। তখন
দু’জন মুসলিম ঝগড়া করছিল। তা দেখে তিনি
বললেন, আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদরের
সংবাদ দিবার জন্য বের হয়েছিলাম, তখন অমুক অমুক
ঝগড়া করছিল, ফলে তার (নির্দিষ্ট তারিখের)
পরিচয় হারিয়ে যায়। সম্ভবত এর মধ্যে তোমাদের
জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তোমরা নবম, সপ্তম ও
পঞ্চম রাতে তা তালাশ কর”। [272]
লাইলাতুল কদরের ‘আলামত
যির ইবন হুবাইশ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন
আমি উবাই ইবন কা’ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললাম,
« ﺇِﻥَّ ﺃَﺧَﺎﻙَ ﺍﺑْﻦَ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﻣَﻦْ ﻳَﻘُﻢِ ﺍﻟْﺤَﻮْﻝَ ﻳُﺼِﺐْ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺣِﻤَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ: ﺃَﺭَﺍﺩَ
ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻳَﺘَّﻜِﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ، ﺃَﻣَﺎ ﺇِﻧَّﻪُ ﻗَﺪْ ﻋَﻠِﻢَ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻭَﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻭَﺃَﻧَّﻬَﺎ
ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺳَﺒْﻊٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﺛُﻢَّ ﺣَﻠَﻒَ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﺜْﻨِﻲ، ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺳَﺒْﻊٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺑِﺄَﻱِّ ﺷَﻲْﺀٍ ﺗَﻘُﻮﻝُ
ﺫَﻟِﻚَ؟ ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﺍﻟْﻤُﻨْﺬِﺭِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺑِﺎﻟْﻌَﻠَﺎﻣَﺔِ، ﺃَﻭْ ﺑِﺎﻟْﺂﻳَﺔِ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻄْﻠُﻊُ ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ، ﻟَﺎ ﺷُﻌَﺎﻉَ ﻟَﻬَﺎ »
“আপনার ভাই আব্দুল্লাহ ইবন মাস‘উদ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, যে ব্যক্তি গোটা বছর
রাত জাগরণ করে সে কদরের রাতের সন্ধান পাবে।
তিনি (উবাই) বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন, এর
দ্বারা তিনি একথা বুঝাতে চাচ্ছেন যে, লোকেরা
যেন কেবল একটি রাতের ওপর ভরসা করে বসে না
থাকে। অথচ তিনি অবশ্যই জানেন যে, তা রমযান
মাসে শেষের দশ দিনের মধ্যে এবং ২৭তম রজনী।
অতঃপর তিনি শপথ করে বললেন! তা ২৭তম রজনী।
আমি (যির) বললাম, হে আবুল মুনযির! আপনি কিসের
ভিত্তিতে তা বলছেন? তিনি বললেন, বিভিন্ন
আলামত ও নিদর্শনের ভিত্তিতে যে সস্পর্কে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাদের অবহিত করেছেন। যেমন, সেদিন সূর্য উঠবে
কিন্তু তাতে আলোক রশ্মি থাকবে না।” [273]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺗَﺬَﺍﻛَﺮْﻧَﺎ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﻋِﻨْﺪَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﺃَﻳُّﻜُﻢْ ﻳَﺬْﻛُﺮُ ﺣِﻴﻦَ ﻃَﻠَﻊَ
ﺍﻟْﻘَﻤَﺮُ، ﻭَﻫُﻮَ ﻣِﺜْﻞُ ﺷِﻖِّ ﺟَﻔْﻨَﺔٍ؟ »
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সামনে কদরের রাত সস্পর্কে আলাপ
আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন, তোমাদের
মধ্যে কে সেই (রাত) স্মরণ রাখবে, যখন চাঁদ উদিত
হয়ে থালার একটি টুকরার ন্যায় হবে”। [274]
লাইলাতুল কদরে যেসব দো‘আ পড়া মুস্তাহাব
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
« ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﺭَﺃَﻳْﺖَ ﺇِﻥْ ﻭَﺍﻓَﻘْﺖُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﻣَﺎ ﺃَﺩْﻋُﻮ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺗَﻘُﻮﻟِﻴﻦَ: ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ
ﺗُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ »
“ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যদি কদরের রাত পেয়ে যাই
তবে কী দো‘আ পড়বো? তিনি বলেন, তুমি বলবে, হে
আল্লাহ! তুমি ক্ষমাকারী, তুমি ক্ষমা করতেই
ভালোবাসো। অতএব, তুমি আমাকে ক্ষমা করে
দাও।” [275]
রমযানের শেষ দশকের ‘আমল
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮُ ﺷَﺪَّ ﻣِﺌْﺰَﺭَﻩُ، ﻭَﺃَﺣْﻴَﺎ ﻟَﻴْﻠَﻪُ، ﻭَﺃَﻳْﻘَﻆَ ﺃَﻫْﻠَﻪُ »
“যখন রমযানের শেষ দশক আসতো তখন নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লুঙ্গি কষে
নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন)
এবং রাত্রে জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে
জাগিয়ে দিতেন।” [276]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺠْﺘَﻬِﺪُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ، ﻣَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﺠْﺘَﻬِﺪُ ﻓِﻲ
ﻏَﻴْﺮِﻩِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমযানের শেষ দিকে অধিক
পরিমানে এমনভাবে সচেষ্ট থাকতেন যা অন্য সময়ে
থাকতেন না।” [277]
চতুর্থ অধ্যায়
ই‘তিকাফ
রমযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করা, সব মসজিদে ই‘
তিকাফ করা
﴿ﻭَﻟَﺎ ﺗُﺒَٰﺸِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﻭَﺃَﻧﺘُﻢۡ ﻋَٰﻜِﻔُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﭐﻝۡﻣَﺴَٰﺠِﺪِۗ ﺗِﻞۡﻙَ ﺣُﺪُﻭﺩُ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻖۡﺭَﺑُﻮﻫَﺎۗ ﻛَﺬَٰﻟِﻚَ ﻳُﺒَﻴِّﻦُ ﭐﻟﻠَّﻪُ
ﺀَﺍﻳَٰﺘِﻪِۦ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢۡ ﻳَﺘَّﻘُﻮﻥَ ١٨٧﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٧]
“আর তোমরা মাসজিদে ই‘তিকাফরত অবস্থায়
স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর
সীমারেখা। সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো
না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য
স্পষ্ট করেন, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে”।
[সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৭]
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযানের শেষ দশক ই‘তিকাফ করতেন।” [278]
নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻮَﻓَّﺎﻩُ
ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻩِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের
শেষ দশক ই‘তিকাফ করতেন। তাঁর ওফাত পর্যন্ত এই
নিয়মই ছিল। এরপর তাঁর স্ত্রীগণও (সে দিনগুলোতে)
ই‘তিকাফ করতেন।” [279]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত
যে,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭْﺳَﻂِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ،
ﻓَﺎﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋَﺎﻣًﺎ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻭَﻫِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﺨْﺮُﺝُ ﻣِﻦْ ﺻَﺒِﻴﺤَﺘِﻬَﺎ ﻣِﻦَ
ﺍﻋْﺘِﻜَﺎﻓِﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻣَﻌِﻲ، ﻓَﻠْﻴَﻌْﺘَﻜِﻒِ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ، ﻭَﻗَﺪْ ﺃُﺭِﻳﺖُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔَ ﺛُﻢَّ
ﺃُﻧْﺴِﻴﺘُﻬَﺎ، ﻭَﻗَﺪْ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻨِﻲ ﺃَﺳْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﻣَﺎﺀٍ ﻭَﻃِﻴﻦٍ ﻣِﻦْ ﺻَﺒِﻴﺤَﺘِﻬَﺎ، ﻓَﺎﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ،
ﻭَﺍﻟﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﻭِﺗْﺮٍ »، ﻓَﻤَﻄَﺮَﺕِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀُ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔَ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪُ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺮِﻳﺶٍ، ﻓَﻮَﻛَﻒَ
ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪُ، ﻓَﺒَﺼُﺮَﺕْ ﻋَﻴْﻨَﺎﻱَ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﺒْﻬَﺘِﻪِ ﺃَﺛَﺮُ ﺍﻟﻤَﺎﺀِ ﻭَﺍﻟﻄِّﻴﻦِ،
ﻣِﻦْ ﺻُﺒْﺢِ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযানের মধ্যম দশকে ই‘তিকাফ করতেন। এক বছর এরূপ
ই‘তিকাফ করেন, যখন একুশের রাত আসলো, যে রাতের
সকালে তিনি তাঁর ই‘তিকাফ থেকে বের
হবেন, তিনি বললেন, যারা আমার সঙ্গে ই‘তিকাফ
করেছে তারা যেন শেষ দশক ই‘তিকাফ করে। আমাকে
স্বপ্নে এই রাত (লাইলাতুল কাদর) দেখানো
হয়েছিল। পরে আমাকে তা (সঠিক তারিখ) ভুলিয়ে
দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আমি স্বপ্নে দেখতে পেয়েছি
যে, ঐ রাতের সকালে আমি কাদা পানির মাঝে
সিজদা করছি। তোমরা তা শেষ দশকে তালাশ কর
এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তালাশ কর। পরে এই
রাতে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হলো, মসজিদের
ছাদ ছিল খেজুর পাতার ছাউনির। ফলে মসজিদে
টপটপ করে বৃষ্টি পড়তে লাগল। একুশের রাতের সকালে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কপালে কাদা পানির চিহ্ন আমার দু’চোখ দেখতে
পায়।”[280]
হায়েয মহিলা ই‘তিকাফকারীর চুল আঁচড়ানো
নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﺼْﻐِﻲ ﺇِﻟَﻲَّ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﺠَﺎﻭِﺭٌ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻓَﺄُﺭَﺟِّﻠُﻪُ
ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺣَﺎﺋِﺾٌ »
“মসজিদে ই‘তিকাফরত অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে তাঁর মাথা
ঝুকিয়ে দিতেন আর আমি ঋতুবতী অবস্থায় তাঁর চুল
আঁচড়িয়ে দিতাম”। [281]
ই‘তিকাফকারী প্রয়োজন ব্যতীত গৃহে প্রবেশ না
করা
নবী সহধর্মিণী ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ « ﻟَﻴُﺪْﺧِﻞُ ﻋَﻠَﻲَّ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ،
ﻓَﺄُﺭَﺟِّﻠُﻪُ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻻَ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟﺒَﻴْﺖَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﺤَﺎﺟَﺔٍ ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻌْﺘَﻜِﻔًﺎ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মসজিদে থাকাবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে
দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি
যখন ই‘তিকাফে থাকতেন তখন (প্রাকৃতিক) প্রয়োজন
ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না।” [282]
ই‘তিকাফকারীর গোসল
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﺒَﺎﺷِﺮُﻧِﻲ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺣَﺎﺋِﺾٌ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﺨْﺮِﺝُ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ
ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﻌْﺘَﻜِﻒٌ، ﻓَﺄَﻏْﺴِﻠُﻪُ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺣَﺎﺋِﺾٌ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার
ঋতুবতী অবস্থায় আমার সঙ্গে কাটাতেন এবং তিনি
ই‘তিকাফরত অবস্থায় মসজিদ থেকে তাঁর মাথা বের
করে দিতেন। আমি ঋতুবতী অবস্থায় তা ধুয়ে
দিতাম।” [283]
রাতে ই‘তিকাফ করা
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﻋُﻤَﺮَ ﺳَﺄَﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ: ﻛُﻨْﺖُ ﻧَﺬَﺭْﺕُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺃَﻥْ ﺃَﻋْﺘَﻜِﻒَ
ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟﺤَﺮَﺍﻡِ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻓَﺄَﻭْﻑِ ﺑِﻨَﺬْﺭِﻙَ »
“উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন
যে, আমি জাহিলিয়্যা যুগে মসজিদুল হারামে এক
রাত ই‘তিকাফ করার মানত করেছিলাম। তিনি
(উত্তরে) বললেন, তোমার মানত পুরা কর”। [284]
মহিলাদের ই‘তিকাফ
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﻜُﻨْﺖُ ﺃَﺿْﺮِﺏُ
ﻟَﻪُ ﺧِﺒَﺎﺀً ﻓَﻴُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﺛُﻢَّ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻪُ، ﻓَﺎﺳْﺘَﺄْﺫَﻧَﺖْ ﺣَﻔْﺼَﺔُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺃَﻥْ ﺗَﻀْﺮِﺏَ ﺧِﺒَﺎﺀً، ﻓَﺄَﺫِﻧَﺖْ ﻟَﻬَﺎ،
ﻓَﻀَﺮَﺑَﺖْ ﺧِﺒَﺎﺀً، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺭَﺃَﺗْﻪُ ﺯَﻳْﻨَﺐُ ﺍﺑْﻨَﺔُ ﺟَﺤْﺶٍ ﺿَﺮَﺑَﺖْ ﺧِﺒَﺎﺀً ﺁﺧَﺮَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺭَﺃَﻯ ﺍﻷَﺧْﺒِﻴَﺔَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: «ﻣَﺎ ﻫَﺬَﺍ؟ » ﻓَﺄُﺧْﺒِﺮَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
ﺃَﻟْﺒِﺮَّ ﺗُﺮَﻭْﻥَ ﺑِﻬِﻦَّ ﻓَﺘَﺮَﻙَ ﺍﻟِﺎﻋْﺘِﻜَﺎﻑَ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮَ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋَﺸْﺮًﺍ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ »
“রমযানের শেষ দশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ করতেন। আমি তাবু তৈরি
করে দিতাম। তিনি ফজরের সালাত আদায় করে
তাতে প্রবেশ করতেন। (নবী স্ত্রী) হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁবু খাটাবার জন্য ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে অনুমিতি চাইলেন।
তিনি তাঁকে অনুমতি দিলে হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাবুঁ খাটালেন। (নবী স্ত্রী)
যয়নাব বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তা
দেখে আরেকটি তাবুঁ তৈরি করলেন। সকালে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুঁগুলো
দেখলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এগুলো কী? তাঁকে
জানানো হলে তিনি বললেন, তোমরা কি মনে কর
এগুলো দিয়ে নেকী হাসিল হবে? এ মাসে তিনি
ই‘তিকাফ ত্যাগ করলেন এবং পরে শাওয়াল মাসে ১০
দিন (কাযাস্বরূপ) ই‘তিকাফ করেন।” [285]
মসজিদে ই‘তিকাফ করার উদ্দেশ্যে তাঁবু খাটানো
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা খেকে বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤَﻜَﺎﻥِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃَﺭَﺍﺩَ
ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺧْﺒِﻴَﺔٌ ﺧِﺒَﺎﺀُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﻭَﺧِﺒَﺎﺀُ ﺣَﻔْﺼَﺔَ، ﻭَﺧِﺒَﺎﺀُ ﺯَﻳْﻨَﺐَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﻟْﺒِﺮَّ ﺗَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ ﺑِﻬِﻦَّ »
ﺛُﻢَّ ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒْ ﺣَﺘَّﻰ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋَﺸْﺮًﺍ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ
করার ইচ্ছা করলেন। এরপর যে স্থানে ই‘তিকাফ করার
ইচ্ছা করেছিলেন সেখানে এসে কয়েকটি তাঁবু
দেখতে পেলেন। (তাঁবুগুলো হলো নবী
সহধর্মিণী) ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা, হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ও যায়নাব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার তাঁবু। তখন তিনি
বললেন, তোমরা কি এগুলো দিয়ে নেকী হাসিলের
ধারণা কর? এরপর তিনি চলে গেলেন আর ই‘তিকাফ
করলেন না। পরে শাওয়াল মাসে দশ দিনের ই‘তিকাফ
করলেন।” [286]
ই‘তিকাফকারী কি প্রয়োজনে মসজিদের দরজায় বের
থেকে পারবে?
ইমাম যুহরী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী ইবন
হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা আমাকে নবী স্ত্রী
সাফিয়্যা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে সংবাদ
দিয়েছেন যে,
«ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺟَﺎﺀَﺕْ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺗَﺰُﻭﺭُﻩُ ﻓِﻲ ﺍﻋْﺘِﻜَﺎﻓِﻪِ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻓِﻲ
ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﺘَﺤَﺪَّﺛَﺖْ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺳَﺎﻋَﺔً، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻣَﺖْ ﺗَﻨْﻘَﻠِﺐُ، ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻌَﻬَﺎ ﻳَﻘْﻠِﺒُﻬَﺎ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐَﺖْ ﺑَﺎﺏَ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻋِﻨْﺪَ ﺑَﺎﺏِ ﺃُﻡِّ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻣَﺮَّ ﺭَﺟُﻼَﻥِ ﻣِﻦَ
ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ، ﻓَﺴَﻠَّﻤَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻬُﻤَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﻋَﻠَﻰ ﺭِﺳْﻠِﻜُﻤَﺎ، ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫِﻲَ ﺻَﻔِﻴَّﺔُ ﺑِﻨْﺖُ ﺣُﻴَﻲٍّ » ، ﻓَﻘَﺎﻻَ: ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ،
ﻭَﻛَﺒُﺮَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻳَﺒْﻠُﻎُ ﻣِﻦَ ﺍﻹِﻧْﺴَﺎﻥِ ﻣَﺒْﻠَﻎَ
ﺍﻟﺪَّﻡِ، ﻭَﺇِﻧِّﻲ ﺧَﺸِﻴﺖُ ﺃَﻥْ ﻳَﻘْﺬِﻑَ ﻓِﻲ ﻗُﻠُﻮﺑِﻜُﻤَﺎ ﺷَﻴْﺌًﺎ »
“একবার তিনি রমযানের শেষ দশকে মসজিদে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
খিদমতে হাযির হন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফরত ছিলেন। তিনি
তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা-বার্তা বলেন। তারপর
ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পৌঁছে দেওয়ার
উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি (উম্মুল
মুমিনীন) উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার গৃহ
সংলগ্ন মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌছলেন, তখন দু’জন
আনসারী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা উভয়ে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
সালাম করলেন। তাদের দু’জনকে নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা দু’জন
থামো। ইনি তো (আমার স্ত্রী) সাফিয়্যা বিনতে
হুয়াই। এতে তারা দু’জনে সুবহানাল্লাহ ইয়া
রাসূলুল্লাহ বলে উঠলেন এবং তাঁরা বিব্রতবোধ
করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, ‘শয়তান মানুষের রক্ত শিরায় চলাচল করে।
আমি আশংকা করলাম যে, সে তোমাদের মনে
সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে’।” [287]
ই‘তিকাফ অধ্যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বিশ তারিখ সকালে ই‘তিকাফের
উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন
আবু সালমা ইবন ‘আব্দুর রাহমান রহ. বলেন, আমি আবু
সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞাসা
করলাম,
« ﻫَﻞْ ﺳَﻤِﻌْﺖَ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﺬْﻛُﺮُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧَﻌَﻢِ، ﺍﻋْﺘَﻜَﻔْﻨَﺎ ﻣَﻊَ
ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭْﺳَﻂَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺨَﺮَﺟْﻨَﺎ ﺻَﺒِﻴﺤَﺔَ
ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺨَﻄَﺒَﻨَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺒِﻴﺤَﺔَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﺭِﻳﺖُ
ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ، ﻭَﺇِﻧِّﻲ ﻧُﺴِّﻴﺘُﻬَﺎ، ﻓَﺎﻟْﺘَﻤِﺴُﻮﻫَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻓِﻲ ﻭِﺗْﺮٍ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺃَﻧِّﻲ
ﺃَﺳْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﻣَﺎﺀٍ ﻭَﻃِﻴﻦٍ، ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻠْﻴَﺮْﺟِﻊْ،
ﻓَﺮَﺟَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺮَﻯ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﻗَﺰَﻋَﺔً، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺠَﺎﺀَﺕْ ﺳَﺤَﺎﺑَﺔٌ، ﻓَﻤَﻄَﺮَﺕْ،
ﻭَﺃُﻗِﻴﻤَﺖِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ، ﻓَﺴَﺠَﺪَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻄِّﻴﻦِ ﻭَﺍﻟﻤَﺎﺀِ ﺣَﺘَّﻰ ﺭَﺃَﻳْﺖُ
ﺃَﺛَﺮَ ﺍﻟﻄِّﻴﻦِ ﻓِﻲ ﺃَﺭْﻧَﺒَﺘِﻪِ ﻭَﺟَﺒْﻬَﺘِﻪِ »
“আপনি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে উল্লেখ
করতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমরা রমযানের
মধ্যম দশকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছিলাম।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমরা বিশ তারিখের
সকালে বের থেকে চাইলাম। তিনি বিশ তারিখের
সকালে আমাদেরকে সম্বোধন করে ভাষণ দিলেন।
তিনি বললেন, আমাকে (স্বপ্নযোগে) লাইলাতুল
কাদর (এর নির্দিষ্ট তারিখ) দেখানো হয়েছিল। পরে
আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা শেষ
দশকের বিজোড় তারিখে তা তালাশ কর। আমি
দেখেছি যে, আমি পানি ও কাদার মধ্যে সিজদা
করছি। অতএব যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছে
সে যেন ফিরে আসে (বের হওয়া থেকে বিরত থাকে)।
লোকেরা মসজিদে ফিরে এল। আমরা তখন আকাশে
একখণ্ড মেঘও দেখতে পাই নি। একটু পরে একখণ্ড মেঘ
দেখা দিল ও বর্ষণ হলো এবং সালাত শুরু হলো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কাদা পানির মাঝে সিজদা করলেন। এমনকি আমি
তাঁর কপালে ও নাকে কাদার চিহ্ন দেখতে
পেলাম।” [288]
মুস্তাহাযা বা রোগাক্রান্ত নারীর ই‘তিকাফ করা
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
« ﺍﻋْﺘَﻜَﻔَﺖْ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻣِﻦْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻪِ ﻣُﺴْﺘَﺤَﺎﺿَﺔٌ، ﻓَﻜَﺎﻧَﺖْ ﺗَﺮَﻯ
ﺍﻟﺤُﻤْﺮَﺓَ، ﻭَﺍﻟﺼُّﻔْﺮَﺓَ، ﻓَﺮُﺑَّﻤَﺎ ﻭَﺿَﻌْﻨَﺎ ﺍﻟﻄَّﺴْﺖَ ﺗَﺤْﺘَﻬَﺎ ﻭَﻫِﻲَ ﺗُﺼَﻠِّﻲ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সঙ্গে তাঁর এক মুস্তাহাযা স্ত্রী ই‘তিকাফ করেন।
তিনি লাল ও হলুদ রংয়ের স্রাব নির্গত থেকে
দেখতে পেতেন। অনেক সময় আমরা তাঁর নিচে একটি
গামলা রেখে দিতাম আর তিনি উহার উপর সালাত
আদায় করতেন।” [289]
ই‘তিকাফকারী স্বামীকে স্ত্রী দেখতে যাওয়া
‘আলী ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻭَﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﻓَﺮُﺣْﻦَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟِﺼَﻔِﻴَّﺔَ ﺑِﻨْﺖِ
ﺣُﻴَﻲٍّ ﻻَ ﺗَﻌْﺠَﻠِﻲ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﻧْﺼَﺮِﻑَ ﻣَﻌَﻚِ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺑَﻴْﺘُﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺩَﺍﺭِ ﺃُﺳَﺎﻣَﺔَ، ﻓَﺨَﺮَﺝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻌَﻬَﺎ، ﻓَﻠَﻘِﻴَﻪُ ﺭَﺟُﻼَﻥِ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ ﻓَﻨَﻈَﺮَﺍ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺛُﻢَّ
ﺃَﺟَﺎﺯَﺍ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻟَﻬُﻤَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : «ﺗَﻌَﺎﻟَﻴَﺎ ﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺻَﻔِﻴَّﺔُ ﺑِﻨْﺖُ ﺣُﻴَﻲٍّ » ، ﻗَﺎﻻَ:
ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: « ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻳَﺠْﺮِﻱ ﻣِﻦَ ﺍﻹِﻧْﺴَﺎﻥِ ﻣَﺠْﺮَﻯ ﺍﻟﺪَّﻡِ، ﻭَﺇِﻧِّﻲ
ﺧَﺸِﻴﺖُ ﺃَﻥْ ﻳُﻠْﻘِﻲَ ﻓِﻲ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻜُﻤَﺎ ﺷَﻴْﺌًﺎ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী
সাফিয়্যা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণনা করেন, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ই‘তিকাফ
অবস্থায়) মসজিদে অবস্থান করছিলেন, ঐ সময়ে তাঁর
নিকট স্বীয় স্ত্রীগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা
যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। তিনি (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাফিয়্যা
বিনতে হুয়াইকে বললেন, তুমি তাড়াতাড়ি করো না।
আমি তোমার সাথে যাবো। তার (সাফিয়্যা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা)-এর ঘর ছিল উসামার
বাড়ীতে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে সঙ্গে করে বের হলেন।
এমতাবস্থায় দু’জন আনসার ব্যক্তির সাক্ষাত ঘটলে
তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
দেখতে পেয়ে (দ্রুত) আগে বেড়ে গেলেন। নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দু’জনকে
বললেন, তোমরা এদিকে আসো। এ তো সাফিয়্যা
বিনত হুয়াই। তাঁরা দু’জন বলে উঠলেন, সুবহানাল্লাহ
ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, শয়তান মানব দেহে
রক্তের মতো চলাচল করে। আমি আশংকাবোধ
করলাম যে, সে তোমাদের মনে কিছু সন্দেহ ঢুকিয়ে
দেয়।[290]
ই‘তিকাফকারী কি নিজের থেকে সন্দেহ দূর করবে?
আলী ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺻَﻔِﻴَّﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ، ﺃَﺗَﺖِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﻌْﺘَﻜِﻒٌ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺭَﺟَﻌَﺖْ
ﻣَﺸَﻰ ﻣَﻌَﻬَﺎ، ﻓَﺄَﺑْﺼَﺮَﻩُ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺑْﺼَﺮَﻩُ ﺩَﻋَﺎﻩُ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺗَﻌَﺎﻝَ ﻫِﻲَ ﺻَﻔِﻴَّﺔُ ﻭَﺭُﺑَّﻤَﺎ
ﻗَﺎﻝَ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥُ: ﻫَﺬِﻩِ ﺻَﻔِﻴَّﺔُ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻳَﺠْﺮِﻱ ﻣِﻦَ ﺍﺑْﻦِ ﺁﺩَﻡَ ﻣَﺠْﺮَﻯ ﺍﻟﺪَّﻡِ، ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﺴُﻔْﻴَﺎﻥَ: ﺃَﺗَﺘْﻪُ
ﻟَﻴْﻠًﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻫَﻞْ ﻫُﻮَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟَﻴْﻞٌ »
“সাফিয়্যা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা একবার নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ই‘তিকাফ
অবস্থায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসেন। তিনি
যখন ফিরে যান তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে কিছু দূর হেঁটে আসেন। ঐ
সময়ে এক আনসার ব্যক্তি তাঁকে দেখতে পায়। তিনি
যখন তাকে দেখতে পেলেন তখন তাকে ডাক দিলেন
ও বললেন, এসো, এ তো সাফিয়্যা বিনত হুয়াই।
শয়তান মানব দেহে রক্তের মত চলাচল করে থাকে ।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি সুফিয়ান
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললাম, তিনি রাতে
এসেছিলেন? তিনি বললেন, রাতে ছাড়া আর
কি? [291]
যে ব্যক্তি প্রত্যুষে ই‘তিকাফ থেকে ফিরে আসে
আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺍﻋْﺘَﻜَﻔْﻨَﺎ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭْﺳَﻂَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺻَﺒِﻴﺤَﺔَ
ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻧَﻘَﻠْﻨَﺎ ﻣَﺘَﺎﻋَﻨَﺎ، ﻓَﺄَﺗَﺎﻧَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ: « ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ،
ﻓَﻠْﻴَﺮْﺟِﻊْ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﻌْﺘَﻜَﻔِﻪِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔَ ﻭَﺭَﺃَﻳْﺘُﻨِﻲ ﺃَﺳْﺠُﺪُ ﻓِﻲ ﻣَﺎﺀٍ ﻭَﻃِﻴﻦٍ »، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺭَﺟَﻊَ
ﺇِﻟَﻰ ﻣُﻌْﺘَﻜَﻔِﻪِ ﻭَﻫَﺎﺟَﺖِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀُ، ﻓَﻤُﻄِﺮْﻧَﺎ، ﻓَﻮَﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻌَﺜَﻪُ ﺑِﺎﻟﺤَﻖِّ ﻟَﻘَﺪْ ﻫَﺎﺟَﺖِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀُ ﻣِﻦْ ﺁﺧِﺮِ
ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟﻴَﻮْﻡِ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪُ ﻋَﺮِﻳﺸًﺎ، ﻓَﻠَﻘَﺪْ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻧْﻔِﻪِ ﻭَﺃَﺭْﻧَﺒَﺘِﻪِ ﺃَﺛَﺮَ ﺍﻟﻤَﺎﺀِ ﻭَﺍﻟﻄِّﻴﻦِ »
“আমরা রমযানের মধ্য দশকে রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে
ই‘তিকাফ করেছিলাম। বিশ তারিখে সকালে
ই‘তিকাফ শেষ করে চলে আসার উদ্দেশ্যে আমরা
আমাদের আসবাব পত্র সরিয়ে ফেলি। রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট
এস বললেন, যে ব্যক্তি ই‘তিকাফ করেছে সে যেন তার
ই‘তিকাফস্থলে ফিরে যায়। কারণ আমি এই রাতে
লাইলাতুল কদর দেখতে পেয়েছি এবং আরোও
দেখেছি যে, আমি পানি ও কাদায় সিজদা। এরপর
যখন তিনি তাঁর ই‘তিকাফস্থলে ফিরে গেলেন ও
আকাশে মেঘ দেখা দিল, তখন আমাদের উপর বৃষ্টি
বর্ষিত।সেই সত্তার কসম! যিনি তাঁকেখেজুর পাতার
ছাউনির। আমি তাঁর নাকের অগ্রভাগে পানি ও
কাদার চিহ্ন দেখেছিলাম।” [292]
শাওয়াল মাসে ই‘তিকাফ করা
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥٍ، ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻐَﺪَﺍﺓَ ﺩَﺧَﻞَ
ﻣَﻜَﺎﻧَﻪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻓِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺎﺳْﺘَﺄْﺫَﻧَﺘْﻪُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ ﺃَﻥْ ﺗَﻌْﺘَﻜِﻒَ، ﻓَﺄَﺫِﻥَ ﻟَﻬَﺎ، ﻓَﻀَﺮَﺑَﺖْ ﻓِﻴﻪِ ﻗُﺒَّﺔً،
ﻓَﺴَﻤِﻌَﺖْ ﺑِﻬَﺎ ﺣَﻔْﺼَﺔُ، ﻓَﻀَﺮَﺑَﺖْ ﻗُﺒَّﺔً، ﻭَﺳَﻤِﻌَﺖْ ﺯَﻳْﻨَﺐُ ﺑِﻬَﺎ، ﻓَﻀَﺮَﺑَﺖْ ﻗُﺒَّﺔً ﺃُﺧْﺮَﻯ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ
ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻐَﺪَﺍﺓِ ﺃَﺑْﺼَﺮَ ﺃَﺭْﺑَﻊَ ﻗِﺒَﺎﺏٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﻣَﺎ ﻫَﺬَﺍ؟ »،
ﻓَﺄُﺧْﺒِﺮَ ﺧَﺒَﺮَﻫُﻦَّ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﻣَﺎ ﺣَﻤَﻠَﻬُﻦَّ ﻋَﻠَﻰ ﻫَﺬَﺍ؟ ﺁﻟْﺒِﺮُّ؟ ﺍﻧْﺰِﻋُﻮﻫَﺎ ﻓَﻼَ ﺃَﺭَﺍﻫَﺎ »، ﻓَﻨُﺰِﻋَﺖْ، ﻓَﻠَﻢْ
ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒْ ﻓِﻲ ﺭﻣَﻀَﺎﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻓِﻲ ﺁﺧِﺮِ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
প্রতি রমযানে ই‘তিকাফ করতেন। ফজরের সালাত
শেষে ই‘তিকাফের নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করতেন।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর কাছে
ই‘তিকাফ করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি
দিলেন। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা মসজিদে
(নিজের জন্য) একটি তাবু করে নিলেন। হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তা শুনে (নিজের জন্য) একটি
তাবু তৈরি করে নিলেন এবং যায়নাব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ও তা শুনে (নিজের জন্য) আর
একটি তাঁবু তৈরি করে নিলেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত
শেষে এসে চারটি তাবু দেখতে পেয়ে
বললেন, একি? তাঁকে তাঁদের ব্যাপারে জানানো
হলে, তিনি বললেন, নেক আমলের প্রেরণা তাদেরকে
এ কাজে উদ্বুদ্ধ করে নি। সব খুলে ফেলা হলো। তিনি
সেই রমযানে আর ই‘তিকাফ করলেন না। পরে
শাওয়াল মাসের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করেন।” [293]
যারা সাওম ব্যতীত ই‘তিকাফ করা বৈধ মনে করেন
উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﻧَﺬَﺭْﺕُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺃَﻥْ ﺃَﻋْﺘَﻜِﻒَ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟﺤَﺮَﺍﻡِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﺃَﻭْﻑِ ﻧَﺬْﺭَﻙَ ﻓَﺎﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻟَﻴْﻠَﺔً »
“ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি জাহেলিয়্যাতের যুগে
মসজিদে হারামে এক রাত ই‘তিকাফ করার মানত
করেছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তোমার মানত পুরা কর।
তিনি এক রাতের ই‘তিকাফ করলেন।” [294]
যে ব্যক্তি জাহেলী যুগে ই‘তিকাফের মানত করেছে
সে তা ইসলামে প্রবেশ করলে তা আদায় করবে
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻧَﺬَﺭَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟﺤَﺮَﺍﻡِ ﻗَﺎﻝَ: ﺃُﺭَﺍﻩُ
ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻴْﻠَﺔً:، ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : «ﺃَﻭْﻑِ ﺑِﻨَﺬْﺭِﻙَ »
“উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জাহিলিয়্যাতের যুগে
মসজিদে হারামে ই‘তিকাফ করার মানত
করেছিলেন। (বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয়
তিনি এক রাতের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাঁকে বললেন, তোমার মানত পুরা কর।” [295]
রমযানের মধ্য দশকে ই‘তিকাফ করা
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ «ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥٍ ﻋَﺸَﺮَﺓَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻌَﺎﻡُ
ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻗُﺒِﺾَ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻳَﻮْﻣًﺎ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি
রমযানে দশ দিনের ই‘তিকাফ করতেন। যে বছর তিনি
ইন্তেকাল করেন সে বছর তিনি বিশ দিনের
ই‘তিকাফ করেছিলেন।” [296]
ই‘তিকাফের নিয়ত করে ই‘তিকাফ না করা
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺫَﻛَﺮَ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒَ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ
ﻓَﺎﺳْﺘَﺄْﺫَﻧَﺘْﻪُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ، ﻓَﺄَﺫِﻥَ ﻟَﻬَﺎ، ﻭَﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺣَﻔْﺼَﺔُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺃَﻥْ ﺗَﺴْﺘَﺄْﺫِﻥَ ﻟَﻬَﺎ، ﻓَﻔَﻌَﻠَﺖْ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺭَﺃَﺕْ
ﺫَﻟِﻚَ ﺯَﻳْﻨَﺐُ ﺍﺑْﻨَﺔُ ﺟَﺤْﺶٍ ﺃَﻣَﺮَﺕْ ﺑِﺒِﻨَﺎﺀٍ، ﻓَﺒُﻨِﻲَ ﻟَﻬَﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ ﺇِﻟَﻰ ﺑِﻨَﺎﺋِﻪِ، ﻓَﺒَﺼُﺮَ ﺑِﺎﻷَﺑْﻨِﻴَﺔِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﻣَﺎ ﻫَﺬَﺍ؟ » ﻗَﺎﻟُﻮﺍ: ﺑِﻨَﺎﺀُ
ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﻭَﺣَﻔْﺼَﺔَ، ﻭَﺯَﻳْﻨَﺐَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﺃَﻟْﺒِﺮَّ ﺃَﺭَﺩْﻥَ ﺑِﻬَﺬَﺍ، ﻣَﺎ
ﺃَﻧَﺎ ﺑِﻤُﻌْﺘَﻜِﻒٍ »، ﻓَﺮَﺟَﻊَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋَﺸْﺮًﺍ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করার অভিপ্রায়
প্রকাশ করলে ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর
কাছে ই‘তিকাফ করার অনুমতি প্রার্থনা করায়
তিনি তাঁকে অনুমতি দিলেন। এরপর হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার নিকট অনুমতি চাইলে তিনি
তাঁকে অনুমতি দিলেন। তা দেখে যায়নাব বিনত
জাহাশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা নিজের জন্য তাঁবু
লাগানোর নির্দেশ দিলে তা পালন করা হলো।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত
আদায় করে নিজের তাঁবুতে ফিরে এসে কয়েকটি তাবু
দেখতে পেলেন। তখন তিনি বললেন, এ কি
ব্যাপার? লোকেরা বলল, ‘আয়েশা, হাফসা ও যায়নাব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুন্নার তাঁবু। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তারা
কি নেকী পেতে চায়? আমি আর ই‘তিকাফ করব না।
এরপর তিনি ফিরে আসলেন। পরে সাওম শেষ করে
শাওয়াল মাসের দশ দিন ই‘তিকাফ করেন।” [297]
রোগ বা সফরের কারণে রমযানে ই‘তিকাফ করতে না
পারলে
উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃُﺑَﻲِّ ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐٍ، ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ: « ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﺴَﺎﻓَﺮَ ﻋَﺎﻣًﺎ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡِ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞِ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﻳَﻮْﻣًﺎ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রামাযানের শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করতেন। কিন্তু
এক বছর তিনি ই‘তিকাফ করতে পারেন নি। ফলে
পরবর্তী বছর তিনি বিশ দিন ই‘তিকাফ করেন।” [298]
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻓَﻠَﻢْ
ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒْ ﻋَﺎﻣًﺎ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রামাযানের শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করতেন। কিন্তু
এক বছর তিনি ই‘তিকাফ করতে পারেন নি। ফলে
পরবর্তী বছর তিনি বিশ দিন ই‘তিকাফ করেন।” [299]
ই‘তিকাফকারী গোসলের জন্য মাথা ঘরে ঢুকিয়ে
দেওয়া
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
«ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺗُﺮَﺟِّﻞُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﻫِﻲَ ﺣَﺎﺋِﺾٌ ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﻌْﺘَﻜِﻒٌ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ
ﻭَﻫِﻲَ ﻓِﻲ ﺣُﺠْﺮَﺗِﻬَﺎ ﻳُﻨَﺎﻭِﻟُﻬَﺎ ﺭَﺃْﺳَﻪُ »
“তিনি ঋতুবর্তী অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের চুল আঁচড়িয়ে দিতেন। ঐ
সময়ে তিনি মসজিদে ই‘তিকাফ অবস্থায় থাকতেন
আর ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর হুজরায়
অবস্থান করতেন। তিনি ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার দিকে তাঁর মাথা বাড়িয়ে
দিতেন।” [300]
ই‘তিকাফকারী কখন ই‘তিকাফের স্থানে প্রবেশ
করবে
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻌَﺸْﺮِ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﻜُﻨْﺖُ ﺃَﺿْﺮِﺏُ
ﻟَﻪُ ﺧِﺒَﺎﺀً ﻓَﻴُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﺛُﻢَّ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻪُ، ﻓَﺎﺳْﺘَﺄْﺫَﻧَﺖْ ﺣَﻔْﺼَﺔُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺃَﻥْ ﺗَﻀْﺮِﺏَ ﺧِﺒَﺎﺀً، ﻓَﺄَﺫِﻧَﺖْ ﻟَﻬَﺎ،
ﻓَﻀَﺮَﺑَﺖْ ﺧِﺒَﺎﺀً، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺭَﺃَﺗْﻪُ ﺯَﻳْﻨَﺐُ ﺍﺑْﻨَﺔُ ﺟَﺤْﺶٍ ﺿَﺮَﺑَﺖْ ﺧِﺒَﺎﺀً ﺁﺧَﺮَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺭَﺃَﻯ ﺍﻷَﺧْﺒِﻴَﺔَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: «ﻣَﺎ ﻫَﺬَﺍ؟ » ﻓَﺄُﺧْﺒِﺮَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
« ﺃَﻟْﺒِﺮَّ ﺗُﺮَﻭْﻥَ ﺑِﻬِﻦَّ » ﻓَﺘَﺮَﻙَ ﺍﻟِﺎﻋْﺘِﻜَﺎﻑَ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮَ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻋَﺸْﺮًﺍ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ »
“রমযানের শেষ দশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ করতেন। আমি তাবু তৈরি
করে দিতাম। তিনি ফজরের সালাত আদায় করে
তাতে প্রবেশ করতেন। (নবী স্ত্রী) হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁবু খাটাবার জন্য ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে অনুমতি চাইলেন।
তিনি তাঁকে অনুমতি দিলে হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাবুঁ খাটালেন। (নবী স্ত্রী
যয়নাব বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা) তা
দেখে আরেকটি তাবুঁ তৈরি করলেন। সকালে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবুঁগুলো
দেখলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এগুলো কী? তাকেঁ
জানানো হলে তিনি বললেন, তোমরা কি মনে কর
এগুলো দিয়ে নেকী হাসিল হবে? এ মাসে তিনি
ই‘তিকাফ ত্যাগ করলেন এবং পরে শাওয়াল মাসে ১০
দিন (কাযাস্বরূপ) ই‘তিকাফ করেন।” [301]
পঞ্চম অধ্যায়
সদকাতুল ফিতর
সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়া প্রসঙ্গে
আবু ‘আলীয়া রহ. বলেছেন, সদাকাতুল ফিতর ফরয।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻓَﺮَﺽَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺯَﻛَﺎﺓَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ
ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻌَﺒْﺪِ ﻭَﺍﻟﺤُﺮِّ، ﻭَﺍﻟﺬَّﻛَﺮِ ﻭَﺍﻷُﻧْﺜَﻰ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻐِﻴﺮِ ﻭَﺍﻟﻜَﺒِﻴﺮِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ، ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﻬَﺎ ﺃَﻥْ ﺗُﺆَﺩَّﻯ
ﻗَﺒْﻞَ ﺧُﺮُﻭﺝِ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ »
“প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত
বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের ওপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদকাতুল
ফিতর হিসাবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক
সা‘ পরিমাণ আদায় করা ফরয করেছেন এবং
লোকজনের ঈদের সালাত বের হওয়ার পূর্বেই তা
আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।” [302]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻭَﻛَّﻠَﻨِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺤِﻔْﻆِ ﺯَﻛَﺎﺓِ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻓَﺄَﺗَﺎﻧِﻲ ﺁﺕٍ ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﻳَﺤْﺜُﻮ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﻄَّﻌَﺎﻡِ ﻓَﺄَﺧَﺬْﺗُﻪُ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﺄَﺭْﻓَﻌَﻨَّﻚَ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻓَﺬَﻛَﺮَ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚَ
-، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻭَﻳْﺖَ ﺇِﻟَﻰ ﻓِﺮَﺍﺷِﻚَ ﻓَﺎﻗْﺮَﺃْ ﺁﻳَﺔَ ﺍﻟﻜُﺮْﺳِﻲِّ، ﻟَﻦْ ﻳَﺰَﺍﻝَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺣَﺎﻓِﻆٌ، ﻭَﻻَ
ﻳَﻘْﺮَﺑُﻚَ ﺷَﻴْﻄَﺎﻥٌ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺼْﺒِﺢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ «ﺻَﺪَﻗَﻚَ ﻭَﻫُﻮَ ﻛَﺬُﻭﺏٌ ﺫَﺍﻙَ
ﺷَﻴْﻄَﺎﻥٌ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে রমযানের যাকাত (সদকায়ে ফিতরের)
হিফাজতের দায়িত্ব প্রদান করলেন। এরপর আমার
নিকট একজন লোক আসলো। সে তার দু’হাতের কোষ
ভরে খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে লাগলো । তখন আমি
তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি অবশ্যই
তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নিকট নিয়ে যাব। তখন সে
একটি হাদীস উল্লেখ করল এবং বলল, যখন তুমি
বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পড়বে।
তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার
জন্য একজন হিফাজতকারী থাকবে এবং ভোর হওয়া
পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, সে তোমাকে সত্য বলেছে অথচ
সে মিথ্যাবাদী এবং শয়তান ছিল।” [303]
মুসলিমদের গোলাম ও অন্যান্যের পক্ষ থেকে
সদকাতুল ফিতর আদায় করা
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺮَﺽَ ﺯَﻛَﺎﺓَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ
ﺷَﻌِﻴﺮٍ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺣُﺮٍّ، ﺃَﻭْ ﻋَﺒْﺪٍ ﺫَﻛَﺮٍ ﺃَﻭْ ﺃُﻧْﺜَﻰ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ »
মুসলিমদের প্রত্যেক আযাদ, গোলাম পুরুষ ও নারীর
পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর হিসাবে খেজুর অথবা যব
থেকে এক সা‘ পরিমাণ আদায় করা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয
করেছেন।” [304]
সদকাতুল ফিতর এক সা‘ পরিমাণ যব
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﻄْﻌِﻢُ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔَ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ »
“আমরা এক সা‘ পরিমাণ যব দ্বারা সদকাতুল ফিতর
আদায় করতাম।” [305]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﺨْﺮِﺝُ ﺇِﺫْ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻴﻨَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺯَﻛَﺎﺓَ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻋَﻦْ ﻛُﻞِّ ﺻَﻐِﻴﺮٍ،
ﻭَﻛَﺒِﻴﺮٍ، ﺣُﺮٍّ ﺃَﻭْ ﻣَﻤْﻠُﻮﻙٍ، ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻗِﻂٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ
ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺯَﺑِﻴﺐٍ » ﻓَﻠَﻢْ ﻧَﺰَﻝْ ﻧُﺨْﺮِﺟُﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺪِﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥَ
ﺣَﺎﺟًّﺎ، ﺃَﻭْ ﻣُﻌْﺘَﻤِﺮًﺍ ﻓَﻜَﻠَّﻢَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤِﻨْﺒَﺮِ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﻛَﻠَّﻢَ ﺑِﻪِ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺃَﻥْ ﻗَﺎﻝَ : «ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺭَﻯ
ﺃَﻥَّ ﻣُﺪَّﻳْﻦِ ﻣِﻦْ ﺳَﻤْﺮَﺍﺀِ ﺍﻟﺸَّﺎﻡِ، ﺗَﻌْﺪِﻝُ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ » ﻓَﺄَﺧَﺬَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺑِﺬَﻟِﻚَ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺳَﻌِﻴﺪٍ:
« ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﻠَﺎ ﺃَﺯَﺍﻝُ ﺃُﺧْﺮِﺟُﻪُ ﻛَﻤَﺎ ﻛُﻨْﺖُ ﺃُﺧْﺮِﺟُﻪُ، ﺃَﺑَﺪًﺍ ﻣَﺎ ﻋِﺸْﺖُ »
“আমরা সদকাতুল ফিতর বাবদ এক সা‘ খাদ্য গম
অথবা এক সা‘ যব অথবা এক সা‘ খেজুর অথবা এক সা‘
পনির কিংবা এক ‘সা কিসমিস প্রদান করতাম।
‘আব্দুল্লাহ ইবন মাসলামা ইবন কা‘নাব রহ. এর সনদে
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন, তখন
আমরা ছোট ও বড় স্বাধীন ও ক্রীতদাস প্রত্যেকের
পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর বাবদ এক সা‘ পরিমাণ
খাদ্য অথবা এক সা‘ পনির অথবা এক সা‘ যব অথবা এক
সা‘ খেজুর অথবা এক সা‘ কিশমিশ প্রদান করতাম।
এভাবেই আমরা তা আদায় করতে থাকি।
পরে মু‘আবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু ‘
আনহু হজ অথবা ‘উমরার উদ্দেশ্যে যখন আমাদের
নিকট আসলেন তখন তিনি মিম্বরে আরোহণ করে
উপস্থিত লোকদের সাথে এ বিষয়ে আলাপ-
আলোচনা করলেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বললেন, আমার মতে
সিরিয়ার দু-মুদ গম এক সা‘ খেজুরের সামান।
লোকেরা তা গ্রহণ করে নিলেন।
আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি তো যত
দিন জীবিত থাকব ঐ ভাবেই সদকাতুল ফিতর আদায়
করব, যে ভাবে আমি সদকাতুল ফিতর আদায় করে
আসছিলাম। [306]
ইসমাঈল ইবন উমাইয়্যাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমাকে ইয়ায ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সা‘দ ইবন আবু
সারহ সংবাদ দিয়েছেন, তিনি আবু সাঈদ খুদরী
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন যে,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﺨْﺮِﺝُ ﺯَﻛَﺎﺓَ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓِﻴﻨَﺎ، ﻋَﻦْ ﻛُﻞِّ ﺻَﻐِﻴﺮٍ ﻭَﻛَﺒِﻴﺮٍ،
ﺣُﺮٍّ ﻭَﻣَﻤْﻠُﻮﻙٍ، ﻣِﻦْ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔِ ﺃَﺻْﻨَﺎﻑٍ: ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻗِﻂٍ، ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ " ﻓَﻠَﻢْ
ﻧَﺰَﻝْ ﻧُﺨْﺮِﺟُﻪُ ﻛَﺬَﻟِﻚَ، ﺣَﺘَّﻰ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔُ: « ﻓَﺮَﺃَﻯ ﺃَﻥَّ ﻣُﺪَّﻳْﻦِ ﻣِﻦْ ﺑُﺮٍّ ﺗَﻌْﺪِﻝُ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ » ﻗَﺎﻝَ
ﺃَﺑُﻮ ﺳَﻌِﻴﺪٍ: « ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﻠَﺎ ﺃَﺯَﺍﻝُ ﺃُﺧْﺮِﺟُﻪُ ﻛَﺬَﻟِﻚَ »
“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন, তখন আমরা ছোট ও
বড়, স্বাধীন ও ক্রীতদাস প্রত্যেকের পক্ষ থেকে তিন
প্রকার বস্তু থেকে সদকাতুল ফিতর বাবদ এক
সা‘ খেজুর, এক সা‘ পনির অথবা এক
সা‘ যব প্রদান করতাম।
এভাবে আমরা সদকাতুল ফিতর আদায় করছিলাম।
অতঃপর মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘ আসলো। তখন
তিনি দু মুদ এক সা‘ খেজুরের সমান ধার্য করেন। আবু
সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তো সর্বদা
পূর্বের ন্যায়ই আদায় করতে থাকব।” [307]
আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﺨْﺮِﺝُ ﺯَﻛَﺎﺓَ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ ﻣِﻦْ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔِ ﺃَﺻْﻨَﺎﻑٍ: ﺍﻟْﺄَﻗِﻂِ، ﻭَﺍﻟﺘَّﻤْﺮِ، ﻭَﺍﻟﺸَّﻌِﻴﺮِ »
“আমরা পনির, খেজুর ও যব -এ তিন প্রকার বস্তু থেকে
সদকাতুর ফিতর আদায় করতাম।” [308]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔَ، ﻟَﻤَّﺎ ﺟَﻌَﻞَ ﻧِﺼْﻒَ ﺍﻟﺼَّﺎﻉِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤِﻨْﻄَﺔِ، ﻋَﺪْﻝَ ﺻَﺎﻉٍ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻧْﻜَﺮَ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺑُﻮ
ﺳَﻌِﻴﺪٍ، ﻭَﻗَﺎﻝَ: ﻟَﺎ ﺃُﺧْﺮِﺝُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻛُﻨْﺖُ ﺃُﺧْﺮِﺝُ ﻓِﻲ ﻋَﻬْﺪِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺯَﺑِﻴﺐٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻗِﻂٍ »
“মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন অর্ধ সা‘ গমকে
এক সা‘ খেজুরের সমপরিমাণ নির্ধারণ করলেন, তখন
আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তা মেনে নিলেন না
এবং বললেন, আমি সদকাতুল ফিতর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে যা
আদায় করতাম এখনও তাই আদায় করব। এক সা‘ খেজুর
অথবা এক সা‘ কিশমিশ অথবা এক সা‘ যব কিংবা এক
সা‘ পনির”। [309]
সদকাতুল ফিতর এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য
ইয়ায ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সা‘দ ইবন আবু সারহ
আল-‘আমেরী তিনি আবু সাঈদ খুদরী
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন যে,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﺨْﺮِﺝُ ﺯَﻛَﺎﺓَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ
ﻣِﻦْ ﺃَﻗِﻂٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺯَﺑِﻴﺐٍ »
“আমরা এক সা‘ পরিমাণ কিসমিস দিয়ে সদকাতুল
ফিতর আদায় করতাম।” [310]
সদকাতুল ফিতর এক সা‘ পরিমাণ খেজুর
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন,
«ﺃَﻣَﺮَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺰَﻛَﺎﺓِ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ » ﻗَﺎﻝَ
ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: « ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻋِﺪْﻟَﻪُ ﻣُﺪَّﻳْﻦِ ﻣِﻦْ ﺣِﻨْﻄَﺔٍ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সদকাতুল ফিতর হিসাবে এক সা‘ পরিমাণ খেজুর বা
এক সা‘ পরিমাণ যব দিয়ে আদায় করতে নির্দেশ দেন।
‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘তারপর
লোকেরা যবের সমপরিমাণ হিসেবে দু’ মুদ (অর্থ
সা‘) গম আদায় করতে থাকে’।” [311]
সদকাতুল ফিতর এক সা‘ পরিমাণ কিসমিস থেকে
আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﻌْﻄِﻴﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺯَﻣَﺎﻥِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ،
ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺯَﺑِﻴﺐٍ »، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺟَﺎﺀَ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔُ ﻭَﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻟﺴَّﻤْﺮَﺍﺀُ، ﻗَﺎﻝَ:
« ﺃُﺭَﻯ ﻣُﺪًّﺍ ﻣِﻦْ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻌْﺪِﻝُ ﻣُﺪَّﻳْﻦِ »
“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
যুগে এক সা‘ খাদ্যদ্রব্য বা এক সা‘ খেজুর বা এক
সা‘ যব বা এক সা‘ কিসমিস দিয়ে সদকাতুল ফিতর
আদায় করতাম। মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর যুগে
যখন গম আমদানী হলো তখন তিনি বললেন, এক মুদ
গম (পূর্বোক্তগুলোর) দু’ মুদ-এর সমপরিমাণ বলে আমার
মনে হয়।” [312]
ঈদের সালাতের পূর্বেই সদকাতুল ফিতর আদায় করা
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺰَﻛَﺎﺓِ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻗَﺒْﻞَ ﺧُﺮُﻭﺝِ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
লোকদেরকে ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার
পূর্বেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ
দেন।” [313]
আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧُﺨْﺮِﺝُ ﻓِﻲ ﻋَﻬْﺪِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﻃَﻌَﺎﻡٍ »،
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺳَﻌِﻴﺪٍ: « ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻃَﻌَﺎﻣَﻨَﺎ ﺍﻟﺸَّﻌِﻴﺮُ ﻭَﺍﻟﺰَّﺑِﻴﺐُ ﻭَﺍﻷَﻗِﻂُ ﻭَﺍﻟﺘَّﻤْﺮُ »
“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
যুগে ঈদের দিন এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য সদকাতুল ফিতর
হিসাবে আদায় করতাম। আবু সা‘ঈদ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমাদের খাদ্যদ্রব্য ছিল
যব, কিসমিস, পনির ও খেজুর।” [314]
স্বাধীন ও গোলামের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর
আদায় করা ওয়াজিব
যুহরী রহ. বলেছেন, বানিজ্যিক পণ্য হিসেবে
ব্যবসায়ের জন্য ক্রয় করা গোলামের যাকাত দিতে
হবে এবং তাদের সদাকাতুল ফিতরও দিতে হবে।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻓَﺮَﺽَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺪَﻗَﺔَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺃَﻭْ ﻗَﺎﻝَ: ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺬَّﻛَﺮِ، ﻭَﺍﻷُﻧْﺜَﻰ،
ﻭَﺍﻟﺤُﺮِّ، ﻭَﺍﻟﻤَﻤْﻠُﻮﻙِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻤْﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ «ﻓَﻌَﺪَﻝَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺑِﻪِ ﻧِﺼْﻒَ ﺻَﺎﻉٍ ﻣِﻦْ
ﺑُﺮٍّ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، » ﻳُﻌْﻄِﻲ ﺍﻟﺘَّﻤْﺮَ «، ﻓَﺄَﻋْﻮَﺯَ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺘَّﻤْﺮِ،
ﻓَﺄَﻋْﻄَﻰ ﺷَﻌِﻴﺮًﺍ »، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ «ﻳُﻌْﻄِﻲ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻐِﻴﺮِ، ﻭَﺍﻟﻜَﺒِﻴﺮِ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻴُﻌْﻄِﻲ ﻋَﻦْ
ﺑَﻨِﻲَّ »، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ « ﻳُﻌْﻄِﻴﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻘْﺒَﻠُﻮﻧَﻬَﺎ، ﻭَﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳُﻌْﻄُﻮﻥَ ﻗَﺒْﻞَ
ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺑِﻴَﻮْﻡٍ ﺃَﻭْ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক
পুরুষ, মহিলা, আযাদ ও গোলামের পক্ষ থেকে
সদকাতুল ফিতর অথবা (বলেছেন) সদকা-ই-রামাযান
হিসাবে এক সা‘ খেজুর বা এক এক সা‘ যব আদায় করা
ফরয করেছেন। তারপর লোকেরা অর্ধ সা‘ গমকে এক
সা‘ খেজুরের সমমান দিতে লাগল। (বর্ণনাকারী
নাফে’ বলেন) ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খেজুর
(সদকাতুল ফিতর হিসাবে) দিতেন। এক সময় মদীনায়
খেজুর দুর্লভ হলে যব দিয়ে তা আদায় করেন। ইবন
উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত
বয়স্ক সকলের পক্ষ থেকেই সদকাতুল ফিতর আদায়
করতেন, এমনকি আমার সন্তানদের পক্ষ থেকেও
সদকার দ্রব্য গ্রহীতাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং
ঈদের এক-দু’ দিন পূর্বেই আদায় করে দিতেন।”
আবু ‘আব্দুল্লাহ রহ. বলেন, আমার সন্তান অর্থাৎ
নাফে’ রহ. এর সন্তান। তিনি আরও বলেন, সদকার
মাল একত্রিত করার জন্য দিতেন, ফকীরদের দেওয়ার
জন্য নয়। [315]
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও প্রাপ্ত বয়স্কদের পক্ষ থেকে
সদাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব
আবু ‘আমর রহ. বলেন, উমার, আলী, ইবন উমার, জাবির,
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম, তাউস, ‘আতা ও ইবন
সীরীন রহ. ইয়াতিমের মাল থেকে সদাকাতুল ফিতর
আদায় করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। যুহুরী রহ. বলেন,
পাগলের মাল থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা
হবে।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻓَﺮَﺽَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺪَﻗَﺔَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻌِﻴﺮٍ، ﺃَﻭْ ﺻَﺎﻋًﺎ ﻣِﻦْ
ﺗَﻤْﺮٍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼَّﻐِﻴﺮِ ﻭَﺍﻟﻜَﺒِﻴﺮِ، ﻭَﺍﻟﺤُﺮِّ ﻭَﺍﻟﻤَﻤْﻠُﻮﻙِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অপ্রাপ্ত বয়স্ক, প্রাপ্ত বয়স্ক, আযাদ ও গোলাম
প্রত্যেকের পক্ষ থেকে এক সা‘ যব অথবা এক সা‘ খেজুর
সদকাতুল ফিতর হিসাবে আদায় করা ফরয করে
দিয়েছেন।” [316]
ষষ্ঠ অধ্যায়
ঈদের সালাত
দু’ঈদ ও সুন্দর পোশাক পরিধান করা
‘আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন,
« ﺃَﺧَﺬَ ﻋُﻤَﺮُ ﺟُﺒَّﺔً ﻣِﻦْ ﺇِﺳْﺘَﺒْﺮَﻕٍ ﺗُﺒَﺎﻉُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴُّﻮﻕِ، ﻓَﺄَﺧَﺬَﻫَﺎ، ﻓَﺄَﺗَﻰ ﺑِﻬَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺍﺑْﺘَﻊْ ﻫَﺬِﻩِ ﺗَﺠَﻤَّﻞْ ﺑِﻬَﺎ ﻟِﻠْﻌِﻴﺪِ ﻭَﺍﻟﻮُﻓُﻮﺩِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺭَﺳُﻮﻝُ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫَﺬِﻩِ ﻟِﺒَﺎﺱُ ﻣَﻦْ ﻻَ ﺧَﻼَﻕَ ﻟَﻪُ » ﻓَﻠَﺒِﺚَ ﻋُﻤَﺮُ ﻣَﺎ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻥْ
ﻳَﻠْﺒَﺚَ، ﺛُﻢَّ ﺃَﺭْﺳَﻞَ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺠُﺒَّﺔِ ﺩِﻳﺒَﺎﺝٍ، ﻓَﺄَﻗْﺒَﻞَ ﺑِﻬَﺎ ﻋُﻤَﺮُ، ﻓَﺄَﺗَﻰ
ﺑِﻬَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ: ﺇِﻧَّﻚَ ﻗُﻠْﺖَ: «ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫَﺬِﻩِ ﻟِﺒَﺎﺱُ
ﻣَﻦْ ﻻَ ﺧَﻼَﻕَ ﻟَﻪُ » ﻭَﺃَﺭْﺳَﻠْﺖَ ﺇِﻟَﻲَّ ﺑِﻬَﺬِﻩِ ﺍﻟﺠُﺒَّﺔِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
« ﺗَﺒِﻴﻌُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺗُﺼِﻴﺐُ ﺑِﻬَﺎ ﺣَﺎﺟَﺘَﻚَ »
“বাজারে বিক্রি হচ্ছিল এমন একটি রেশমী জুব্বা
নিয়ে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ্! আপনি এটি কিনে নিন। ঈদের সময়
এবং প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এটি
দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করবেন। তথন নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
বললেন, এটি তো তার পোষাক যার (আখিরাতে)
কল্যাণের কোনো অংশ নেই। এ ঘটনার পর উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আল্লাহর যত দিন ইচ্ছা ততদিন
অতিবহিত করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট একটি রেশমী
জুব্বা পাঠালেন, উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তা গ্রহণ
করেন এবং সেটি নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! আপনি তো বলেছিলেন, এটা তার
পোষাক যার (আখিরাতে) কল্যাণের কোনো অংশ
নাই। অথচ আপনি এ জু্ব্বা আমার নিকট পাঠিয়েছেন।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
বললেন, তুমি এটি বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয়লব্ধ
অর্থে তোমার প্রয়োজন মিটাও।” [317]
ঈদের দিন বর্শা ও ঢালের খেলা
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻲَّ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻋِﻨْﺪِﻱ ﺟَﺎﺭِﻳَﺘَﺎﻥِ ﺗُﻐَﻨِّﻴَﺎﻥِ ﺑِﻐِﻨَﺎﺀِ ﺑُﻌَﺎﺙَ،
ﻓَﺎﺿْﻄَﺠَﻊَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻔِﺮَﺍﺵِ، ﻭَﺣَﻮَّﻝَ ﻭَﺟْﻬَﻪُ، ﻭَﺩَﺧَﻞَ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻓَﺎﻧْﺘَﻬَﺮَﻧِﻲ ﻭَﻗَﺎﻝَ: ﻣِﺰْﻣَﺎﺭَﺓُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ
ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺄَﻗْﺒَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺩَﻋْﻬُﻤَﺎ »،
ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻏَﻔَﻞَ ﻏَﻤَﺰْﺗُﻬُﻤَﺎ ﻓَﺨَﺮَﺟَﺘَﺎ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋِﻴﺪٍ، ﻳَﻠْﻌَﺐُ ﺍﻟﺴُّﻮﺩَﺍﻥُ ﺑِﺎﻟﺪَّﺭَﻕِ ﻭَﺍﻟﺤِﺮَﺍﺏِ، ﻓَﺈِﻣَّﺎ ﺳَﺄَﻟْﺖُ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﻗَﺎﻝَ : « ﺗَﺸْﺘَﻬِﻴﻦَ ﺗَﻨْﻈُﺮِﻳﻦَ؟ » ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﺄَﻗَﺎﻣَﻨِﻲ
ﻭَﺭَﺍﺀَﻩُ، ﺧَﺪِّﻱ ﻋَﻠَﻰ ﺧَﺪِّﻩِ، ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﻘُﻮﻝُ: « ﺩُﻭﻧَﻜُﻢْ ﻳَﺎ ﺑَﻨِﻲ ﺃَﺭْﻓِﺪَﺓَ » ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﻣَﻠِﻠْﺖُ، ﻗَﺎﻝَ:
« ﺣَﺴْﺒُﻚِ؟ » ﻗُﻠْﺖُ: ﻧَﻌَﻢْ، ﻗَﺎﻝَ: «ﻓَﺎﺫْﻫَﺒِﻲ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার
কাছে এলেন তখন আমার নিকট দু’টি মেয়ে বু’আস যুদ্ধ
সংক্রান্ত কবিতা আবৃত্তি করছিল। তিনি বিছানায়
শুয়ে পড়লেন এবং চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে
রাখলেন। এ সময় আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
এলেন, তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, শয়তানী
বাদ্যযন্ত্র (দফ) বাজান হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে। তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে মুখ
ফিরিয়ে বললেন, তাদের ছেড়ে দাও। তারপর তিনি
যখন অন্য দিকে ফিরলেন তখন আমি তাদের ইঙ্গিত
করলাম এবং তারা বের হয়ে গেল। আর ঈদের দিন
সুদানীরা বর্শা ও ঢালের দ্বারা খেলা করত। আমি
নিজে (একবার) রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের কছে আরয করেছিলাম অথবা তিনি
নিজেই বলেছিলেন, তুমি কি তাদের খেলা দেখতে
চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ, তারপর তিনি আমাকে তাঁর
পিছনে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন যে, আমার
গাল ছিল তার গালের সাথে লাগান। তিনি তাদের
বললেন, তোমরা যা করতে ছিলে তা করতে থাক, হে
বনু আরফিদা। পরিশেষে আমি যখন ক্লান্ত হয়ে
পড়লাম, তথন তিনি আমাকে বললেন, তোমার কি
দেখা শেষ হয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ, তিনি
বললেন, তাহলে চলে যাও।” [318]
মুসলিমদের জন্য উভয় ঈদের রীতিনীতি
বারা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
খুতবা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন,
« ﺇِﻥَّ ﺃَﻭَّﻝَ ﻣَﺎ ﻧَﺒْﺪَﺃُ ﻣِﻦْ ﻳَﻮْﻣِﻨَﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺃَﻥْ ﻧُﺼَﻠِّﻲَ، ﺛُﻢَّ ﻧَﺮْﺟِﻊَ، ﻓَﻨَﻨْﺤَﺮَ ﻓَﻤَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺻَﺎﺏَ ﺳُﻨَّﺘَﻨَﺎ »
“আমাদের আজকের এ দিনে আমরা যে কাজ প্রথম শুরু
করব, তা হলো সালাত আদায় করা। এরপর ফিরে আসব
এবং কুরবানী করব। তাই যে এরূপ করে সে আমাদের
রীতিনীতি সঠিকভাবে পালন করল।” [319]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻭَﻋِﻨْﺪِﻱ ﺟَﺎﺭِﻳَﺘَﺎﻥِ ﻣِﻦْ ﺟَﻮَﺍﺭِﻱ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ ﺗُﻐَﻨِّﻴَﺎﻥِ ﺑِﻤَﺎ ﺗَﻘَﺎﻭَﻟَﺖِ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭُ ﻳَﻮْﻡَ ﺑُﻌَﺎﺙَ،
ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻭَﻟَﻴْﺴَﺘَﺎ ﺑِﻤُﻐَﻨِّﻴَﺘَﻴْﻦِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ: ﺃَﻣَﺰَﺍﻣِﻴﺮُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻓِﻲ ﺑَﻴْﺖِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻡِ ﻋِﻴﺪٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﺑَﻜْﺮٍ،
ﺇِﻥَّ ﻟِﻜُﻞِّ ﻗَﻮْﻡٍ ﻋِﻴﺪًﺍ ﻭَﻫَﺬَﺍ ﻋِﻴﺪُﻧَﺎ »
“(একদিন আমার ঘরে) আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
এলেন তখন আমার নিকট আনসার দু’টি মেয়ে বু’আস
যুদ্ধের দিন আনসারীগণ পরস্পর যা বলেছিলেন সে
সম্পর্কে কবিতা আবৃত্তি করছিল। তিনি
বলেন, তারা কোনো পেশাগত গায়িকা ছিল না।
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘরে
শয়তানী বাদ্যযন্ত্র। আর এটি ছিল ঈদের দিন। তখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, হে আবু বকর! প্রত্যেক জাতির জন্যই আনন্দ
উৎসব রয়েছে আর এ হলো আমাদের আনন্দ।” [320]
ঈদুল ফিতরের দিন সালাতে বের হওয়ার আগে আহার
করা
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻻَ ﻳَﻐْﺪُﻭ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﺗَﻤَﺮَﺍﺕٍ » ﻭَﻗَﺎﻝَ
ﻣُﺮَﺟَّﺄُ ﺑْﻦُ ﺭَﺟَﺎﺀٍ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﻋُﺒَﻴْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﻧَﺲٌ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ،
«ﻭَﻳَﺄْﻛُﻠُﻬُﻦَّ ﻭِﺗْﺮًﺍ »
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল
ফিতরের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের থেকেন না।
অপর এক বর্ণনায় আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা
করেন যে, তিনি তা বেজোড় সংখ্যক খেতেন।” [321]
কুরবানীর দিন আহার করা
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﺫَﺑَﺢَ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﻓَﻠْﻴُﻌِﺪْ »، ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﻳُﺸْﺘَﻬَﻰ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟﻠَّﺤْﻢُ، ﻭَﺫَﻛَﺮَ ﻣِﻦْ
ﺟِﻴﺮَﺍﻧِﻪِ، ﻓَﻜَﺄَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺪَّﻗَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻋِﻨْﺪِﻱ ﺟَﺬَﻋَﺔٌ ﺃَﺣَﺐُّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ
ﺷَﺎﺗَﻲْ ﻟَﺤْﻢٍ، ﻓَﺮَﺧَّﺺَ ﻟَﻪُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻼَ ﺃَﺩْﺭِﻱ ﺃَﺑَﻠَﻐَﺖِ ﺍﻟﺮُّﺧْﺼَﺔُ ﻣَﻦْ ﺳِﻮَﺍﻩُ
ﺃَﻡْ ﻻَ »
“সালাতের আগে যে যবেহ করবে তাকে আবার যবেহ
(কুরবানী) করতে হবে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে
বলল, আজকের এদিন গোশত খাওয়ার আকাংক্ষা করা
হয়। সে তার প্রতিবেশিদের অবস্থা উল্লেখ করল।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন
তার কথার সত্যতা স্বীকার করলেন। সে বলল, আমার
নিকট এখন ছয় মাসের এমন একটি মেষ শাবক আছে, যা
আমার কাছে দু’টি হৃষ্টপুষ্ট বকরীর চেয়েও বেশি
পচন্দনীয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে সেটা কুরবানী করার অনুমতি দিলেন। অবশ্য
আমি জানি না, এ অনুমতি তাকে ছাড়া অন্যদের
জন্যও কি না?” [322]
বারা ইবন ‘আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺧَﻄَﺒَﻨَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻷَﺿْﺤَﻰ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﻣَﻦْ ﺻَﻠَّﻰ ﺻَﻼَﺗَﻨَﺎ،
ﻭَﻧَﺴَﻚَ ﻧُﺴُﻜَﻨَﺎ، ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺻَﺎﺏَ ﺍﻟﻨُّﺴُﻚَ، ﻭَﻣَﻦْ ﻧَﺴَﻚَ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﻭَﻻَ ﻧُﺴُﻚَ
ﻟَﻪُ » ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺑُﺮْﺩَﺓَ ﺑْﻦُ ﻧِﻴَﺎﺭٍ ﺧَﺎﻝُ ﺍﻟﺒَﺮَﺍﺀِ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﻧَﺴَﻜْﺖُ ﺷَﺎﺗِﻲ ﻗَﺒْﻞَ
ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﻭَﻋَﺮَﻓْﺖُ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻴَﻮْﻡَ ﻳَﻮْﻡُ ﺃَﻛْﻞٍ ﻭَﺷُﺮْﺏٍ، ﻭَﺃَﺣْﺒَﺒْﺖُ ﺃَﻥْ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺷَﺎﺗِﻲ ﺃَﻭَّﻝَ ﻣَﺎ ﻳُﺬْﺑَﺢُ ﻓِﻲ
ﺑَﻴْﺘِﻲ، ﻓَﺬَﺑَﺤْﺖُ ﺷَﺎﺗِﻲ ﻭَﺗَﻐَﺪَّﻳْﺖُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺁﺗِﻲَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ، ﻗَﺎﻝَ: « ﺷَﺎﺗُﻚَ ﺷَﺎﺓُ ﻟَﺤْﻢٍ » ﻗَﺎﻝَ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻋِﻨْﺪَﻧَﺎ ﻋَﻨَﺎﻗًﺎ ﻟَﻨَﺎ ﺟَﺬَﻋَﺔً ﻫِﻲَ ﺃَﺣَﺐُّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺷَﺎﺗَﻴْﻦِ، ﺃَﻓَﺘَﺠْﺰِﻱ ﻋَﻨِّﻲ؟ ﻗَﺎﻝَ:
«ﻧَﻌَﻢْ ﻭَﻟَﻦْ ﺗَﺠْﺰِﻱَ ﻋَﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﺑَﻌْﺪَﻙَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল
আযহার দিন সালাতের পর আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা
দান করেন। খুতবায় বলেন, যে আমাদের মতো সালাত
আদায় করল এবং আমাদের মতো কুরবানী করল, সে
কুরবানীর রীতিনীতি যথাযথ পালন করল। আর যে
সালাতের আগে কুরবানী করল তা সালাতের আগে
হয়ে গেল, কিন্তু এতে তার কুরবানী হবে না। বারা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মামা আবু বুরদাহ ইবন নিয়ার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তখন বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ!
আমার জানামতে আজকের দিনটি পানাহারের দিন।
তাই আমি পচন্দ করলাম যে, আমার ঘরে সর্বপ্রথম
যবেহ করা হোক আমার বকরীই। তাই আমি আমার
বকরীটি যবেহ করেছি এবং সালাতে আসার পূর্বে
তা দিয়ে নাশতাও করেছি। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার বকরীটি
গোশতের উদ্দেশ্যে যবেহ করা হয়েছে। তখন তিনি
আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের কাছে এমন
একটি ছয় মাসের শেষ শাবক আছে যা আমার কাছে
দু’টি বকরীর চাইতেও পচন্দীয়। এটি (কুরবানী দিলে)
কি আমার জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তবে
তুমি ব্যতীত অন্য কারো জন্য যথেষ্ট কবে না।” [323]
মিম্বার না নিয়ে ঈদগাহে গমন
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺨْﺮُﺝُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻷَﺿْﺤَﻰ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤُﺼَﻠَّﻰ، ﻓَﺄَﻭَّﻝُ
ﺷَﻲْﺀٍ ﻳَﺒْﺪَﺃُ ﺑِﻪِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻨْﺼَﺮِﻑُ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻡُ ﻣُﻘَﺎﺑِﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺟُﻠُﻮﺱٌ ﻋَﻠَﻰ ﺻُﻔُﻮﻓِﻬِﻢْ
ﻓَﻴَﻌِﻈُﻬُﻢْ، ﻭَﻳُﻮﺻِﻴﻬِﻢْ، ﻭَﻳَﺄْﻣُﺮُﻫُﻢْ، ﻓَﺈِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺃَﻥْ ﻳَﻘْﻄَﻊَ ﺑَﻌْﺜًﺎ ﻗَﻄَﻌَﻪُ، ﺃَﻭْ ﻳَﺄْﻣُﺮَ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﺃَﻣَﺮَ
ﺑِﻪِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻨْﺼَﺮِﻑُ » ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﺳَﻌِﻴﺪٍ : « ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺰَﻝِ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻋَﻠَﻰ ﺫَﻟِﻚَ ﺣَﺘَّﻰ ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻣَﻊَ ﻣَﺮْﻭَﺍﻥَ -
ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻣِﻴﺮُ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ - ﻓِﻲ ﺃَﺿْﺤًﻰ ﺃَﻭْ ﻓِﻄْﺮٍ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺗَﻴْﻨَﺎ ﺍﻟﻤُﺼَﻠَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﻣِﻨْﺒَﺮٌ ﺑَﻨَﺎﻩُ ﻛَﺜِﻴﺮُ ﺑْﻦُ
ﺍﻟﺼَّﻠْﺖِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻣَﺮْﻭَﺍﻥُ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﺗَﻘِﻴَﻪُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻠِّﻲَ، ﻓَﺠَﺒَﺬْﺕُ ﺑِﺜَﻮْﺑِﻪِ، ﻓَﺠَﺒَﺬَﻧِﻲ، ﻓَﺎﺭْﺗَﻔَﻊَ،
ﻓَﺨَﻄَﺐَ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ »، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ: ﻏَﻴَّﺮْﺗُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﺑَﺎ ﺳَﻌِﻴﺪٍ: « ﻗَﺪْ ﺫَﻫَﺐَ ﻣَﺎ ﺗَﻌْﻠَﻢُ »،
ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﻣَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻤَّﺎ ﻻَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﻳَﺠْﻠِﺴُﻮﻥَ ﻟَﻨَﺎ ﺑَﻌْﺪَ
ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﻓَﺠَﻌَﻠْﺘُﻬَﺎ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল
ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন ঈদগাহে গমন করে সেখানে
তিনি প্রথম যে কাজ শুরু করতেন তা হলো সালাত।
আর সালাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে মুখ করে
দাঁড়াতেন এবং তারা তাঁদের কাতারে বসে
থাকতেন। তিনি তাদের নসীহত করতেন, উপদেশ
দিতেন এবং নির্দেশ দান করতেন। যদি তিনি
কোনো সেনাদল পাঠাবার ইচ্ছা করতেন, তবে
তাদের আলাদা করে নিতেন অথবা যদি কোনো
বিষয়ে নির্দেশ জারী করার ইচ্ছা করতেন তবে তা
জারি করতেন। তারপর তিনি ফিরে যেতেন। আবু
সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, লোকেরা বরাবর
এই নিয়ম অনুসরণ করে আসছিল। অবশেষে যখন
মারওয়ান মদীনার আমীর হলেন, তখন ঈদুল আযহা বা
ঈদুল ফিতরের উদ্দেশ্যে আমি তার সঙ্গে বের হলাম।
আমরা যখন ঈদগাহে পৌঁছলাম তখন সেখানে একটি
মিম্বর দেখতে পেলাম, সেটি কাসীর ইবন সালত
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তৈরি করেছিলেন। মারওয়ান
সালাত আদায়ের আগেই এর উপর আরোহণ করতে
উদ্যত হলেন। আমি তার কাপড় টেনে ধরলাম। কিন্তু
কাপড় ছাড়িয়ে খুতবা দিলেন। আমি তাকে
বললাম, আল্লাহর কসম! তোমরা (রাসুলের সুন্নাত)
পরিবর্তন করে ফেলেছ। সে বলল, হে আবু সা‘ঈদ!
তোমরা যা জানতে, তা গত হয়ে গিয়েছে। আমি
বললাম, আল্লাহর কসম! আমি যা জানি, তা তার
চেয়ে ভালো, যা আমি জানি না। সে তখন
বলল, লোকজন সালাতের পর আমাদের জন্য বসে থাকে
না, তাই আমি খুতবা সালাতের আগেই
দিয়েছি।”[324]
পায়ে হেঁটে বা সাওয়ারীতে আরোহণ করে ঈদের
জামা‘আতে যাওয়া এবং আযান ও ইকামত ছাড়া
খুতবার পূর্বে সালাত আদায় করা
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺿْﺤَﻰ ﻭَﺍﻟﻔِﻄْﺮِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﺨْﻄُﺐُ ﺑَﻌْﺪَ
ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিন সালাত আদায়
করতেন। আর সালাত শেষে খুতবা দিতেন।” [325]
জাবির ইবন ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত,
ﻳَﻘُﻮﻝُ: « ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺧَﺮَﺝَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ، ﻓَﺒَﺪَﺃَ ﺑِﺎﻟﺼَّﻼَﺓِ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺨُﻄْﺒَﺔِ »
তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন বের থেকেন। এরপর
খুতবার আগে সালাত শুরু করেন।” [326]
« ﺃﺧﺒﺮﻧﻲ ﻋﻄﺎﺀ : ﺃﻥ ﻋﺒﺎﺱ ﺃﺭﺳﻞ ﺇﻟﻰ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﻓﻲ ﺃﻭﻝ ﻣﺎ ﺑﻮﻳﻊ ﻟﻪ ﺇﻧﻪ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﺆﺫﻥ
ﺑﺎﻟﺼﻼﺓ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻔﻄﺮ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﺨﻄﺒﺔ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺼﻼﺓ »
বর্ণনাকারী বলেন, আমাকে আতা রহ. বলেছেন
যে, ইবন যুবায়র রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাই‘আত
গ্রহণের প্রথম দিকে ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ
বলে লোক পাঠালেন যে, ঈদুল ফিতরের সালাতে
আযান দেওয়া হত না এবং খুতবা দেওয়া হতো
সালাতের পরে।” [327]
ইবন ‘আব্বাস ও জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তারা উভয়ে বলেন,
« ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻳُﺆَﺫَّﻥُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﻻَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻷَﺿْﺤَﻰ »
“ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদহার সালাতে আযান দেওয়া
হতো না”। [328]
জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত আছে যে,
ﻳَﻘُﻮﻝُ: « ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻡَ ﻓَﺒَﺪَﺃَ ﺑِﺎﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﺛُﻢَّ ﺧَﻄَﺐَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺑَﻌْﺪُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ
ﻓَﺮَﻍَ ﻧَﺒِﻲُّ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﺰَﻝَ، ﻓَﺄَﺗَﻰ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ، ﻓَﺬَﻛَّﺮَﻫُﻦَّ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﺄُ ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺪِ
ﺑِﻼَﻝٍ، ﻭَﺑِﻼَﻝٌ ﺑَﺎﺳِﻂٌ ﺛَﻮْﺑَﻪُ ﻳُﻠْﻘِﻲ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﺻَﺪَﻗَﺔً » ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﻄَﺎﺀٍ: ﺃَﺗَﺮَﻯ ﺣَﻘًّﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻹِﻣَﺎﻡِ
ﺍﻵﻥَ: ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﺗِﻲَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓَﻴُﺬَﻛِّﺮَﻫُﻦَّ ﺣِﻴﻦَ ﻳَﻔْﺮُﻍُ؟ ﻗَﺎﻝَ: « ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻚَ ﻟَﺤَﻖٌّ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﻥْ ﻻَ
ﻳَﻔْﻌَﻠُﻮﺍ »
“তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে প্রথমে সালাত আদায় করলেন
এবং পরে লোকদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন। যখন
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
খুতবা শেষ করলেন, তিনি (মিম্বর থেকে) নেমে
মহিলাগণের (কাতারে) আসলেন এবং তাদের নসীহত
করলেন। তখন তিনি বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর
হাতে ভর করেছিলেন এবং বিলাল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার কাপড় জড়িয়ে
ধরলে, মহিলাগণ এতে সদকার বস্তু দিতে লাগলেন।
আমি আতা রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি
এখনো জরুরী মনে করেন যে, ইমাম খুতবা শেষ করে
মহিলাগণের নিকট এসে তাদের নসীহত
করবেন? তিনি বললেন, নিশ্চয় তা তাদের জন্য
অবশ্যই জরুরী। তাদের কী হয়েছে যে, তারা তা
করবে না?” [329]
ঈদের সালাতের পরে খুতবা দেওয়া
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﺍﻟﻌِﻴﺪَ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻭَﻋُﻤَﺮَ، ﻭَﻋُﺜْﻤَﺎﻥَ ﺭَﺿِﻲَ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻢْ، ﻓَﻜُﻠُّﻬُﻢْ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺨُﻄْﺒَﺔِ »
“আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আবু বকর, উমার এবং ‘উসমান
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম-এর সঙ্গে সালাতে হাযির
ছিলাম। তারা সবাই খুতবার আগে সালাত আদায়
করতেন।” [330]
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻭَﻋُﻤَﺮُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻳُﺼَﻠُّﻮﻥَ
ﺍﻟﻌِﻴﺪَﻳْﻦِ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺨُﻄْﺒَﺔِ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আবু বকর এবং উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা উভয় ঈদের
সালাত খুতবার পূর্বে আদায় করতেন।” [331]
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত
যে,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﻠَّﻰ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﻟَﻢْ ﻳُﺼَﻞِّ ﻗَﺒْﻠَﻬَﺎ ﻭَﻻَ ﺑَﻌْﺪَﻫَﺎ، ﺛُﻢَّ
ﺃَﺗَﻰ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺑِﻼَﻝٌ، ﻓَﺄَﻣَﺮَﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ، ﻓَﺠَﻌَﻠْﻦَ ﻳُﻠْﻘِﻴﻦَ ﺗُﻠْﻘِﻲ ﺍﻟﻤَﺮْﺃَﺓُ ﺧُﺮْﺻَﻬَﺎ ﻭَﺳِﺨَﺎﺑَﻬَﺎ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল ফিতরে দু রাকা‘আত সালাত আদায় করেন। এর
আগে ও পরে কোনো সালাত আদায় করেন নি। তারপর
বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সঙ্গে নিয়ে
মহিলাদের কাছে এলেন এবং সদকা প্রদানের জন্য
তাদের নির্দেশ দিলেন। তখন তারা দিতে লাগলেন।
কেউ দিলেন আংটি, আবার কেউ দিলেন গলার
হার।” [332]
বারাআ ইবন ‘আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﺇِﻥَّ ﺃَﻭَّﻝَ ﻣَﺎ ﻧَﺒْﺪَﺃُ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣِﻨَﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺃَﻥْ ﻧُﺼَﻠِّﻲَ، ﺛُﻢَّ ﻧَﺮْﺟِﻊَ ﻓَﻨَﻨْﺤَﺮَ، ﻓَﻤَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺻَﺎﺏَ
ﺳُﻨَّﺘَﻨَﺎ، ﻭَﻣَﻦْ ﻧَﺤَﺮَ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﻟَﺤْﻢٌ ﻗَﺪَّﻣَﻪُ ﻟِﺄَﻫْﻠِﻪِ، ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨُّﺴْﻚِ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ »
ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﺑُﺮْﺩَﺓَ ﺑْﻦُ ﻧِﻴَﺎﺭٍ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺫَﺑَﺤْﺖُ ﻭَﻋِﻨْﺪِﻱ ﺟَﺬَﻋَﺔٌ
ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻦْ ﻣُﺴِﻨَّﺔٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: «ﺍﺟْﻌَﻠْﻪُ ﻣَﻜَﺎﻧَﻪُ ﻭَﻟَﻦْ ﺗُﻮﻓِﻲَ ﺃَﻭْ ﺗَﺠْﺰِﻱَ ﻋَﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﺑَﻌْﺪَﻙَ »
“আজকের এ দিনে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সালাত
আদায় করা। এরপর আমরা (বাড়ি) ফিরে আসব এবং
কুরবানী করব। কাজেই যে ব্যক্তি তা করল, সে
আমাদের নিয়ম পালন করল। যে ব্যক্তি সালাতের
আগে কুরবানী করল, তা শুধু গোশত বলেই গন্য হবে, যা
সে পরিবারবর্গের জন্য আগেই করে ফেলেছে। এতে
কুরবানী কিছুই নেই। তখন আবু বুরদা ইবন নিয়ার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নামক এক আনসারী বললেন, ইয়া
রাসূলল্লাহ! আমি তো (আগেই) যবেহ করে ফেলেছি।
এখন আমার নিকট এমন একটি মেষ শাবক আছে যা এক
বছর বয়সের মেষের চেয়ে উত্তম। তিনি
বললেন, সেটির স্থলে এটিকে যবেহ করে ফেল। তবে
তোমার পর অন্য কারো জন্য তা যথেষ্ট হবে
না।” [333]
ঈদের জামা‘আতে এবং হারাম শরীফে অস্ত্র বহন
নিষিদ্ধ
হাসান বসরী রহ. বলেছেন, শত্রুর ভয় ব্যতীত ঈদের
দিনে অস্ত্র বহন করতে তাদের নিষেধ করা হয়েছে।
সা‘ঈদ ইবন জুবাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻛُﻨْﺖُ ﻣَﻊَ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺣِﻴﻦَ ﺃَﺻَﺎﺑَﻪُ ﺳِﻨَﺎﻥُ ﺍﻟﺮُّﻣْﺢِ ﻓِﻲ ﺃَﺧْﻤَﺺِ ﻗَﺪَﻣِﻪِ، ﻓَﻠَﺰِﻗَﺖْ ﻗَﺪَﻣُﻪُ ﺑِﺎﻟﺮِّﻛَﺎﺏِ،
ﻓَﻨَﺰَﻟْﺖُ، ﻓَﻨَﺰَﻋْﺘُﻬَﺎ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺑِﻤِﻨًﻰ، ﻓَﺒَﻠَﻎَ ﺍﻟﺤَﺠَّﺎﺝَ ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﻳَﻌُﻮﺩُﻩُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﺤَﺠَّﺎﺝُ: ﻟَﻮْ ﻧَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﻦْ
ﺃَﺻَﺎﺑَﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ: «ﺃَﻧْﺖَ ﺃَﺻَﺒْﺘَﻨِﻲ » ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻛَﻴْﻒَ؟ ﻗَﺎﻝَ: «ﺣَﻤَﻠْﺖَ ﺍﻟﺴِّﻼَﺡَ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻡٍ ﻟَﻢْ
ﻳَﻜُﻦْ ﻳُﺤْﻤَﻞُ ﻓِﻴﻪِ، ﻭَﺃَﺩْﺧَﻠْﺖَ ﺍﻟﺴِّﻼَﺡَ ﺍﻟﺤَﺮَﻡَ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦِ ﺍﻟﺴِّﻼَﺡُ ﻳُﺪْﺧَﻞُ ﺍﻟﺤَﺮَﻡَ »
“আমি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সঙ্গে ছিলাম
যখন বর্শার অগ্রভাগ তার পায়ের তলদেশে বিদ্ধ
হয়েছিল। ফলে তার পা রেকাবের সাথে আটকে
গিয়েছিল। আমি তখন নেমে সেটি টেনে বের করে
ফেললাম। এ ঘটে ছিল মিনায়। এ সংবাদ হাজ্জাজের
নিকট পৌঁছলে তিনি তাকে দেখতে আসেন।
হাজ্জাজ বলল, যদি আমি জানতে পারতাম কে
আপনাকে আঘাত করেছে, (তাকে আমি শাস্তি
দিতাম)। তখন ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বললেন, তুমিই আমাকে আঘাত করেছে। সে বলল, তা
কীভাবে? ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা
বললেন, তুমিই সেদিন (ঈদের দিন) অস্ত্র ধারণ
করেছ, যে দিন অস্ত্র ধারণ করা হত না। তুমিই
অস্ত্রকে হারাম শরীফে প্রবেশ করিয়েছ অথচ হারাম
শরীফে কখনো অস্ত্র প্রবেশ করা হয় না।” [334]
সা‘ঈদ ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﻌَﺎﺹِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﺤَﺠَّﺎﺝُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋِﻨْﺪَﻩُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻛَﻴْﻒَ ﻫُﻮَ؟
ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺻَﺎﻟِﺢٌ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻣَﻦْ ﺃَﺻَﺎﺑَﻚَ؟ ﻗَﺎﻝَ: « ﺃَﺻَﺎﺑَﻨِﻲ ﻣَﻦْ ﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺤَﻤْﻞِ ﺍﻟﺴِّﻼَﺡِ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻡٍ ﻻَ ﻳَﺤِﻞُّ
ﻓِﻴﻪِ ﺣَﻤْﻠُﻪُ » ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺍﻟﺤَﺠَّﺎﺝَ
“ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার নিকট হাজ্জাজ
এলো। আমি তখন তার কাছে ছিলাম। হাজ্জাজ
জিজ্ঞাসা করলো, তিনি কেমন আছেন? ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বললেন, ভালো। হাজ্জাজ
জিজ্ঞাসা করলো, আপনাকে কে আঘাত
করেছে? তিনি বললেন, আমাকে সে ব্যক্তি আঘাত
করেছে, যে সেদিন (ঈদের) অস্ত্র ধারণের আদেশ
দিয়েছে, যে দিন তা ধারণ করা বৈধ নয়। অর্থাৎ
হাজ্জাজ।” [335]
ঈদের সালাতের জন্য সকাল সকাল রওয়ানা হওয়া
আব্দুল্লাহ ইবন বুসর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন,
আমরা চাশতের সালাতের সময় ঈদের সালাত সমাপ্ত
করতাম।
বারা ইবন ‘আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺧَﻄَﺒَﻨَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﺃَﻭَّﻝَ ﻣَﺎ ﻧَﺒْﺪَﺃُ ﺑِﻪِ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣِﻨَﺎ
ﻫَﺬَﺍ ﺃَﻥْ ﻧُﺼَﻠِّﻲَ، ﺛُﻢَّ ﻧَﺮْﺟِﻊَ، ﻓَﻨَﻨْﺤَﺮَ ﻓَﻤَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺻَﺎﺏَ ﺳُﻨَّﺘَﻨَﺎ، ﻭَﻣَﻦْ ﺫَﺑَﺢَ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ
ﻳُﺼَﻠِّﻲَ، ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﻟَﺤْﻢٌ ﻋَﺠَّﻠَﻪُ ﻟِﺄَﻫْﻠِﻪِ ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨُّﺴُﻚِ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ »، ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺧَﺎﻟِﻲ ﺃَﺑُﻮ ﺑُﺮْﺩَﺓَ ﺑْﻦُ
ﻧِﻴَﺎﺭٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﻧَﺎ ﺫَﺑَﺤْﺖُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲَ ﻭَﻋِﻨْﺪِﻱ ﺟَﺬَﻋَﺔٌ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻦْ ﻣُﺴِﻨَّﺔٍ ﻗَﺎﻝَ: "
ﺍﺟْﻌَﻠْﻬَﺎ ﻣَﻜَﺎﻧَﻬَﺎ - ﺃَﻭْ ﻗَﺎﻝَ: ﺍﺫْﺑَﺤْﻬَﺎ - ﻭَﻟَﻦْ ﺗَﺠْﺰِﻱَ ﺟَﺬَﻋَﺔٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﺑَﻌْﺪَﻙَ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কুরবানীর দিন আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিতেন।
তিনি বলেন, আজাকের দিনে আমাদের প্রথম কাজ
হলো সালাত আদায় করা। তারপর ফিরে এসে
কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের
নিয়ম পালন করল। আর যে ব্যক্তি সালাতের আগেই
যবেহ করবে, তা শুধু গোশতের জন্যই হবে, যা সে
পরিবারের জন্য তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে।
কুরবানীর সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তখন আমার
মামা আবু বুরদা ইবন নিয়ার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো
সালাতের আগেই যবেহ করে ফেলেছি। তবে এখন
আমার নিকট এমন একটি ছয় মাসের (জায‘আ)
মেষশাবক আছে যা এক বছরের (মুসিন্না) মেষের
চাইতেও উত্তম। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার স্থলে এটিই
কুরবানী করে নাও। অথবা তিনি বললেন, এটিই যবেহ
কর। তবে তুমি ব্যতীত আর কারো জন্যই মেষশাবক
যথেষ্ঠ হবে না।” [336]
ঈদের দিন বর্শা সামনে পুতে সালাত আদায় করা
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﺗُﺮْﻛَﺰُ ﺍﻟﺤَﺮْﺑَﺔُ ﻗُﺪَّﺍﻣَﻪُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ، ﺛُﻢَّ ﻳُﺼَﻠِّﻲ »
“ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর দিন রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে
বর্শা পুতে দেওয়া হতো। তারপর তিনি সালাত
আদায় করতেন।” [337]
ঈদের দিন ইমামের সামনে বল্লম বা বর্শা বহন করা
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻐْﺪُﻭ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤُﺼَﻠَّﻰ ﻭَﺍﻟﻌَﻨَﺰَﺓُ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﺗُﺤْﻤَﻞُ، ﻭَﺗُﻨْﺼَﺐُ
ﺑِﺎﻟْﻤُﺼَﻠَّﻰ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻓَﻴُﺼَﻠِّﻲ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন সকাল বেলায় ঈদগাহে যেতেন, তথন তার সামনে
বর্শা বহন করা হতো এবং তার সামনে ঈদগাহে তা
স্থাপন করা হতো এবং একে সামনে রেখে তিনি
সালাত আদায় করতেন।” [338]
মহিলাদের ও ঋতুবতীদের ঈদগাহে গমন
উম্মে ‘আতীয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺃَﻣَﺮَﻧَﺎ ﻧَﺒِﻴُّﻨَﺎ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺄَﻥْ ﻧُﺨْﺮِﺝَ ﺍﻟﻌَﻮَﺍﺗِﻖَ ﻭَﺫَﻭَﺍﺕِ ﺍﻟﺨُﺪُﻭﺭِ » ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﻳُّﻮﺏَ، ﻋَﻦْ
ﺣَﻔْﺼَﺔَ ﺑِﻨَﺤْﻮِﻩِ ﻭَﺯَﺍﺩَ ﻓِﻲ ﺣَﺪِﻳﺚِ ﺣَﻔْﺼَﺔَ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻭْ ﻗَﺎﻟَﺖْ: «ﺍﻟﻌَﻮَﺍﺗِﻖَ ﻭَﺫَﻭَﺍﺕِ ﺍﻟﺨُﺪُﻭﺭِ، ﻭَﻳَﻌْﺘَﺰِﻟْﻦَ
ﺍﻟﺤُﻴَّﺾُ ﺍﻟﻤُﺼَﻠَّﻰ »
“(ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে) যুবতী ও পর্দানশীন
মেয়েদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আদেশ করা
হতো। আইয়্যুব রহ. থেকে হাফসা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে এবং
হাফসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার বর্ণনায় অতিরিক্ত
আছে যে, ঈদগাহে ঋতুবতী মহিলারা আলাদা
থাকতেন।”[339]
বালকদের ঈদগাহে গমন
আব্দুর রহমান ইবন ‘আবেস থেকে বর্ণিদ, তিনি বলেন,
আমি ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে
শুনেছি, তিনি বলেন,
«ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻓِﻄْﺮٍ ﺃَﻭْ ﺃَﺿْﺤَﻰ ﻓَﺼَﻠَّﻰ، ﺛُﻢَّ ﺧَﻄَﺐَ، ﺛُﻢَّ ﺃَﺗَﻰ
ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ، ﻓَﻮَﻋَﻈَﻬُﻦَّ، ﻭَﺫَﻛَّﺮَﻫُﻦَّ، ﻭَﺃَﻣَﺮَﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সঙ্গে ঈদুল ফিতর বা আযহার দিন বের হলাম। তিনি
সালাত আদায় করলেন। এরপর খুতবা দিলেন। তারপর
মহিলাগণের কাছে গিয়ে তাদের উপদেশ
দিলেন, তাদের নসীহত করলেন এবং তাদেরকে সদকা
দানের নির্দেশ দিলেন।” [340]
ঈদের খুতবা দেওয়ার সময় মুসল্লীদের দিকে ইমামের
মুখ করে দাঁড়ানো
আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসল্লীগণের
দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন।
বারা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
« ﺧَﺮَﺝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﺃَﺿْﺤًﻰ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺒَﻘِﻴﻊِ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ، ﺛُﻢَّ ﺃَﻗْﺒَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ
ﺑِﻮَﺟْﻬِﻪِ، ﻭَﻗَﺎﻝَ: « ﺇِﻥَّ ﺃَﻭَّﻝَ ﻧُﺴُﻜِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣِﻨَﺎ ﻫَﺬَﺍ، ﺃَﻥْ ﻧَﺒْﺪَﺃَ ﺑِﺎﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﺛُﻢَّ ﻧَﺮْﺟِﻊَ، ﻓَﻨَﻨْﺤَﺮَ، ﻓَﻤَﻦْ
ﻓَﻌَﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓَﻘَﺪْ ﻭَﺍﻓَﻖَ ﺳُﻨَّﺘَﻨَﺎ، ﻭَﻣَﻦْ ﺫَﺑَﺢَ ﻗَﺒْﻞَ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﺷَﻲْﺀٌ ﻋَﺠَّﻠَﻪُ ﻟِﺄَﻫْﻠِﻪِ ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﻨُّﺴُﻚِ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ » ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺟُﻞٌ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻧِّﻲ ﺫَﺑَﺤْﺖُ ﻭَﻋِﻨْﺪِﻱ ﺟَﺬَﻋَﺔٌ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻦْ
ﻣُﺴِﻨَّﺔٍ؟ ﻗَﺎﻝَ: « ﺍﺫْﺑَﺤْﻬَﺎ، ﻭَﻻَ ﺗَﻔِﻲ ﻋَﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﺑَﻌْﺪَﻙَ »
“একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল আযহার দিন বাকী’ (নামক কবরস্থানে) গমন
করেন। তারপর তিনি দু’রাকা‘আত সালাত আদায়
করেন এরপর আমাদের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন এবং
তিনি বলেন, আজকের দিনের প্রথম ইবাদাত হলো
সালাত আদায় করা। এরপর (বাড়ি) ফিরে গিয়ে
কুরবানী করা। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের
নিয়ম অনুযায়ী কাজ করবে। আর যে এর পূর্বেই যবেহ
করবে তা হলে তার যবেহ হবে এমন একটি কাজ, যা সে
নিজের পরিবারবর্গের জন্যই তাড়াতাড়ি করে
ফেলেছে, এর সাথে কুরবানীর কোনো সম্পর্ক নেই।
তখন এক ব্যক্তি (আবু বুরদা ইবন নিয়ার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) দাড়িয়ে জিজ্ঞাসা
করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি (তো সালাতের
পূর্বেই) যবেহ করে ফেলেছি। এখন আমার নিকট এমন
একটি মেষশাবক আছে যা পূর্ণবয়স্ক মেষের চেয়ে
উত্তম। (এটা কুরবানী করা যাবে কি?) তিনি
বললেন, এটাই যবেহ কর। তবে তোমার পর আর কারো
জন্য তা যথেষ্ট হবে না।” [341]
ঈদগাহে চিহ্ন রাখা
বর্ণনাকারী বলেন, আব্দুর রহমান ইবন ‘আবেস আমার
নিকট হাদীস বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি ইবন
‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে শুনেছি,
ﻗِﻴﻞَ ﻟَﻪُ : ﺃَﺷَﻬِﺪْﺕَ ﺍﻟﻌِﻴﺪَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻗَﺎﻝَ: «ﻧَﻌَﻢْ، ﻭَﻟَﻮْﻻَ ﻣَﻜَﺎﻧِﻲ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﺼِّﻐَﺮِ ﻣَﺎ ﺷَﻬِﺪْﺗُﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﺗَﻰ ﺍﻟﻌَﻠَﻢَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻋِﻨْﺪَ ﺩَﺍﺭِ ﻛَﺜِﻴﺮِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺼَّﻠْﺖِ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ، ﺛُﻢَّ ﺧَﻄَﺐَ، ﺛُﻢَّ
ﺃَﺗَﻰ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺑِﻼَﻝٌ، ﻓَﻮَﻋَﻈَﻬُﻦَّ، ﻭَﺫَﻛَّﺮَﻫُﻦَّ، ﻭَﺃَﻣَﺮَﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ، ﻓَﺮَﺃَﻳْﺘُﻬُﻦَّ ﻳَﻬْﻮِﻳﻦَ ﺑِﺄَﻳْﺪِﻳﻬِﻦَّ
ﻳَﻘْﺬِﻓْﻨَﻪُ ﻓِﻲ ﺛَﻮْﺏِ ﺑِﻼَﻝٍ، ﺛُﻢَّ ﺍﻧْﻄَﻠَﻖَ ﻫُﻮَ ﻭَﺑِﻼَﻝٌ ﺇِﻟَﻰ ﺑَﻴْﺘِﻪِ »
“তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনি কি রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে কখনো
ঈদে উপস্থিত হয়েছেন? তিনি বললেন হ্যাঁ। যদি তার
কাছে আমার মর্যাদা না থাকত তা হলে কম বয়সী
হওয়ার কারণে আমি ঈদে উপস্থিত থেকে পারতাম
না। তিনি বের হয়ে কাসীর ইবন সালতের গৃহের
কাছে স্থাপিত নিশানার কাছে এলেন এবং সালাত
আদায় করলেন। এরপর খুতবা দিলেন। তারপর তিনি
মহিলাগনের নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তার
সংঙ্গে বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ছিলেন। তিনি
তখন মহিলাদের উপদেশ দিলেন, নসীহত করলেন এবং
দান সদকা করার জন্য নির্দেশ দিলেন। আমি তখন
মহিলাদের নিজ নিজ হাত বাড়িয়ে বিলাল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাপড়ে দান সামগ্রী ফেলতে
দেখলাম। এরপর তিনি এবং বিলাল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নিজ বাড়ির দিকে চলে
গেলেন।”[342]
ঈদের দিন মহিলাগণের উদ্দেশ্যে ঈমামের
উপদেশ দেওয়া
জাবির ইবন ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻗَﺎﻡَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻓَﺼَﻠَّﻰ، ﻓَﺒَﺪَﺃَ ﺑِﺎﻟﺼَّﻼَﺓِ، ﺛُﻢَّ ﺧَﻄَﺐَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓَﺮَﻍَ
ﻧَﺰَﻝَ، ﻓَﺄَﺗَﻰ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ، ﻓَﺬَﻛَّﺮَﻫُﻦَّ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﺄُ ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺪِ ﺑِﻼَﻝٍ، ﻭَﺑِﻼَﻝٌ ﺑَﺎﺳِﻂٌ ﺛَﻮْﺑَﻪُ ﻳُﻠْﻘِﻲ ﻓِﻴﻪِ
ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔَ » ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﻄَﺎﺀٍ: ﺯَﻛَﺎﺓَ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ، ﻗَﺎﻝَ: ﻻَ، ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺻَﺪَﻗَﺔً ﻳَﺘَﺼَﺪَّﻗْﻦَ ﺣِﻴﻨَﺌِﺬٍ،
ﺗُﻠْﻘِﻲ ﻓَﺘَﺨَﻬَﺎ، ﻭَﻳُﻠْﻘِﻴﻦَ، ﻗُﻠْﺖُ: ﺃَﺗُﺮَﻯ ﺣَﻘًّﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻹِﻣَﺎﻡِ ﺫَﻟِﻚَ، ﻭَﻳُﺬَﻛِّﺮُﻫُﻦَّ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺤَﻖٌّ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ،
ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﻻَ ﻳَﻔْﻌَﻠُﻮﻧَﻪُ؟
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল
ফিতরের দিন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন, পরে
খুতবা দিলেন। খুতবা শেষে নেমে মহিলাগণের
নিকট আসলেন এবং তাদের নসীহত করলেন। তখন
তিনি বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাতের উপর ভর
দিয়ে ছিলেন এবং বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার
কাপড় প্রসারিত করে ধরলেন। মহিলাগণ এতে দান
সামগ্রী ফেলতে লাগলেন (আমি ইবন জুরাইজ) আতা
রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এ কি ঈদুল ফিতরের
সদকা? তিনি বললেন না; বরং এ সাধারণ সদকা যা
তারা ঐ সময় দিচ্ছিলেন। কোনো মহিলা তার
আংটি দান করলে অন্যান্য মহিলাগণও তাদের
আংটি দান করতে লাগলেন। আমি আতা রহ.-কে
আবার জিজ্ঞাস করলাম, মহিলাগণকে উপদেশ
দেওয়া কি ইমামের জন্য জরুরী? তিনি
বললেন, অবশ্যই, তাদের ওপর তা জরুরী। তাদের
(ইমামগণ) কী হয়েছে যে, তারা এরূপ করবেন
না?” [343]
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেছেন,
« ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﺍﻟﻔِﻄْﺮَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻭَﻋُﻤَﺮَ، ﻭَﻋُﺜْﻤَﺎﻥَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ
ﻋَﻨْﻬُﻢْ ﻳُﺼَﻠُّﻮﻧَﻬَﺎ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺨُﻄْﺒَﺔِ، ﺛُﻢَّ ﻳُﺨْﻄَﺐُ ﺑَﻌْﺪُ، ﺧَﺮَﺝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺄَﻧِّﻲ ﺃَﻧْﻈُﺮُ
ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺣِﻴﻦَ ﻳُﺠَﻠِّﺲُ ﺑِﻴَﺪِﻩِ، ﺛُﻢَّ ﺃَﻗْﺒَﻞَ ﻳَﺸُﻘُّﻬُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻣَﻌَﻪُ ﺑِﻼَﻝٌ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟﻨَّﺒِﻲُّ
ﺇِﺫَﺍ ﺟَﺎٓﺀَﻙَ ﭐﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨَٰﺖُ ﻳُﺒَﺎﻳِﻌۡﻨَﻚَ﴾ [ ﺍﻟﻤﻤﺘﺤﻨﺔ : ١٢] ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺣِﻴﻦَ ﻓَﺮَﻍَ ﻣِﻨْﻬَﺎ : « ﺁﻧْﺘُﻦَّ ﻋَﻠَﻰ
ﺫَﻟِﻚِ؟ » ﻗَﺎﻟَﺖِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٌ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ، ﻟَﻢْ ﻳُﺠِﺒْﻪُ ﻏَﻴْﺮُﻫَﺎ: ﻧَﻌَﻢْ، ﻻَ ﻳَﺪْﺭِﻱ ﺣَﺴَﻦٌ ﻣَﻦْ ﻫِﻲَ ﻗَﺎﻝَ:
«ﻓَﺘَﺼَﺪَّﻗْﻦَ » ﻓَﺒَﺴَﻂَ ﺑِﻼَﻝٌ ﺛَﻮْﺑَﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ: «ﻫَﻠُﻢَّ، ﻟَﻜُﻦَّ ﻓِﺪَﺍﺀٌ ﺃَﺑِﻲ ﻭَﺃُﻣِّﻲ » ﻓَﻴُﻠْﻘِﻴﻦَ ﺍﻟﻔَﺘَﺦَ
ﻭَﺍﻟﺨَﻮَﺍﺗِﻴﻢَ ﻓِﻲ ﺛَﻮْﺏِ ﺑِﻼَﻝٍ ﻗَﺎﻝَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﺮَّﺯَّﺍﻕِ: " ﺍﻟﻔَﺘَﺦُ: ﺍﻟﺨَﻮَﺍﺗِﻴﻢُ ﺍﻟﻌِﻈَﺎﻡُ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ »
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু
বকর, উমার ও ‘উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমের
সংঙ্গে ঈদুল ফিতরে আমি উপস্থিত ছিলাম। তারা
খুতবার আগে সালাত আদায় করতেন, পরে খুতবা
দিতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বের হলেন, আমি যেন দেখতে পাচ্ছি তিনি হাতের
ইশারায় (লোকদের) বসিয়ে দিচ্ছেন। এরপর তাদের
কাতার ফাঁক করে অগ্রসর হয়ে মহিলাদের কাছে
এলেন। বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার সঙ্গে
ছিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কুরআনের এ আয়াত পাঠা করলেন,
﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﺎٓﺀَﻙَ ﭐﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨَٰﺖُ ﻳُﺒَﺎﻳِﻌۡﻨَﻚَ﴾ [ ﺍﻟﻤﻤﺘﺤﻨﺔ: ١٢]
“হে নবী যখন ঈমানদার মহিলাগণ আপনার নিকট এ
শর্তে বায়’আত করতে আসেন” [সূরা আল-মুমতাহিনা,
আয়াত: ১২] এ আয়াত শেষ করে নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞাসা
করলেন, তোমরা এ বাই‘আতের ওপর আছ? তদের মধ্যে
একজন মহিলা বলল, হ্যাঁ, সে ছাড়া আর কেউ এর জবাব
দিল না। হাসান রহ. জানেন না, সে মহিলা
কে? এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, তোমরা সদকা কর। সে সময় বিলাল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার কাপড় প্রসারিত করে
বললেন, আমার মা-বাপ আপনাদের জন্য কুরবান
হোক, আসুন, আপনারা দান করুন। তখন মহিলাগণ
তাদের ছোট-বড় আংটিগুলো বিলাল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাপড়ের মধ্যে ফেলতে
লাগলেন। ‘আব্দুর রাযযাক রহ. বলেন, ﺍﻟﻔَﺘَﺦُ হলো বড়
আংটি যা জাহেলী যুগে ব্যবহৃত হত।” [344]
ঈদের সালাতে যাওয়ার জন্য মহিলাদের ওড়না না
থাকলে
হাফসা বিনত সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﻤْﻨَﻊُ ﺟَﻮَﺍﺭِﻳَﻨَﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﺮُﺟْﻦَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻌِﻴﺪِ، ﻓَﺠَﺎﺀَﺕِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ، ﻓَﻨَﺰَﻟَﺖْ ﻗَﺼْﺮَ ﺑَﻨِﻲ ﺧَﻠَﻒٍ، ﻓَﺄَﺗَﻴْﺘُﻬَﺎ،
ﻓَﺤَﺪَّﺛَﺖْ ﺃَﻥَّ ﺯَﻭْﺝَ ﺃُﺧْﺘِﻬَﺎ ﻏَﺰَﺍ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺛِﻨْﺘَﻲْ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﻏَﺰْﻭَﺓً، ﻓَﻜَﺎﻧَﺖْ
ﺃُﺧْﺘُﻬَﺎ ﻣَﻌَﻪُ ﻓِﻲ ﺳِﺖِّ ﻏَﺰَﻭَﺍﺕٍ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻓَﻜُﻨَّﺎ ﻧَﻘُﻮﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻤَﺮْﺿَﻰ، ﻭَﻧُﺪَﺍﻭِﻱ ﺍﻟﻜَﻠْﻤَﻰ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ:
ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﻋَﻠَﻰ ﺇِﺣْﺪَﺍﻧَﺎ ﺑَﺄْﺱٌ ﺇِﺫَﺍ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻟَﻬَﺎ ﺟِﻠْﺒَﺎﺏٌ ﺃَﻥْ ﻻَ ﺗَﺨْﺮُﺝَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: «ﻟِﺘُﻠْﺒِﺴْﻬَﺎ
ﺻَﺎﺣِﺒَﺘُﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﺟِﻠْﺒَﺎﺑِﻬَﺎ، ﻓَﻠْﻴَﺸْﻬَﺪْﻥَ ﺍﻟﺨَﻴْﺮَ ﻭَﺩَﻋْﻮَﺓَ ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ » ﻗَﺎﻟَﺖْ ﺣَﻔْﺼَﺔُ : ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﺪِﻣَﺖْ ﺃُﻡُّ
ﻋَﻄِﻴَّﺔَ ﺃَﺗَﻴْﺘُﻬَﺎ ﻓَﺴَﺄَﻟْﺘُﻬَﺎ: ﺃَﺳَﻤِﻌْﺖِ ﻓِﻲ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻧَﻌَﻢْ ﺑِﺄَﺑِﻲ، ﻭَﻗَﻠَّﻤَﺎ ﺫَﻛَﺮَﺕِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَّﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﺑِﺄَﺑِﻲ ﻗَﺎﻝَ: " ﻟِﻴَﺨْﺮُﺝِ ﺍﻟﻌَﻮَﺍﺗِﻖُ ﺫَﻭَﺍﺕُ ﺍﻟﺨُﺪُﻭﺭِ - ﺃَﻭْ ﻗَﺎﻝَ: ﺍﻟﻌَﻮَﺍﺗِﻖُ
ﻭَﺫَﻭَﺍﺕُ ﺍﻟﺨُﺪُﻭﺭِ، ﺷَﻚَّ ﺃَﻳُّﻮﺏُ - ﻭَﺍﻟﺤُﻴَّﺾُ، ﻭَﻳَﻌْﺘَﺰِﻝُ ﺍﻟﺤُﻴَّﺾُ ﺍﻟﻤُﺼَﻠَّﻰ، ﻭَﻟْﻴَﺸْﻬَﺪْﻥَ ﺍﻟﺨَﻴْﺮَ ﻭَﺩَﻋْﻮَﺓَ
ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ " ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻬَﺎ: ﺍﻟﺤُﻴَّﺾُ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻧَﻌَﻢْ، ﺃَﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟﺤَﺎﺋِﺾُ ﺗَﺸْﻬَﺪُ ﻋَﺮَﻓَﺎﺕٍ، ﻭَﺗَﺸْﻬَﺪُ
ﻛَﺬَﺍ، ﻭَﺗَﺸْﻬَﺪُ ﻛَﺬَﺍ »
“আমরা ঈদের দিন আমাদের যুবতীদের বের থেকে
নিষেধ করতাম। একবার জনৈক মহিলা এলেন এবং বনু
খালাফের প্রাসাদে অবস্থান করলেন। আমি তার
নিকট গেলে বললেন, তার ভগ্নিপতি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে
বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, এর মধ্যে ছয়টি
যুদ্ধে স্বয়ং তার বোনও স্বামীর সাথে অংশ গ্রহণ
করেছেন, (মহিলা বলেন) আমার বোন
বলেছেন, আমরা রুগ্নদের সেবা করতাম, আহতদের
সেবা করতাম। একবার তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! যদি আমাদের কারো ওড়না না
থাকে, তখন কি সে বের হবে? রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ
অবস্থায় তার বান্ধবী যেন তাকে নিজ ওড়না
পরিধান করতে দেয় এবং এভাবে মহিলাগণ যেন
কল্যাণকর কাজে ও মুমিনদের দো‘আয় অংশগ্রহণ
করেন। হাফসা রহ. বলেন, যখন উম্মে ‘আতিয়া
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা এলেন, তখন আমি তাকে
জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনি কি এসব ব্যাপারে
কিছু শুনছেন? তিনি বললেন হ্যাঁ, হাফসা রহ.
বলেন, আমার পিতা, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য উৎসর্গিত হোক এবং
তিনি যখনই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নাম উল্লেখ করতেন, তখনই এ কথা
বলতেন। তাবুতে অবস্থানকারিনী যুবতীগণ এবং
ঋতুবতী মহিলাগণ যেন বের হন। তবে ঋতুবতী
মহিলাগণ যেন সালাতের স্থান থেকে সরে থাকেন।
তারা সকলেই যেন কল্যাণকর কাজে ও মুমিনদের
দো‘আয় অংশগ্রহণ করেন। হাফসা রহ. বলেন, আমি
তাকে বললাম ঋতুবতী মহিলাগণও? তিনি
বললেন, হ্যাঁ, ঋতুবতী মহিলা কি ‘আরাফাত এবং
অন্যান্য স্থানে উপস্থিত হয় না?” [345]
ঈদগাহে ঋতুবতী মহিলারা পৃথক অবস্থান করবে
মুহাম্মাদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উম্মে
‘আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন,
«ﺃُﻣِﺮْﻧَﺎ ﺃَﻥْ ﻧَﺨْﺮُﺝَ ﻓَﻨُﺨْﺮِﺝَ ﺍﻟﺤُﻴَّﺾَ، ﻭَﺍﻟﻌَﻮَﺍﺗِﻖَ، ﻭَﺫَﻭَﺍﺕِ ﺍﻟﺨُﺪُﻭﺭِ ﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋَﻮْﻥٍ: ﺃَﻭِ ﺍﻟﻌَﻮَﺍﺗِﻖَ
ﺫَﻭَﺍﺕِ ﺍﻟﺨُﺪُﻭﺭِ ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﺍﻟﺤُﻴَّﺾُ: ﻓَﻴَﺸْﻬَﺪْﻥَ ﺟَﻤَﺎﻋَﺔَ ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ، ﻭَﺩَﻋْﻮَﺗَﻬُﻢْ ﻭَﻳَﻌْﺘَﺰِﻟْﻦَ ﻣُﺼَﻠَّﺎﻫُﻢْ »
“(ঈদের দিন) আমাদেরকে বের হওয়ার জন্য নির্দেশ
দেওয়া হয়েছিল। তাই আমরা ঋতুবতী, যুবতী এবং
তাবুতে অবস্থানকারীনী মহিলাগণকে নিয়ে বের
হতাম। ইবন ‘আওন রহ.-এর এক বর্ণনায় রয়েছে, অথবা
তাবুতে অবস্থানকারীনী যুবতী মহিলাগণকে নিয়ে
বের হতাম। অতঃপর ঋতুবতী মহিলাগণ মুসলিমদের
জামা‘আত এবং তাদের দো‘আতে অংশ গ্রহণ
করতেন। তবে ঈদগাহে পৃথকভাবে অবস্থান
করতেন।” [346]
ঈদের দিন ফিরার সময় যে ব্যক্তি ভিন্ন পথে আসে
জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋِﻴﺪٍ ﺧَﺎﻟَﻒَ ﺍﻟﻄَّﺮِﻳﻖَ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদের দিন (বাড়ি ফেরার সময়) ভিন্ন পথে
আসতেন।” [347]
কেউ ঈদের সালাত না পেলে সে দু’রাকা‘আত সালাত
আদায় করবে
মহিলা ও যারা বাড়ি ও পল্লীতে অবস্থান করে
তারাও এরূপ করবে। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হে মুসলিমগণ! এ
হলো আমাদের ঈদ।” আর আনাস ইবন মালিক
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যাবিরা নামক স্থানে তার
আযাদকৃত গোলাম ইবন আবু উতবাকে এ আদেশ
করেছিলেন। তাই তার পরিবারবর্গ ও সন্তান
সন্ততিদের নিয়ে শহরের অধিবাসীদের ন্যায়
তাকবীরসহ সালাত আদায় করেন। ‘ইকরিমা রহ.
বলেছেন, গ্রামের অধিবাসীরা ঈদের দিন সমবেত
হয়ে ইমামের ন্যায় দু’ রাকা‘আত সালাত আদায়
করবে। ‘আতা রহ. বলেন, যখন কারো ঈদের সালাত
ছুটে যায় তখন সে দু’রাকা‘আত সালাত আদায় করবে।
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺃَﺑَﺎ ﺑَﻜْﺮٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻭَﻋِﻨْﺪَﻫَﺎ ﺟَﺎﺭِﻳَﺘَﺎﻥِ ﻓِﻲ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﻣِﻨَﻰ ﺗُﺪَﻓِّﻔَﺎﻥِ،
ﻭَﺗَﻀْﺮِﺑَﺎﻥِ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣُﺘَﻐَﺶٍّ ﺑِﺜَﻮْﺑِﻪِ، ﻓَﺎﻧْﺘَﻬَﺮَﻫُﻤَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻓَﻜَﺸَﻒَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﻭَﺟْﻬِﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﺩَﻋْﻬُﻤَﺎ ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﺑَﻜْﺮٍ، ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﻋِﻴﺪٍ، ﻭَﺗِﻠْﻚَ ﺍﻷَﻳَّﺎﻡُ
ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﻣِﻨًﻰ »، ﻭَﻗَﺎﻟَﺖْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ: ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻧِﻲ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺃَﻧْﻈُﺮُ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟﺤَﺒَﺸَﺔِ ﻭَﻫُﻢْ ﻳَﻠْﻌَﺒُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻓَﺰَﺟَﺮَﻫُﻢْ ﻋُﻤَﺮُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
«ﺩَﻋْﻬُﻢْ ﺃَﻣْﻨًﺎ ﺑَﻨِﻲ ﺃَﺭْﻓِﺪَﺓَ » ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻷَﻣْﻦِ »
“আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার নিকট এলেন। এ
সময় মিনার দিবসগুলোর এক দিবসে তার নিকট দু’টি
মেয়ে দফ বাজাচ্ছিল, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাদর আবৃত অবস্থায়
ছিলেন। তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মেয়ে
দুটিকে ধমক দিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখমন্ডল থেকে
কাপড় সরিয়ে নিয়ে বললেন, হে আবু বকর! ওদের বাধা
দিও না। কেননা, এসব ঈদের দিন। আর সে দিনগুলো
ছিল মিনার দিন। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
আরো বলেছেন, হাবশীরা যখন মসজিদে (এর
প্রাঙ্গনে) খেলাধুলা করছিল, তখন আমি তাদের
দেখছিলাম এবং আমি দেখছি, রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আড়াল
করে রেখেছেন। উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
হাবশীদের ধমক দিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওদের
ধমক দিও না। হে বনু আরফিদা! তোমরা যা করছিলে
তা নিশ্চিন্তে কর।” [348]
ঈদের সালাতের পূর্বে ও পরে সালাত আদায় করা
আবু মু‘আল্লা রহ. বলেন, আমি সায়ীদ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে ইবন আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বলতে শুনেছি
যে, তিনি ঈদের পূর্বে সালাত আদায় করা মাকরূহ
মনে করতেন।
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺧَﺮَﺝَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﻟَﻢْ ﻳُﺼَﻞِّ ﻗَﺒْﻠَﻬَﺎ ﻭَﻻَ
ﺑَﻌْﺪَﻫَﺎ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺑِﻼَﻝٌ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সঙ্গে নিয়ে ঈদুল
ফিতরের দিন বের হয়ে দু’রাকা‘আত সালাত
আদায় করেন। তিনি এর আগে ও পরে কোনো সালাত
আদায় করেন নি।” [349]
সপ্তম অধ্যায়
সংক্ষেপে পবিত্র রমযান মাসে আমাদের করণীয়
﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢُ ﭐﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻛَﻤَﺎ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦ ﻗَﺒۡﻠِﻜُﻢۡ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﺘَّﻘُﻮﻥَ
١٨٣﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٣]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা
হয়েছে। যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের
পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন
করতে পার” [সূরা আল-বাক্বারা, আয়াত: ১৮৩]
ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের মধ্যে পবিত্র রমযান
মাসের সাওম পালন একটি অন্যতম স্তম্ভ। শারীরিক
ও মানসিক উৎকর্ষতা সাধন, সমাজের প্রতি
দায়িত্ববোধ জাগ্রত, আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামত
প্রাপ্ত ও সর্বত্র আল্লাহভীতি পরিষ্ফুটিত হওয়া
ইত্যাদির মহান বার্তা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের
দুয়ারে আসে কুরআন নাযিলের মহিমান্বিত মাস
রমযান। রহমত, মাগফিরাত আর জাহান্নাম থেকে
মুক্তির মহাপয়গাম নিয়ে সারা বিশ্বে নেমে
এসেছে রমযান, যার ছোঁয়ায় মানুষ আজ ছোট্ট শিশুর
ন্যায় আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দু’হাত তুলে অঝোর
ধারায় কাঁদছে। রমযান আজ মানুষের মাঝে
ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জাগ্রত করে তুলেছে। তাই স্বাগতম
হে রমযান! তোমাকে সুস্বাগতম। সময়ের আবর্তমানে
প্রতিবছর আসে রমযান। আবার সে চলে যায় নিজ
দেশে। কিন্তু আমরা কি তার কাঙ্খিত নি‘আমত
অর্জন করেত পেরেছি? মানব জীবনের পঞ্চাশ-ষাট
বছরে পঞ্চাশ-ষাট বার রমযান আসবে, তন্মধ্যে দশ-
পনের বছর আমরা থাকি অপ্রাপ্ত। সব মিলিয়ে কতটা
রমযানই বা পাই? এই স্বল্প পরিসরেও যদি আমরা
রমযানের মত মহামূল্যবান নি‘আমত হারিয়ে ফেলি
তবে আমাদের মত হতভাগা আর কে থেকে পরে?
তাই আসুন রমযান মাসে আমরা কী কী
ইবাদত-বন্দেগী করে পবিত্র রমযানের পুরষ্কার
অর্জন করতে পারি তা নিয়ে কিচ্ছুক্ষণ চিন্তা-
ভাবনা করা যাক।
১. নিয়তের পরিশুদ্ধিতা:
সমস্ত কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রথমেই
আমাদের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। রমযানে
আমরা যে ভালো কাজই করি না কেন তা সবই
আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করবো।
সাওম পালন, তাহাজ্জুদ পড়া, তারাবীহ পড়া, দান-
সদকা করা, সাওম পালনকারীকে ইফতারী করানো,
ঈদের হাদিয়া, যাকাত-ফিতরা ইত্যাদি বিতরণ সব
‘আমলের পেছনে একমাত্র উদ্দেশ্য থাকবে আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা অর্জন।
২. কর্মসূচী গ্রহণ:
শা‘বান মাসের শেষের দিকে রমযানের জন্য একটি
কর্মসূচী প্রণয়ণ করতে হবে। রমযানে পড়া-শুনা,
অফিসে যাওয়া, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ-
তাহলীল, সালাত, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে
দেখাশুনা করা ও বিশ্রাম ইত্যাদি নিয়ে একটি
কর্মসূচী প্রস্তুত করা এবং সে মোতাবেক কাজ করা।
৩. পরিবারের সবাই সাওম পালন করা:
প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ, মুক্বীম সকল মুসলিম নর-নারীর
ওপর সাওম পালন ফরয। তাই নিজে যেমন সাওম পালন
করবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকেও সাওম
পালনের আদেশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, রমযান
মাসে সাওম পালনই সর্বোৎকৃষ্ট ইবাদাত। এভাবে
ছোটদেরকে সাওম পালনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ، ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »
“যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানের
সাওম পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া
হয়”। [350]
৪. জামা‘আতের সাথে সালাত আদায়:
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরয। আর
রমযান মাসে কোনো নেক ‘আমল সত্তর গুণ বা
ততোধিক বৃদ্ধি পায়। তাই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত
জামা‘আতের সাথে আদায় করার আপ্রাণ চেষ্টা
করা।
৫. আল্লাহভীতি অর্জন:
সাওমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহভীতি তথা
তাকওয়াহ অর্জন। পবিত্র কুরআনের ভাষায়:
﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢُ ﭐﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻛَﻤَﺎ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦ ﻗَﺒۡﻠِﻜُﻢۡ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﺘَّﻘُﻮﻥَ
١٨٣﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٣]
“হে ঈমিনদারগণ! তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা
হয়েছে। যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের
পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা পরহেযগারী
অর্জন করতে পার”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺪَﻉْ ﻗَﻮْﻝَ ﺍﻟﺰُّﻭﺭِ ﻭَﺍﻟﻌَﻤَﻞَ ﺑِﻪِ، ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻟِﻠَّﻪِ ﺣَﺎﺟَﺔٌ ﻓِﻲ ﺃَﻥْ ﻳَﺪَﻉَ ﻃَﻌَﺎﻣَﻪُ ﻭَﺷَﺮَﺍﺑَﻪُ »
“যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন
করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর
কোনো প্রয়োজন নেই”। [351]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ: ﻛُﻞُّ ﻋَﻤَﻞِ ﺍﺑْﻦِ ﺁﺩَﻡَ ﻟَﻪُ، ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡَ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟِﻲ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺃَﺟْﺰِﻱ ﺑِﻪِ، ﻭَﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﺟُﻨَّﺔٌ، ﻭَﺇِﺫَﺍ
ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﺻَﻮْﻡِ ﺃَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﻓَﻼَ ﻳَﺮْﻓُﺚْ ﻭَﻻَ ﻳَﺼْﺨَﺐْ، ﻓَﺈِﻥْ ﺳَﺎﺑَّﻪُ ﺃَﺣَﺪٌ ﺃَﻭْ ﻗَﺎﺗَﻠَﻪُ، ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ ﺇِﻧِّﻲ ﺍﻣْﺮُﺅٌ
ﺻَﺎﺋِﻢٌ " «ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺲُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺑِﻴَﺪِﻩِ، ﻟَﺨُﻠُﻮﻑُ ﻓَﻢِ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢِ ﺃَﻃْﻴَﺐُ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣِﻦْ ﺭِﻳﺢِ ﺍﻟﻤِﺴْﻚِ » "
ﻟِﻠﺼَّﺎﺋِﻢِ ﻓَﺮْﺣَﺘَﺎﻥِ ﻳَﻔْﺮَﺣُﻬُﻤَﺎ: ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﻓَﺮِﺡَ، ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻟَﻘِﻲَ ﺭَﺑَّﻪُ ﻓَﺮِﺡَ ﺑِﺼَﻮْﻣِﻪِ "
“আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, সাওম ব্যতীত আদম
সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য; কিন্তু
সাওম আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেবো।
সাওম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সাওম
পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-
বিবাদ না করে। কেউ যদি তাঁকে গালি দেয় অথবা
তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি
একজন সাওম পালনকারী। যার হাতে মুহাম্মদের
প্রাণ, তাঁর শপথ! সাওম পালনকারীর মুখের (না
খাওয়াজনিত) ঘ্রাণ আল্লাহর নিকট মিসকের
ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম। সাওম পালনকারীর জন্য
রয়েছে দু’টি খুশী যা তাঁকে খুশী করে। যখন সে
ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তাঁর রবের
সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাওমের বিনিময়ে
আনন্দিত হবে”। [352]
অন্য মাসের মতো রমযান মাসেও কোনো
মুমিন সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি-ছিনতাই,
সন্ত্রাসী, যুলুম, অত্যাচার ইত্যাদি করতে পারে না।
ঈদে স্ত্রী-পুত্রের জন্য দামী-দামী পোষাক কেনার
জন্য আমাদের দেশের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘুষ ও
চাঁদাবাজি করা ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে গেছে। তাই
আসুন আর সুদ-ঘুষ নয়, দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠনের দৃঢ়
প্রত্যয় এ রমযানেই গ্রহণ করি।
৬. কুরআন তিলাওয়াত:
রমযান মাসেই হেরার পাদদেশ থেকে মানবতার
মুক্তির দূত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মানবকুলের হিদায়াতর জন্য আল্লাহ
রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন
প্রাপ্ত হন। আল-কুরআনের ভাষায়:
﴿ﺷَﻬۡﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﭐﻟَّﺬِﻱٓ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻓِﻴﻪِ ﭐﻟۡﻘُﺮۡﺀَﺍﻥُ ﻫُﺪٗﻯ ﻟِّﻠﻨَّﺎﺱِ ﻭَﺑَﻴِّﻨَٰﺖٖ ﻣِّﻦَ ﭐﻟۡﻬُﺪَﻯٰ ﻭَﭐﻟۡﻔُﺮۡﻗَﺎﻥِۚ ﻓَﻤَﻦ
ﺷَﻬِﺪَ ﻣِﻨﻜُﻢُ ﭐﻟﺸَّﻬۡﺮَ ﻓَﻠۡﻴَﺼُﻤۡﻪُۖ ﻭَﻣَﻦ ﻛَﺎﻥَ ﻣَﺮِﻳﻀًﺎ ﺃَﻭۡ ﻋَﻠَﻰٰ ﺳَﻔَﺮٖ ﻓَﻌِﺪَّﺓٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃُﺧَﺮَۗ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﭐﻟﻠَّﻪُ
ﺑِﻜُﻢُ ﭐﻟۡﻴُﺴۡﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺑِﻜُﻢُ ﭐﻟۡﻌُﺴۡﺮَ ﻭَﻟِﺘُﻜۡﻤِﻠُﻮﺍْ ﭐﻟۡﻌِﺪَّﺓَ ﻭَﻟِﺘُﻜَﺒِّﺮُﻭﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠَﻰٰ ﻣَﺎ ﻫَﺪَﻯٰﻜُﻢۡ ﻭَﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ
ﺗَﺸۡﻜُﺮُﻭﻥَ ١٨٥ ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ١٨٥]
“রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে
মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের
সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার
পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে
মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সাওম পালন
করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে
অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ
তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে
তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে
যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব
ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর”। [সূরা
আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
সুতরাং রমযান মাসে বেশি বেশি কুরআন
তিলাওয়াত করা উচিত।
৭. বিলম্ব করে সাহরী খাওয়া:
রমযান মাসে সাহরী খাওয়া মুস্তাহাব। কেননা,
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
«ﺗَﺴَﺤَّﺮُﻭﺍ ﻓَﺈِﻥَّ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺤُﻮﺭِ ﺑَﺮَﻛَﺔً »
“তোমরা সাহরী খাও, কেননা সাহরীতে রয়েছে
বরকত”। [353]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺑِﻼَﻟًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆَﺫِّﻥُ ﺑِﻠَﻴْﻞٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﻛُﻠُﻮﺍ ﻭَﺍﺷْﺮَﺑُﻮﺍ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳُﺆَﺫِّﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﺃُﻡِّ ﻣَﻜْﺘُﻮﻡٍ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻻَ ﻳُﺆَﺫِّﻥُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻄْﻠُﻊَ ﺍﻟﻔَﺠْﺮُ »، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻘَﺎﺳِﻢُ: ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﺑَﻴْﻦَ ﺃَﺫَﺍﻧِﻬِﻤَﺎ
ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﻗَﻰ ﺫَﺍ ﻭَﻳَﻨْﺰِﻝَ ﺫَﺍ
“বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু রাতে আযান দিতেন।
তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, ইবন উম্মে মাকতূম-এর আযান
দেওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার কর। কেননা ফজর
না হওয়া পর্যন্ত যা আযান দেয় না। কাসিম রহ.
বলেন, এদের উভয়ের মাঝে শুধু এতটুকু ব্যবধান ছিল
যে, একজন নামতেন এবং অন্যজন উঠতেন।” [354]
তাছাড়া বিলম্ব করে সাহরী খাওয়া
মুস্তাহাব। তবে অবশ্যই ফজরের আযানের পূর্বেই শেষ
করতে হবে।
৮. আযানের সাথ সাথে ইফতার করা:
সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ইফতার করা মুস্তাহাব।
সাহল ইবন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত
যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻻَ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺑِﺨَﻴْﺮٍ ﻣَﺎ ﻋَﺠَّﻠُﻮﺍ ﺍﻟﻔِﻄْﺮَ »
“লোকেরা যতদিন যাবৎ ওয়াক্ত হওয়া মাত্র ইফতার
করবে, ততদিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে”। [355]
উমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻗْﺒَﻞَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞُ ﻣِﻦْ ﻫَﺎ ﻫُﻨَﺎ، ﻭَﺃَﺩْﺑَﺮَ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭُ ﻣِﻦْ
ﻫَﺎ ﻫُﻨَﺎ، ﻭَﻏَﺮَﺑَﺖِ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢُ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন রাত্র সে দিক থেকে
ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য
ডুবে যায়, তখন সাওম পালনকারী ইফতার করবে”। [356]
৯. ইফতারের সময় দো‘আ করা:
সাওম পালনকারীর জন্য সুন্নাত হচ্ছে ইফতারের পূর্ব
মুহূর্তে দো‘আ করা। কারণ এ সময় দো‘আ কবুল হয়।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
«ﺛَﻼَﺙٌ ﻻَ ﺗُﺮَﺩُّ ﺩَﻋْﻮَﺗُﻬُﻢْ، ﺍﻹِﻣَﺎﻡُ ﺍﻟﻌَﺎﺩِﻝُ، ﻭَﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢُ ﺣِﻴﻦَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﺩَﻋْﻮَﺓُ ﺍﻟْﻤَﻈْﻠُﻮﻡِ »
“তিন ব্যক্তির দো‘আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। সাওম
পালনকারী যখন ইফতার করে, ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ
এবং নির্যাতিত ব্যাক্তির দো‘আ”। [357]
১০. সাওম পালনকারীকে ইফতার করানো:
সাওম পালনকারীকে ইফতার করানো রমযানে একটি
বিশেষ সাওয়াবের কাজ। যায়েদ ইবন খালেদ আল-
জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে,
« ﻣَﻦْ ﻓَﻄَّﺮَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻛُﺘِﺐَ ﻟَﻪُ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﺟْﺮِﻩِ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﺮِ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢِ ﺷَﻲْﺀٌ »
“যে ব্যক্তি কোনো সাওম পালনকারীকে ইফতার
করাবে সে সাওম পালনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব
পাবে। তবে সাওম পালনকারীর সাওয়াব কমানো
হবে না।” [358]
১১. তারাবীহর সালাত আদায়:
রমযানে তারাবীহর সালাত আদায় করা সুন্নাত। আবু
হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ، ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »
“যে ব্যক্তি রমযানের রাতে সওয়াবের আশায় রাত
জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে
দেওয়া হয়”। [359]
‘আব্দুর রাহমান ইবন ‘আবদ আল -ক্বারী রহ. বর্ণনা
করেন, তিনি বলেন,
«ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻣَﻊَ ﻋُﻤَﺮَ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺨَﻄَّﺎﺏِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﺃَﻭْﺯَﺍﻉٌ ﻣُﺘَﻔَﺮِّﻗُﻮﻥَ، ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ، ﻭَﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻓَﻴُﺼَﻠِّﻲ ﺑِﺼَﻼَﺗِﻪِ ﺍﻟﺮَّﻫْﻂُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ:
« ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺭَﻯ ﻟَﻮْ ﺟَﻤَﻌْﺖُ ﻫَﺆُﻻَﺀِ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﺎﺭِﺉٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ، ﻟَﻜَﺎﻥَ ﺃَﻣْﺜَﻞَ » ﺛُﻢَّ ﻋَﺰَﻡَ، ﻓَﺠَﻤَﻌَﻬُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺃُﺑَﻲِّ
ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐٍ، ﺛُﻢَّ ﺧَﺮَﺟْﺖُ ﻣَﻌَﻪُ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﺃُﺧْﺮَﻯ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺼَﻼَﺓِ ﻗَﺎﺭِﺋِﻬِﻢْ، ﻗَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ : «ﻧِﻌْﻢَ
ﺍﻟﺒِﺪْﻋَﺔُ ﻫَﺬِﻩِ، ﻭَﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻨَﺎﻣُﻮﻥَ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﻣِﻦَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ » ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺁﺧِﺮَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ ﺃَﻭَّﻟَﻪُ »
“আমি রমযানের এক রাতে উমার ইবনুল খাত্তাব
রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে মসজিদে নববীতে গিয়ে
দেখতে পাই যে, লোকেরা বিক্ষিপ্ত জামা‘আতে
বিভক্ত। কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আবার
কোনো ব্যক্তি সালাত আদায় করছে এবং তার
ইকতেদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। উমার
রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি মনে করি যে, এ
লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে
একত্রিত করে দিই, তবে তা উত্তম হবে। এরপর তিনি
উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহুর পিছনে সকলকে
একত্রিত করে দিলেন। পরে আর এক রাতে আমি তার
(উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু) সঙ্গে বের হই। তখন
লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত আদায়
করছিল। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, কত না
সুন্দর এ নতুন ব্যবস্থা! তোমরা রাতের যে অংশে
ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে
অংশে তোমরা সালাত আদায় কর -এর দ্বারা তিনি
শেষ রাত বুঝিয়েছেন। কেননা তখন রাতের
প্রথমভাগে লোকেরা সালাত আদায় করত। [360]
তারাবীর সালাতে কুরআন খতম করা
মুস্তাহাব।
১২. তাহাজ্জুদের সালাত পড়া:
নীরবে নির্জনে গভীর রজনীতে আল্লাহ তা‘আলার
সামনে দাঁড়ালে পৃথিবীর সব সুখ যেন তখন উপভোগ
করা যায়। এ সময় বান্দা কিছু প্রর্থনা করলে আল্লাহ
ফিরিয়ে দেন না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “ফরয সালাতের পর
সর্বোৎকৃষ্ট সালাত হচ্ছে তাহাজ্জুদের
সালাত।” (সহীহ মুসলিম)
১৩. শেষ দশদিন ই‘তিকাফ করা:
দুনিয়ার মায়াজাল ছিন্ন করে আল্লাহ তা‘আলার
সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে রমযানের শেষ দশ দিন
কোনো জামে মসজিদে একাগ্রচিত্তে যিকির-
আযকার, সালাত, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি
ইবাদত-বন্দেগীর মাঝে কেটে দেওয়া হলো
ই‘তিকাফ। ই‘তিকাফ করা সান্নাতে মুয়াক্কাদা
(কিফায়াহ) হাদীছ শরীফে এসেছে: “রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর পূর্ব
পর্যন্ত রমযানের শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করেছেন।
তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রীগণ ই‘তিকাফ করেছেন”।
ই‘তিকাফকারী লাইলাতুল ক্বদরের সৌভাগ্য প্রাপ্ত
থেকে পারেন।
১৪. রমযান মাসে যাকাত আদায় করা:
যাকাত ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। সালাতের পরেই এর
স্থান। প্রত্যেক ধনবান ব্যক্তি যার সম্পদ যাকাতের
নিসাব পরিমাণ হয়েছে তাদের যাকাত আদায় করা
ফরয। রমযানে একটি ফরয আদায় করলে সত্তরটি ফরয
আদায় করার সাওয়াব। তাই এ মাসে যাকাত আদায়
করলে অতিরিক্ত সাওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়।
১৫. সাধ্যমত দান-সদকা করা:
রমযান মাসে বেশি বেশি নফল দান-সদকাহ করা
উচিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ছিলেন সবচেয়ে বেশি দানশীল
ব্যক্তি। আর রমযান আসলে তিনি আরো বেশি
দানশীল থেকেন। হাদীসে এসেছে, ইবন ‘আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﺟْﻮَﺩَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺑِﺎﻟﺨَﻴْﺮِ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺃَﺟْﻮَﺩُ ﻣَﺎ ﻳَﻜُﻮﻥُ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ
ﺣِﻴﻦَ ﻳَﻠْﻘَﺎﻩُ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞُ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﻳَﻠْﻘَﺎﻩُ ﻛُﻞَّ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻨْﺴَﻠِﺦَ،
ﻳَﻌْﺮِﺽُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﻘُﺮْﺁﻥَ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻟَﻘِﻴَﻪُ ﺟِﺒْﺮِﻳﻞُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻛَﺎﻥَ
ﺃَﺟْﻮَﺩَ ﺑِﺎﻟﺨَﻴْﺮِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺮِّﻳﺢِ ﺍﻟﻤُﺮْﺳَﻠَﺔِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধন-সম্পদ
ব্যয় করার ব্যাপারে সকলের চেয়ে দানশীল ছিলেন।
রমযানে জিবরীল আলাইহিস সালাম যখন তাঁর
সাথে দেখা করতেন, তখন তিনি আরো অধিক দান
করতেন। রমযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই
জিবরীল তাঁর একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন
শোনাতেন। জিবরীল যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ
করতেন তখন তিনি রহমত প্রেরিত বায়ূর চেয়ে অধিক
ধন-সম্পদ দান করতেন”। [361]
তাই সামর্থবানদের উচিত পাড়া-
প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, গরীব-দুঃখী সবাইকে
সাধ্যমত দান-সদকা দিয়ে সহযোগিতা করা।
১৬. সদকাতুল ফিতর আদায় করা:
সাওমের পবিত্রতাস্বরূপ সাওম পালনকারীকে
সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। এ সদকা দ্বারা
আমরা গরীব মিসকীনদেরকে ঈদের আনন্দে শামিল
করতে পারি। ঈদের সালাতের পূর্বেই এই ফিতরা
আদায় করা সুন্নাত। তবে বিলম্ব হলে ঈদের পরেও তা
আদায় করা যায়।
১৭. রমযানে ‘উমরা পালন:
রমযানে ওমরাহ পালন করার ফযীলত অনেক।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন: “রমযানে ওমরাহ পালন হজ্জের
সমান।” (বুখারী ও মুসলিম) অন্য আরেক হাদীসে
এসেছে: “রমযানে ওমরাহ পালন হজ আদায়ের সমান
বা আমার সাথে হজ আদায়ের সমান।” (সহীহ
মুসলিম) তাই যাদের ওমরাহ পালনের নিয়ত আছে
তাদের উচিত রমযানে ওমরাহ পালন করা।
১৮. লাইলাতুর ক্বদর তালাশ করা:
আল্লাহ তা‘আ বলেন
﴿ﺇِﻧَّﺎٓ ﺃَﻧﺰَﻟۡﻨَٰﻪُ ﻓِﻲ ﻟَﻴۡﻠَﺔِ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ١ ﻭَﻣَﺎٓ ﺃَﺩۡﺭَﻯٰﻚَ ﻣَﺎ ﻟَﻴۡﻠَﺔُ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ٢ ﻟَﻴۡﻠَﺔُ ﭐﻟۡﻘَﺪۡﺭِ ﺧَﻴۡﺮٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻟۡﻒِ ﺷَﻬۡﺮٖ
٣ ﺗَﻨَﺰَّﻝُ ﭐﻟۡﻤَﻠَٰٓﺌِﻜَﺔُ ﻭَﭐﻟﺮُّﻭﺡُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺑِﺈِﺫۡﻥِ ﺭَﺑِّﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﻛُﻞِّ ﺃَﻣۡﺮٖ ٤ ﺳَﻠَٰﻢٌ ﻫِﻲَ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻣَﻄۡﻠَﻊِ ﭐﻟۡﻔَﺠۡﺮِ
٥﴾ [ﺍﻟﻘﺪﺭ: ١، ٥]
“নিশ্চয় আমরা এটি (কুরআন) নাযিল
করেছি ‘লাইলাতুল কদরে।’ তোমাকে কিসে
জানাবে ‘লাইলাতুল কদর’ কী? ‘লাইলাতুল
কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে
ফিরিশতারা ও রূহ (জিবরীল) তাদের রবের
অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে।
শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত”। [সূরা
আল-কাদর, আয়াত: ১-৫]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন,
« ﻣَﻦْ ﻳَﻘُﻢْ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ، ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﺍﺣْﺘِﺴَﺎﺑًﺎ، ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ »
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায়
লায়লাতুল কদর-এ ইবাদতে রাত্রি জাগরণ করবে, তার
অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে”। [362]
যর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উবাই ইবন
কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছি,
ﻋَﻦْ ﺯِﺭٍّ، ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺃُﺑَﻲَّ ﺑْﻦَ ﻛَﻌْﺐٍ، ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﻭَﻗِﻴﻞَ ﻟَﻪُ ﺇِﻥَّ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦَ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ، ﻳَﻘُﻮﻝُ:
« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻡَ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔَ ﺃَﺻَﺎﺏَ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ »، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃُﺑَﻲٌّ: « ﻭَﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﻫُﻮَ، ﺇِﻧَّﻬَﺎ ﻟَﻔِﻲ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻳَﺤْﻠِﻒُ ﻣَﺎ ﻳَﺴْﺘَﺜْﻨِﻲ، ﻭَﻭَﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﻋْﻠَﻢُ ﺃَﻱُّ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻫِﻲَ، ﻫِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺃَﻣَﺮَﻧَﺎ ﺑِﻬَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﻘِﻴَﺎﻣِﻬَﺎ، ﻫِﻲَ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺻَﺒِﻴﺤَﺔِ ﺳَﺒْﻊٍ ﻭَﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ، ﻭَﺃَﻣَﺎﺭَﺗُﻬَﺎ ﺃَﻥْ
ﺗَﻄْﻠُﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻓِﻲ ﺻَﺒِﻴﺤَﺔِ ﻳَﻮْﻣِﻬَﺎ ﺑَﻴْﻀَﺎﺀَ ﻟَﺎ ﺷُﻌَﺎﻉَ ﻟَﻬَﺎ »
যখন তাকে বলা হলো যে, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ
রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, যে ব্যক্তি সারা বছর
(ইবাদতে) রাত্রি জাগরণ করবে সে লাইলাতুল-কাদর
পাবে। তখন উবাই রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, সেই
আল্লাহর কসম তিনি ব্যতীত আর কোনো মা‘বুদ নেই।
তা অবশ্যই রমযানে রয়েছে। তিনি কসম করে
বলেছিলেন এবং তিনি কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই
কসম করে বলেছিলেন। আবার তিনি আল্লাহর কসম
খেয়ে বললেন, ভালো করেই জানি যে, সেটি কোন
রাত? সেটি হলো সে রাত, যে রাত জেগে ইবাদত
করার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়সাল্লাম আমাদের হুকুম করেছিলেন। যে রাতের
ভোর হয়, সাতাশে রমযান। আর সে রাতের ‘আলামত
হলো এই যে, দিনের সূর্য উদিত হয় উজ্জল হয়ে তাতে
(কিরণের) তীব্রতা থাকে না”। [363]
তাই রমযানের শেষ দশ দিন বিশেষ করে
বেজোড় রাত্রিতে ইবাদতের মাধ্যমে কদরের রাত্রি
তালাশ করা উচিত।
১৯. সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলা:
দীর্ঘ এক মাস সাওম পালন করার দ্বারা মানুষ বুঝতে
পারে দুঃখীজনের ক্ষুধা-তৃষ্ণার মর্মবেদনা। তাই
ইসলাম রমযানের সাওম ফরয করে সমাজের অবহেলিত
মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ গড়ে তুলেছে তা
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আর্তমানবতার
সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার শিক্ষাই দিয়ে
যায় রমযান।
২০. ইসলামী রাষ্ট্রের ভালোবাসায় অনুপ্রাণিত
হওয়া:
রমযান মাস হলো আল্লাহ তা‘আলার সাহায্যের
মাস। এ মাসে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদেরকে যুগে
যুগে শত্রুর মোকাবেলায় বিজয় দান করেছেন।
ইসলামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধে
সতেরই রমযান মদীনা রাষ্ট্রের স্বাধীনতা টিকিয়ে
রাখতে ইসলামের বিজয় কল্পে মক্কার কাফিরদের
বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমগণ ঐতিহাসিক বিজয় লাভ
করেন। আল্লাহ বলেছেন,
﴿ﻭَﻟَﻘَﺪۡ ﻧَﺼَﺮَﻛُﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺑِﺒَﺪۡﺭٖ ﻭَﺃَﻧﺘُﻢۡ ﺃَﺫِﻟَّﺔٞۖ ﻓَﭑﺗَّﻘُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﺸۡﻜُﺮُﻭﻥَ ١٢٣ ﺇِﺫۡ ﺗَﻘُﻮﻝُ ﻟِﻠۡﻤُﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ
ﺃَﻟَﻦ ﻳَﻜۡﻔِﻴَﻜُﻢۡ ﺃَﻥ ﻳُﻤِﺪَّﻛُﻢۡ ﺭَﺑُّﻜُﻢ ﺑِﺜَﻠَٰﺜَﺔِ ﺀَﺍﻟَٰﻒٖ ﻣِّﻦَ ﭐﻟۡﻤَﻠَٰٓﺌِﻜَﺔِ ﻣُﻨﺰَﻟِﻴﻦَ ١٢٤ ﺑَﻠَﻰٰٓۚ ﺇِﻥ ﺗَﺼۡﺒِﺮُﻭﺍْ ﻭَﺗَﺘَّﻘُﻮﺍْ
ﻭَﻳَﺄۡﺗُﻮﻛُﻢ ﻣِّﻦ ﻓَﻮۡﺭِﻫِﻢۡ ﻫَٰﺬَﺍ ﻳُﻤۡﺪِﺩۡﻛُﻢۡ ﺭَﺑُّﻜُﻢ ﺑِﺨَﻤۡﺴَﺔِ ﺀَﺍﻟَٰﻒٖ ﻣِّﻦَ ﭐﻟۡﻤَﻠَٰٓﺌِﻜَﺔِ ﻣُﺴَﻮِّﻣِﻴﻦَ ١٢٥ ﴾ [ﺍﻝ
ﻋﻤﺮﺍﻥ: ١٢٣، ١٢٥]
“আর অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে বদরে সাহায্য
করেছেন অথচ তোমরা ছিলে হীনবল। অতএব, তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর, আশা করা যায়, তোমরা
শোকরগুজার হবে। স্মরণ কর, যখন তুমি মুমিনদেরকে
বলছিলে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয়
যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার
নাযিলকৃত ফিরিশতা দ্বারা সাহায্য
করবেন’? হ্যাঁ, যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া
অবলম্বন কর, আর তারা হঠাৎ তোমাদের মুখোমুখি
এসে যায়, তবে তোমাদের রব পাঁচ হাজার চিহ্নিত
ফিরিশতা দ্বারা তোমাদেরকে সাহায্য করবেন”।
[সূরা আলে ইমরান, আযাত: ১২৩-১২৫]
তাই প্রতি বছর রমযান আমাদেরকে দেশপ্রেম
শিক্ষা দেয়। বহিরাগত শত্রুর মোকাবেলায় প্রিয়
মাতৃভূমিকে টিকে রাখার দৃঢ় সংকল্প আমরা রমযান
মাসে গ্রহণ করবো।
২১. রমযানে শরীরের যত্ন নেওয়া:
সুস্বাস্থ্য সকল সুখের মূল। ইবাদত করার জন্য চাই
শারীরিক সুস্থতা। প্রবাদে বালা হয়: ‘তোমরা
সাওম পালন করো, সুস্থ থাক।’ তাই রমযানে পরিমাণ
মতো পানাহার করা উচিত। অন্যদিকে সাওমের
কারণে মানুষের অনেক রোগ-ব্যাধি দূর হয়। যেমন,
খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ফলে মেদ, ডায়াবেটিস,
গ্যাষ্ট্রিক, ব্লাড প্রেসার, হৃদরোগ ও মানসিক
অস্থিরতা দূর হয়।
২২. আত্মসমালোচনা করা:
রমযানে চাঁদ উদিত হলেই রহমতের দরজা খোলা হয়।
প্রতিটি দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে
হিসাব করতে হবে আমি কতটুকু ভালো বা খারাপ
কাজ করেছি। মনে রাখতে হবে জীবনে কতটি
রমযানই বা পাবো। আগামী রমযানে আমি কি বেঁচে
থাকবো? পর পারের জন্য আমি কতটুকু সম্বল অর্জন
করেছি? এভাবে প্রতিটি দিন হিসেব করলে একটি
সফল রমযান অতিবাহিত করা সম্ভব।
২৩. রমযান পরবর্তী কর্মসূচী গ্রহণ:
রমযানের পরে বাকী এগারটি মাস কীভাবে চলবো
সে সিদ্ধান্ত রমযান মাসেই নিতে হবে। শাওয়ালের
ছয় সাওম, রমযানের পরে পুনরায় পাপের জগতে ফিরে
না যাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে অটল অবিচল পরিকল্পনা
রমযান মাসেই গ্রহণ করা।
হে ঘুমন্ত! জেগে ওঠ, আর কত কাল এভাবে ঘুমাবে?
মৃত্যুর পরে কবরে হাজার হাজার বছর ঘুমাতে পারবে।
রমযান বিদায় নিচ্ছে তুমি কি তার নি‘আমত প্রাপ্ত
হয়েছো? সালাত-সাওম, দান-সদকা, কুরআন
তিলাওয়াত, সৎকাজে আদেশ, অসৎ কাজে নিষেধ
ইত্যাদির মাধ্যমে রমযানকে স্বাগত জানাও।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।
অষ্টম অধ্যায়
সাওম সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা
প্রশ্ন: কার ওপর সাওম ফরয?
জওয়াব: প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক বালেগ মুসলিমের ওপর
রমযানের সাওম পালন করা ফরয।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ﻓَﻤَﻦ ﺷَﻬِﺪَ ﻣِﻨﻜُﻢُ ﭐﻟﺸَّﻬۡﺮَ ﻓَﻠۡﻴَﺼُﻤۡﻪُۖ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٥ ]
“সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে
সে যেন অবশ্যই সাওম পালন করে”। [সূরা আল-
বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
প্রশ্ন: সাওম ফরয হওয়ার শর্ত কী কী?
জওয়াব: সাওম ফরয হওয়ার শর্ত হলো:
১ - ইসলাম: অতএব, অমুসলিমের ওপর সাওম পালন
ফরয নয়।
২ - প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া: অতএব, অপ্রাপ্তবয়স্কের ওপর
সাওম পালন ফরয নয়। তবে যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-
বালিকা সাওম পালন করতে সক্ষম হয় তবে সাওম
পালনের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য এ ব্যাপারে
তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হবে।
৩- সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া: অতএব,
পাগলের ওপর সাওম পালন ফরয নয়।
৪ - সাওম পালন রাখতে সক্ষম হওয়া: অতএব, যে
সাওম পালন করতে অপারগ তার ওপর সাওম পালন ফরয
নয়।
প্রশ্ন: সাওম কয় প্রকার?
জওয়াব: সাওমের প্রকারভেদ। সাওম প্রথমত দু’প্রকার:
১- বাধ্যতামূলক সাওম। আর তা দু’প্রকার:
ক. আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক বান্দার ওপর
মৌলিকভাবে ফরয করে দেওয়া সাওম আর তা হলো
রমযানের সাওম। এ সাওম ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের
একটি।
খ. এমন সাওম যা বান্দা নিজের ওপর ওয়াজিব করে
নিয়েছে, যেমন মানত ও কাফফারার সাওম।
২- মুস্তাহাব সাওম। আর তা হলো প্রত্যেক ওই সাওম
যা শরী‘আত প্রবর্তকের কাছে পছন্দনীয়। যেমন
সোমবার ও বৃহস্পতিবারের সাওম, প্রতিমাসে তিন
১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের সাওম, আশুরার সাওম, যিলহজ
মাসের প্রথম দশকের সাওম ও ‘আরাফা দিবসের
সাওম।
প্রশ্ন: সাওমের নিয়ত করার হুকুম কী?
জওয়াব: ফরয ও ওয়াজিব সাওমর ক্ষেত্রে রাত থেকে
সাওমর নিয়ত করা আবশ্যক। আর যদি নফল সাওম
হয়, তবে রাত থেকে নিয়ত করা ওয়াজিব নয়; বরং
দিনের বেলায় সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে নিয়ত করে
নিলেই সাওম রাখা শুদ্ধ হবে, যদি সুবেহ সাদেকের
পর থেকে এমনকিছু গ্রহণ না করা হয় যা সাওম ভেঙ্গে
দেয়। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে
আসলেন ও জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমাদের কাছে কি
কোনো (খাবার) আছে?’ আমরা
বললাম, ‘না, নেই।’ তিনি বললেন, তাহলে আমি
সাওম রাখলাম।’ (সহীহ মুসলিম)।
প্রশ্ন : হতে পারে আজ রমযানের ১লা তারিখ ইহা
মনে করে শাবান মাসের শেষ দিন সতর্কতাস্বরূপ
সাওম পালনের হুকুম কী?
জওয়াব: সন্দেহের দিন বলতে শা‘বান মাসের ৩০
তারিখকে বুঝায়। ঐ দিন সতর্কতা অবলম্বন করে
সাওম পালনের হুকুম সম্পর্কে বিশুদ্ধতম মত হলো ঐ
দিন সাওম পালন হারাম। আম্মার বিন ইয়াসার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন,
« ﻣﻦ ﺻﺎﻡ ﺍﻟﻴﻮﻡ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﺸﻚ ﻓﻴﻪ ﻓﻘﺪ ﻋﺼﻰ ﺃﺑﺎ ﺍﻟﻘﺎﺳﻢ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ »
“যে ব্যক্তি সন্দেহের দিন সাওম পালন করল সে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবাধ্য
হলো”।
তাছাড়া সন্দেহের দিন সাওম পালনকারী আল্লাহর
দেওয়া সীমা অতিক্রম করল। কেননা আল্লাহ
তা‘আলার সীমা হলো, কেহ রমযানের চাঁদ না দেখে
বা চাঁদ প্রমাণিত না হলে রমযানের সাওম পালন
করবে না। তাই তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻻ ﻳﺘﻘﺪﻣﻦ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺑﺼﻴﺎﻡ ﻳﻮﻡ ﺃﻭ ﻳﻮﻣﻴﻦ، ﺇﻻ ﺭﺟﻞ ﻛﺎﻥ ﻳﺼﻮﻡ ﺻﻮﻣﺎ ﻓﻠﻴﺼﻤﻪ »
“তোমাদের কেহ যেন রমযান মাসকে এক বা দু‘দিন
বাড়িয়ে না দেয়। তবে যার অন্য কোনো নিয়মিত
সাওম সে দিনে হয়ে যায়, তার কথা আলাদা”।
(রমযানের ১লা তারিখ সন্দেহ করে সাওম পালন করা
যাবে না)
প্রশ্ন : এমন বৃদ্ধ লোক যে সাওম পালন করলে তার
স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে, সে কি সাওম পালন করবে?
জওয়াব: যদি সাওম পালনে তার ক্ষতি হয়, তার জন্য
সাওম পালন জায়েয নয়। কারণ, আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন বলেন,
﴿ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻘۡﺘُﻠُﻮٓﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢۡۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢۡ ﺭَﺣِﻴﻤٗﺎ﴾ [ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ: ٢٩ ]
“তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। আল্লাহ অবশ্যই
তোমাদের প্রতি দয়াশীল।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত:
২৯]
আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন আরো বলেন,
﴿ﻭَﻟَﺎ ﺗُﻠۡﻘُﻮﺍْ ﺑِﺄَﻳۡﺪِﻳﻜُﻢۡ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟﺘَّﻬۡﻠُﻜَﺔِ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ١٩٥]
“তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে
দিওনা।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৯৫]
তাই যে বৃদ্ধ ব্যক্তির স্বাস্থ্যের জন্য সাওম ক্ষতিকর
তার জন্য সাওম পালন জায়েয নয়। এর সাথে
ভবিষ্যতে সাওম পালনের সামর্থ্যবান হওয়ার
সম্ভাবনা যদি না থাকে তাহলে সে প্রত্যেকটি
সাওমের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য
খাওয়াবে বা দান করবে। এতেই সে সিয়ামের দায়
থেকে মুক্ত হবে।
প্রশ্ন: সাওমের রুকনসমূহ কী কী?
জওয়াব: সাওমের রুকনসমূহ:
১- সুবেহ সাদেক উদয় হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত
পর্যন্ত সাওমভঙ্গকারী বিষয় থেকে বিরত থাকা।
আল্লাহ বলেছেন,
﴿ﻭَﻛُﻠُﻮﺍْ ﻭَﭐﺷۡﺮَﺑُﻮﺍْ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻳَﺘَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻜُﻢُ ﭐﻟۡﺨَﻴۡﻂُ ﭐﻟۡﺄَﺑۡﻴَﺾُ ﻣِﻦَ ﭐﻟۡﺨَﻴۡﻂِ ﭐﻟۡﺄَﺳۡﻮَﺩِ ﻣِﻦَ ﭐﻟۡﻔَﺠۡﺮِۖ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗِﻤُّﻮﺍْ
ﭐﻟﺼِّﻴَﺎﻡَ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟَّﻴۡﻞِۚ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٧]
“এবং তোমরা আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের
সাদা রেখা কালো রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর
রাত পর্যন্ত সাওম পূর্ণ কর।” [সূরা আল-বাকারা,
আয়াত: ১৮৭]
সাদা ও কালো রেখার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, দিনের
শুভ্রতা ও রাতের কৃষ্ণতা।
২- নিয়ত। অর্থাৎ সাওমদার ব্যক্তি সাওমভঙ্গকারী
বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহ
তাআলার ইবাদত করার নিয়ত করবে। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘নিশ্চয় আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল আর
প্রত্যেকের জন্য তাই নির্ধারিত যা সে নিয়ত
করেছে।’
প্রশ্ন: সাওম অবস্থায় কী কী করা বৈধ?
জওয়াব: সাওম অবস্থায় যা যা করা বৈধ:
১ - গোসল করা, ঠাণ্ডা পানিতে বসা।
২ – মুখের থুতু ও কাশ গিলে ফেলা।
৩ - জিহ্বা দিয়ে কোনো খাদ্যের কেবল স্বাদ
পরীক্ষা করে দেখা। তবে শর্ত হলো কোনোকিছুই
যেন কন্ঠের নিচে প্রবেশ না করে।
৪- আতর-সুগন্ধি ইত্যাদির ঘ্রাণ নেওয়া।
৫- সাওমদারের মিসওয়াক ব্যবহার। যেকোনো সময়
মিসওয়াক ব্যবহার করা বৈধ, হোক তা সূর্যে ঢলে
যাওয়ার পূর্বে অথবা পরে। হোক তা তাজা অথবা
শুষ্ক। তবে মিসওয়াক তাজা হওয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল
রাখতে হবে তা যেন কন্ঠের নিচে চলে না যায়।
কেননা এরূপ হলে সাওম ভেঙ্গে যাবে।
প্রশ্ন: সাওমের সুন্নত ও মুস্তাহাবসমূহ কী কী?
জওয়াব: সাওমের সুন্নত ও মুস্তাহাবসমূহ:
১ - সাহরী খাওয়া এবং তা দেরী করে ফজরের
আযানের কিছু সময় পূর্বে খাওয়া।
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাহরী খাও।
কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে।’
২ - দ্রুত ইফতার করা।
সাওমদারের জন্য মুস্তাহাব হলো দ্রুত ইফতার করা।
অর্থাৎ সূর্যাস্ত যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হলে
সাথে সাথে ইফতার করা। হাদীসে
এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘মানুষ ভালো থাকবে যতক্ষণ তারা দ্রুত
ইফতার করে যাবে।’
তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব। তাজা
খেজুর না পাওয়া গেলে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার
করা। খেজুর বেজোড় সংখ্যায় হওয়া। যদি খেজুর না
পাওয়া যায় তবে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার
করা। আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের পূর্বে বেজোড়
সংখ্যক তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা
খেজুর না পেলে শুকনো খেজুর দিয়ে। আর খেজুর না
পেলে তিনি কয়েক ঢোক পানি পান করে ইফতার
করতেন।’
৩- ইফতারের সময় দো‘আ পড়া। হাদীসে
এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, বলতেন,
« ﺫَﻫَﺐَ ﺍﻟﻈَّﻤَﺄُ ﻭَﺍﺑْﺘَﻠَّﺖِ ﺍﻟْﻌُﺮُﻭﻕُ، ﻭَﺛَﺒَﺖَ ﺍﻟْﺄَﺟْﺮُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ »
“তৃষ্ণা চলে গেছে, শিরাগুলো আদ্র হয়েছে আর
ছাওয়াব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অনত্র বলেছেন, ‘নিশ্চয় ইফতারের সময় সাওমদারের
দো‘আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (আবু দাউদ, হাদীস
নং ২৩৫৭। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান
বলেছেন।)
৪- অহেতুক ও অশ্লীল কথা পরিত্যাগ করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
« ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﺻَﻮْﻡِ ﺃَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﻓَﻼَ ﻳَﺮْﻓُﺚْ،ﻭَﻻَ ﻳَﺼْﺨَﺐْ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺳَﺎﺑَّﻪُ ﺃَﺣَﺪٌ، ﺃَﻭْ ﻗَﺎﺗَﻠَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ: ﺇِﻧِّﻰ
ﺍﻣْﺮُﺅٌ ﺻَﺎﺋِﻢٌ ».
“তোমাদের কেউ যখন সাওম পালন করবে তখন সে যেন
অশ্লীল কথা, ঝগড়া ও হট্টগোল বর্জন করে। যদি কেউ
তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত
হয় তখন সে যেন বলে, আমি সাওম পালনকারী।”
৫- বেশি বেশি ইবাদত করা। যেমন, কুরআন
তিলাওয়াত, আল্লাহর যিকর করা, তারাবীর সালাত
পড়া, তাহাজ্জুদের সালাত পড়া, লাইলাতুল কদর
যাপন করা, ফরয সালাতের আগে-পড়ের সুন্নতগুলো
আদায় করা, দান-সদকা করা, ভালো কাজ সম্পাদনে
অর্থ ও শ্রম ব্যয় করা, সাওমদারদেরকে ইফতার
করানো ও মাহে রমযানে উমরা আদায় করা; কেননা
মাহে রমযানে নেক আমলের ছাওয়াব বাড়িয়ে
দেওয়া হয়। ইবন ‘আব্বাস রারিয়াল্লাহু ‘আনহুমা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব থেকে বেশি
দানশীল ছিলেন, আর তিনি রমযান মাসে সমধিক
দানশীল থেকেন, যখন জিবরীল আলাইহিস সালাম
তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। আর জিবরীল
আলাইহিস সালাম রমযানের প্রতি রাতেই
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁকে কুরআন চর্চা
করাতেন। যখন জিবরীল আলাইহিস সালাম
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সাথে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি দান খয়রাতে
উন্মুক্ত বাতাস থেকেও অধিক বেগবান থেকেন।
প্রশ্ন: সাওম অবস্থায় কী কী কাজ করা মাকরূহ?
জওয়াব: সাওম অবস্থায় যেসব কাজ করা মাকরূহ:
১ - কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়ায় অতিরঞ্জিত
করা। কেননা এরূপ করলে পেটে পানি চলে যাওয়ার
আশঙ্কা থেকে যায়। এতদসংক্রান্ত এক হাদীসে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
«ﻭَﺑَﺎﻟِﻎْ ﻓﻲ ﺍﻻِﺳْﺘِﻨْﺸَﺎﻕِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ».
“আর নাকে পানি দেওয়ায় তুমি অতিরঞ্জিত
করো, তবে যদি সাওমদার হও।”
২ - যৌনোত্তেজনাসহ চুম্বন করা। সাওমদার ব্যক্তি
যদি বীর্যপাত অথবা উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার
আশঙ্কা করে তবে তার পক্ষে চুম্বন করা মাকরূহ হবে।
আর সাওমদার ব্যক্তির উচিত হবে এমন সব বিষয় বর্জন
করা যার দ্বারা যৌনাত্তেজনা আন্দোলিত হয়।
হ্যাঁ, যদি সাওম ভঙ্গ হবে না বলে আত্মবিশ্বাস
থাকে, তবে তার কথা ভিন্ন। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু
‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﻳُﻘَﺒِّﻞُ، ﻭَﻳُﺒَﺎﺷِﺮُ ﻭَﻫُﻮَ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺃَﻣْﻠَﻜَﻜُﻢْ ﻹِﺭْﺑِﻪِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম
রাখা অবস্থায় চুম্বন করতেন, আলিঙ্গন করতেন। আর
তিনি ছিলেন তোমাদের মধ্যে সব থেকে বেশি তার
প্রয়োজনকে নিয়ন্ত্রণকারী।” এ কারণেই যুবকদের
ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের সাথে জড়িয়ে
থাকা মাকরূহ। অবশ্য বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে মাকরূহ নয়।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, ‘এক
ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের সাথে
জড়িয়ে থাকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি
তাকে অনুমতি দিলেন। অন্য এক ব্যক্তি এসে অভিন্ন
প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করল, তবে তিনি তাকে নিষেধ
করলেন। দেখা গেল, তিনি যাকে অনুমতি দিলেন সে
ছিল বৃদ্ধ। আর যাকে অনুমতি দিলেন না সে ছিল
যুবক।’
প্রশ্ন: কী কী কারণে সাওম ভঙ্গ হয়ে যায়?
জওয়াব: যেসব কারণে সাওম ভঙ্গ হয়ে যায়:
১ - সাওম রাখাবস্থায় ইচ্ছা করে খাবার ও পানীয়
গ্রহণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ﻭَﻛُﻠُﻮﺍْ ﻭَﭐﺷۡﺮَﺑُﻮﺍْ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻳَﺘَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻜُﻢُ ﭐﻟۡﺨَﻴۡﻂُ ﭐﻟۡﺄَﺑۡﻴَﺾُ ﻣِﻦَ ﭐﻟۡﺨَﻴۡﻂِ ﭐﻟۡﺄَﺳۡﻮَﺩِ ﻣِﻦَ ﭐﻟۡﻔَﺠۡﺮِۖ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗِﻤُّﻮﺍْ
ﭐﻟﺼِّﻴَﺎﻡَ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟَّﻴۡﻞِۚ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٧]
“এবং তোমরা আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের
সাদা রেখা কালো রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর
রাত পর্যন্ত সাওম পূর্ণ কর।” [সূরা আল-বাকারা,
আয়াত: ১৮৭]
২ – সহবাস করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ﺃُﺣِﻞَّ ﻟَﻜُﻢۡ ﻟَﻴۡﻠَﺔَ ﭐﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﭐﻟﺮَّﻓَﺚُ ﺇِﻟَﻰٰ ﻧِﺴَﺎٓﺋِﻜُﻢۡۚ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٧ ]
“সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের
স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে।” [সূরা আল-
বাকারা, আয়াত: ১৮৭]
৩- খাদ্যজাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা সাওম ভঙ্গের
কারণ। তবে ইনসোলিন ইনজেকশন সাওমভঙ্গকারী
নয়।
খাদ্যজাতীয় ইনজেকশনও সাওম ভঙ্গের কারণ।
ইনহেইলার সাওম ভঙ্গের কারণ নয়। চোখের ড্রপ
সাওমভঙ্গকারী নয়। তাছাড়া সুরমা সাওম ভঙ্গকারী
নয়।
৪- বিড়ি-সিগারেট সাওমভঙ্গকারী।
প্রশ্ন: সাওম ভঙ্গের ওযরসমূহ কী কী?
জওয়াব: যেসব ওযরে সাওম ভঙ্গ করা যায়:
১ – অসুস্থতা: অসুস্থ ব্যক্তির জন্য রমযান মাসে সাওম
ভঙ্গ করা বৈধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ﻓَﻤَﻦ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻨﻜُﻢ ﻣَّﺮِﻳﻀًﺎ ﺃَﻭۡ ﻋَﻠَﻰٰ ﺳَﻔَﺮٖ ﻓَﻌِﺪَّﺓٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃُﺧَﺮَۚ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ١٨٤]
“আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য
দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে।” [সূরা আল-বাকারা,
আয়াত: ১৮৪]
যে অসুস্থতার কারণে রমযান মাসে সাওম ভঙ্গ করা
চলে তা হলো এমন অসুস্থতা যার কারণে সাওম রাখা
অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় অথবা সাওম রাখলে
নিশ্চিত ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
২ – সফর: মুসাফির ব্যক্তির জন্য রমযান মাসে সাওম
ভঙ্গ করা বৈধ। তবে ভাঙ্গা সাওমগুলো পরবর্তীতে
অবশ্যই কাযা করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ
তা‘আলা বলেন,
﴿ﻓَﻤَﻦ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻨﻜُﻢ ﻣَّﺮِﻳﻀًﺎ ﺃَﻭۡ ﻋَﻠَﻰٰ ﺳَﻔَﺮٖ ﻓَﻌِﺪَّﺓٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃُﺧَﺮَۚ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ١٨٤]
“আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য
দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে।” [সূরা আল-বাকারা,
আযাত: ১৮৪]
যে সফরে সাওম ভঙ্গ করা চলে তা হলো একই ধরনের
সফর যার কারণে সালাত কসর করা চলে।
কিন্তু যদি মুসাফির ব্যক্তি সাওম রাখে তবে তার
সাওম শুদ্ধ হবে। আনাস ইবন মালিক
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের সাথে সফর করতাম। যে ব্যক্তি
সাওম রাখত তাকেও তিনি দোষারোপ করতেন
না, আবার যে সাওম রাখত না তাকেও দোষারোপ
করতেন না।’
তবে শর্ত হলো সাওম যেন মুসাফিরের জন্য খুব কষ্টকর
না হয়। আর যদি সাওম রাখা খুব কষ্টকর হয় অথবা
ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে সাওম ভঙ্গ
করাই উত্তম হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরাবস্থায় এক সাওমদার
ব্যক্তিকে দেখলেন যে প্রচণ্ড গরমের কারণে তাকে
ছায়া দেওয়া হচ্ছে এবং লোকজন তার চারপাশে
ভিড় করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘সফর অবস্থায় সাওম
রাখা উত্তম কাজের মধ্যে শামিল নয়।’
৩- গর্ভ ও দুগ্ধদান: গর্ভাবস্থা অথবা দুগ্ধদান অবস্থায়
নারী যদি তার ক্ষতির আশঙ্কা করে, তবে তার জন্য
সাওম ভঙ্গ করা বৈধ হবে। তবে তাকে কাযা করতে
হবে অসুস্থ ব্যক্তির মতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ
তা‘আলা মুসাফির ব্যক্তির ওপর থেকে সাওম এবং
সালাতের একাংশ উঠিয়ে নিয়েছেন। আর গর্ভধারী
ও দুগ্ধদানকারী নারীর ওপর থেকে তিনি সাওম
উঠিয়ে নিয়েছেন।’
আর যদি নিজের ক্ষতির কোনো ভয় না থাকে; কিন্তু
বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলেও সাওম ভঙ্গ
করা বৈধ হবে, তবে তাকে কাযা করতে হবে ও
প্রতিদিনের সাওমর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে
খাদ্যদান করতে হবে। ইবন আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘দুগ্ধদানকারী ও
গর্ভধারী নারী যদি তার সন্তানের ব্যাপারে
আশঙ্কা করে তাহলে সে সাওম ভঙ্গ করবে ও
মিসকীনকে খাদ্যদান করবে।’
৪- হায়েয ও নিফাস: যে নারী হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত
হয়েছে সে আবশ্যিকভাবে সাওম ভঙ্গ করবে। এ
অবস্থায় সাওম রাখা হারাম হবে। এমতাবস্থায়
সাওম রাখলে তা শুদ্ধ হবে না। তবে ভাঙ্গা
সাওমগুলো পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। এর
প্রমাণ, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে
হায়েযগ্রস্ত নারী সাওম কাযা করবে কিনা -এ
ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি
আমাদেরকেও স্পর্শ করত, অতঃপর আমাদেরকে সাওম
কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হতো, তবে সালাত
কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হতো না।’
প্রশ্ন : এক ব্যক্তি কঠিন হাপানী রোগে ভুগছে। দু
বছর পর্যন্ত তার চিকিৎসা চলছে। ডাক্তার তাকে
রমযানে সাওম পালন করতে নিষেধ করেছে। তাকে
বলেছে যদি সে সাওম পালন করে তবে রোগ বৃদ্ধি
পাবে। এ অবস্থায় সাওম বর্জনের হুকুম কী?
জওয়াব: আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন
বলেন,
﴿ﻓَﻤَﻦ ﺷَﻬِﺪَ ﻣِﻨﻜُﻢُ ﭐﻟﺸَّﻬۡﺮَ ﻓَﻠۡﻴَﺼُﻤۡﻪُۖ ﻭَﻣَﻦ ﻛَﺎﻥَ ﻣَﺮِﻳﻀًﺎ ﺃَﻭۡ ﻋَﻠَﻰٰ ﺳَﻔَﺮٖ ﻓَﻌِﺪَّﺓٞ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃُﺧَﺮَۗ
﴾ [ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٥]
“যে কেউ রমযান মাস পাবে সে যেন সাওম পালন
করে। আর যে রোগাক্রান্ত অথবা সফরে থাকে সে
যেন অন্য সময়ে আদায় করে নেয়।” [সূরা আল-বাকারা,
আয়াত: ১৮৫]
অর্থাৎ রোগের কারণে সাওম পালনে যদি কষ্ট হয়
অথবা সুস্থতা লাভে বিঘ্ন ঘটে তাহলে সে রমযানে
সাওম পালন না করে অন্য সময়ে আদায় করবে। তাই
তো আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ﻳُﺮِﻳﺪُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻜُﻢُ ﭐﻟۡﻴُﺴۡﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺑِﻜُﻢُ ﭐﻟۡﻌُﺴۡﺮَ﴾ [ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ: ١٨٥]
“আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টকর
তা চান না।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫]
ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
যে, যদি ডাক্তার মুসলিম ও সৎ-ন্যায়পরায়ণ হন এবং
বলেন সাওম রোগের ক্ষতি করবে অথবা সুস্থতা লাভে
দেরী হবে তবে সাওম পালন না করা জায়েয আছে।
আর যদি ডাক্তার মুসলিম না হন অথবা মুসলিম কিন্তু
সৎ নন তাহলে তার কথা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে
হ্যা, রোগী যদি অনুভব করে যে সাওম তার জন্য
ক্ষতির কারণ হবে তাহলে সে সাওম পালনে বিরত
থাকতে পারবে। পরে সুযোগ মতো সময়ে কাযা আদায়
করে নিবে। কাফফারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
রমযান মাসে ইসলাম গ্রহণকরীর সিয়ামের বিধান
প্রশ্ন : রমযানের কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর
যদি কেহ ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তাকে কি চলে
যাওয়া সাওম আদায় করতে বলা হবে?
জওয়াব: না তাকে পিছনের সাওম আদায় করতে হবে
না। কেননা সে তখন কাফের ছিল। আর কাফের
থাকাকালীন সময়ে যে নেক কাজ অতিবাহিত হয়ে
গেছে তাকে তা আদায় করতে হবে না। আল্লাহ
তা‘আলা বলেন,
﴿ﻗُﻞ ﻟِّﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭٓﺍْ ﺇِﻥ ﻳَﻨﺘَﻬُﻮﺍْ ﻳُﻐۡﻔَﺮۡ ﻟَﻬُﻢ ﻣَّﺎ ﻗَﺪۡ ﺳَﻠَﻒَ﴾ [ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ: ٣٨ ]
“যারা কাফির তাদের বলে দাও যদি তোমরা কুফুরীর
অবসান ঘটাও তাহলে তিনি তোমাদের অতীতে যা
কিছু গেছে তা ক্ষমা করে দিবেন” [সূরা আল-
আনফাল, আয়াত: ৩৮]
দ্বিতীয়ত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের যুগে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে
তাদের কাউকে অতীতের সালাত, সাওম, যাকাত
আদায় করতে নির্দেশ দেওয়া হয় নি। কিন্তু কথা
থেকে যায়, যে রমযানের দিনের মধ্যবর্তী সময়ে
ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তাকে কি খাওয়া-
দাওয়া, যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত থাকতে হবে, না
কাযা আদায় করতে হবে -এ ব্যাপারে ওলামাদের
মধ্যে মতভেদ আছে। তবে বিশুদ্ধতম মতো হলো তাকে
দিনের বাকী সময়টা খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত
থাকতে হবে। কাযা আদায় করতে হবে না। কেননা
দিনের শুরুতে যখন সাওম ওয়াজিব হওয়ার সময় এসেছে
তখন তার ওপর তা ওয়াজিব হয় নি। তার মাসআলাটা
ঐ কিশোরের মতো যে দিনের মধ্যবর্তী সময়ে
বালেগ হয়েছে। তাকে বিরত থাকতে হবে। কাযা
করতে হবে না।
প্রশ্ন : মেয়েদের হায়েয ও নিফাস অবস্থায় সাওম
পালনের বিধান কী? তারা যদি এক রমযানের
সিয়ামের কাযা অন্য রমযান পর্যন্ত বিলম্বিত করেন
তা হলে কোনো অসুবিধা আছে কিনা?
জওয়াব: হায়েয ও নিফাছ অবস্থায় মেয়েদের জন্য
ওয়াজিব হলো সাওম বর্জন করা। এ অবস্থায় সালাত ও
সাওম কোনোটাই আদায় করা জায়েয হবে না।
সুস্থতার পর তাদের সাওম কাযাযা আদায় করতে
হবে। সালাতের কাযা আদায় করতে হবে না।
হাদীসে এসেছে, ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত যে, তাকে জিজ্ঞেস করা হলো,
« ﻫﻞ ﺗﻘﻀﻲ ﺍﻟﺤﺎﺋﺾ ﺍﻟﺼﻮﻡ ﻭﺍﻟﺼﻼﺓ؟ ﻓﻘﺎﻟﺖ : ﻛﻨﺎ ﻧﺆﻣﺮ ﺑﻘﻀﺎﺀ ﺍﻟﺼﻮﻡ ﻭﻻ ﻧﺆﻣﺮ ﺑﻘﻀﺎﺀ
ﺍﻟﺼﻼﺓ ». ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ .
“হায়েয থেকে পবিত্রতার পর মহিলারা কি সালাত
ও সাওমের কাযা আদায় করবে? তিনি বললেন, এ
অবস্থায় আমাদের সিয়ামের কাযা আদায় করতে
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সালাতের নয়।” (বুখারী ও
মুসলিম)।
সাওম কাযা করা আর সালাত কাযা না করা সম্পর্কে
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা যা বলেছেন সকল
ওলামায়ে কেরাম তার সাথে একমত পোষণ করেছেন
অর্থাৎ ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এ বিধানে আল্লাহর এক অনুগ্রহের প্রকাশ ঘটেছে।
সাওম বছরের একবার আসে বলে তা কাযা করা কষ্টকর
হয় না। কিন্তু সালাত কাযা করার হুকুম হলে তা
কষ্টকর হয়ে যেত।
যদি শর‘ঈ ওযর (সংগত কারণ) ব্যতীত কেউ এক
রমযানের সিয়ামের কাযা অন্য আরেক রমযানের পর
পর্যন্ত বিলম্বিত করে তাহলে সে এ কাজের জন্য
তাওবা করবে। কাযা আদায় করবে এবং প্রত্যেকটি
সাওমের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান
করবে। এমনিভাবে অসুস্থ ব্যক্তি ও মুসাফির যার ওপর
সিয়ামের কাযা আদায় করা সহ কাফফারা দিতে
হবে অর্থাৎ প্রতিটি সাওমের পরিবর্তে একজন
মিসকীনকে খাদ্য দান করতে হবে এবং তওবা করবে।
প্রশ্ন : সাওম পালন রত অবস্থায় যদি থুতু গিলে ফেলে
তাতে অসুবিধা আছে কিনা?
জওয়াব: সাওম পালনকারী যদি মুখে অবস্থিত থুতু
গিলে ফেলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। আর এ
মাসআলায় ওলামাদের মধ্যে কোনো মতানৈক্য নেই।
কেননা বারবার থুতু ফেলা যেমন কষ্টকর তেমনি থুতু
না গিলে থাকাও সম্ভব নয়। কিন্তু কাশি ও শ্লেষ্মা
যদি মুখে এসে যায় তবে তা ফেলে দিতে হবে। সাওম
পালনরত অবস্থায় উহা গিলে ফেলা জায়েয নয়।
কেননা কাশি ও শ্লেষ্মা থুথুর মতো নয়।
প্রশ্ন: সাওম পালনকারী কি রমযানের দিনের
বেলায় টুথপেস্ট বা টুথপাউডার ব্যবহার করতে
পারবেন?
জওয়াব: যদি গলার মধ্যে না যায় তবে টুথপেস্ট ও
পাউডার ব্যবহার করতে কোনো অসুবিধা নেই।
এমনিভাবে দিনের শুরুতে ও শেষে যে কোনো সময়ে
মিসওয়াক করতে কোনো অসুবিধা নেই।
কতিপয় আলেম দুপুরের পর মিসওয়াক করাকে মাকরূহ
বলেছেন। অবশ্য এ মত শুদ্ধ নয়। সঠিক কথা হলো যে
কোনো সময় মিসওয়াক করা যায়। কেননা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিসওয়াক
সম্পর্কে যা বলেছেন তা “আম” অর্থাৎ ব্যাপক।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺍﻟﺴﻮﺍﻙ ﻣﻄﻬﺮﺓ ﻟﻠﻔﻢ ﻣﺮﺿﺎﺓ ﻟﻠﺮﺏ »
“মিসওয়াক মুখকে পবিত্র ও আল্লাহকে সন্তুষ্ট
করে।” (নাসায়ী)
তিনি আরো বলেছেন,
« ﻟﻮﻻ ﺃﻥ ﺃﺷﻖ ﻋﻠﻰ ﺃﻣﺘﻰ ﻷﻣﺮﺗﻬﻢ ﺑﺎﻟﺴﻮﺍﻙ ﻋﻨﺪ ﻛﻞ ﺻﻼﺓ ». ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
“যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর না হত তাহলে
আমি প্রত্যেক সালাতে মিসওয়াক করার নির্দেশ
দিতাম।” (বুখারী ও মুসলিম)
আর এ হাদীস জোহর ও আছরের সালাতকেও শামিল
করে। কারণ এ দুই সালাত দুপুরের পরেই হয়ে থাকে।
গর্ভবতী ও শিশুকে দুধ দানকারী মহিলার সাওম না
রাখা প্রসঙ্গ
প্রশ্ন : গর্ভবতী মহিলা কি রমযানে সাওম থেকে
বিরত থাকতে পারে?
জওয়াব: গর্ভবতী মহিলার দুই অবস্থার যে কোনো এক
অবস্থা থাকবে। হয়তো সে শক্তিশালী হবে।
সিয়ামের কারণে তার কষ্ট হবে না ও গর্ভস্থিত
বাচ্চার ওপর তার প্রভাব পড়বে না। এমতাবস্থায় তার
সাওম পালন করতে হবে।
আর যদি সে দুর্বল হয়। সাওম সে বরদাশত করতে
পারবে না বলে মনে হয় তাহলে সে সাওম আদায়
করবে না। বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে সাওম
বর্জন করা তার জন্য ওয়াজিব হবে। বাচ্চা প্রসবের
পর সে কাযা আদায় করবে। সাওম পালন করলে অনেক
সময় বাচ্চাকে দুধ পান করানোর সমস্যা দেখা দেয়।
কেননা দুগ্ধ দানকারী মায়ের খাবার-দাবার
গ্রহণের প্রয়োজন। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে যখন
দিন বড় হয়ে থাকে। তখন সে সাওম বর্জন করতে বাধ্য
হয়ে পড়ে। অন্যথায় তার বাচ্চার ক্ষতি হয়ে যাবে।
ﺃﻓﻄﺮﻱ ﻭﺇﺫﺍ ﺯﺍﻝ ﻋﻨﻚ ﺍﻟﻌﺬﺭ ﻓﺈﻧﻚ ﺗﻘﻀﻴﻦ ﻣﺎ ﻓﺎﺗﻚ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﻮﻡ
“এমতাবস্থায় আমরা তাকে বলব আপনি সাওম থেকে
বিরত থাকুন। যখন আপনি সমস্যা মুক্ত হবেন তখন
কাযা আদায় করবেন।”
কোনো কোনো ‘আলেম বলেছেন গর্ভবতী ও দুগ্ধ
দানকারী মহিলা সাওম থেকে বিরত থাকতে পারেন
যখন সিয়ামের কারণে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা
হয়, নিজের ক্ষতির কারণে নয়। তাই তার জন্য
ওয়াজিব হবে কাযা আদায় করা ও কাফফারা। তবে
কাফফারা ঐ ব্যক্তি আদায় করবেন যার দায়িত্বে
রয়েছে এ সন্তানের ভরন-পোষণ। কিন্তু বিশুদ্ধ মত
হলো কাফফারা আদায়ের প্রয়োজন হবে না।
আর যে ব্যক্তি অন্য কাউকে পানি বা আগুন থেকে
উদ্ধার করার জন্য সাওম ভঙ্গ করেছে তার হুকুমও ঐ
মহিলার মতো, যে তার বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কায়
সাওম থেকে বিরত থাকল অর্থাৎ সে সাওম থেকে
বিরত থাকবে ও পরে কাযা আদায় করবে।
উদাহরণ: আপনি দেখলেন একটি ঘরে আগুন লেগেছে।
সে ঘরের ভিতর মুসলিমগণ আছেন তখন তাদের উদ্ধার
করার জন্য সাওম ভঙ্গ করে খাবার গ্রহণ করে শক্তি
অর্জন করত তাদের উদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা
চালাবেন। এটা শুধু জায়েয নয়; বরং ওয়াজিব।
প্রশ্ন : রমযানে সাওম পালনের উদ্দেশ্যে ট্যাবলেট
ইত্যাদি খেয়ে মাসিক বন্ধ রাখা জায়েয কিনা?
জওয়াব: রমযানে সাওম যেন ত্যাগ করতে না হয় এ
উদ্দেশ্যে মাসিক (হায়েয) বন্ধ রাখার জন্য ঔষধ
গ্রহণ করা মহিলাদের জন্য জায়েয আছে। তবে শর্ত
হলো সৎ-নেককার চিকিৎসকের দ্বারা জেনে নিতে
হবে যে, এটা তার স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি করবে না
এবং তার জরায়ুতে কোনো প্রতিক্রিয়া বা সমস্যা
সৃষ্টি করবে না। কিন্তু এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না
করা উত্তম। যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সাওম
থেকে বিরত থেকে অন্য সময় আদায় করার সুযোগ
দিয়েছেন তখন তা সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করাই
ভালো।
না জেনে ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পর খাবার গ্রহণ
করার বিধান
প্রশ্ন : আমি সাহরী খাওয়ার জন্য জাগ্রত হয়ে পানি
পান করলাম। তারপর দেখলাম বেশ আগেই ফজরের
ওয়াক্ত হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আমার সাওম বাতিল
হবে কিনা?
জওয়াব: ফজরের ওয়াক্ত হয়ে গেছে অথচ আপনি এখনও
সাহরীর সময় আছে মনে করে পানাহার করেছেন। এ
অবস্থায় আপনার কোনো গুনাহ হবে না এবং সাওমের
কাযা আদায় করা দরকার হবে না। কেননা কুরআন ও
হাদীসের অনেক প্রমানাদি দ্বারা একথা স্পষ্ট যে
মানুষের ভুলে যাওয়া ও অবগতি না থাকার কারণে
শাস্তি দেওয়া হবে না। আবু হুরাইরা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
« ﻣﻦ ﻧﺴﻲ ﻭﻫﻮ ﺻﺎﺋﻢ ﻓﺄﻛﻞ ﺃﻭ ﺷﺮﺏ ﻓﻠﻴﺘﻢ ﺻﻮﻣﻪ ﻓﺈﻧﻤﺎ ﺃﻃﻌﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻘﺎﻩ »
“যে ব্যক্তি ভুলে গেল যে আমি সাওম অবস্থায় আছি
অতঃপর খাওয়া দাওয়া করল সে যেন তার সাওম
অব্যাহত রেখে পূর্ণ করে (ভেঙে না ফেলে)। কেননা
আল্লাহ তা‘আলা তাকে আহার করিয়েছেন।”
প্রশ্ন : যদি কোনো পুরুষ রমযানে দিনের বেলা তার
স্ত্রীকে চুমো দেয় বা আলিঙ্গন করে তা হলে তার
সাওম কি নষ্ট হয়ে যাবে?
জওয়াব: যদি সাওম অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে
সহবাস ব্যতীত চুমো দেয় বা আলিঙ্গন করে তবে তা
জায়েয। এতে সাওমের কোনো অসুবিধা হয় না।
কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাওম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দিতেন, আলিঙ্গন
করতেন। তবে এতে যদি সহবাসে লিপ্ত হয়ে পরার
আশঙ্কা থাকে তবে তা মাকরূহ হবে। আর চুমো বা
আলিঙ্গনের কারণে যদি বীর্যপাত হয়ে যায় তবে
দিনের বাকী অংশ সাওম অবস্থায় থেকে পরে
সাওমের কাযা আদায় করবে। কাফফারা আদায় করতে
হবে না। এটা অধিকাংশ আলেমদের মত। চুমো বা
আলিঙ্গনের কারণে যদি মজী বের হয় তবে এতে
সাওমের কোনো ক্ষতি করে না। এটা অধিকতর
বিশুদ্ধ মত।
প্রশ্ন : নাকে চোখে ড্রপ ব্যবহার, সুরমা ব্যবহার
অথবা কানে ঔষধ ব্যবহার কি সাওম ভঙ্গ করে?
জওয়াব: নাকে দেওয়া ঔষধ যদি পেটে পৌঁছে যায়
অথবা গলায় চলে যায় তা হলে সাওম ভেঙে যায়।
লকীত ইবন সাবুরা থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﺑﺎﻟﻎ ﻓﻲ ﺍﻹﺳﺘﻨﺸﺎﻕ، ﺇﻻ ﺃﻥ ﺗﻜﻮﻥ ﺻﺎﺋﻤﺎ »
“তোমরা ভালো করে নাকে পানি পৌঁছাও। কিন্তু
সাওম পালনরত অবস্থায় নয়।”
অতএব, সাওম পালনকারীর জন্য নাকে এমন ঔষধ
ব্যবহার করা জায়েয নেই যা গলা অথবা পেটে চলে
যায়। যদি পেটে বা গলায় না যায় তবে অসুবিধা
নেই। আর চোখে বা কানে ঔষধ ব্যবহার করলে অথবা
চোখে সুরমা ব্যবহার করলে সাওমের কোনো ক্ষতি
হয় না। কেননা এতে সাওম ভঙ্গের ব্যাপারে কুরআন-
হাদীসের কোনো দলীল নেই। চোখ বা কান দ্বারা
কখনো খাদ্য গ্রহণ করা যায় না। চোখ, কান শরীরের
অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতোই। ওলামায়ে কেরাম
বলেছেন, যদি কেউ পা দ্বারা খাদ্য পিষে আর
খাদ্যের স্বাদ সে মুখে অনুভব করে তবুও তার সাওম
নষ্ট হবে না। কেননা পা দ্বারা খাবার গ্রহণ সম্ভব
নয়।
এমনিভাবে চোখে কানে ঔষধ দিলে অথবা সুরমা
ব্যবহার করলে তার স্বাদ যদি অনুভূত হয় তবে সাওম
নষ্ট হবে না। এমনি নির্দেশ যদি কেউ গায়ে তেল
ব্যবহার করে তার স্বাদ অনুভব করে তার সাওমের
কোনো ক্ষতি হবে না।
প্রশ্ন : যে কিশোরের বয়স পনেরো বছর পর্যন্ত পৌঁছে
নি তাকে কি সাওম পালনের
নির্দেশ দেওয়া হবে, যেমন তাকে সালাত আদায়ের
নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে?
জওয়াব: হ্যাঁ, এ ধরনের কিশোর-কিশোরীদের সাওম
আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হবে, যদি তারা সাওম
পালনের সামর্থ্য রাখে। আর সাহাবায়ে কেরাম
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম তাদের সন্তানদেরকে সাওম
পালনের নির্দেশ দিতেন।
ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, অভিভাবক তার অধীনস্থ
সকল অপ্রাপ্ত বয়স্কদের সাওম আদায়ের নির্দেশ
দিবেন। যাতে তারা শিশু কাল থেকে ইসলামী
আচার-আকীদায় অভ্যস্ত হয়ে যায় ও এর প্রতি
ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। সাওম পালন যদি তাদের
কষ্টের কারণ হয় তবে জোর-জবরদস্তি করবে না।
অনেক পিতা-মাতা আদরের বশবতী হয়ে তাদের
অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের সাওম থেকে বারণ করেন।
এটা মোটেই উচিত নয়। কারণ এটা সাহাবায়ে
কেরামের ‘আমলের খেলাফ। সন্তানদের ইসলামী
শরী‘আতের অনুশীলন ও তাতে অভ্যস্ত করাই মূলত
তাদের সত্যিকার ভালোবাসার দাবি। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﺇﻥ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺭﺍﻉ ﻓﻲ ﺃﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ، ﻭﻣﺴﺌﻮﻝ ﻋﻦ ﺭﻋﻴﺘﺔ »
“প্রত্যেক ব্যক্তি তার পরিবার বর্গের জিম্মাদার ও
তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।” তাই
পরিবারের কর্তার উচিত পরিবারের সকলকে
আল্লাহকে ভয় ও তার হুকুম আহকাম পালনের নির্দেশ
দেওয়া।
প্রশ্ন : যদি দেখা যায় রমযানের দিনের বেলা
কোনো সাওম পালনকারী ভুলে খাওয়া দাওয়া করছে
তখন কি তাকে সাওমের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া
হবে?
জওয়াব: যদি কেউ দেখে রমযানে দিনের বেলায়
কোনো সাওম পালনকারী ব্যক্তি পানাহার করছে
তখন তাকে সাওমের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া
ওয়াজিব। কেননা এটা অন্যায় কাজ থেকে বিরত
রাখার (নাহী আনিল মুনকার) অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
« ﻣﻦ ﺭﺃﻯ ﻣﻨﻜﻢ ﻣﻨﻜﺮﺍ ﻓﻠﻴﻐﻴﺮﻩ ﺑﻴﺪﻩ، ﻓﺈﻥ ﻟﻢ ﻳﺴﺘﻄﻊ ﻓﺒﻠﺴﺎﻧﻪ، ﻓﺈﻥ ﻟﻢ ﻳﺴﺘﻄﻊ ﻓﺒﻘﻠﺒﻪ »
“তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় কাজ থেকে দেখবে সে
যেন হাত দ্বারা তা প্রতিরোধ করে। যদি সে এর
সামর্থ্য না রাখে তবে যেন মুখ দ্বারা বাধা দেয়।
যদি এরও সামর্থ্য না রাখে তবে অন্তর দ্বারা।”
আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে সাওম রত অবস্থায়
পানাহার করা একটি অন্যায় কাজ। কিন্তু তার ভুলে
যাওয়ার কারণে সে ক্ষমা প্রাপ্ত। কিন্তু যে দেখে
বাধা না দেবে সে দায়িত্ব এড়াতে পারবে না।
অতএব, সাওম পালনকারীকে কিছু খেতে দেখলে
তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
স্মরণ হওয়ার পর সাওম পালনকারীর উচিত হবে
তাড়াতাড়ি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। সে এ ভুলকে
খাওয়া-দাওয়া করার সুযোগ মনে করে তা যেন
অব্যাহত না রাখে। যদি মুখে খাবার থাকে তবে
তাড়াতাড়ি ফেলে দেবে। স্মরণ হওয়ার পর গিলে
ফেলা জায়েয হবে না।
তাই বলছি তিনটি অবস্থায় সাওম ভঙ্গকারী
বিষয়গুলো সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও তা সাওম ভঙ্গ
করে না।
১. যখন সাওমের কথা ভুলে যায়।
২. যখন অজ্ঞ হয়ে যায়।
৩. যখন অনিচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করে।
যদি সাওমের কথা ভুলে যেয়ে পানাহার করে তবে
তার সাওম পূর্ণ থেকে কোনো অসুবিধা হবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
« ﻣﻦ ﻧﺴﻲ ﻭﻫﻮ ﺻﺎﺋﻢ ﻓﺄﻛﻞ ﺃﻭ ﺷﺮﺏ ﻓﻠﻴﺘﻢ ﺻﻮﻣﻪ ﻓﺈﻧﻪ ﺃﻃﻌﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻘﺎﻩ »
“যে সাওমের কথা ভুলে যেয়ে পানাহার করে সে যেন
তার সাওম অব্যাহত রাখে। কারণ তাকে আল্লাহ
তা‘আলা পানাহার করিয়েছেন।”
“যখন অজ্ঞ হয়ে যায়” এর উদাহরণ হলো, যেমন কেউ
মনে করল যে, এখনও ফজরের ওয়াক্ত হয় নি। তাই
সে সাহরী খেল অথবা মনে করল সূর্য অস্ত গেছে অথচ
তা অস্ত যায় নি। তাই সে ইফতার করল তাহলে তার
সাওম সহীহ হবে। আসমা বিনতে আবু বকর
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন,
« ﺃﻓﻄﺮﻧﺎ ﻓﻲ ﻋﻬﺪ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﻳﻮﻡ ﻏﻴﻢ ﺛﻢ ﻃﻠﻌﺖ ﺍﻟﺸﻤﺲ ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে এক
মেঘাচ্ছন্ন দিনে সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে আমরা
ইফতার করলাম। তারপর সূর্য দেখা গেল।” অথচ নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সাওম
কাযা করতে বলেন নি। যদি কাযা করা ওয়াজিব
হতো তবে তিনি অবশ্যই কাযা করতে আদেশ দিতেন।
আর যদি আদেশ দিতেন তা অবশ্যই আমাদের কাছে
পৌঁছে যেত। কেননা তিনি কোনো কিছুর আদেশ
করলে তা আল্লাহর শরী‘আতে পরিণত হয়ে যায় আর
তার শরী‘আত কিয়ামত পর্যন্ত রক্ষিত ও সকলের
কাছে পৌঁছে গেছে।
আর অনিচ্ছাকৃত ভাবে পানাহার করার দৃষ্টান্ত
যেমন কেহ কুলি করার সময় পানি ভিতরে চলে গেল
এতে সাওম ভাঙবে না। কেননা সে পান করার ইচ্ছা
করে নি। এমনিভাবে কারো স্বপ্নদোষ হয়ে
বীর্যপাত হলো এতে তার সাওমের কোনো ক্ষতি
হবে না। কেননা সে নিদ্রায় ছিল, ইচ্ছা করে নি।
আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন,
﴿ﻭَﻟَﻴۡﺲَ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢۡ ﺟُﻨَﺎﺡٞ ﻓِﻴﻤَﺎٓ ﺃَﺧۡﻄَﺄۡﺗُﻢ ﺑِﻪِۦ ﻭَﻟَٰﻜِﻦ ﻣَّﺎ ﺗَﻌَﻤَّﺪَﺕۡ ﻗُﻠُﻮﺑُﻜُﻢۡۚ﴾ [ ﺍﻻﺣﺰﺍﺏ: ٥]
“তোমরা কোনো ভুল করলে কোনো অপরাধ নেই।
কিন্তু তোমাদের অন্তর ইচ্ছা করলে অপরাধ
হবে।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫]
প্রশ্ন : যদি কেউ রমযানের দিনের বেলা ইচ্ছা করে
বীর্যপাত করে তাহলে তার করণীয় কি? তাকে কি এ
দিনের সাওমের কাযা আদায় করতে হবে? যদি কাযা
আদায় করার দরকার হয় কিন্তু সে পরবর্তী রমযান
আসার আগেও কাযা আদায় করল না তাহলে তার হুকুম
কী?
জওয়াব: প্রথমত: নিজ স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোনো
ভাবে বীর্যপাত করা হারাম। আল্লাহ রাব্বুল
‘আলামীন বলেন,
﴿ﻭَﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢۡ ﻟِﻔُﺮُﻭﺟِﻬِﻢۡ ﺣَٰﻔِﻈُﻮﻥَ ٥ ﺇِﻟَّﺎ ﻋَﻠَﻰٰٓ ﺃَﺯۡﻭَٰﺟِﻬِﻢۡ ﺃَﻭۡ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖۡ ﺃَﻳۡﻤَٰﻨُﻬُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻬُﻢۡ ﻏَﻴۡﺮُ ﻣَﻠُﻮﻣِﻴﻦَ
٦ ﻓَﻤَﻦِ ﭐﺑۡﺘَﻐَﻰٰ ﻭَﺭَﺍٓﺀَ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻓَﺄُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﭐﻟۡﻌَﺎﺩُﻭﻥَ ٧﴾ [ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻮﻥ: ٥، ٧]
“(মুমিন তারা) যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত
রাখে। নিজেদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীগণ
ব্যতীত। এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। এদের ছাড়া
অন্য কিছু কামনা করলে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী
হবে।” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ৫-৭]
আর এ ধরনের কাজে শরীরেরও ক্ষতি। রমযানের
দিনের বেলা কোনো সাওম পালনকারী যদি এ
ধরনের কাজ ইচ্ছাকৃত ভাবে করে ফেলে তাহলে সে
গুনাহগার হবে। তার ঐ দিনের সাওম কাযা করতে
হবে। কারণ বীর্যপাত করা সহবাসের মতোই।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেনে,
«ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﺒﻞ ﻭﻫﻮ ﺻﺎﺋﻢ، ﻭﻛﺎﻥ ﺃﻣﻠﻜﻜﻢ ﻹﺭﺑﻪ » .
“আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাওম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দিতেন।
কিন্তু তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে সামর্থ্য
ছিলেন।” (সহীহ বুখারী)
একথার দ্বারা বুঝে আসে যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ
করতে পারে না রমযানের দিনের বেলা সাওম
অবস্থায় তার চুমো দেওয়া জায়েয নেই। চুমো দিতে
যেয়ে কামাবেগে যদি বীর্যপাত হয়ে যায় তাহলে
সাওম নষ্ট হয়ে যাবে। তবে কাফফারা আদায় করতে
হবে না। কাযা আদায় ও তওবা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: যার ওপর সাওমের কাযা ওয়াজিব সে
পরবর্তী রমযান আসার আগে যদি কাযা আদায় না
করে তবে তার এ অলসতার জন্য তওবা ইস্তিগফার
করতে হবে, কাযা আদায় করতে হবে ও প্রতিটি
সাওমের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান
করতে হবে। সাহাবায়ে কেরামের এক জামা‘আত এ
ফতোওয়া দিয়েছেন। একটি সাওমের কাফফারা হলো
অর্ধ সা‘ খাদ্য যা বর্তমানে প্রায় এক কেজি পাঁচশ
গ্রাম পরিমাণ হয়ে থাকে।
প্রশ্ন : তারাবীর সালাতের হুকুম কী?
জওয়াব: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তার উম্মতের জন্য তারাবীহকে সুন্নত
করেছেন। তিনি তার সাহাবীদের নিয়ে তিন
রাত্রি তারাবীহ আদায় করেছেন। উম্মতের ওপর ফরয
হয়ে যেতে পারে এ আশঙ্কায় পরের দিন তিনি আর
জামা‘আতের সাথে তারাবীহ আদায় করেন নি।
মুসলিমগণ আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর
খেলাফতকাল ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর
খেলাফতের প্রথম দিকে এ অবস্থায়ই ছিল। এরপর
উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তামীম আদদারী
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও উবাই ইবন কা‘আব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর ইমামতিতে তারাবীহের
জামা‘আতের ব্যবস্থা করেন। যা আজ পর্যন্ত কায়েম
আছে। আলহামদুলিল্লাহ! এ তারাবীহের জামা‘আত
শুধু রমযান মাসেই সুন্নাত।
প্রশ্ন : দেখা যায় কোনো কোনো মুক্তাদী
কেরাআতে ইমাম সাহেবের ভুল সংশোধনের জন্য
তাবর্ণনাকারীতে কুরআন মজীদ বহন করেন অথচ ইমাম
সাহেবের ভুল সংশোধনের দরকার নেই।
কারণ, তিনিও কুরআন মজীদ দেখে দেখে তেলাওয়াত
করছেন। এ সম্পর্কে নির্দেশ কী?
জওয়াব: সালাতে কুরআন মজীদ বহন করা উচিত নয়।
তবে যদি প্রয়োজন দেখা দেয় তবে অন্য কথা। যেমন,
ইমাম সাহেব কাউকে বললেন, আমি ভালো করে
তেলাওয়াত করতে জানি না, আমি চাই তুমি কুরআন
মজীদ নিয়ে আমার পিছনে থাকবে যদি আমি
কোনো ভুল করি তবে তা ধরিয়ে দেবে। এ ধরনের
কারণ ছাড়া মুক্তাদীর কুরআন বহন করা ঠিক নয়।
কারণ, এতে মন অন্য দিকে চলে যায়। তা ছাড়া বুকের
উপর ডান হাত বাম হাতের ওপর রাখার যে সুন্নত
রয়েছে, তা আদায় করতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। উত্তম হলো
বর্ণিত কারণ ব্যতীত এ কাজ পরিহার করা।
প্রশ্ন : সদকাতুল ফিতরে কী হিকমত বা কল্যাণ
আছে? তার পরিমাণ কত? এবং কার ওপর ওয়াজিব ?
জওয়াব: প্রত্যেক মুসলিমের ওপর সদকাতুল ফিতর
ওয়াজিব। মহিলা, পুরুষ, ছোট, বড়, স্বাধীন, অধীন
সকলের জন্য ওয়াজিব।
ঈদের দিনে যদি কোনো মুসলিম ও তার পরিবার
বর্গের খাবারের চেয়ে এক সা (প্রায় ৩ কেজি)
খাবার অতিরিক্ত থাকে, তাহলে তার ওপর সদকাতুল
ফিতর ওয়াজিব হয়ে যায়।
একজন মুসলিম সে নিজের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায়
করবে তেমনি নিজে যাদের ভরন-পোষণের দায়িত্ব
পালন করে তাদের পক্ষ থেকেও আদায় করবে।
ফিতরার পরিমাণ হলো মাথা পিছু এক সা‘ খেজুর
অথবা এক সা‘ আটা বা কিসমিস অথবা গম।
সকদাতুল ফিতর প্রবর্তনের হিকমত অনেক। আমরা যা
দেখছি তা হলো:
১. সদকাতুল ফিতর শরীরের যাকাত।
২. এ দ্বারা দরিদ্র মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি
প্রকাশ করা হয়। ঈদে আনন্দ উপভোগে তাদের
সাহায্য করা হয়। যাতে ধনী- দরিদ্র সকলে ঈদের
আনন্দে শামিল থেকে পারে।
রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন,
« ﺃﻏﻨﻮﻫﻢ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻴﻮﻡ ».
“এ দিনের জন্য তোমরা তাদের ধনী করে দাও”।
৩. আল্লাহ তা আলা যে সাওম আদায়ের তাওফিক
দিয়েছেন এর শুকরিয়া আদায় করা হয় সদকাতুল ফিতর
আদায় করে।
৪. যদি সাওম পালনে কোনো ভুল- ত্রুটি হয়ে থাকে
তাহলে এর পূর্ণতার জন্য সদকাতুল ফিতরের ভূমিকা
আছে।
মহিলাদের ঈদের সালাতে গমন
প্রশ্ন: ঈদুল ফিতরের জামা‘আতে মহিলাদের অংশ
গ্রহণ জায়েয কিনা?
জওয়াব: হ্যাঁ জায়েয। বরং তাদের ঈদের জামা‘আতে
অংশ গ্রহণের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।
উম্মে আতীয়াহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন:
«ﺃﻣﺮﻧﺎ ﺃﻥ ﻧﺨﺮﺝ ﺍﻟﺤﻴﺾ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻌﻴﺪﻳﻦ ﻭﺫﻭﺍﺕ ﺍﻟﺨﺪﻭﺭ ﻓﻴﺸﻬﺪﻥ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ
ﻭﺩﻋﻮﺗﻬﻢ، ﻭﻳﻌﺘﺰﻝ ﺍﻟﺤﻴﺾ ﻋﻦ ﻣﺼﻼﻫﻦ، ﻗﺎﻟﺖ ﺍﻣﺮﺃﺓ: ﻳﺎﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﺣﺪﺍﻧﺎ ﻟﻴﺲ ﻟﻬﺎ
ﺟﻠﺒﺎﺏ، ﻗﺎﻝ: ﻟﺘﻠﺒﺴﻬﺎ ﺻﺎﺣﺒﺘﻬﺎ ﻣﻦ ﺟﻠﺒﺎﺑﻬﺎ » .
“আমাদের মহিলাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে
মহিলাগণ মুসলিমদের জামা‘আতে প্রত্যক্ষ করতে
পারেন ও তাদের সাথে সালাতে শরীক হন।
মাসিকগ্রস্ত মহিলাগণ ঈদগাহ থেকে দুরে থাকবে।
এক মহিলা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল!
আমাদের একজনের ওড়না নেই, সে কীভাবে
যাবে? তিনি বললেন, সে তাদের এক সাথীর ওড়না
নিয়ে পরিধান করবে ও যাবে।” কিন্তু মহিলাগণ
সুগন্ধি ও চাকচিক্যময় বেশ-ভূষা এবং পুরুষদের সাথে
একত্রিত হওয়া পরিহার করবেন।
সমাপ্ত
[1] দেখুন, তাহযীবুল লুগাহ ১২/১৮২, লিসানুল ‘আরব:
১২/৩৫০।
[2] আল-কামুসুল ফিকহি, পৃ: ৩৫০।
[3] তা‘রিফাত লিল জুরজানী, পৃ: ১৭৮।
[4] আল বিনায়া শরহে হিদায়া, ৪/৩।
[5] দেখুনঃ তাফসীরে কুরতবী: ২/২৭৫।
[6] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২।
[7] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৩।
[8] দেখুনঃ তাফসীরে ইবনে কাসীর: (১/৪৯৭),
তাফসীরে কুরতবীঃ (২/২৭৫), তাফসীরে ত্বাবারীঃ
(৩/৪১১), তাফসীরে মানারঃ (২/১১৬।
[9] ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৭১৪, আলবানী রহ.
বলেছেন হাদীসটি দ‘য়ীফ। কেননা এর সনদে ﺍﺑﻦ ﻟﻬﻴﻌﺔ
রয়েছেন, যিনি দ‘য়ীফ।
[10] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৯।
[11] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০৪, ও সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৩০।
[12] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০২।
[13] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯১।
[14] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২।
[15] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৩।
[16] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২।
[17] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২৬।
[18] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৩।
[19] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৬।
[20] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৭।
[21] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮।
[22] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৯।
[23] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫১।
[24] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৭৯।
[25] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৭৯।
[26] তিরমিযী, হাদীস নং ৬৮২, ইমাম তিরমিযী রহ.
বলেছেন, এ পরিচ্ছেদে আব্দুর রহমান ইবন ‘আউফ, ইবন
মাস‘ঊদ ও সালমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে
হাদীস বর্ণিত আছে। ইবন মাজাহ, ১৬৪২। আলবানী
রহ. বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। নাসায়ী, ২১০৭।
[27] নাসায়ী, হাদীস নং ২১০৬, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। মুসনাদে আহমদ, ৭১৪৮, শু
‘আইব আরনাঊত বলেছেন, হাদীসটি সহীহ।
[28] আল ‘মুজামুল কাবীর লিততবরানী, হাদীস নং
১৮৫। জামে‘উস সগীর ওয়াযিয়াদাহ, হাদীস নং
২৩৭৭। আলবানী রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান,
দেখুন, সহীহ জামে‘উস সগীর, হাদীস নং ১৪৯৭।
শু‘আবুল ঈমান লিলবাইহাকী, ২০৫৩। অধিকাংশ
বর্ণনায় ২৪শে রমাদানের কথা উল্লেখ আছে, অর্থাৎ
২৫শে রমাদান রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে। তবে
মু‘জামুল কাবীর এর বর্ণনায় ২৪শে রমাদানের
পরিবর্তে ১৪ই রমাদান এসেছে।
[29] মুসতাদরাক হাকিম, হাদীস নং ৭২৫৬, ইমাম
হাকিম রহ. বলেছেন, হাদীসের সনদটি সহীহ, তবে
বুখারী ও মুসলিম কেউ উল্লেখ করেননি। ইমাম
যাহাবী রহ. সহীহ বলেছেন। আবূ হুরাইরা, আনাস ও
জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে অনুরূপ বর্ণনা
আছে। দেখুন, তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৪৫। ইমাম
তিরমিযী রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
[30] তিরমিযী, হাদীস নং ২৬১৬, ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। ইবন মাজাহ, ৩৯৭৩।
মুসনাদে আহমাদ, ২২০১৬। মুহাক্কিক শু ‘আইব আরনাঊত
বলেছেন, হাদীসটি বিভিন্ন সনদে সহীহ।
[31] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৯০।
[32] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৯৫।
[33] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৪০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৩।
[34] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৫।
[35] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৩।
[36] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫১।
[37] সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ২২৩০, সহীহ ইবন
হিব্বান, হাদীস নং ৩৬৪৯। হাদীসটি সহীহ।
[38] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৬।
[39] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৭।
[40] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৮।
[41] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৯।
[42] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০০।
[43] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২১১৮।
[44] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০১।
[45] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০২।
[46] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৩।
[47] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৬৯০, ইবন খুযাইমা,
হাদীস নং ১৯৯৭, ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৪৮১।
হাদীসটির সনদ সহীহ।
[48] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৪।
[49] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৫।
[50] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৬।
[51] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৭।
[52] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৮।
[53] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৯।
[54] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১০।
[55] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১১।
[56] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৩।
[57] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৪।
[58] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৪।
[59] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৬।
[60] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৬৫৩, আবু দাউদ, ১১৫৬।
হাদীসটি সহীহ।
[61] আবু দাউদ, ২৩৪২, ইবন হিব্বান, ৩৪৪৭, মুসতাদরাক
হাকিম, ১৫৪১। ইমাম হাকিম রহ. বলেছেন, হাদীসটি
মুসলিমের শর্তে সহীহ, তবে বুখারী ও মুসলিম কেউ
তাখরিজ করেন নি।
[62] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৭।
[63] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৮।
[64] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১২।
[65] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১০৮০।
[66] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৪।
[67] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৪।
[68] তিরমিযি, হাদীস নং ৬৮৬, হাদীসটি হাসান
সহীহ, নাসায়ী, ২১৮৮, আলবনী রহ. বলেন, হাদীসটি
সহীহ। ইবন হিব্বান, ৩৫৮৫।
[69] তিরমিযি, হাদীস নং ৭৩৮, হাদীসটি হাসান
সহীহ। ইবন মাজাহ, ১৬৫১, ইবন হিব্বান, ৩৫৮৯।
[70] ইবন মাজাহ, ১৬৫১। আলবানী রহ. বলেন,
হাদীসটি সহীহ।
[71] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৫।
[72] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৬।
[73] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৭।
[74] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৮।
[75] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৯৪।
[76] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৯৪।
[77] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৯৪।
[78] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৯৪।
[79] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৯।
[80] নাসায়ী, হাদীস নং ২১৫২, ইবন মাজাহ, ১৬৯৫।
আলবনী রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান। এ হাদীসের
ব্যাখায় পরের হাদীস দ্বারা করা হয়েছে।
[81] নাসায়ী, হাদীস নং ২১৫৩, আলবনী রহ. বলেছেন,
হাদীসটি সহীহ।
[82] মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক, ৭৬০৬।
[83] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২০।
[84] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২২।
[85] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৩।
[86] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৯৬।
[87] আবু দাউদ, ২৩৩৫, ইবন হিব্বান, ৩৪৭৫। আলবানী
রহ. বলেছেন, হাদীসটি সহীহ।
[88] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৫০, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। মুসতাদরাক
হাকিম, হাদীস নং ৭২৯। তিনি বলেছেন, এটি
মুসলিমের শর্তে সহীহ, ইমাম যাহাবী রহ. তাঁর
সাথে ঐক্যমত পোষন করেছেন, (৭২৯)।
এ হাদীসের অর্থ হলো, যখন কেউ শরী‘য়ত নির্দেশিত
আযান শ্রবন করে আর তখন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করছে
তাহলে তার মুখের ভিতরের খাবার ও পানীয় শেষ
করবে। তবে বর্তমানে কিছু সাধারণ মানুষ প্রথম
আযান শুনে ইমসাক তথা খাবার থেকে বিরত থাকে।
প্রথম আযান শুনে তারা খাদ্য গ্রহণ থেকে
নিজেদেরকে বঞ্চিত করে, অথচ এতে বিলম্বে সাহরী
খাওয়ার সুন্নত থেকে তারা বঞ্চিত হয়, কেননা প্রথন
আযান হলো মানুষকে সাহরীর সময় শেষ হওয়া
সম্পর্কে সতর্ক করা। তাছাড়াও দ্বিতীয় আযান শুরু
হলেও কারো মুখে খাবার বা পানীয় থাকলে তা
ফেলে না দিয়ে পূর্ণ করবে, তাহলে প্রথম আযান শুনে
যারা খাবার থেকে বিরত থাকে তারা কতটুকু সঠিক
কাজ করে?
[89] বুখারী, তালিক, ৩/২৯।
[90] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৩৫।
[91] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৬।
[92] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৯।
[93] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৯।
[94] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১০।
[95] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৯।
[96] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৭।
[97] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৮।
[98] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৯।
[99] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৭।
[100] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৮।
[101] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫১৯২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১০২৬।
[102] আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৫৯, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। ইবন হিব্বান, ১৪৮৮,
মুসতাদরাক হাকিম, ১৫৯৪, ইমাম হাকিম রহ. বলেন,
এটি বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ, তবে তারা
কেউ উল্লেখ করেন নি।
[103] বুখারী, ৩/৩০।
[104] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০৯।
[105] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩১-১৯৩২, সহীহ
মুসলিম, হাদীস নং ১১০৯।
[106] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৩।
[107] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২২৬।
[108] তিরমিযি, হাদীস নং ৭৮৮, ইমাম তিরমিযি
রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। নাসায়ী,
হাদীস নং ৮৭, আলবানী রহ. বলেছেন, হাদীসটি
সহীহ। সহীহ ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১৫০, ‘আযমী
রহ. বলেছেন, হাদীসের সনদটি সহীহ। মুসতাদরাক
হাকিম, ৫২২, ইমাম হাকিম রহ. বলেছেন, হাদীসটি
সহীহ, তবে ইমাম বুখারী ও মুসলিম তাদের কিতাবে
উল্লেখ করেননি, ইমাম যাহাবী রহ. ও হাদীসটিকে
সহীহ বলেছেন।
[109] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১২।
[110] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১১।
[111] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৭।
[112] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১২০২।
[113] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৯।
[114] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪০।
[115] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০১।
[116] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪২।
[117] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২১।
[118] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং হাদীস নং ১১২১।
[119] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২০।
[120] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২০।
[121] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৭।
[122] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৯০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১৯।
[123] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২০।
[124] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১৩।
[125] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২২।
[126] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১৫।
[127] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১৮।
[128] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৬।
[129] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৭।
[130] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১১৩।
[131] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৪।
[132] বুখারী, তা‘লিক, ৩/৩৪।
[133] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪৯।
[134] বস্তুত: ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻄِﻴﻘُﻮﻧَﻪُ ﻓِﺪْﻳَﺔٌ ﻃَﻌَﺎﻡُ ﻣِﺴْﻜِﻴﻦٍ এর ﻳُﻄِﻴﻘُﻮﻧَﻪُ অর্থ
নির্ধারণের মধ্যেই এ মতভেদ নির্ভরশীল। এর দু’টি
পরস্পর বিরোধী অর্থ করা সম্ভব। [সম্পাদক]
[135] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৫০৫।
[136] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৪৬।
[137] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৯-৮০।
[138] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৩৩৫।
[139] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৪৭।
[140] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৩।
[141] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪৯।
[142] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০০।
[143] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০১।
[144] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০১।
[145] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১০৯৮।
[146] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০১।
[147] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৯৯।
[148] সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৫০৪। শুয়া‘ইব
আরনাবূত বলেন, হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমের শর্তে
সহীহ। আলবানী রহ. ‘তা‘লিকাতুল হাসান ‘আলা
সহীহ ইবন হিব্বান’ এ একে সহীহ বলেছেন।
[149] তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯৬, ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব। আবূ দাউদ, ২৩৫৬,
আলবানী রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। সহীহ
ইবন হিব্বান, ১৫৭৬। ইমাম হাকিম ও যাহাবী রহ.
একে সহীহ বলেছেন।
[150] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৯।
[151] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৩৬।
[152] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০৪।
[153] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০২।
[154] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৩।
[155] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০৫।
[156] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১০৩।
[157] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৬।
[158] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৪।
[159] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৭।
[160] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৮।
[161] নাসায়ী, হাদীস নং ২৩৩১, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। আবূ দাউদ, ২৪৫৪,
তিরমিযী, ৭৩০।
[162] নাসায়ী, হাদীস নং ২৩৩৩, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। সহীহ ইবন খুযাইমা,
১৯৩৩, ‘আযমী রহ. বলেছেন, হাদীসের সনদটি সহীহ।
[163] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৪।
[164] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৬।
[165] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৮২।
[166] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৩।
[167] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৩।
[168] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৭।
[169] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৮।
[170] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৮।
[171] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৬।
[172] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৬।
[173] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[174] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[175] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[176] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৪০১।
[177] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৪।
[178] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮২৮।
[179] নাসায়ী, হাদীস নং ২৪০৮, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। ইবন হিব্বান, ৩৬৫৯।
[180] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[181] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[182] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৭৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[183] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৫৯।
[184] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭২১।
[185] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬০।
[186] ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৫২৯০। হাদীসটির
দ্বিতীয় অংশ মুসলিমে আছে। সহীহ মুসলিম, হাদীস
নং ১৪২৯।
[187] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৩০।
[188] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৩১।
[189] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫০।
[190] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮২।
[191] তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৭, ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবন মাজাহ,
হাদীস নং ১৭৪৬, ইমাম আলবানী রহ. বলেছেন,
হাদীসটি সহীহ। ইবন হিব্বান, ৩৪২৯।
[192] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬১।
[193] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৪৩।
[194] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৪৪।
[195] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৬।
[196] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৭।
[197] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৪।
[198] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭৬।
[199] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭৬।
[200] তিরমিযী, ৭৫৭, ইমাম তিরমিযী রহ. বলেছেন,
হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। আবূ দাউদ, হাদীস
নং ২৪৩৮, ইমাম আলবানী রহ. বলেছেন, হাদীসটি
সহীহ। ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৭২৭।
উল্লেখ্য যে, এ হাদীসটি ‘কিতাবুস সাওম’ এর মধ্যে
না আনাই ভালো। কেননা এ হাদীসটিতে দিনের
মর্যাদা বুঝানো হয়েছে। নির্দিষ্ট করে সাওমের
কথা বলা হয় নি; বরং সাওমের ব্যাপারে যে
হাদিসটি এসেছে তা দ‘ঈফ। হাদীসটি হলো, আবু
হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃَﺣَﺐُّ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃَﻥْ ﻳُﺘَﻌَﺒَّﺪَ ﻟَﻪُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻋَﺸْﺮِ ﺫِﻱ ﺍﻟﺤِﺠَّﺔِ، ﻳَﻌْﺪِﻝُ ﺻِﻴَﺎﻡُ ﻛُﻞِّ ﻳَﻮْﻡٍ
ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺑِﺼِﻴَﺎﻡِ ﺳَﻨَﺔٍ، ﻭَﻗِﻴَﺎﻡُ ﻛُﻞِّ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺑِﻘِﻴَﺎﻡِ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻘَﺪْﺭِ ».
“এমন কোনো দিন নাই যে দিনসমূহের ইবাদত
আল্লাহর নিকট যিলহজ মাসের দশ দিনের ইবাদত
অপেক্ষা অধিক প্রিয়। এর প্রতিটি দিনের সিয়াম
এক বছরের সিয়ামের সমতুল্য। এর প্রতিটি রাতের
ইবাদত লায়লাতুল কাদরের ইবাদতের
সমতুল্য।” (তিরমিযী, হাদীস নং ১৭২৮) আলবানী রহ.
হাদীসটিকে দ‘য়ীফ বলেছেন। ইবন মাজাহ, ৭৫৮।
[201] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২৩।
[202] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৮৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২৪।
[203] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২। ইবন হিব্বান,
৩৬৩৯।
[204] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৩৭।
[205] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৮।
[206] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮২৭।
[207] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৮।
[208] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৯।
[209] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪০।
[210] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯১।
[211] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৫১১ (সংক্ষিপ্তাকারে)।
[212] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৩৯।
[213] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৮২৭।
[214] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯৬,
[215] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯৭।
[216] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৯৯।
[217] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪১।
[218] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪২।
[219] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২৬।
[220] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১২৫।
[221] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৫।
[222] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৬।
[223] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৬।
[224] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৬।
[225] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৭।
[226] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৭।
[227] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৭।
[228] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৮।
[229] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২৯।
[230] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩০।
[231] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩০।
[232] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩১।
[233] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩১।
[234] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩২।
[235] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৩।
[236] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৪।
[237] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৪।
[238] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৫।
[239] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৩৬।
[240] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২।
[241] তিরমিযী, হাদীস নং ৭৪৫, ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেছেন, হাদিসটি হাসান গরীব। ইবন মাজাহ,
১৭৩৯, আলবানী রহ. বলেছেন, হাদীসটি সহীহ।
নাসায়ী, ২৩৬০।
[242] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৭০৪।
[243] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৯৯০, আলবানী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
[244] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৫৯।
[245] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৫৯।
[246] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৫৯।
[247] সহীহ বুখারী, হাদীস নং সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭১৬।
[248] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১০।
[249] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৬১।
[250] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৩৮।
[251] তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৬, ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। নাসায়ী,
হাদীস নং ১৬০৫, আলবানী রহ. বলেছেন, হাদীসটি
সহীহ। ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ২২০৬, ‘আযামী রহ.
বলেছেন, হাদীসের সনদটি সহীহ। ইবন হিব্বান,
২৫৪৭। শু‘আইব আরনাঊত বলেছেন, হাদীসের সনদটি
মুসলিমের শর্তে সহীহ।
[252] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৩১।
[253] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৩৮।
[254] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৯০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৪৯।
[255] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৩৮।
[256] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৬০।
[257] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৫।
[258] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৭।
[259] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৯।
[260] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৭।
[261] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৯।
[262] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৯।
[263] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২১।
[264] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২২।
[265] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৫।
[266] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৫।
[267] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৫।
[268] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৫।
[269] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৬।
[270] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৮।
[271] তিরমিযী, ৭৯৪, ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন,
হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবন হিব্বান, ৩৬৮৬,
শু‘য়াইব আরনাঊত বলেছেন, হাদীসের সনদটি সহীহ।
মুসতাদরাকে হাকিম, ১৫৯৮, ইমাম হাকিম রহ.
বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ, তবে ইমাম বুখারী ও
মুসলিম রহ. তাখরিজ করেননি।
[272] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৩।
[273] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬২।
[274] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭০।
[275] তিরমিযী, ৩৫৩১, ইমাম তিরমিযী রহ.
বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবন মাজাহ,
৩৮৫০, আলবানী রহ. বলেছেন, হাদীসটি সহীহ।
মুসতাদরাক হাকিম, ১৯৪২, ইমাম হাকিম রহ. বলেছেন,
হাদিসটি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ,
তবে তারা কেউ তাখরিজ করেননি।
[276] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭৪।
[277] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭৫।
[278] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭১।
[279] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭২।
[280] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৭।
[281] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২৯৭।
[282] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২৯৭।
[283] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২৯৭।
[284] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৬৬৫।
[285] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭৩।
[286] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৪, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭৩।
[287] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২১৭৫।
[288] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৭।
[289] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৭।
[290] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৮, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২১৭৫।
[291] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৯, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২১৭৫।
[292] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৬৭।
[293] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪১, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭৩।
[294] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪২, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৬৫৬।
[295] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১৬৫৬।
[296] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪৪।
[297] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪৫, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭৩।
[298] তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৩। ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। ইবন
মাজাহ, হাদীস নং ১৭৭০, আলবানী রহ. বলেছেন,
হাদীসটি সহীহ। আবূ দাউদ, ২৪৬৩। ইবন হিব্বান,
৩৬৬৩, মুহাক্কিক শু‘য়াইব আরনাঊত বলেছেন,
হাদীসটি মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।
[299] তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৩। ইমাম তিরমিযী
রহ. বলেছেন, হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। ইবন
মাজাহ, হাদীস নং ১৭৭০, আলবানী রহ. বলেছেন,
হাদীসটি সহীহ। আবূ দাউদ, ২৪৬৩, মুসতাদরাক
হাকিম, ১৬০১, ইমাম হাকিম রহ. বলেছেন, হাদীসটি
বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ, তবে তারা
তাখরিজ করেননি। ইবন হিব্বান, ৩৬৬৪, মুহাক্কিক
শু‘য়াইব আরনাঊত বলেছেন, হাদীসটি মুসলিমের শর্ত
অনুযায়ী সহীহ।
[300] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৪৬, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ২৯৭।
[301] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০৩৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১১৭৩।
[302] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৩।
[303] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২৭৫।
[304] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৪।
[305] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৫।
[306] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।
[307] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।
[308] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।
[309] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।
[310] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৬।
[311] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৭।
[312] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৮।
[313] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০৯।
[314] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫১০।
[315] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫১১।
[316] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫১২।
[317] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৪৮।
[318] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৪৯।
[319] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫১।
[320] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫২।
[321] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৩।
[322] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৪।
[323] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৫।
[324] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৬।
[325] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৭।
[326] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৮।
[327] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৯।
[328] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬০।
[329] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬১।
[330] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬২।
[331] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৩।
[332] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৪।
[333] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৫।
[334] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৬।
[335] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৭।
[336] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৬৮।
[337] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭২।
[338] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৩।
[339] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৪।
[340] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৫।
[341] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৬।
[342] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৭।
[343] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৮।
[344] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৭৯।
[345] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৮০।
[346] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৮১।
[347] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৮৬।
[348] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৮৭-৯৮৮।
[349] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৮৯।
[350] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৮।
[351] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৩।
[352] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৪।
[353] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৩, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ১০৯৫।
[354] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৮।
[355] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৭।
[356] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৫৪।
[357] তিরমিযী, হাদীস নং ২৫২৬, ইবনে মাজাহ,
হাদীস নং ১৭৫২।
ইফতারের সময় পঠিত নিম্নোক্ত দো‘আ হাদিসটি
দ‘য়ীফ।
ﻋَﻦْ ﻣُﻌَﺎﺫِ ﺑْﻦِ ﺯُﻫْﺮَﺓَ، ﺃَﻧَّﻪُ ﺑَﻠَﻐَﻪُ « ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﻗَﺎﻝَ :
« ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻟَﻚَ ﺻُﻤْﺖُ، ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺭِﺯْﻗِﻚَ ﺃَﻓْﻄَﺮْﺕُ »
আবূ দাউদ, হাদীস নং ২৩৫৮। আলবানী রহ.
হাদীদটিকে দ‘য়ীফ বলেছেন। তবে নিন্মোক্ত
হাদীসটি হাসান,
« ﺫَﻫَﺐَ ﺍﻟﻈَّﻤَﺄُ ﻭَﺍﺑْﺘَﻠَّﺖِ ﺍﻟْﻌُﺮُﻭﻕُ، ﻭَﺛَﺒَﺖَ ﺍﻟْﺄَﺟْﺮُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ »
“তৃষ্ণা চলে গেছে, শিরাগুলো আদ্র হয়েছে আর
ছাওয়াব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যত্র
বলেছেন, ‘নিশ্চয় ইফতারের সময় সাওমদারের দো‘আ
ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।” (আবু দাউদ, হাদীস নং
২৩৫৭। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।)
[358] তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৭, মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস নং ১৭০৩৩।
[359] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭, সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং ৭৫৯।
[360] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১০।
[361] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০২।
[362] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৫।
[363] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬২।
_________________________________________________________
________________
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﺄﻣﻮﻥ ﺍﻷﺯﻫﺮﻱ
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ﻣﺮﺍﺟﻌﺔ: ﺩ/ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺯﻛﺮﻳﺎ
উৎস: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ,
সৌদিআরব
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন