সহীহ হাদীসের আলোকে সাওম
বিশ্বকোষ (২য় পর্ব)
শা‘বান মাসের সাওম
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ " ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻘُﻮﻝَ: ﻻَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﺣَﺘَّﻰ
ﻧَﻘُﻮﻝَ : ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡُ، ﻓَﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﺳْﺘَﻜْﻤَﻞَ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﺷَﻬْﺮٍ ﺇِﻟَّﺎ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﺻِﻴَﺎﻣًﺎ ﻣِﻨْﻪُ ﻓِﻲ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একাধারে (এত বেশি) সাওম পালন করতেন
যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সাওম
পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি)
সাওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন
যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সাওম
পালন করবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ব্যতীত কোনো
পুরা মাসের সাওম পালন করতে দেখি নি এবং
শা’বান মাসের চেয়ে কোনো মাসে বেশি (নফল)
সাওম পালন করতে দেখি নি”। [164]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻡُ
ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻛُﻠَّﻪُ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺧُﺬُﻭﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻌَﻤَﻞِ ﻣَﺎ ﺗُﻄِﻴﻘُﻮﻥَ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻻَ ﻳَﻤَﻞُّ ﺣَﺘَّﻰ
ﺗَﻤَﻠُّﻮﺍ، ﻭَﺃَﺣَﺐُّ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺎ ﺩُﻭﻭِﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥْ ﻗَﻠَّﺖْ، ﻭَﻛَﺎﻥَ
ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺻَﻼَﺓً ﺩَﺍﻭَﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা‘বান
মাসের চেয়ে বেশি (নফল) সাওম কোনো মাসে
পালন করতেন না। তিনি (প্রায়) পুরা শা’বান মাসই
সাওম পালন করতেন এবং বলতেন, তোমাদের সাধ্যে
যতটুকু সাধ্য আছে ততটুকু (নফল) আমল কর। কারণ,
তোমরা (আমল করতে করতে) ক্লান্ত হয়ে না পড়া
পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা (সওয়াব দান) বন্ধ করেন
না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় সালাতই ছিল তাই যা
যথাযথ নিয়মে সর্বদা আদায় করা হত। যদিও তা
পরিমাণে কম হো এবং তিনি যখন কোনো (নফল)
সালাত আদায় করতেন পরবর্তীতে তা অব্যাহত
রাখতেন”। [165]
মুহাররম মাসের সাওম পালনের ফযীলত
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺷَﻬْﺮُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡُ، ﻭَﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟْﻔَﺮِﻳﻀَﺔِ، ﺻَﻠَﺎﺓُ
ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ »
“রমযানের সিয়ামের পর সর্বোত্তম সাওম হচ্ছে
আল্লাহর মাস মুহাররমের সাওম এবং ফরয সালাতের
পর সর্বোত্তম সালাত হচ্ছে রাতের সালাত”। [166]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺳُﺌِﻞَ: ﺃَﻱُّ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔِ؟ ﻭَﺃَﻱُّ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺑَﻌْﺪَ ﺷَﻬْﺮِ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ:
ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔِ، ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ ﻓِﻲ ﺟَﻮْﻑِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻭَﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﺑَﻌْﺪَ ﺷَﻬْﺮِ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺻِﻴَﺎﻡُ ﺷَﻬْﺮِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে
জিজ্ঞাসা করা হলো, ফরয সালাতসমূহের পর
কোনো সালাত এবং রমযান মাসের সিয়ামের পর
কোনো সাওম সর্বোত্তম? বললেন, ফরয
সালাতসমূহের পর গভীর রাতের সালাত সর্বোত্তম
এবং রমযান মাসের সিয়ামের পর আল্লাহর মাস
মুহাররমের সাওম সর্বোত্তম”। [167]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম
পালন করা ও না করার বর্ণনা
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻣَﺎ ﺻَﺎﻡَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﻛَﺎﻣِﻠًﺎ ﻗَﻂُّ ﻏَﻴْﺮَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻭَﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ
ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻞُ: ﻻَ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻻَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻞُ: ﻻَ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡُ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান
ব্যতীত কোনো মাসে পুরা মাসের সাওম পালন
করেন নাই। তিনি এমনভাবে (নফল) সাওম পালন
করতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে
পারতো, আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন
পরিত্যাগ করবেন না। আবার এমনভাবে (নফল) সাওম
ছেড়ে দিতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো
আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন করবেন না”।
[168]
হুমাইদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি আনাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻈُﻦَّ ﺃَﻥْ ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡَ ﻣِﻨْﻪُ،
ﻭَﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻈُﻦَّ ﺃَﻥْ ﻻَ ﻳُﻔْﻄِﺮَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻴْﺌًﺎ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻻَ ﺗَﺸَﺎﺀُ ﺗَﺮَﺍﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻣُﺼَﻠِّﻴًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘَﻪُ،
ﻭَﻻَ ﻧَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘَﻪُ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥُ، ﻋَﻦْ ﺣُﻤَﻴْﺪٍ، ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﺄَﻝَ ﺃَﻧَﺴًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻮْﻡِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কোনো মাসে এভাবে সাওম ছেড়ে দিতেন
যে, আমরা মনে করতাম, তিনি এ মাসে আর সাওম
পালন করবেন না। আবার কোনো মাসে এভাবে
সাওম পালন করতেন যে, আমরা মনে করতাম তিনি এ
মাসে আর সাওম ছাড়বেন না। আর তুমি যদি তাঁকে
রাতে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে চাইতে
তবে তা দেখতে পেতে, আবার যদি তুমি তাঁকে
ঘুমন্ত দেখতে চাইতে তবে তাও দেখতে পেতে।
সুলায়মান রহ. হুমায়দ রহ. সূত্রে বলেন যে, তিনি
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সাওম সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করেছেন।” [169]
হুমাইদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নফল সাওমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা
করলে তিনি বললেন,
«ﻣَﺎ ﻛُﻨْﺖُ ﺃُﺣِﺐُّ ﺃَﻥْ ﺃَﺭَﺍﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ
ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻧَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻣَﺴِﺴْﺖُ ﺧَﺰَّﺓً ﻭَﻻَ ﺣَﺮِﻳﺮَﺓً، ﺃَﻟْﻴَﻦَ ﻣِﻦْ ﻛَﻒِّ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﻻَ ﺷَﻤِﻤْﺖُ ﻣِﺴْﻜَﺔً، ﻭَﻻَ ﻋَﺒِﻴﺮَﺓً ﺃَﻃْﻴَﺐَ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔً ﻣِﻦْ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔِ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“যে কোনো মাসে আমি তাঁকে সাওম পালনরত
অবস্থায় দেখতে চেয়েছি, তাঁকে সে অবস্থায়
দেখেছি, আবার তাঁকে সাওম পালন না করা
অবস্থায় দেখতে চাইলে তাও দেখতে পেয়েছি।
রাতে যদি তাঁকে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে
চেয়েছি, তা প্রত্যক্ষ করেছি। আবার ঘুমন্ত দেখতে
চাইলে তাও দেখতে পেয়েছি। আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত
মোবারক থেকে নরম কোনো পশমী বা রেশমী
কাপড় স্পর্শ করি নি। আর আমি তাঁর (শরীরের)
ঘ্রাণ থেকে অধিক সুগন্ধযুক্ত কোনো মিশক বা
আম্বর পাই নি”। [170]
আব্দুল্লাহ ইবন শাকীক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺳَﺄَﻟْﺖُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ، ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻛَﺎﻥَ
ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻘُﻮﻝَ: ﻗَﺪْ ﺻَﺎﻡَ، ﻗَﺪْ ﺻَﺎﻡَ، ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻘُﻮﻝَ : ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ، ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ:
ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﺻَﺎﻡَ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﻛَﺎﻣِﻠًﺎ، ﻣُﻨْﺬُ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“আমি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তিনি
সাওম পালন করতেন, এমনকি আমরা বলতাম তিনি
সাওম পালন করেই যাবেন। আবার তিনি ইফতার
অবস্থায় থাকতেন এমনকি আমরা বলাবলি
করতাম, তিনি সাওম ভঙ্গ করেই চলেছেন (আর সাওম
পালন করবেন না)। তিনি (আরও) বলেন, মদীনায়
তাশরীফ নেওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে রমযান ব্যতীত
পূর্ণ মাস সাওম পালন করতে দেখি নি।” [171]
‘আব্দুল্লাহ ইবন শাকীক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ: ﻫَﻞْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺷَﻬْﺮًﺍ
ﻣَﻌْﻠُﻮﻣًﺎ ﺳِﻮَﻯ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻭَﺍﻟﻠﻪِ، ﺇِﻥْ ﺻَﺎﻡَ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﻣَﻌْﻠُﻮﻣًﺎ ﺳِﻮَﻯ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﻀَﻰ
ﻟِﻮَﺟْﻬِﻪِ، ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَﻩُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺼِﻴﺐَ ﻣِﻨْﻪُ »
“আমি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে
জিজ্ঞাসা করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম রমযান ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে পূর্ণ
মাস সাওম পালন করেছেন কি? তিনি বললেন,
আল্লাহর কসম! রমযান ব্যতীত অন্য সময়ে তিনি পূর্ণ
মাস সাওম পালন করেন নি, এমনকি তিনি
ইন্তেকাল করেছেন। আবার পুরো মাসও সাওম
ভঙ্গকারী হতেন না, বরং তা থেকে কিছু না কিছু
সাওম পালন করতেন । ”[172]
নফল সাওম পালনের ব্যাপারে মেহমানের হক
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻲَّ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺬَﻛَﺮَ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚَ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺭِﻙَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ
ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﻭَﻣَﺎ ﺻَﻮْﻡُ ﺩَﺍﻭُﺩَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧِﺼْﻒُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমার কাছে এলেন। এরপর তিনি (‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) হাদীসটি বর্ণনা করেন অর্থাৎ
তোমার ওপর মেহমানের হক আছে, তোমার ওপর
তোমার স্ত্রীর হক আছে। আমি জিজ্ঞাসা
করলাম, সাওমে দাউদ আলাইহিস সালাম
কী? তিনি বললেন, ‘অর্ধেক বছর’-এর সাওম পালন
করা”। [173]
নফল সাওমে শরীরের হক
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻗَﺎﻝَ ﻟِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﻳَﺎ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﻟَﻢْ ﺃُﺧْﺒَﺮْ ﺃَﻧَّﻚَ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭَ،
ﻭَﺗَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ؟ » ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﺑَﻠَﻰ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻗَﺎﻝَ: « ﻓَﻼَ ﺗَﻔْﻌَﻞْ ﺻُﻢْ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ، ﻭَﻗُﻢْ ﻭَﻧَﻢْ، ﻓَﺈِﻥَّ
ﻟِﺠَﺴَﺪِﻙَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻌَﻴْﻨِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺭِﻙَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ
ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺑِﺤَﺴْﺒِﻚَ ﺃَﻥْ ﺗَﺼُﻮﻡَ ﻛُﻞَّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺛَﻼَﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻚَ ﺑِﻜُﻞِّ ﺣَﺴَﻨَﺔٍ ﻋَﺸْﺮَ ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ، ﻓَﺈِﻥَّ
ﺫَﻟِﻚَ ﺻِﻴَﺎﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ ﻛُﻠِّﻪِ، ﻓَﺸَﺪَّﺩْﺕُ، ﻓَﺸُﺪِّﺩَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺟِﺪُ ﻗُﻮَّﺓً ﻗَﺎﻝَ:
ﻓَﺼُﻢْ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﻧَﺒِﻲِّ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻻَ ﺗَﺰِﺩْ ﻋَﻠَﻴْﻪِ » ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺻِﻴَﺎﻡُ ﻧَﺒِﻲِّ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧِﺼْﻒَ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺑَﻌْﺪَ ﻣَﺎ ﻛَﺒِﺮَ: ﻳَﺎ ﻟَﻴْﺘَﻨِﻲ ﻗَﺒِﻠْﺖُ
ﺭُﺧْﺼَﺔَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে বললেন, হে আব্দুল্লাহ! আমি এ সংবাদ
পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সাওম পালন কর এবং
সারা রাত সালাত আদায় করে থাক। আমি
বললাম, ঠিক (শুনেছেন) ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি
বললেন, এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সাওম
পালন কর আবার সাওম ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত
আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার ওপর
তোমার শরীরের হক আছে, তোমার চোখের হক
রয়েছে, তোমার ওপর তোমার স্ত্রীর হক
আছে, তোমার মেহমানের হক আছে। তোমার জন্য
যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম
পালন করবে। কেননা নেক আমলের পরিবর্তে
তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা
বছরের সাওম হয়ে যায়। আমি বললাম আমি এর
চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও
কঠিন আমলের অনুমতি দেওয়া হলো। আমি
বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আরো বেশি শক্তি
রাখি। তিনি বললেন, তবে আল্লাহর নবী দাঊদ
আলাইহিস সালামের সাওম পালন কর, এর থেকে
বেশি করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞাসা
করলাম, আল্লাহর নবী দাঊদ আলাইহিস সালামের
সাওম কেমন? তিনি বললেন, অর্ধেক বছর।
বর্ণনাকারী বলেন, ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত রুখসত
(সহজতর বিধান) কবুল করে নিতাম!” [174]
সারা বছর সাওম পালন করা
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
(সনদসহ) বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻋَﻦِ ﺍﻟﺰُّﻫْﺮِﻱِّ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪُ ﺑْﻦُ ﺍﻟﻤُﺴَﻴِّﺐِ، ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ، ﺃَﻥَّ ﻋَﺒْﺪَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦَ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃُﺧْﺒِﺮَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃَﻧِّﻲ ﺃَﻗُﻮﻝُ: ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟَﺄَﺻُﻮﻣَﻦَّ
ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭَ، ﻭَﻟَﺄَﻗُﻮﻣَﻦَّ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﻣَﺎ ﻋِﺸْﺖُ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ: ﻗَﺪْ ﻗُﻠْﺘُﻪُ ﺑِﺄَﺑِﻲ ﺃَﻧْﺖَ ﻭَﺃُﻣِّﻲ ﻗَﺎﻝَ: « ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﻻَ
ﺗَﺴْﺘَﻄِﻴﻊُ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﺼُﻢْ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ، ﻭَﻗُﻢْ ﻭَﻧَﻢْ، ﻭَﺻُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺛَﻼَﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﺤَﺴَﻨَﺔَ ﺑِﻌَﺸْﺮِ
ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ، ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻣِﺜْﻞُ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ، ﻗُﻠْﺖُ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ: « ﻓَﺼُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ
ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ، ﻗُﻠْﺖُ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺼُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻓَﺬَﻟِﻚَ
ﺻِﻴَﺎﻡُ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻻَ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
নিকট আমার সম্পর্কে এ কথা পৌছে যায় যে, আমি
বলেছি, আল্লাহর কসম, আমি যতদিন বেঁচে থাকব
ততদিন সাওম পালন করব এবং রাতভর সালাত আদায়
করব। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করায় আমি
বললাম, আপনার ওপর আমার পিতা-মাতা কুরবান
হোক! আমি একথা বলেছি। তিনি বললেন, তুমি তো
এরূপ করতে সক্ষম হবে না। বরং তুমি সাওম পালন কর
ও ছেড়েও দাও, (রাতে) সালাত আদায় কর ও নিদ্রা
যাও। তুমি মাসে তিন দিন করে সাওম পালন কর।
কারণ নেক কাজের ফল তার দশ গুন, এভাবেই সারা
বছরের সাওম পালন হয়ে যাবে। আমি বললাম, আমি
এর থেকে বেশি করার সামর্থ্য রাখি। তিনি
বললেন, তাহলে একদিন সাওম পালন কর এবং দু’দিন
ছেড়ে দাও। আমি বললাম আমি এর থেকে বেশি
করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে একদিন
সাওম পালন কর এবং একদিন ছেড়ে দাও। এটা হলো
দাঊদ আলাইহিস সালামের সাওম এবং এই হলো
সর্বোত্তম (সাওম)। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে
বেশি করার সামর্থ্য রাখি। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর চেয়ে উত্তম
সাওম (রাখার পদ্ধতি) আর নেই”। [175]
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺟَﺎﺀَ ﺛَﻼَﺛَﺔُ ﺭَﻫْﻂٍ ﺇِﻟَﻰ ﺑُﻴُﻮﺕِ ﺃَﺯْﻭَﺍﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺓِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃُﺧْﺒِﺮُﻭﺍ ﻛَﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﺗَﻘَﺎﻟُّﻮﻫَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ: ﻭَﺃَﻳْﻦَ ﻧَﺤْﻦُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻗَﺪْ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺄَﺧَّﺮَ، ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻢْ: ﺃَﻣَّﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺈِﻧِّﻲ
ﺃُﺻَﻠِّﻲ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﺃَﺑَﺪًﺍ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُ: ﺃَﻧَﺎ ﺃَﺻُﻮﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ ﻭَﻻَ ﺃُﻓْﻄِﺮُ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُ: ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻋْﺘَﺰِﻝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ
ﻓَﻼَ ﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺃَﺑَﺪًﺍ، ﻓَﺠَﺎﺀَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﺃَﻧْﺘُﻢُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗُﻠْﺘُﻢْ
ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ، ﺃَﻣَﺎ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﺧْﺸَﺎﻛُﻢْ ﻟِﻠَّﻪِ ﻭَﺃَﺗْﻘَﺎﻛُﻢْ ﻟَﻪُ، ﻟَﻜِﻨِّﻲ ﺃَﺻُﻮﻡُ ﻭَﺃُﻓْﻄِﺮُ، ﻭَﺃُﺻَﻠِّﻲ ﻭَﺃَﺭْﻗُﺪُ،
ﻭَﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ، ﻓَﻤَﻦْ ﺭَﻏِﺐَ ﻋَﻦْ ﺳُﻨَّﺘِﻲ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣِﻨِّﻲ »
“তিন জনের একটি দল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের বিবিগণের গৃহে আগমন করলো। যখন
তাঁদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হলো, তখন তারা
এ ইবাদতের পরিমাণ যেন কম মনে করল এবং
বলল, আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সমকক্ষ থেকে পারি না। কারণ, তার
আগে ও পরের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়েছে।
এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা
জীবন রাতে সালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন
বলল, আমি সারা বছর সাওম পালন করব এবং কখনও
বিরতি দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী বিবর্জিত
থাকব, কখনও শাদী করব না। এরপর রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট
এলেন এবং বললেন, “তোমরা ঐ সকল ব্যক্তি যারা
এরূপ কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি
আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং
তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি আমি বেশ আনুগত্যশীল
অথচ আমি সাওম পালন করি, আবার সাওম থেকে
বিরতও থাকি। সালাত আদায় করি এবং ঘুমাই ও
বিয়ে-শাদী করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের
প্রতি বিরাগ ভাব পোষণ করবে, তারা আমার
দলভুক্ত নয়”। [176]
আবু আইয়্যুব আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗْﺒَﻌَﻪُ ﺳِﺘًّﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ، ﻛَﺎﻥَ ﻛَﺼِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
“রমযান মাসের সাওম পালন করে পরে শাওয়াল
মাসে ছয় দিন সাওম পালন করা সারা বছর সাওম
রাখার মতো”। [177]
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺑُﻮ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﻬْﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﻞِ ﺍﻟﻐَﺰْﻭِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ
ﻗُﺒِﺾَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻢْ ﺃَﺭَﻩُ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﻓِﻄْﺮٍ ﺃَﻭْ ﺃَﺿْﺤَﻰ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
জীবনকালে আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
জিহাদের কারেণে সাওম পালন করতেন না। কিন্তু
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
ইন্তেকালের পর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ব্যতীত
তাকে কখনো সাওম ছেড়ে দিতে দেখি নি।” [178]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
বলতে শুনেছি যে,
«ﺷَﻬْﺮُ ﺍﻟﺼَّﺒْﺮِ، ﻭَﺛَﻠَﺎﺛَﺔُ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺻَﻮْﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
“ধৈর্যের মাস হলো রমযান মাস। আর প্রত্যেক মাসে
তিন দিন সাওম পালন করা সারা বছর সাওম পালন
করার সমতুল্য”। [179]
সাওম পালনের ব্যাপারে পরিবার পরিজনের হক
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত,
«ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃَﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺮُﺩُ ﺍﻟﺼَّﻮْﻡَ، ﻭَﺃُﺻَﻠِّﻲ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ، ﻓَﺈِﻣَّﺎ ﺃَﺭْﺳَﻞَ ﺇِﻟَﻲَّ
ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﻟَﻘِﻴﺘُﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﻟَﻢْ ﺃُﺧْﺒَﺮْ ﺃَﻧَّﻚَ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﻭَﻻَ ﺗُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﺗُﺼَﻠِّﻲ؟ ﻓَﺼُﻢْ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ، ﻭَﻗُﻢْ ﻭَﻧَﻢْ، ﻓَﺈِﻥَّ
ﻟِﻌَﻴْﻨِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻈًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻚَ ﻭَﺃَﻫْﻠِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻈًّﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﻗْﻮَﻯ ﻟِﺬَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺼُﻢْ
ﺻِﻴَﺎﻡَ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻛَﻴْﻒَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻭَﻻَ ﻳَﻔِﺮُّ ﺇِﺫَﺍ
ﻻَﻗَﻰ، ﻗَﺎﻝَ: ﻣَﻦْ ﻟِﻲ ﺑِﻬَﺬِﻩِ ﻳَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ - ﻗَﺎﻝَ ﻋَﻄَﺎﺀٌ: ﻻَ ﺃَﺩْﺭِﻱ ﻛَﻴْﻒَ ﺫَﻛَﺮَ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﺍﻷَﺑَﺪِ ﻗَﺎﻝَ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﻻَ ﺻَﺎﻡَ ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺍﻷَﺑَﺪَ ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট
এ সংবাদ পৌছে যে, আমি একটানা সাওম পালন
করি এবং রাতভর সালাত আদায় করি। এরপর হয়ত
তিনি আমার কাছে লোক পাঠালেন অথবা আমি
তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি বললেন, আমি
কি এ কথা ঠিক শুনি নাই যে, তুমি সাওম পালন
করতে থাক আর ছাড় না এবং তুমি (রাতভর) সালাত
আদায় করতে থাক আর ঘুমাও না? (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন), তুমি
সাওম পালন কর এবং মাঝে মাঝে তা ছেড়েও দাও।
রাতে সালাত আদায় কর এবং নিদ্রাও যাও। কেননা
তোমার ওপর তোমার চোখের হক রয়েছে এবং
তোমার নিজের শরীরের ও তোমার পরিবারের হক
তোমার ওপর আছে। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বললেন, আমি এর চেয়ে বেশি শক্তি রাখি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, তাহলে তুমি দাঊদ আলাইহিস সালামের
সাওম পালন কর। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, তা কীভাবে? তিনি
বললেন, দাঊদ আলাইহিস সালাম একদিন সাওম
পালন করতেন, একদিন ছেড়ে দিতেন এবং তিনি
(শত্রুর) সম্মুখীন হলে পলায়ন করতেন না। ‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে আল্লাহর
নবী, আমাকে এ শক্তি কে
যোগাবে? বর্ণনাকারী ‘আতা রহ. বলেন, (এ
হাদীসে) কীভাবে সব সময়ের সিয়ামের প্রসঙ্গ
আসে সে কথাটুকু আমার মনে নেই (অবশ্য) এতটুকু মনে
আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দু’বার এ কথাটি বলেছেন, “সব সময়ের সাওম কোনো
সাওম নয়”। [180]
একদিন সাওম পালন করা একদিন ছেড়ে দেওয়া
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
« ﺻُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺛَﻼَﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﻤَﺎ ﺯَﺍﻝَ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺎﻝَ: ﺻُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ
ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺍﻗْﺮَﺇِ ﺍﻟﻘُﺮْﺁﻥَ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻓَﻤَﺎ ﺯَﺍﻝَ، ﺣَﺘَّﻰ
ﻗَﺎﻝَ: ﻓِﻲ ﺛَﻼَﺙٍ »
“তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম পালন কর।
‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি এর
চাইতে বেশি করার শক্তি রাখি। এভাবে তিনি
বৃদ্ধির আবেদন করতে লাগলেন যে, অবশেষে
রাসূলুল্লাহ বললেন, একদিন সাওম পালন কর এবং
একদিন ছেড়ে দাও এবং আরও বললেন, প্রতি মাসে
(এক খতম) কুরআন পাঠ কর। তিনি বললেন আমি এর
চেয়ে বেশি শক্তি রাখি। এভাবে বলতে
লাগলেন, অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তিন দিনে
(পাঠ কর)”। [181]
দাউদ আলাইহিস সালামের সাওম
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
« ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺘَﺼُﻮﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ، ﻭَﺗَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ؟، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻗَﺎﻝَ: « ﺇِﻧَّﻚَ ﺇِﺫَﺍ ﻓَﻌَﻠْﺖَ ﺫَﻟِﻚَ ﻫَﺠَﻤَﺖْ ﻟَﻪُ
ﺍﻟﻌَﻴْﻦُ، ﻭَﻧَﻔِﻬَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻻَ ﺻَﺎﻡَ ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ، ﺻَﻮْﻡُ ﺛَﻼَﺛَﺔِ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺻَﻮْﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ ﻛُﻠِّﻪِ،
ﻗُﻠْﺖُ: ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺼُﻢْ ﺻَﻮْﻡَ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻳَﻮْﻣًﺎ
ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻭَﻻَ ﻳَﻔِﺮُّ ﺇِﺫَﺍ ﻻَﻗَﻰ »
“তুমি কি সব সময় সাওম পালন কর এবং রাতভর
সালাত আদায় করে থাক? আমি বললাম, জী হ্যাঁ।
তিনি বললেন, তুমি এরূপ করলে চোখ বসে যাবে এবং
শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে সারা বছর সাওম পালন
করে সে যেন সাওম পালন করে না। মাসে তিন দিন
করে সাওম পালন করা সারা বছর সাওম পালনের
সমতূল্য। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশি করার
সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি দাউদ
আলাইহিস সালামের সাওম পালন কর, তিনি একদিন
সাওম পালন করতেন আর একদিন ছেড়ে দিতেন এবং
যখন শত্রুর সম্মুখীন থেকেন তখন পলায়ন করতেন না”।
[182]
«ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻗِﻼَﺑَﺔَ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺃَﺑُﻮ ﺍﻟﻤَﻠِﻴﺢِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﻣَﻊَ ﺃَﺑِﻴﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ
ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻓَﺤَﺪَّﺛَﻨَﺎ: ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺫُﻛِﺮَ ﻟَﻪُ ﺻَﻮْﻣِﻲ، ﻓَﺪَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻲَّ،
ﻓَﺄَﻟْﻘَﻴْﺖُ ﻟَﻪُ ﻭِﺳَﺎﺩَﺓً ﻣِﻦْ ﺃَﺩَﻡٍ ﺣَﺸْﻮُﻫَﺎ ﻟِﻴﻒٌ، ﻓَﺠَﻠَﺲَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻷَﺭْﺽِ، ﻭَﺻَﺎﺭَﺕِ ﺍﻟﻮِﺳَﺎﺩَﺓُ ﺑَﻴْﻨِﻲ
ﻭَﺑَﻴْﻨَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻣَﺎ ﻳَﻜْﻔِﻴﻚَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺛَﻼَﺛَﺔُ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ:
ﺧَﻤْﺴًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﺒْﻌًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺗِﺴْﻌًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻋَﺸْﺮَﺓَ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﻻَ ﺻَﻮْﻡَ ﻓَﻮْﻕَ
ﺻَﻮْﻡِ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﺷَﻄْﺮَ ﺍﻟﺪَّﻫَﺮِ، ﺻُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣًﺎ »
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সূত্রে
বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আমার সাওমের
আলোচনা করায় তিনি আমার এখানে আগমন করেন।
আমি তাঁর জন্য খেজুরের ছালে পরিপূর্ণ চামড়ার
বালিশ (হেলান দিয়ে বসার জন্য) পেশ করলাম।
তিনি মাটিতে বসে পড়লেন। বালিশটি তাঁর ও
আমার মাঝে পড়ে থাকল। তিনি বললেন, প্রতি
মাসে তুমি তিন দিন সাওম রাখলে হয় না?
‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি
বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (আরো)। তিনি বললেন
সাতদিন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! (আরো)।
তিনি বললেন, নয় দিন। আমি বললাম, ইয়া
রাসুলাল্লাহ! (আরো)। তিনি বললেন, এগারো দিন।
এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, দাঊদ আলাইহিস সালামের সাওমের চেয়ে
উত্তম সাওম আর হয় না। অর্ধেক বছর, একদিন সাওম
পালন কর ও একদিন ছেড়ে দাও”। [183]
সাওমে বীয বা প্রতিমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে
সাওম পালন করা
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺃَﻭْﺻَﺎﻧِﻲ ﺧَﻠِﻴﻠِﻲ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺜَﻼَﺙٍ: ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺛَﻼَﺛَﺔِ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻭَﺭَﻛْﻌَﺘَﻲِ
ﺍﻟﻀُّﺤَﻰ، ﻭَﺃَﻥْ ﺃُﻭﺗِﺮَ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺃَﻧَﺎﻡَ »
“আমার বন্ধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ
দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সাওম পালন
করা এবং দু’রাক‘আত সালাতুদ-দোহা এবং ঘুমানোর
পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা”। [184]
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔ ﺯَﻭْﺝ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﺃَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ؟ » ﻗَﺎﻟَﺖْ: «ﻧَﻌَﻢْ » ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻬَﺎ: «ﻣِﻦْ ﺃَﻱِّ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﻛَﺎﻥَ
ﻳَﺼُﻮﻡُ؟ » ﻗَﺎﻟَﺖْ: « ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻳُﺒَﺎﻟِﻲ ﻣِﻦْ ﺃَﻱِّ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﻳَﺼُﻮﻡُ »
এক তাবে‘ঈ বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের স্ত্রী ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে জানতে
চাইলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম পালন
করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি পূনরায় তাকে
জিজ্ঞাসা করলাম, মাসের কোনো কোনো দিন
তিনি সাওম পালন করতেন? ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, তিনি মাসের যে
কোনো দিন সাওম পালন করতে দ্বিধা করতেন না।
[185]
সাওম পালনকারী কারো দাওয়াতে সাড়া দেওয়া
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦ ﻋُﻤَﺮ ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺫَﻫَﺐَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺪَّﺍﻋِﻲ , ﻓَﺈِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ , ﺩَﻋَﺎ ﺑِﺎﻟْﺒَﺮَﻛَﺔِ , ﺛُﻢَّ
ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ , ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﺟَﻠَﺲَ ﻓَﺄَﻛَﻞَ.
ﻗَﺎﻝَ ﻧَﺎﻓِﻊٌ: ﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: " ﺇﺫﺍ ﺩﻋﻴﺘﻢ ﺇﻟﻰ
ﻛﺮﺍﻉ ﻓﺄﺟﻴﺒﻮﺍ »
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেউ
দাওয়াত দিলে তিনি সেখানে যেতেন। সাওম
পালনকারী হলে সেখানে গিয়ে বরকতের দো‘আ
করে ফিরে আসতেন আর সাওম পালনকারী না হলে
বসতেন এবং খেতেন।
নাফি‘ রহ. বলেন, ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের বকরীর
পায়া খাওয়ার জন্যও দাওয়াত দেওয়া হয় তবুও
তোমরা তাতে সাড়া দিও”। [186]
জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﻓَﻠْﻴُﺠِﺐْ، ﻓَﺈِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﻃَﻌِﻢَ، ﻭَﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺗَﺮَﻙَ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺬْﻛُﺮِ ﺍﺑْﻦُ
ﺍﻟْﻤُﺜَﻨَّﻰ: ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ »
“যখন তোমাদের কাউকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত
দেওয়া হয়, তখন সে যেন দাওয়াতে সাড়া দেয়।
তারপর ইচ্ছা করলে আহার করবে, না হয় না করবে।
ইবন মুসান্না রহ. তার বর্ণনায় পানাহারের দিকে
কথাটি উল্লেখ করেন নি।” [187]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ، ﻓَﻠْﻴُﺠِﺐْ، ﻓَﺈِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ، ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ، ﻓَﻠْﻴَﻄْﻌَﻢْ »
“যখন তোমাদের কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয় সে যেন
তাতে সাড়া দেয়। যদি সে সাওম পালনকারী হয়
তাহলে সে (ওখানে গিয়ে) দো‘আ ও সালাতরত
থাকবে। আর যদি সাওম পালনকারী না হয় তাহলে
সে আহার করবে।” [188]
সাওম পালনকারীকে খাবারের জন্য ডাকলে সে যেন
বলে, আমি সাওম পালনকারী
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﻭَﻫُﻮَ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ: ﺇِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻢٌ »
“তোমাদের সাওমরত কোনো ব্যক্তিকে যদি খানা
খাওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়, তবে তার বলা উচিতৎ
আমি সাওম পালনকারী”। [189]
কারো সাথে দেখা করতে গেলে নফল সাওম ভঙ্গ না
করা
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻋَﻠَﻰ ﺃُﻡِّ ﺳُﻠَﻴْﻢٍ، ﻓَﺄَﺗَﺘْﻪُ ﺑِﺘَﻤْﺮٍ ﻭَﺳَﻤْﻦٍ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻋِﻴﺪُﻭﺍ
ﺳَﻤْﻨَﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺳِﻘَﺎﺋِﻪِ، ﻭَﺗَﻤْﺮَﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﻭِﻋَﺎﺋِﻪِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻢٌ ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻡَ ﺇِﻟَﻰ ﻧَﺎﺣِﻴَﺔٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺒَﻴْﺖِ،
ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻟﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔِ، ﻓَﺪَﻋَﺎ ﻟِﺄُﻡِّ ﺳُﻠَﻴْﻢٍ ﻭَﺃَﻫْﻞِ ﺑَﻴْﺘِﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﺃُﻡُّ ﺳُﻠَﻴْﻢٍ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻥَّ
ﻟِﻲ ﺧُﻮَﻳْﺼَّﺔً، ﻗَﺎﻝَ: ﻣَﺎ ﻫِﻲَ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﺧَﺎﺩِﻣُﻚَ ﺃَﻧَﺲٌ، ﻓَﻤَﺎ ﺗَﺮَﻙَ ﺧَﻴْﺮَ ﺁﺧِﺮَﺓٍ ﻭَﻻَ ﺩُﻧْﻴَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺩَﻋَﺎ ﻟِﻲ
ﺑِﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺭْﺯُﻗْﻪُ ﻣَﺎﻟًﺎ ﻭَﻭَﻟَﺪًﺍ، ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟَﻪُ ﻓِﻴﻪِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﻟَﻤِﻦْ ﺃَﻛْﺜَﺮِ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ ﻣَﺎﻟًﺎ،
ﻭَﺣَﺪَّﺛَﺘْﻨِﻲ ﺍﺑْﻨَﺘِﻲ ﺃُﻣَﻴْﻨَﺔُ: ﺃَﻧَّﻪُ ﺩُﻓِﻦَ ﻟِﺼُﻠْﺒِﻲ ﻣَﻘْﺪَﻡَ ﺣَﺠَّﺎﺝٍ ﺍﻟﺒَﺼْﺮَﺓَ ﺑِﻀْﻊٌ ﻭَﻋِﺸْﺮُﻭﻥَ ﻭَﻣِﺎﺋَﺔٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﺍﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻣَﺮْﻳَﻢَ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﺑْﻦُ ﺃَﻳُّﻮﺏَ، ﻗَﺎﻝَ: ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺣُﻤَﻴْﺪٌ، ﺳَﻤِﻊَ ﺃَﻧَﺴًﺎ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ،
ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার
মাতা) উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার ঘরে
আগমান করলেন। তিনি তাঁর সামনে খেজুর ও ঘি
পেশ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের ঘি মশকে এবং
খেজুর তার বরতনে রেখে দাও। কারণ আমি সাওম
পালনকারী। এরপর তিনি ঘরের এক পাশে গিয়ে নফল
সালাত আদায় করলেন এবং উম্মে সুলাইম
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ও তাঁর পরিজনের জন্য দো‘আ
করলেন। উম্মে সুলাইম আরয করলেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! আমার একটি ছোট ছেলে আছে। তিনি
বললেন, কে সে? উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
বললেন, আপনার খাদেম আনাস। তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার জন্য
দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণের দো‘আ
করলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তুমি তাকে
মাল ও সন্তান-সন্ততি দান কর এবং তাকে বরকত
দাও। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি
আনসারগণের মধ্যে অধিক সম্পদশালীদের একজন
এবং আমার কন্যা আমাকে জানিয়েছে
যে, হাজ্জাজ (ইবন ইউসুফ) এর বসরায় আগমনের পূর্ব
পর্যন্ত একশত বিশের অধিক আমার সন্তান মারা
গেছে।
ইবন আবু মারইয়াম রহ. হুমায়দ রহ. আনাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করতে
শুনেছেন।” [190]
সাওম পালনকারীকে ইফতার করানোর সাওয়াব
যায়েদ ইবন খালিদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ﻣَﻦْ ﻓَﻄَّﺮَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﺟْﺮِﻫِﻢْ، ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻘُﺺَ ﻣِﻦْ ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ »
“কেউ যদি কোনো সাওম পালনকারীকে ইফতার
করায় তবে তার জন্যও অনুরূপ (সিয়ামের) সাওয়াব
হবে। কিন্তু এতে সাওম পালনকারীর সাওয়াবে
কোনো ঘাটতি হবে না”। [191]
মাসের শেষ ভাগে সাওম পালন
‘ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﻋِﻤْﺮَﺍﻥَ ﺑْﻦِ ﺣُﺼَﻴْﻦٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﺄَﻟَﻪُ ﺃَﻭْ
ﺳَﺄَﻝَ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻭَﻋِﻤْﺮَﺍﻥُ ﻳَﺴْﻤَﻊُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻓُﻼَﻥٍ، ﺃَﻣَﺎ ﺻُﻤْﺖَ ﺳَﺮَﺭَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻇُﻨُّﻪُ
ﻗَﺎﻝَ: ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ: ﻻَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﻓْﻄَﺮْﺕَ ﻓَﺼُﻢْ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ، ﻟَﻢْ
ﻳَﻘُﻞِ ﺍﻟﺼَّﻠْﺖُ: ﺃَﻇُﻨُّﻪُ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ: ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺛَﺎﺑِﺖٌ: ﻋَﻦْ ﻣُﻄَﺮِّﻑٍ، ﻋَﻦْ
ﻋِﻤْﺮَﺍﻥَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻣِﻦْ ﺳَﺮَﺭِ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে
অথবা (বর্ণনাকারী বলেন) অন্য এক ব্যক্তিকে
জিজ্ঞাসা করেন এবং ‘ইমরান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
তা শুনেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, হে অমুকের পিতা! তুমি কি এ
মাসের শেষ ভাগে সাওম পালন কর নি?
(বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয় (আমার ওস্তাদ)
বলেছেন, অর্থাৎ রমযান। লোকটি উত্তর দিল, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! না। তিনি বললেন, যখন সাওম পালন
শেষ করবে তখন দু’দিন সাওম পালন করে নিবে।
আমার মনে হয় সালত রহ. রমযান শব্দটি বর্ণনা
করেন নি। সাবিত রহ. ‘ইমরান সূত্রে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
শা‘বানের শেষভাগে বলে উল্লেখ করেছেন।
আবু ‘আব্দুল্লাহ বুখারী রহ. বলেন, শা’বান শব্দটি
অধিকতর সহীহ।” [192]
জুমু‘আর দিনে সাওম পালন
মুহাম্মদ ইবন ‘আব্বাদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, আমি জাবির ইবন ‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে,
« ﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧَﻌَﻢْ، ﺯَﺍﺩَ ﻏَﻴْﺮُ ﺃَﺑِﻲ
ﻋَﺎﺻِﻢٍ، ﻳَﻌْﻨِﻲ : ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻔَﺮِﺩَ ﺑِﺼَﻮْﻡٍ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি
জুমু‘আর দিনে (নফল) সাওম পালন করতে নিষেধ
করেছেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবু ‘আসিম
রহ. ব্যতীত অন্যেরা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন
যে, পৃথকভাবে জুমু‘আর দিনের সাওম পালনকে
নিষেধ করেছেন।” [193]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে,
« ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻣَﻦَّ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻗَﺒْﻠَﻪُ ﺃَﻭْ ﺑَﻌْﺪَﻩُ »
“তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমু‘আর দিনে সাওম পালন
না করে; কিন্তু তার আগে একদিন বা পরের দিন
(যদি পালন করে তবে জুমু‘আর দিনে পালন করা
যায়)”। [194]
জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﻫِﻲَ ﺻَﺎﺋِﻤَﺔٌ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﺻُﻤْﺖِ
ﺃَﻣْﺲِ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻻَ، ﻗَﺎﻝَ: ﺗُﺮِﻳﺪِﻳﻦَ ﺃَﻥْ ﺗَﺼُﻮﻣِﻲ ﻏَﺪًﺍ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻻَ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺄَﻓْﻄِﺮِﻱ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺣَﻤَّﺎﺩُ
ﺑْﻦُ ﺍﻟﺠَﻌْﺪِ: ﺳَﻤِﻊَ ﻗَﺘَﺎﺩَﺓَ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﺑُﻮ ﺃَﻳُّﻮﺏَ، ﺃَﻥَّ ﺟُﻮَﻳْﺮِﻳَﺔَ، ﺣَﺪَّﺛَﺘْﻪُ: ﻓَﺄَﻣَﺮَﻫَﺎ ﻓَﺄَﻓْﻄَﺮَﺕْ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর
দিনে তাঁর নিকট প্রবেশ করেন তখন তিনি
(জুযাইরিয়া) সাওম পালনরত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি গতকাল সাওম পালন
করেছিলে? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা
করলেন, তুমি কি আগামীকাল সাওম পালনের ইচ্ছা
রাখ? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে সাওম
ভেঙ্গে ফেল। হাম্মাদ ইবনুল জা‘দ রহ. স্বীয় সূত্রে
জুয়াইরিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণনা
করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে আদেশ দেন এবং তিনি সাওম
ভঙ্গ করেন”। [195]
সাওম পালনের ব্যাপারে কোনো দিন কি নির্দিষ্ট
করা যায়?
‘আলকামা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ: ﻫَﻞْ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﺨْﺘَﺺُّ ﻣِﻦَ
ﺍﻷَﻳَّﺎﻡِ ﺷَﻴْﺌًﺎ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻻَ، ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻤَﻠُﻪُ ﺩِﻳﻤَﺔً، ﻭَﺃَﻳُّﻜُﻢْ ﻳُﻄِﻴﻖُ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﻄِﻴﻖُ »
“আমি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে
জিজ্ঞাসা করলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কোনো দিন কোনো
কাজের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতেন? উত্তরে তিনি
বলেলেন, না; বরং তাঁর ‘আমল স্থায়ী হতো এবং
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে
সব ‘আমল করার শক্তি সামর্থ্য রাখতেন তোমাদের
মধ্যে কে আছে যে সে সবের সামর্থ্য রাখে?” [196]
শাওয়াল মাসে ছয়টি সাওম পালন
আবু আইয়্যুব আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗْﺒَﻌَﻪُ ﺳِﺘًّﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ، ﻛَﺎﻥَ ﻛَﺼِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
“রমযান মাসের সাওম পালন করে পরে শাওয়াল
মাসে ছয় দিন সাওম পালন করা সারা বছর সাওম
রাখার মত”। [197]
যিলহজ মাসের সাওম পালন
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﻗَﻂُّ »
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে (যিলহজ্জের) দশম তারিখে কখনও
সাওম পালন করতে দেখি নি।” [198]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻢْ ﻳَﺼُﻢِ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (যিলহজ্জের)
দশ তারিখে সাওম পালন করেন নি”। [199]
ইবন ‘আববাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺍﻟْﻌَﻤَﻞُ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺢُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﺣَﺐُّ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣِﻦْ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄَﻳَّﺎﻡِ » ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ،
ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻟَّﺎ
ﺭَﺟُﻞٌ ﺧَﺮَﺝَ ﺑِﻨَﻔْﺴِﻪِ ﻭَﻣَﺎﻟِﻪِ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺮْﺟِﻊْ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ »
“আল্লাহ তা‘আলার নিকট দিনসমুহের মধ্যে যিলহজ
মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমল অধিক প্রিয়।
সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্!
আল্লাহর
রাস্তায় জিহাদ করাও কি ঐরূপ উত্তম আমল নয়?
তিনি বলেন না, আল্লাহ রাস্তায় জিহাদ
করাও নয়। অবশ্য
যে ব্যক্তি স্বীয় জানমালসহ রাস্তায় বের হওয়ার
পর আর প্রত্যাবর্তন করে না, তার ব্যাপারটি
স্বতন্ত্র”। [200]
‘আরাফাহ দিবসে সাওম পালন
উম্মুল ফাদল বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
সূত্রে বর্ণনা করেন যে,
« ﺃَﻥَّ ﻧَﺎﺳًﺎ ﺗَﻤَﺎﺭَﻭْﺍ ﻋِﻨْﺪَﻫَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺮَﻓَﺔَ ﻓِﻲ ﺻَﻮْﻡِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ
ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ: ﻫُﻮَ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ: ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺼَﺎﺋِﻢٍ، ﻓَﺄَﺭْﺳَﻠَﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺑِﻘَﺪَﺡِ ﻟَﺒَﻦٍ ﻭَﻫُﻮَ ﻭَﺍﻗِﻒٌ ﻋَﻠَﻰ
ﺑَﻌِﻴﺮِﻩِ، ﻓَﺸَﺮِﺑَﻪُ »
“কিছুসংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম পালন
সম্পর্কে তাঁর কাছে সন্দেহ প্রকাশ করে। তাদের
কেউ বলল, তিনি সাওম পালন করেছেন। আর কেউ
বলল, না, তিনি করেন নি। এতে উম্মুল ফাদল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এক পেয়ালা দুধ রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট
পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা পান করে নিলেন।
এ সময় তিনি উঠের পিঠে (‘আরাফাতে) উকূফ
অবস্থায় ছিলেন।” [201]
মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত
যে, তিনি বললেন,
« ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺷَﻜُّﻮﺍ ﻓِﻲ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺮَﻓَﺔَ، ﻓَﺄَﺭْﺳَﻠَﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ
ﻣَﻴْﻤُﻮﻧَﺔُ ﺑِﺤِﻠَﺎﺏِ ﺍﻟﻠَّﺒَﻦِ، ﻭَﻫُﻮَ ﻭَﺍﻗِﻒٌ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻮْﻗِﻒِ، ﻓَﺸَﺮِﺏَ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳَﻨْﻈُﺮُﻭﻥَ ﺇِﻟَﻴْﻪِ »
“কিছু সংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম পালন
সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি স্বল্প পরিমাণ
দুধ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নিকট পাঠিয়ে দিলে তিনি তা
পান করলেন ও লোকেরা তা প্রত্যক্ষ করছিল। তখন
তিনি (‘আরাফাতে) অবস্থান স্থলে উকূফ
করছিলেন”। [202]
আবু কাতাদা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত,
» ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻣِﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﻐَﻀِﺐَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﺭَﺿِﻴﻨَﺎ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﺭَﺑًّﺎ، ﻭَﺑِﺎﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺩِﻳﻨًﺎ، ﻭَﺑِﻤُﺤَﻤَّﺪٍ
ﺭَﺳُﻮﻟًﺎ، ﻭَﺑِﺒَﻴْﻌَﺘِﻨَﺎ ﺑَﻴْﻌَﺔً. ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺴُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻟَﺎ ﺻَﺎﻡَ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﺃَﻭْ ﻣَﺎ
ﺻَﺎﻡَ ﻭَﻣَﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺴُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ ﻭَﺇِﻓْﻄَﺎﺭِ ﻳَﻮْﻡٍ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻣَﻦْ ﻳُﻄِﻴﻖُ ﺫَﻟِﻚَ » ﻗَﺎﻝَ:
ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡٍ، ﻭَﺇِﻓْﻄَﺎﺭِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻟَﻴْﺖَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻗَﻮَّﺍﻧَﺎ ﻟِﺬَﻟِﻚَ » ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ
ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡٍ، ﻭَﺇِﻓْﻄَﺎﺭِ ﻳَﻮْﻡٍ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺫَﺍﻙَ ﺻَﻮْﻡُ ﺃَﺧِﻲ ﺩَﺍﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡ ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ
ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ؟ ﻗَﺎﻝَ: « ﺫَﺍﻙَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻓِﻴﻪِ، ﻭَﻳَﻮْﻡٌ ﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺃَﻭْ ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻓِﻴﻪِ ﻗَﺎﻝَ:
ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺻَﻮْﻡُ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٍ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻭَﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺻَﻮْﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ
ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺮَﻓَﺔَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳُﻜَﻔِّﺮُ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔَ ﺍﻟْﻤَﺎﺿِﻴَﺔَ ﻭَﺍﻟْﺒَﺎﻗِﻴَﺔَ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ
ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳُﻜَﻔِّﺮُ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔَ ﺍﻟْﻤَﺎﺿِﻴَﺔَ ﻭَﻓِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﻣِﻦْ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺷُﻌْﺒَﺔَ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺳُﺌِﻞَ
ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ؟ ﻓَﺴَﻜَﺘْﻨَﺎ ﻋَﻦْ ﺫِﻛْﺮِ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻟَﻤَّﺎ ﻧُﺮَﺍﻩُ ﻭَﻫْﻤًﺎ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। এতে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অন্তুষ্ট হলেন। তখন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন,
আমরা আল্লাহর ওপর (আমাদের) রব
হিসেবে, ইসলামের ওপর (আমাদের) দীন
হিসেবে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের ওপর (আমাদের) রাসূল হিসেবে এবং
আমাদের কৃত বায়‘আতের ওপর আমরা সন্তুষ্ট। অতঃপর
সারা বছর সাওম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলো। তিনি বললেন, সে ব্যক্তি সাওম পালন করে
নি, ইফতারও করে নি বা সে ব্যক্তি সাওম পালন
করে নি এবং সাওমহীনও থাকে নি। অতঃপর
একাধারে দুই দিন সাওম পালন করা ও এক দিন সাওম
পালন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো।
তিনি বললেন এভাবে সাওম পালনের সামর্থ্য কার
আছে? অতঃপর একদিন সাওম পালন ও দু দিন সাওম
ত্যাগ করা সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি
বললেন, আল্লাহ যেন আমাদের এরূপ সাওম পালনের
সামর্থ্য দান করেন। অতঃপর একদিন সাওম পালন
করা ও একদিন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলো। তিনি বললেন, তা আমার ভাই দাঊদ
আলাইহিস সালামের সাওম। অতঃপর সোমবারের
সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন,
এই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনই আমি
নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি বা আমার ওপর (কুরআন)
নাযিল করা হয়েছে। আরও বললেন, প্রতি মাসে তিন
দিন এবং গোটা রমযান মাস সাওম পালন করাই
হলো সারা বছর সাওম পালনের সমতুল্য। অতঃপর
‘আরাফাহ দিবসের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলে তিনি বললেন, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী
বছরের শুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। অতঃপর
‘আশুরার সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি
বললেন, তাতে বিগত বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে
যাবে। এই হাদীসে শু‘বা রহ.-এর বর্ণনায় আরও
আছে, অতঃপর সোমবার ও বৃহস্প্রতিবারের সাওম
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। কিন্তু আমাদের
মতে বৃহস্পতিবারের কথা ভুলবশত বর্ণিত
হয়েছে, তাই আমরা তার উল্লেখ থেকে বিরত
থাকলাম।”[203]
ঈদের দিনে সাওম পালন
বনু আযহারের আযাদকৃত গোলাম আবু ‘উবায়দ রহ.
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﺍﻟﻌِﻴﺪَ ﻣَﻊَ ﻋُﻤَﺮَ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺨَﻄَّﺎﺏِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: «ﻫَﺬَﺍﻥِ ﻳَﻮْﻣَﺎﻥِ ﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻣِﻬِﻤَﺎ: ﻳَﻮْﻡُ ﻓِﻄْﺮِﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﺻِﻴَﺎﻣِﻜُﻢْ، ﻭَﺍﻟﻴَﻮْﻡُ ﺍﻵﺧَﺮُ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﻥَ
ﻓِﻴﻪِ ﻣِﻦْ ﻧُﺴُﻜِﻜُﻢْ »
“আমি একবার ঈদে উমার ইবন খাত্তাব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সঙ্গে ছিলাম, তখন তিনি
বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এই দুই দিনে সাওম পালন করতে নিষেধ
করেছেন। (ঈদুল ফিতরের দিন) যে দিন তোমরা
তোমাদের সাওম ছেড়ে দাও। আরেক দিন, যেদিন
তোমরা তোমাদের কুরবানীর গোশত খাও।” [204]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ، ﻭَﻳَﻮْﻡِ
ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দু’দিন সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন। এক হলো
কুরবানীর দিন আর দ্বিতীয় হলো ঈদুল ফিতরের
দিন।”[205]
কাযাআ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﺣَﺪِﻳﺜًﺎ ﻓَﺄَﻋْﺠَﺒَﻨِﻲ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ: ﺁﻧْﺖَ ﺳَﻤِﻌْﺖَ ﻫَﺬَﺍ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺄَﻗُﻮﻝُ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﺳْﻤَﻊْ؟ ﻗَﺎﻝَ:
ﺳَﻤِﻌْﺘُﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﻟَﺎ ﻳَﺼْﻠُﺢُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ: ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ ﻭَﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“আমি আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে একটি
হাদীস শ্রবণ করেছি। হাদীসটি আমার কাছে খুবই
ভালো লেগেছে। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা
করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে আপনি এ হাদীস শুনেছেন
কি? তিনি বললেন, যে কথা আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনি নি
এমন কথা তাঁর দিকে সম্বোধন করে আমি বলতে
পারি কি? আমি শুনেছি তিনি বলেছেন, দু’দিন
সাওম পালন করা শুদ্ধ নয়, ঈদুল আযহার দিন এবং ঈদুল
ফিতরের দিন।” [206]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ، ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻭَﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দু’দিন অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর দিন
সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।” [207]
যিয়াদ ইবন জুবায়র রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﻧِّﻲ ﻧَﺬَﺭْﺕُ ﺃَﻥْ ﺃَﺻُﻮﻡَ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻓَﻮَﺍﻓَﻖَ
ﻳَﻮْﻡَ ﺃَﺿْﺤَﻰ ﺃَﻭْ ﻓِﻄْﺮٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ: ﺃَﻣَﺮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺑِﻮَﻓَﺎﺀِ ﺍﻟﻨَّﺬْﺭِ،
ﻭَﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ »
“এক ব্যক্তি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট
এসে বললেন, আমি এক দিন সাওম পালন করার মানত
করেছিলাম। ঘটনাক্রমে তা ঈদুল আযহা বা ঈদুল
ফিতরের দিন হয়ে গেছে। তখন তিনি
বললেন, আল্লাহ তা‘আলা মানত পূর্ণ করার নির্দেশ
দিয়েছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এ দিন সাওম পালন করতে নিষেধ
করেছেন।” [208]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
« ﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻣَﻴْﻦِ: ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻭَﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা -এ দু’দিন সাওম পালন
করতে নিষেধ করেছেন।” [209]
আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
« ﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ، ﻭَﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻤَّﺎﺀِ، ﻭَﺃَﻥْ
ﻳَﺤْﺘَﺒِﻲَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻓِﻲ ﺛَﻮْﺏٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ، ﻭَﻋَﻦْ ﺻَﻼَﺓٍ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ ﻭَﺍﻟﻌَﺼْﺮِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন সাওম
পালন করা থেকে, ‘সাম্মা’ ধরনের কাপড় পরিধান
করতে, এক কাপড় পরিধানরত অবস্থায় দুই হাঁটু তুলে
নিতম্বের উপর বসতে (কেননা এতে সতর প্রকাশ
পাওয়ার আশংকা রয়েছে) এবং ফজর ও ‘আসরের পরে
সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।” [210]
কুরবানীর দিনে সাওম পালন
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻳُﻨْﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻣَﻴْﻦِ، ﻭَﺑَﻴْﻌَﺘَﻴْﻦِ: ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ، ﻭَﺍﻟﻤُﻼَﻣَﺴَﺔِ ﻭَﺍﻟﻤُﻨَﺎﺑَﺬَﺓِ »
“দু’দিনের সাওম ও দু’প্রকারের ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ
করা হয়েছে, ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর (দিনের) সাওম
এবং মুলামাসা (পণ্য স্পর্শ করলেই ক্রয় বাধ্য হয়ে
যাওয়া)ও মুনাবাযা (ক্রেতার প্রতি নিক্ষেপ করলেই
ক্রয় বাধ্য হওয়া) পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় থেকে
নিষেধ করা হয়েছে”। [211]
যিয়াদ ইবন জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺭَﺟُﻞٌ ﻧَﺬَﺭَ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻡَ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻇُﻨُّﻪُ
ﻗَﺎﻝَ: ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ، ﻓَﻮَﺍﻓَﻖَ ﺫَﻟِﻚَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋِﻴﺪٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ: ﺃَﻣَﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻮَﻓَﺎﺀِ ﺍﻟﻨَّﺬْﺭِ ﻭَﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﻴَﻮْﻡِ »
“এক ব্যক্তি এসে ‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলল যে, এক ব্যক্তি কোনো
এক দিনের সাওম পালন করার মানত করেছে, আমার
মনে হয় সে সোমবারের কথা বলেছিল। ঘটনাক্রমে ঐ
দিন ঈদের দিন পড়ে যায়। ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আল্লাহ তা‘আলা
মানত পুরা করার নির্দেশ দিয়েছেন আর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ (ঈদের) দিনে
সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।” [212]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে (সনদসহ)
বর্ণিত, যিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বারোটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ
করেছেন, তিনি বলেন,
« ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻤَﻠِﻚِ ﺑْﻦُ ﻋُﻤَﻴْﺮٍ، ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻗَﺰَﻋَﺔَ ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺃَﺑَﺎ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪْﺭِﻱَّ ﺭَﺿِﻲَ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ : ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻏَﺰَﺍ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺛِﻨْﺘَﻲْ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﻏَﺰْﻭَﺓً ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ
ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺄَﻋْﺠَﺒْﻨَﻨِﻲ، ﻗَﺎﻝَ: ﻻَ ﺗُﺴَﺎﻓِﺮِ ﺍﻟﻤَﺮْﺃَﺓُ ﻣَﺴِﻴﺮَﺓَ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ
ﺇِﻟَّﺎ ﻭَﻣَﻌَﻬَﺎ ﺯَﻭْﺟُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺫُﻭ ﻣَﺤْﺮَﻡٍ، ﻭَﻻَ ﺻَﻮْﻡَ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ : ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻷَﺿْﺤَﻰ، ﻭَﻻَ ﺻَﻼَﺓَ ﺑَﻌْﺪَ
ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻄْﻠُﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ، ﻭَﻻَ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﻌَﺼْﺮِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻐْﺮُﺏَ، ﻭَﻻَ ﺗُﺸَﺪُّ ﺍﻟﺮِّﺣَﺎﻝُ ﺇِﻟَّﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺛَﻼَﺛَﺔِ
ﻣَﺴَﺎﺟِﺪَ: ﻣَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟﺤَﺮَﺍﻡِ، ﻭَﻣَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻷَﻗْﺼَﻰ، ﻭَﻣَﺴْﺠِﺪِﻱ ﻫَﺬَﺍ »
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে চারটি কথা শুনেছি, যা আমার খুব ভাল
লেগেছে। তিনি বলেছেন, স্বামী অথবা মাহরাম
(যার সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধ) পুরুষ ছাড়া কোনো
নারী যেন দুই দিনের দূরত্বের সফর না করে। ঈদুল
ফিতর ও কুরবানীর দিনে সাওম নেই। ফজরের
সালাতের পরে সূর্যোদয় এবং ‘আসরের সালাতের
পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো সালাত নেই। মসজিদে
হারাম, মসজিদে আকসা ও আমার এই মসজিদ ব্যতীত
অন্য কোনো মসজিদের উদ্দেশ্যে কেউ যেন সফর না
করে।”[213]
আইয়ামুত তাশরিকে সাওম পালন
হিশাম রহ. তার পিতার থেকে বর্ণনা করেন যে,
«ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ ﺑِﻤِﻨًﻰ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺃَﺑُﻮﻫَﺎ ﻳَﺼُﻮﻣُﻬَﺎ »
“আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা আইয়ামুত তাশরিকে
মিনায় সাওম পালন করতেন, তার পিতাও সে দিন
গুলোতে সাওম পালন করতেন”। [214]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে
বলেন,
«ﻟَﻢْ ﻳُﺮَﺧَّﺺْ ﻓِﻲ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻤْﻦَ، ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺠِﺪِ ﺍﻟﻬَﺪْﻱَ »
“যাঁর নিকট কুরবানীর পশু নেই তিনি ছাড়া অন্য
কারও জন্য আইয়্যামে তাশরীকে সাওম পালন করার
অনুমতি দেওয়া হয় নি”। [215]
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻟِﻤَﻦْ ﺗَﻤَﺘَّﻊَ ﺑِﺎﻟﻌُﻤْﺮَﺓِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺤَﺞِّ ﺇِﻟَﻰ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺮَﻓَﺔَ، ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺠِﺪْ ﻫَﺪْﻳًﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺼُﻢْ، ﺻَﺎﻡَ
ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﻣِﻨًﻰ »
“যে ব্যক্তি একই সঙ্গে হজ ও ‘উমরা পালনের সুযোগ
লাভ করলো সে ‘আরাফাত দিবস পর্যন্ত সাওম পালন
করবে।
সে যদি কুরবানী না করতে পারে এবং সাওমও
পালন না করে থাকে তবে মিনার দিনগুলোতে
সাওম পালন করবে”। [216]
নুবাইশা আল-হুযালী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﺃَﻛْﻞٍ ﻭَﺷُﺮْﺏٍ »
“আইয়্যামে তাশরীক পানাহারের দিন”। [217]
কা‘ব ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑَﻌَﺜَﻪُ ﻭَﺃَﻭْﺱَ ﺑْﻦَ ﺍﻟْﺤَﺪَﺛَﺎﻥِ ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ، ﻓَﻨَﺎﺩَﻯ
«ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﺃَﻳَّﺎﻡُ ﻣِﻨًﻰ ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﺃَﻛْﻞٍ ﻭَﺷُﺮْﺏٍ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে এবং আউস ইবন
হাদসান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে আইয়্যামে
তাশরীকের সময় পাঠালেন এবং বলে দিলেন
তোমরা ঘোষণা করে দাও যে, মুমিনগণই জান্নাতে
প্রবেশ করবে এবং আইয়্যামে মিনা (আইয়্যামে
তাশরীক) পানাহার করবার দিন।” [218]
আশুরার দিনে সাওম পালন
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻗُﺮَﻳْﺶٌ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻫَﺎﺟَﺮَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ، ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓُﺮِﺽَ ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻗَﺎﻝَ:
«ﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺗَﺮَﻛَﻪُ »
“জাহেলী যুগে কুরাইশের লোকেরা ‘আশুরার দিন
সাওম পালন করতো। রমযানের সাওম ফরয হওয়ার
পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এবং মুসলিমগণ এ দিন সাওম রাখতেন।
অতঃপর মদীনায় হিজরত করার পরার পর যখন
রমযানের সাওম ফরয হলো তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে
চায় ঐ দিনের সাওম রাখতে পারে আর যে চায় নাও
রাখতে পারে।” [219]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﺎﻡُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡُ ﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ
ﺗَﺮَﻛَﻪُ »
“রমযানের সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিনে সাওম পালন করার নির্দেশ দিতেন।
যখন রমযানের সাওম ফরয করা হলো তখন যার ইচ্ছা
সে আশুরার দিনে সাওম পালন করতো আর যার ইচ্ছা
সে তা ছেড়ে দিতো”। [220]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺄْﻣُﺮُ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳُﻔْﺮَﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓُﺮِﺽَ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻛَﺎﻥَ ﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻡَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺃَﻓْﻄَﺮَ »
“কুরায়শরা জাহিলী যুগে ‘আশুরার দিন সাওম
পালন করত। রমযানের সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
এদিন সাওম পালন করার নির্দেশ দিতেন। রমযানের
সাওম ফরয হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যার
ইচ্ছা, সে এদিন সাওম পালন করবে, আর যার ইচ্ছা
সে তা ছেড়ে দেবে”। [221]
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
(সনদসহ) বর্ণিত,
«ﻋَﻦْ ﻧَﺎﻓِﻊٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﺃَﻥَّ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ
ﻳَﺼُﻮﻣُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺎﻣَﻪُ، ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤُﻮﻥَ ﻗَﺒْﻞَ
ﺃَﻥْ ﻳُﻔْﺘَﺮَﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍﻓْﺘُﺮِﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﺇِﻥَّ
ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻓَﻤَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺗَﺮَﻛَﻪُ »
“জাহেলী যুগে লোকেরা আশুরার দিন সাওম
রাখতো। রমযানের সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এবং মুসলিমগণ এ দিন সাওম রাখতেন। অতঃপর যখন
রমযানের সাওম ফরয হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর দিনগুলোর
মধ্যে ‘আশুরাও একটি দিন। কাজেই যে চায় ঐ দিনের
সাওম রাখতে পারে আর যে চায় নাও রাখতে
পারে।” [222]
ইবন ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
«ﺃَﻧَّﻪُ ﺫُﻛِﺮَ ﻋِﻨْﺪَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻣَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺼُﻤْﻪُ،
ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺮِﻩَ ﻓَﻠْﻴَﺪَﻋْﻪُ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সামনে ‘আশুরা সর্ম্পকে কথা উঠলো। তিনি
বললেন, “জাহেলী যুগের লোকেরা ঐ দিন
সাওম রাখতো। সুতরাং এখন তোমাদের কেউ যদি ঐ
দিন সাওম রাখা পছন্দ করে তাহলে সে ঐ দিন
সাওম রাখতে পারে। আর অপছন্দ করলে সে নাও
রাখতে পারে”। [223]
নাফে‘ বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
তার কাছে বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘আশুরার
দিন বলতে শুনেছেন,
« ﺇِﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻣَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺼُﻤْﻪُ، ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ
ﻳَﺘْﺮُﻛَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺘْﺮُﻛْﻪُ » ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﻮَﺍﻓِﻖَ ﺻِﻴَﺎﻣَﻪُ "
“আজকের এ দিনে জাহেলী যুগের লোকেরা সাওম
রাখতো। সুতরাং যে ব্যক্তি এ দিনের সাওম রাখা
পছন্দ করে সে যেন ( এ দিনে ) সাওম রাখে। আর যে
ব্যক্তি অপছন্দ করে সে যেন এ দিনের সাওম থেকে
বিরত থাকে। আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঐ দিন
সাওম রাখলো না। কিন্তু যেসব দিনে তিনি সাওম
রাখার অভ্যস্ত ছিলেন এর কোনো একদিন ‘আশুরা
হলে তিনি সেদিনও সাওম রাখতেন”। [224]
‘আব্দুর রহমান ইবন ইয়াযীদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺚُ ﺑْﻦُ ﻗَﻴْﺲٍ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺘَﻐَﺪَّﻯ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﺩْﻥُ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟْﻐَﺪَﺍﺀِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻭَﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻫَﻞْ ﺗَﺪْﺭِﻱ ﻣَﺎ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ؟ ﻗَﺎﻝَ:
ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻮَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ
ﻳَﻨْﺰِﻝَ ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻧَﺰَﻝَ ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺗُﺮِﻙَ » ﻭﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﻛُﺮَﻳْﺐٍ ﺗَﺮَﻛَﻪُ ».
“আশ‘আস ইবন কায়স রহ. আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট গেলেন, তখন তিনি
দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, হে আবু
মুহাম্মদ! তুমি খাবার জন্য কাছে এসো। তিনি
বললেন, আজ কি ‘আশুরার দিন নয়? তিনি
বললেন, তুমি কি জানো ‘আশুরা দিবস কী? আশ‘আস
রহ. বললেন, সে আবার কী? তিনি বললেন, রমযানের
সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম পালন
করতেন। যখন রমযানের সাওম ফরয হলো তখন তা
ছেড়ে দেওয়া হলো”। [225]
কায়স ইবন সাকান রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺚَ ﺑْﻦَ ﻗَﻴْﺲٍ، ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ
ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﺩْﻥُ ﻓَﻜُﻞْ، ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺛُﻢَّ ﺗُﺮِﻙَ »
“আশুরার দিন আশ‘আস ইবন কায়স রহ. আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে আসলেন। এ সময় তিনি
আহার করছিলেন। তিনি আশ‘আসকে লক্ষ্য করে
বললেন, হে আবু মুহাম্মদ! নিকটে এসো, খানা খাও।
তিনি বললেন, আমি তো সাওম পালন করছি। এ কথা
শুনে ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমরা
এ সাওম পালন করতাম। পরে তা ছেড়ে দেওয়া
হয়েছে।” [226]
‘আলকামা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺚُ ﺑْﻦُ ﻗَﻴْﺲٍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻋَﺒْﺪِ
ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ، ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻗَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﺎﻡُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﺰِﻝَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻧَﺰَﻝَ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﺗُﺮِﻙَ، ﻓَﺈِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﻓَﺎﻃْﻌَﻢْ »
“আশ‘আস ইবন কায়স রহ. ইবন মাসউদ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট গেলেন। সেটা ‘আশুরার
দিন ছিল। তখন তিনি খানা খাচ্ছিলেন। এ দেখে
আশ‘আস রহ. বললেন, হে ‘আব্দুর রহমানের পিতা! আজ
তো ‘আশুরার দিন। তিনি বললেন, রমযানের সাওম
ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনে সাওম পালন”। [227]
জাবির ইবন সামুরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺄْﻣُﺮُﻧَﺎ ﺑِﺼِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻳَﺤُﺜُّﻨَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ،
ﻭَﻳَﺘَﻌَﺎﻫَﺪُﻧَﺎ ﻋِﻨْﺪَﻩُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓُﺮِﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻟَﻢْ ﻳَﺄْﻣُﺮْﻧَﺎ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻨْﻬَﻨَﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺘَﻌَﺎﻫَﺪْﻧَﺎ ﻋِﻨْﺪَﻩُ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিন আমাদেরকে সাওম পালনের নির্দেশ
দিতেন। তিনি এ ব্যাপারে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত
করতেন এবং এ বিষয়ে তিনি আমাদের খোঁজ-খবর
নিতেন। কিন্তু যখন রমযানের সাওম ফরয হলো, তখন
তিনি আমাদেরকে আদেশও করেন নি, বাধ্যও করেন
নি এবং কোনো খোঁজ-খবর আর নেন নি।” [228]
হুমাইদ ইবন ‘আব্দুর রহমান রহ. থেকে (সনদসহ) বর্ণিত,
«ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺷِﻬَﺎﺏٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺣُﻤَﻴْﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ، ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﻤِﻊَ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔَ ﺑْﻦَ ﺃَﺑِﻲ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥَ،
ﺧَﻄِﻴﺒًﺎ ﺑِﺎﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻓِﻲ ﻗَﺪْﻣَﺔٍ ﻗَﺪِﻣَﻬَﺎ ﺧَﻄَﺒَﻬُﻢْ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻳْﻦَ ﻋُﻠَﻤَﺎﺅُﻛُﻢْ؟ ﻳَﺎ
ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ، ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻟِﻬَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡُ
ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻜْﺘُﺐِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺻِﻴَﺎﻣَﻪُ، ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻡَ ﻓَﻠْﻴَﺼُﻢْ،
ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ ﻳُﻔْﻄِﺮَ ﻓَﻠْﻴُﻔْﻄِﺮْ »
“তিনি একদিন মু‘আবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে মদীনায় খুতবায় বলতে
শুনলেন অর্থাৎ যখন মদীনায় এসেছিলেন তখন
‘আশুরার দিবসে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে খুতবা
দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, হে
মদীনাবাসী! তোমাদের ‘আলেমগণ
কোথায়? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে এ দিন সম্পর্কে বলতে শুনেছি যে, এ
হলো ‘আশুরা দিবস। তোমাদের ওপর এ দিনের
সাওম ফরয করেন নি। তবে আমি সাওম পালন করছি।
তাই তোমাদের মধ্যে যে সাওম পালন করতে পছন্দ
করে, সে পালন করবে আর যে পছন্দ করে নি সে করবে
না।” [229]
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻗَﺪِﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﻓَﻮَﺟَﺪَ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ
ﻓَﺴُﺌِﻠُﻮﺍ ﻋَﻦْ ﺫَﻟِﻚَ؟ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ: ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃَﻇْﻬَﺮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻮﺳَﻰ، ﻭَﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﻋَﻠَﻰ
ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ، ﻓَﻨَﺤْﻦُ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺗَﻌْﻈِﻴﻤًﺎ ﻟَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﻧَﺤْﻦُ ﺃَﻭْﻟَﻰ
ﺑِﻤُﻮﺳَﻰ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺄَﻣَﺮَ ﺑِﺼَﻮْﻣِﻪِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
(হিজরত করে) মদীনায় এলেন এবং তিনি
ইয়াহূদীদেরকে ‘আশুরার দিন সাওম পালন করতে
দেখতে পেলেন। এরপর তাদেরকে এ সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করার পর তারা বলল, এ সে দিন যে দিন
আল্লাহ মূসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাঈলকে
ফির‘আউনের ওপর বিজয়ী করেছিলেন। তাঁর
সম্মানার্থে আমরা সাওম পালন করে থাকি। তখন
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, “আমরা তোমাদের চেয়েও মূসা আলাইহিস
সালামের অধিক নিকটবর্তী। অতঃপর তিনি এ
দিনে সাওম পালন করার নির্দেশ দিলেন”। [230]
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ
ﻓَﻮَﺟَﺪَ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩَ ﺻِﻴَﺎﻣًﺎ، ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻬُﻢْ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﻣَﺎ
ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺗَﺼُﻮﻣُﻮﻧَﻪُ؟ » ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ: ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ، ﺃَﻧْﺠَﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻮﺳَﻰ ﻭَﻗَﻮْﻣَﻪُ،
ﻭَﻏَﺮَّﻕَ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻭَﻗَﻮْﻣَﻪُ، ﻓَﺼَﺎﻣَﻪُ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺷُﻜْﺮًﺍ، ﻓَﻨَﺤْﻦُ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﻓَﻨَﺤْﻦُ ﺃَﺣَﻖُّ ﻭَﺃَﻭْﻟَﻰ ﺑِﻤُﻮﺳَﻰ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺼَﺎﻣَﻪُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ »
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করে ইয়াহূদীদেরকে
‘আশুরার দিন সাওম পালনরত দেখতে পেলেন। এরপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোনো দিনের সাওম
পালন করছ? তারা বলল, এ মহান দিন আল্লাহ মুসা
আলাইহিস সালাম ও তাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি
দিয়েছেন এবং ফির‘আউন ও তার জাতিকে ডুবিয়ে
দিয়েছেন। এরপর মুসা আলাইহিস সালাম কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করার লক্ষ্যে এ দিনে সাওম পালন করেছেন।
তাই আমরাও এ দিনে সাওম পালন করছি। তারপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, “আমরা তো তোমাদের থেকে মূসা
আলাইহিস সালামের অধিক নিকটবর্তী এবং
হকদার। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাওম পালন করলেন এবং সাওম পালন
করার জন্য সকলকে নির্দেশ দিলেন”। [231]
আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﺗُﻌَﻈِّﻤُﻪُ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ، ﻭَﺗَﺘَّﺨِﺬُﻩُ ﻋِﻴﺪًﺍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺻُﻮﻣُﻮﻩُ ﺃَﻧْﺘُﻢْ »
“ইয়াহূদী সম্প্রদায় ‘আশুরা দিবসের সম্মান প্রদর্শন
করতো এবং তারা এ দিনকে ঈদ বলে গণ্য করতো।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এ দিনে সাওম পালন
কর”। [232]
আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺃَﻫْﻞُ ﺧَﻴْﺒَﺮَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻳَﺘَّﺨِﺬُﻭﻧَﻪُ ﻋِﻴﺪًﺍ ﻭَﻳُﻠْﺒِﺴُﻮﻥَ ﻧِﺴَﺎﺀَﻫُﻢْ ﻓِﻴﻪِ ﺣُﻠِﻴَّﻬُﻢْ
ﻭَﺷَﺎﺭَﺗَﻬُﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﻓَﺼُﻮﻣُﻮﻩُ ﺃَﻧْﺘُﻢْ »
“খায়বারের ইয়াহূদীরা ‘আশুরার দিন সাওম পালন
করত, তারা এ দিনকে ঈদরূপে বরণ করত এবং তারা
তাদের মহিলাদেরকে অলঙ্কার ও উত্তম পোশাকে
সুসজ্জিত করত। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এ দিনে
সাওম পালন কর”। [233]
‘উবায়দুল্লাহ ইবন আবু ইয়াযীদ রহ. থেকে বর্ণিত,
তিনি ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে
শুনেছেন,
« ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻋَﻠِﻤْﺖُ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﺻَﺎﻡَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻳَﻄْﻠُﺐُ ﻓَﻀْﻠَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺄَﻳَّﺎﻡِ ﺇِﻟَّﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻭَﻟَﺎ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮَ ﻳَﻌْﻨِﻲ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ».
“ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে ‘আশুরার
দিনে সাওম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার
পর তিনি বললেন, এ দিন ব্যতীত রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো দিনকে
অন্য দিনের তূলনায় উত্তম মনে করে সেদিনে সাওম
পালন করেছেন বলে আমার জানা নেই। অনুরূপভাবে
রমযান ব্যতীত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোনো মাসকে অন্য মাসের তুলনায়
শ্রেষ্ঠ মনে করে সাওম পালন করেছেন বলেও আমার
জানা নেই।” [234]
হাকাম ইবন ‘আরাজ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺍﻧْﺘَﻬَﻴْﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﺘَﻮَﺳِّﺪٌ ﺭِﺩَﺍﺀَﻩُ ﻓِﻲ ﺯَﻣْﺰَﻡَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ:
ﺃَﺧْﺒِﺮْﻧِﻲ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﺫَﺍ ﺭَﺃَﻳْﺖَ ﻫِﻠَﺎﻝَ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡِ ﻓَﺎﻋْﺪُﺩْ، ﻭَﺃَﺻْﺒِﺢْ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊِ
ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﻗَﺎﻝَ: ﻧَﻌَﻢْ »
“আমি ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার কাছে
পৌঁছলাম। এ সময় তিনি যমযমের কাছে চাদর
বিছানো অবস্থায় বসা ছিলেন। তখন আমি তাঁকে
বললাম! আমাকে ‘আশুরা দিবসের সাওম পালন
সম্পর্কে সংবাদ দিন। উত্তরে তিনি
বললেন, মুহাররম মাসের চাঁদ দেখার পর তুমি এর
তারিখগুলো গুণে রাখবে। এরপর নবম তারিখে সাওম
অবস্থায় তোমার যেন ভোর হয়। তখন আমি তাঁকে
জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সেদিন সাওম পালন
করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, করেছেন”। [235]
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺣِﻴﻦَ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻧَّﻪُ ﻳَﻮْﻡٌ ﺗُﻌَﻈِّﻤُﻪُ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻُﻤْﻨَﺎ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊَ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺄْﺕِ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ،
ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﻮُﻓِّﻲَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন ‘আশুরার দিন সাওম পালন করেন এবং
লোকদেরকে সাওম পালনের নির্দেশ দেন তখন
সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইয়াহূদী এবং
নাসারা এ দিনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে
থাকে। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইনশাআল্লাহ
আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও সাওম পালন
করব। বর্ণনাকারী বলেন, এখনো আগামী বছর আসে
নি, এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের মৃত্যু হয়ে যায়।” [236]
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
«ﻟَﺌِﻦْ ﺑَﻘِﻴﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﻗَﺎﺑِﻞٍ ﻟَﺄَﺻُﻮﻣَﻦَّ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊَ » ﻭَﻓِﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮٍ: ﻗَﺎﻝَ: ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি যদি আগামী বছর
বেচে থাকি তবে মুহাররমের নবম তারিখেও সাওম
পালন করব”। আবু বকর রহ. বলেন, নবম তারিখই হচ্ছে
‘আশুরার দিন।[237]
সালামা ইবন আকও‘য়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺑَﻌَﺚَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺳْﻠَﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﺄَﻣَﺮَﻩُ ﺃَﻥْ ﻳُﺆَﺫِّﻥَ
ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ: « ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻢْ ﻳَﺼُﻢْ، ﻓَﻠْﻴَﺼُﻢْ ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﻛَﻞَ، ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ ﺻِﻴَﺎﻣَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিন আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তিকে
নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন লোকদের মধ্যে এ
কথা ঘোষণা করে যে যে সাওম পালন করেনি, সে
যেন সাওম পালন করে এবং যে আহার করেছে, সে
যেন রাত পর্যন্ত তার সাওম স্পর্শ করে”। [238]
রুবায়্যি‘ বিনত মু‘য়াওয়ায ইবন ‘আফরা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺃَﺭْﺳَﻞَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻏَﺪَﺍﺓَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﺇِﻟَﻰ ﻗُﺮَﻯ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِ، ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺣَﻮْﻝَ
ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ: ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ ﺻَﻮْﻣَﻪُ، ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ، ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ ﺑَﻘِﻴَّﺔَ ﻳَﻮْﻣِﻪِ
ﻓَﻜُﻨَّﺎ، ﺑَﻌْﺪَ ﺫَﻟِﻚَ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﻭَﻧُﺼَﻮِّﻡُ ﺻِﺒْﻴَﺎﻧَﻨَﺎ ﺍﻟﺼِّﻐَﺎﺭَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪُ، ﻭَﻧَﺬْﻫَﺐُ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻓَﻨَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠُّﻌْﺒَﺔَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌِﻬْﻦِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻜَﻰ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻄَّﻌَﺎﻡِ ﺃَﻋْﻄَﻴْﻨَﺎﻫَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ
ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟْﺈِﻓْﻄَﺎﺭِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিন ভোরে এক ব্যক্তিকে মদীনার
পার্শবর্তী আনসারী সাহাবীদের জনপদে এ
নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন এ ঘোষণা করে
দেয় যে, সাওমরত অবস্থায় যার ভোর হয়েছে, সে
যেন তার দিনকে পূর্ণ করে। আর যার ইফতার অবস্থায়
ভোর হয়েছে, সে যেন তার দিনের অবশিষ্ট অংশ
পানাহার থেকে বিরত অবস্থায় পূর্ণ করে। এরপর
আমরা এ দিন সাওম পালন করতাম এবং আমাদের
ছোট ছোট সন্তানদেরকেও আল্লাহ চাহে তো সাওম
পালনে অভ্যস্ত করে তুলতাম। আমরা তাদেরকে
মসজিদে নিয়ে যেতাম এবং তাদের জন্য পশমের
খেলনা বানিয়ে দিতাম। যখন তারা খাওয়ার জন্য
কাঁদত, তখন আমরা তাদেরকে সে খেলনা প্রদান
করতাম। এমনি করে ইফতারের সময় হয়ে যেত।” [239]
সোমবার ও বৃহস্পতিবার সাওম পালন
আবু কাতাদা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻓِﻴﻪِ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻭَﻓِﻴﻪِ
ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻲَّ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছে সোমবারের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলে তিনি বলেন, ঐ দিন আমার জন্ম হয়েছে এবং ঐ
দিন আমার ওপর (কুরআন) নাযিল হয়েছে”। [240]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺘَﺤَﺮَّﻯ ﺻَﻮْﻡَ ﺍﻻِﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟﺨَﻤِﻴﺲِ » .
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোম ও
বৃহস্পতিবারের সাওমের প্রতি খুবই খেয়াল
রাখতেন”। [241]
কেউ স্বাভাবিক সাওমের সাথে অন্য কিছু যেমন চুপ
থাকা ইত্যাদি মিশ্রিত করে
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺑَﻴْﻨَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺨْﻄُﺐُ، ﺇِﺫَﺍ ﻫُﻮَ ﺑِﺮَﺟُﻞٍ ﻗَﺎﺋِﻢٍ، ﻓَﺴَﺄَﻝَ ﻋَﻨْﻪُ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﺃَﺑُﻮ
ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ، ﻧَﺬَﺭَ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮﻡَ ﻭَﻻَ ﻳَﻘْﻌُﺪَ، ﻭَﻻَ ﻳَﺴْﺘَﻈِﻞَّ، ﻭَﻻَ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢَ، ﻭَﻳَﺼُﻮﻡَ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﻣُﺮْﻩُ ﻓَﻠْﻴَﺘَﻜَﻠَّﻢْ ﻭَﻟْﻴَﺴْﺘَﻈِﻞَّ ﻭَﻟْﻴَﻘْﻌُﺪْ، ﻭَﻟْﻴُﺘِﻢَّ ﺻَﻮْﻣَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻮَﻫَّﺎﺏِ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﺃَﻳُّﻮﺏُ، ﻋَﻦْ ﻋِﻜْﺮِﻣَﺔَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
খুতবা প্রদান করছিলেন। এক ব্যক্তিকে দাঁড়ানো
দেখে তার সম্পর্কে লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা
করলেন। লোকেরা বলল যে, এ লোকটির নাম আবু
ইসরাঈল। সে মানত করেছে যে, দাঁড়িয়ে
থাকবে, বসবে না, ছায়াতে যাবে না, কারও সঙ্গে
কথা বলবে না এবং সাওম পালন করবে। নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
লোকটিকে বলে দাও সে যেন কথা বলে, ছায়াতে
যায়, বসে এবং তার সাওম সমাপ্ত করে। ‘আব্দুল
ওয়াহহাব, আইউব ও ‘ইকরামা রহ. এর সূত্রে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অত্র
হাদীস বর্ণনা করেছেন।” [242]
রমযানে ‘উমরা পালনের ফযীলত
ইবন‘ আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﺤَﺞَّ ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻬَﺎ ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤَﻠِﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻋِﻨْﺪِﻱ ﻣَﺎ ﺃُﺣِﺠُّﻚِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ
ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤَﻠِﻚَ ﻓُﻠَﺎﻥٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺫَﺍﻙَ ﺣَﺒِﻴﺲٌ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ، ﻓَﺄَﺗَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﻥَّ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗِﻲ ﺗَﻘْﺮَﺃُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺳَﺄَﻟَﺘْﻨِﻲ ﺍﻟْﺤَﺞَّ
ﻣَﻌَﻚَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﻣَﺎ ﻋِﻨْﺪِﻱ ﻣَﺎ ﺃُﺣِﺠُّﻚِ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤَﻠِﻚَ ﻓُﻠَﺎﻥٍ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﺫَﺍﻙَ ﺣَﺒِﻴﺲٌ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﻣَﺎ
ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﻮْ ﺃَﺣْﺠَﺠْﺘَﻬَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺃَﻣَﺮَﺗْﻨِﻲ ﺃَﻥْ ﺃَﺳْﺄَﻟَﻚَ ﻣَﺎ ﻳَﻌْﺪِﻝُ ﺣَﺠَّﺔً
ﻣَﻌَﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺃَﻗْﺮِﺋْﻬَﺎ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺑَﺮَﻛَﺎﺗِﻪِ،
ﻭَﺃَﺧْﺒِﺮْﻫَﺎ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻌْﺪِﻝُ ﺣَﺠَّﺔً ﻣَﻌِﻲ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻋُﻤْﺮَﺓً ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
হজের (বিদায় হজ) ইচ্ছা পোষণ করলে জনৈকা
মহিলা (উম্মে মা‘কাল) তার
স্বামীকেবলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার নিকট এমন
কোনো উট নেই, যার দ্বারা আমি তোমাকে হজে
গমনের ব্যবস্থা করতে পারি।তখন সে স্ত্রীলোক
বলেন, আমাকে আপনার অমুক উটের দ্বারা হজে
প্রেরণের ব্যবস্থা করুন।জবাবে তিনি (স্বামী)
বললেন, এটা (উক্ত উট) তো
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য আবদ্ধ। তখন উক্ত
ব্যক্তি (স্বামী) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হয়ে বলেন,
আমার স্ত্রী আপনাকে সালাম বলেছেন। আর তিনি
আমার নিকট আপনার সাথে হজে যাওয়ার জন্য
বায়না ধরেছেন এবং বলেছেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হজে
গমনের ব্যবস্থা করে দিন। তখন আমি তাকে বলছি,
আমার নিকট এমন কিছু নেই, যার দ্বারা আমি
তোমাকে হজে পাঠাতে পারি। তখন সে বলেছে,
আমাকে আপনার অমুক উষ্ট্রযোগেহজে প্রেরণ করুন।
তখন আমি তাকে বলি, এ উট তো আল্লাহর রাস্তায়
জিহাদের জন্য আবদ্ধ অর্থাৎ নির্ধারিত।
এতদশ্রবণে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার পক্ষ থেকে তাকে
সালাম দেবে এবং বলবে, রমযানে উমরা পালন
আমার সাথে হজের সওয়াবের সমতুল্য হবে।” [243]
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﺄﻣﻮﻥ ﺍﻷﺯﻫﺮﻱ
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ﻣﺮﺍﺟﻌﺔ: ﺩ / ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺯﻛﺮﻳﺎ
উৎস: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ,
সৌদিআরব
বিশ্বকোষ (২য় পর্ব)
শা‘বান মাসের সাওম
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ " ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻘُﻮﻝَ: ﻻَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﺣَﺘَّﻰ
ﻧَﻘُﻮﻝَ : ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡُ، ﻓَﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﺳْﺘَﻜْﻤَﻞَ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﺷَﻬْﺮٍ ﺇِﻟَّﺎ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﺻِﻴَﺎﻣًﺎ ﻣِﻨْﻪُ ﻓِﻲ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একাধারে (এত বেশি) সাওম পালন করতেন
যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সাওম
পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি)
সাওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন
যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সাওম
পালন করবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ব্যতীত কোনো
পুরা মাসের সাওম পালন করতে দেখি নি এবং
শা’বান মাসের চেয়ে কোনো মাসে বেশি (নফল)
সাওম পালন করতে দেখি নি”। [164]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻡُ
ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻛُﻠَّﻪُ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺧُﺬُﻭﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻌَﻤَﻞِ ﻣَﺎ ﺗُﻄِﻴﻘُﻮﻥَ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻻَ ﻳَﻤَﻞُّ ﺣَﺘَّﻰ
ﺗَﻤَﻠُّﻮﺍ، ﻭَﺃَﺣَﺐُّ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺎ ﺩُﻭﻭِﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥْ ﻗَﻠَّﺖْ، ﻭَﻛَﺎﻥَ
ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺻَﻼَﺓً ﺩَﺍﻭَﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা‘বান
মাসের চেয়ে বেশি (নফল) সাওম কোনো মাসে
পালন করতেন না। তিনি (প্রায়) পুরা শা’বান মাসই
সাওম পালন করতেন এবং বলতেন, তোমাদের সাধ্যে
যতটুকু সাধ্য আছে ততটুকু (নফল) আমল কর। কারণ,
তোমরা (আমল করতে করতে) ক্লান্ত হয়ে না পড়া
পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা (সওয়াব দান) বন্ধ করেন
না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় সালাতই ছিল তাই যা
যথাযথ নিয়মে সর্বদা আদায় করা হত। যদিও তা
পরিমাণে কম হো এবং তিনি যখন কোনো (নফল)
সালাত আদায় করতেন পরবর্তীতে তা অব্যাহত
রাখতেন”। [165]
মুহাররম মাসের সাওম পালনের ফযীলত
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺷَﻬْﺮُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡُ، ﻭَﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟْﻔَﺮِﻳﻀَﺔِ، ﺻَﻠَﺎﺓُ
ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ »
“রমযানের সিয়ামের পর সর্বোত্তম সাওম হচ্ছে
আল্লাহর মাস মুহাররমের সাওম এবং ফরয সালাতের
পর সর্বোত্তম সালাত হচ্ছে রাতের সালাত”। [166]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺳُﺌِﻞَ: ﺃَﻱُّ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔِ؟ ﻭَﺃَﻱُّ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺑَﻌْﺪَ ﺷَﻬْﺮِ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ:
ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔِ، ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓُ ﻓِﻲ ﺟَﻮْﻑِ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻭَﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﺑَﻌْﺪَ ﺷَﻬْﺮِ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺻِﻴَﺎﻡُ ﺷَﻬْﺮِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে
জিজ্ঞাসা করা হলো, ফরয সালাতসমূহের পর
কোনো সালাত এবং রমযান মাসের সিয়ামের পর
কোনো সাওম সর্বোত্তম? বললেন, ফরয
সালাতসমূহের পর গভীর রাতের সালাত সর্বোত্তম
এবং রমযান মাসের সিয়ামের পর আল্লাহর মাস
মুহাররমের সাওম সর্বোত্তম”। [167]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম
পালন করা ও না করার বর্ণনা
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻣَﺎ ﺻَﺎﻡَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﻛَﺎﻣِﻠًﺎ ﻗَﻂُّ ﻏَﻴْﺮَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻭَﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ
ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻞُ: ﻻَ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻻَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﺍﻟﻘَﺎﺋِﻞُ: ﻻَ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡُ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান
ব্যতীত কোনো মাসে পুরা মাসের সাওম পালন
করেন নাই। তিনি এমনভাবে (নফল) সাওম পালন
করতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে
পারতো, আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন
পরিত্যাগ করবেন না। আবার এমনভাবে (নফল) সাওম
ছেড়ে দিতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো
আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন করবেন না”।
[168]
হুমাইদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি আনাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﻔْﻄِﺮُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻈُﻦَّ ﺃَﻥْ ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡَ ﻣِﻨْﻪُ،
ﻭَﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻈُﻦَّ ﺃَﻥْ ﻻَ ﻳُﻔْﻄِﺮَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻴْﺌًﺎ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻻَ ﺗَﺸَﺎﺀُ ﺗَﺮَﺍﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻣُﺼَﻠِّﻴًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘَﻪُ،
ﻭَﻻَ ﻧَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘَﻪُ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥُ، ﻋَﻦْ ﺣُﻤَﻴْﺪٍ، ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﺄَﻝَ ﺃَﻧَﺴًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻮْﻡِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কোনো মাসে এভাবে সাওম ছেড়ে দিতেন
যে, আমরা মনে করতাম, তিনি এ মাসে আর সাওম
পালন করবেন না। আবার কোনো মাসে এভাবে
সাওম পালন করতেন যে, আমরা মনে করতাম তিনি এ
মাসে আর সাওম ছাড়বেন না। আর তুমি যদি তাঁকে
রাতে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে চাইতে
তবে তা দেখতে পেতে, আবার যদি তুমি তাঁকে
ঘুমন্ত দেখতে চাইতে তবে তাও দেখতে পেতে।
সুলায়মান রহ. হুমায়দ রহ. সূত্রে বলেন যে, তিনি
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সাওম সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করেছেন।” [169]
হুমাইদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নফল সাওমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা
করলে তিনি বললেন,
«ﻣَﺎ ﻛُﻨْﺖُ ﺃُﺣِﺐُّ ﺃَﻥْ ﺃَﺭَﺍﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ
ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻧَﺎﺋِﻤًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ، ﻭَﻻَ ﻣَﺴِﺴْﺖُ ﺧَﺰَّﺓً ﻭَﻻَ ﺣَﺮِﻳﺮَﺓً، ﺃَﻟْﻴَﻦَ ﻣِﻦْ ﻛَﻒِّ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﻻَ ﺷَﻤِﻤْﺖُ ﻣِﺴْﻜَﺔً، ﻭَﻻَ ﻋَﺒِﻴﺮَﺓً ﺃَﻃْﻴَﺐَ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔً ﻣِﻦْ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔِ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“যে কোনো মাসে আমি তাঁকে সাওম পালনরত
অবস্থায় দেখতে চেয়েছি, তাঁকে সে অবস্থায়
দেখেছি, আবার তাঁকে সাওম পালন না করা
অবস্থায় দেখতে চাইলে তাও দেখতে পেয়েছি।
রাতে যদি তাঁকে সালাত আদায়রত অবস্থায় দেখতে
চেয়েছি, তা প্রত্যক্ষ করেছি। আবার ঘুমন্ত দেখতে
চাইলে তাও দেখতে পেয়েছি। আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত
মোবারক থেকে নরম কোনো পশমী বা রেশমী
কাপড় স্পর্শ করি নি। আর আমি তাঁর (শরীরের)
ঘ্রাণ থেকে অধিক সুগন্ধযুক্ত কোনো মিশক বা
আম্বর পাই নি”। [170]
আব্দুল্লাহ ইবন শাকীক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺳَﺄَﻟْﺖُ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ، ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻛَﺎﻥَ
ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻘُﻮﻝَ: ﻗَﺪْ ﺻَﺎﻡَ، ﻗَﺪْ ﺻَﺎﻡَ، ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻘُﻮﻝَ : ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ، ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ:
ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﺻَﺎﻡَ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﻛَﺎﻣِﻠًﺎ، ﻣُﻨْﺬُ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“আমি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তিনি
সাওম পালন করতেন, এমনকি আমরা বলতাম তিনি
সাওম পালন করেই যাবেন। আবার তিনি ইফতার
অবস্থায় থাকতেন এমনকি আমরা বলাবলি
করতাম, তিনি সাওম ভঙ্গ করেই চলেছেন (আর সাওম
পালন করবেন না)। তিনি (আরও) বলেন, মদীনায়
তাশরীফ নেওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে রমযান ব্যতীত
পূর্ণ মাস সাওম পালন করতে দেখি নি।” [171]
‘আব্দুল্লাহ ইবন শাকীক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ: ﻫَﻞْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﺷَﻬْﺮًﺍ
ﻣَﻌْﻠُﻮﻣًﺎ ﺳِﻮَﻯ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻭَﺍﻟﻠﻪِ، ﺇِﻥْ ﺻَﺎﻡَ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﻣَﻌْﻠُﻮﻣًﺎ ﺳِﻮَﻯ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﻀَﻰ
ﻟِﻮَﺟْﻬِﻪِ، ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَﻩُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺼِﻴﺐَ ﻣِﻨْﻪُ »
“আমি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে
জিজ্ঞাসা করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম রমযান ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে পূর্ণ
মাস সাওম পালন করেছেন কি? তিনি বললেন,
আল্লাহর কসম! রমযান ব্যতীত অন্য সময়ে তিনি পূর্ণ
মাস সাওম পালন করেন নি, এমনকি তিনি
ইন্তেকাল করেছেন। আবার পুরো মাসও সাওম
ভঙ্গকারী হতেন না, বরং তা থেকে কিছু না কিছু
সাওম পালন করতেন । ”[172]
নফল সাওম পালনের ব্যাপারে মেহমানের হক
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻲَّ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺬَﻛَﺮَ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚَ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺭِﻙَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ
ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﻭَﻣَﺎ ﺻَﻮْﻡُ ﺩَﺍﻭُﺩَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧِﺼْﻒُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমার কাছে এলেন। এরপর তিনি (‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) হাদীসটি বর্ণনা করেন অর্থাৎ
তোমার ওপর মেহমানের হক আছে, তোমার ওপর
তোমার স্ত্রীর হক আছে। আমি জিজ্ঞাসা
করলাম, সাওমে দাউদ আলাইহিস সালাম
কী? তিনি বললেন, ‘অর্ধেক বছর’-এর সাওম পালন
করা”। [173]
নফল সাওমে শরীরের হক
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻗَﺎﻝَ ﻟِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﻳَﺎ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﻟَﻢْ ﺃُﺧْﺒَﺮْ ﺃَﻧَّﻚَ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭَ،
ﻭَﺗَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ؟ » ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﺑَﻠَﻰ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻗَﺎﻝَ: « ﻓَﻼَ ﺗَﻔْﻌَﻞْ ﺻُﻢْ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ، ﻭَﻗُﻢْ ﻭَﻧَﻢْ، ﻓَﺈِﻥَّ
ﻟِﺠَﺴَﺪِﻙَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻌَﻴْﻨِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﺰَﻭْﺭِﻙَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ
ﺣَﻘًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺑِﺤَﺴْﺒِﻚَ ﺃَﻥْ ﺗَﺼُﻮﻡَ ﻛُﻞَّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺛَﻼَﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻚَ ﺑِﻜُﻞِّ ﺣَﺴَﻨَﺔٍ ﻋَﺸْﺮَ ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ، ﻓَﺈِﻥَّ
ﺫَﻟِﻚَ ﺻِﻴَﺎﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ ﻛُﻠِّﻪِ، ﻓَﺸَﺪَّﺩْﺕُ، ﻓَﺸُﺪِّﺩَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺟِﺪُ ﻗُﻮَّﺓً ﻗَﺎﻝَ:
ﻓَﺼُﻢْ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﻧَﺒِﻲِّ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻻَ ﺗَﺰِﺩْ ﻋَﻠَﻴْﻪِ » ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺻِﻴَﺎﻡُ ﻧَﺒِﻲِّ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧِﺼْﻒَ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺑَﻌْﺪَ ﻣَﺎ ﻛَﺒِﺮَ: ﻳَﺎ ﻟَﻴْﺘَﻨِﻲ ﻗَﺒِﻠْﺖُ
ﺭُﺧْﺼَﺔَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে বললেন, হে আব্দুল্লাহ! আমি এ সংবাদ
পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সাওম পালন কর এবং
সারা রাত সালাত আদায় করে থাক। আমি
বললাম, ঠিক (শুনেছেন) ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি
বললেন, এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সাওম
পালন কর আবার সাওম ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত
আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার ওপর
তোমার শরীরের হক আছে, তোমার চোখের হক
রয়েছে, তোমার ওপর তোমার স্ত্রীর হক
আছে, তোমার মেহমানের হক আছে। তোমার জন্য
যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম
পালন করবে। কেননা নেক আমলের পরিবর্তে
তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা
বছরের সাওম হয়ে যায়। আমি বললাম আমি এর
চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও
কঠিন আমলের অনুমতি দেওয়া হলো। আমি
বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আরো বেশি শক্তি
রাখি। তিনি বললেন, তবে আল্লাহর নবী দাঊদ
আলাইহিস সালামের সাওম পালন কর, এর থেকে
বেশি করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞাসা
করলাম, আল্লাহর নবী দাঊদ আলাইহিস সালামের
সাওম কেমন? তিনি বললেন, অর্ধেক বছর।
বর্ণনাকারী বলেন, ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত রুখসত
(সহজতর বিধান) কবুল করে নিতাম!” [174]
সারা বছর সাওম পালন করা
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
(সনদসহ) বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻋَﻦِ ﺍﻟﺰُّﻫْﺮِﻱِّ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪُ ﺑْﻦُ ﺍﻟﻤُﺴَﻴِّﺐِ، ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ، ﺃَﻥَّ ﻋَﺒْﺪَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦَ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃُﺧْﺒِﺮَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃَﻧِّﻲ ﺃَﻗُﻮﻝُ: ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟَﺄَﺻُﻮﻣَﻦَّ
ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭَ، ﻭَﻟَﺄَﻗُﻮﻣَﻦَّ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﻣَﺎ ﻋِﺸْﺖُ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ: ﻗَﺪْ ﻗُﻠْﺘُﻪُ ﺑِﺄَﺑِﻲ ﺃَﻧْﺖَ ﻭَﺃُﻣِّﻲ ﻗَﺎﻝَ: « ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﻻَ
ﺗَﺴْﺘَﻄِﻴﻊُ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﺼُﻢْ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ، ﻭَﻗُﻢْ ﻭَﻧَﻢْ، ﻭَﺻُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺛَﻼَﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﺤَﺴَﻨَﺔَ ﺑِﻌَﺸْﺮِ
ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ، ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻣِﺜْﻞُ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ، ﻗُﻠْﺖُ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ: « ﻓَﺼُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ
ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ، ﻗُﻠْﺖُ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺼُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻓَﺬَﻟِﻚَ
ﺻِﻴَﺎﻡُ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻻَ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
নিকট আমার সম্পর্কে এ কথা পৌছে যায় যে, আমি
বলেছি, আল্লাহর কসম, আমি যতদিন বেঁচে থাকব
ততদিন সাওম পালন করব এবং রাতভর সালাত আদায়
করব। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করায় আমি
বললাম, আপনার ওপর আমার পিতা-মাতা কুরবান
হোক! আমি একথা বলেছি। তিনি বললেন, তুমি তো
এরূপ করতে সক্ষম হবে না। বরং তুমি সাওম পালন কর
ও ছেড়েও দাও, (রাতে) সালাত আদায় কর ও নিদ্রা
যাও। তুমি মাসে তিন দিন করে সাওম পালন কর।
কারণ নেক কাজের ফল তার দশ গুন, এভাবেই সারা
বছরের সাওম পালন হয়ে যাবে। আমি বললাম, আমি
এর থেকে বেশি করার সামর্থ্য রাখি। তিনি
বললেন, তাহলে একদিন সাওম পালন কর এবং দু’দিন
ছেড়ে দাও। আমি বললাম আমি এর থেকে বেশি
করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে একদিন
সাওম পালন কর এবং একদিন ছেড়ে দাও। এটা হলো
দাঊদ আলাইহিস সালামের সাওম এবং এই হলো
সর্বোত্তম (সাওম)। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে
বেশি করার সামর্থ্য রাখি। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর চেয়ে উত্তম
সাওম (রাখার পদ্ধতি) আর নেই”। [175]
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺟَﺎﺀَ ﺛَﻼَﺛَﺔُ ﺭَﻫْﻂٍ ﺇِﻟَﻰ ﺑُﻴُﻮﺕِ ﺃَﺯْﻭَﺍﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺓِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃُﺧْﺒِﺮُﻭﺍ ﻛَﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﺗَﻘَﺎﻟُّﻮﻫَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ: ﻭَﺃَﻳْﻦَ ﻧَﺤْﻦُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻗَﺪْ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺄَﺧَّﺮَ، ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻢْ: ﺃَﻣَّﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺈِﻧِّﻲ
ﺃُﺻَﻠِّﻲ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﺃَﺑَﺪًﺍ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُ: ﺃَﻧَﺎ ﺃَﺻُﻮﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ ﻭَﻻَ ﺃُﻓْﻄِﺮُ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُ: ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻋْﺘَﺰِﻝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ
ﻓَﻼَ ﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺃَﺑَﺪًﺍ، ﻓَﺠَﺎﺀَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: « ﺃَﻧْﺘُﻢُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗُﻠْﺘُﻢْ
ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ، ﺃَﻣَﺎ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﺧْﺸَﺎﻛُﻢْ ﻟِﻠَّﻪِ ﻭَﺃَﺗْﻘَﺎﻛُﻢْ ﻟَﻪُ، ﻟَﻜِﻨِّﻲ ﺃَﺻُﻮﻡُ ﻭَﺃُﻓْﻄِﺮُ، ﻭَﺃُﺻَﻠِّﻲ ﻭَﺃَﺭْﻗُﺪُ،
ﻭَﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ، ﻓَﻤَﻦْ ﺭَﻏِﺐَ ﻋَﻦْ ﺳُﻨَّﺘِﻲ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣِﻨِّﻲ »
“তিন জনের একটি দল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের বিবিগণের গৃহে আগমন করলো। যখন
তাঁদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হলো, তখন তারা
এ ইবাদতের পরিমাণ যেন কম মনে করল এবং
বলল, আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সমকক্ষ থেকে পারি না। কারণ, তার
আগে ও পরের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়েছে।
এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা
জীবন রাতে সালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন
বলল, আমি সারা বছর সাওম পালন করব এবং কখনও
বিরতি দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী বিবর্জিত
থাকব, কখনও শাদী করব না। এরপর রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট
এলেন এবং বললেন, “তোমরা ঐ সকল ব্যক্তি যারা
এরূপ কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি
আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং
তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি আমি বেশ আনুগত্যশীল
অথচ আমি সাওম পালন করি, আবার সাওম থেকে
বিরতও থাকি। সালাত আদায় করি এবং ঘুমাই ও
বিয়ে-শাদী করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের
প্রতি বিরাগ ভাব পোষণ করবে, তারা আমার
দলভুক্ত নয়”। [176]
আবু আইয়্যুব আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗْﺒَﻌَﻪُ ﺳِﺘًّﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ، ﻛَﺎﻥَ ﻛَﺼِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
“রমযান মাসের সাওম পালন করে পরে শাওয়াল
মাসে ছয় দিন সাওম পালন করা সারা বছর সাওম
রাখার মতো”। [177]
আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺑُﻮ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﻬْﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﻞِ ﺍﻟﻐَﺰْﻭِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ
ﻗُﺒِﺾَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻢْ ﺃَﺭَﻩُ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﻓِﻄْﺮٍ ﺃَﻭْ ﺃَﺿْﺤَﻰ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
জীবনকালে আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
জিহাদের কারেণে সাওম পালন করতেন না। কিন্তু
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
ইন্তেকালের পর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ব্যতীত
তাকে কখনো সাওম ছেড়ে দিতে দেখি নি।” [178]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
বলতে শুনেছি যে,
«ﺷَﻬْﺮُ ﺍﻟﺼَّﺒْﺮِ، ﻭَﺛَﻠَﺎﺛَﺔُ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺻَﻮْﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
“ধৈর্যের মাস হলো রমযান মাস। আর প্রত্যেক মাসে
তিন দিন সাওম পালন করা সারা বছর সাওম পালন
করার সমতুল্য”। [179]
সাওম পালনের ব্যাপারে পরিবার পরিজনের হক
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত,
«ﺑَﻠَﻎَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺃَﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺮُﺩُ ﺍﻟﺼَّﻮْﻡَ، ﻭَﺃُﺻَﻠِّﻲ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ، ﻓَﺈِﻣَّﺎ ﺃَﺭْﺳَﻞَ ﺇِﻟَﻲَّ
ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﻟَﻘِﻴﺘُﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﻟَﻢْ ﺃُﺧْﺒَﺮْ ﺃَﻧَّﻚَ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﻭَﻻَ ﺗُﻔْﻄِﺮُ، ﻭَﺗُﺼَﻠِّﻲ؟ ﻓَﺼُﻢْ ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ، ﻭَﻗُﻢْ ﻭَﻧَﻢْ، ﻓَﺈِﻥَّ
ﻟِﻌَﻴْﻨِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻈًّﺎ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻚَ ﻭَﺃَﻫْﻠِﻚَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺣَﻈًّﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﻗْﻮَﻯ ﻟِﺬَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺼُﻢْ
ﺻِﻴَﺎﻡَ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻛَﻴْﻒَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻭَﻻَ ﻳَﻔِﺮُّ ﺇِﺫَﺍ
ﻻَﻗَﻰ، ﻗَﺎﻝَ: ﻣَﻦْ ﻟِﻲ ﺑِﻬَﺬِﻩِ ﻳَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ - ﻗَﺎﻝَ ﻋَﻄَﺎﺀٌ: ﻻَ ﺃَﺩْﺭِﻱ ﻛَﻴْﻒَ ﺫَﻛَﺮَ ﺻِﻴَﺎﻡَ ﺍﻷَﺑَﺪِ ﻗَﺎﻝَ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﻻَ ﺻَﺎﻡَ ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺍﻷَﺑَﺪَ ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট
এ সংবাদ পৌছে যে, আমি একটানা সাওম পালন
করি এবং রাতভর সালাত আদায় করি। এরপর হয়ত
তিনি আমার কাছে লোক পাঠালেন অথবা আমি
তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি বললেন, আমি
কি এ কথা ঠিক শুনি নাই যে, তুমি সাওম পালন
করতে থাক আর ছাড় না এবং তুমি (রাতভর) সালাত
আদায় করতে থাক আর ঘুমাও না? (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন), তুমি
সাওম পালন কর এবং মাঝে মাঝে তা ছেড়েও দাও।
রাতে সালাত আদায় কর এবং নিদ্রাও যাও। কেননা
তোমার ওপর তোমার চোখের হক রয়েছে এবং
তোমার নিজের শরীরের ও তোমার পরিবারের হক
তোমার ওপর আছে। ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
বললেন, আমি এর চেয়ে বেশি শক্তি রাখি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, তাহলে তুমি দাঊদ আলাইহিস সালামের
সাওম পালন কর। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, তা কীভাবে? তিনি
বললেন, দাঊদ আলাইহিস সালাম একদিন সাওম
পালন করতেন, একদিন ছেড়ে দিতেন এবং তিনি
(শত্রুর) সম্মুখীন হলে পলায়ন করতেন না। ‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে আল্লাহর
নবী, আমাকে এ শক্তি কে
যোগাবে? বর্ণনাকারী ‘আতা রহ. বলেন, (এ
হাদীসে) কীভাবে সব সময়ের সিয়ামের প্রসঙ্গ
আসে সে কথাটুকু আমার মনে নেই (অবশ্য) এতটুকু মনে
আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দু’বার এ কথাটি বলেছেন, “সব সময়ের সাওম কোনো
সাওম নয়”। [180]
একদিন সাওম পালন করা একদিন ছেড়ে দেওয়া
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
« ﺻُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﺛَﻼَﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﻤَﺎ ﺯَﺍﻝَ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺎﻝَ: ﺻُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ
ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺍﻗْﺮَﺇِ ﺍﻟﻘُﺮْﺁﻥَ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻓَﻤَﺎ ﺯَﺍﻝَ، ﺣَﺘَّﻰ
ﻗَﺎﻝَ: ﻓِﻲ ﺛَﻼَﺙٍ »
“তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম পালন কর।
‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি এর
চাইতে বেশি করার শক্তি রাখি। এভাবে তিনি
বৃদ্ধির আবেদন করতে লাগলেন যে, অবশেষে
রাসূলুল্লাহ বললেন, একদিন সাওম পালন কর এবং
একদিন ছেড়ে দাও এবং আরও বললেন, প্রতি মাসে
(এক খতম) কুরআন পাঠ কর। তিনি বললেন আমি এর
চেয়ে বেশি শক্তি রাখি। এভাবে বলতে
লাগলেন, অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তিন দিনে
(পাঠ কর)”। [181]
দাউদ আলাইহিস সালামের সাওম
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবনুল ‘আস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
« ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺘَﺼُﻮﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ، ﻭَﺗَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ؟، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻗَﺎﻝَ: « ﺇِﻧَّﻚَ ﺇِﺫَﺍ ﻓَﻌَﻠْﺖَ ﺫَﻟِﻚَ ﻫَﺠَﻤَﺖْ ﻟَﻪُ
ﺍﻟﻌَﻴْﻦُ، ﻭَﻧَﻔِﻬَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻻَ ﺻَﺎﻡَ ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ، ﺻَﻮْﻡُ ﺛَﻼَﺛَﺔِ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺻَﻮْﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ ﻛُﻠِّﻪِ،
ﻗُﻠْﺖُ: ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺃُﻃِﻴﻖُ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺼُﻢْ ﺻَﻮْﻡَ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻳَﻮْﻣًﺎ
ﻭَﻳُﻔْﻄِﺮُ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻭَﻻَ ﻳَﻔِﺮُّ ﺇِﺫَﺍ ﻻَﻗَﻰ »
“তুমি কি সব সময় সাওম পালন কর এবং রাতভর
সালাত আদায় করে থাক? আমি বললাম, জী হ্যাঁ।
তিনি বললেন, তুমি এরূপ করলে চোখ বসে যাবে এবং
শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে সারা বছর সাওম পালন
করে সে যেন সাওম পালন করে না। মাসে তিন দিন
করে সাওম পালন করা সারা বছর সাওম পালনের
সমতূল্য। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশি করার
সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি দাউদ
আলাইহিস সালামের সাওম পালন কর, তিনি একদিন
সাওম পালন করতেন আর একদিন ছেড়ে দিতেন এবং
যখন শত্রুর সম্মুখীন থেকেন তখন পলায়ন করতেন না”।
[182]
«ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻗِﻼَﺑَﺔَ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺃَﺑُﻮ ﺍﻟﻤَﻠِﻴﺢِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﻣَﻊَ ﺃَﺑِﻴﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ
ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻓَﺤَﺪَّﺛَﻨَﺎ: ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺫُﻛِﺮَ ﻟَﻪُ ﺻَﻮْﻣِﻲ، ﻓَﺪَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻲَّ،
ﻓَﺄَﻟْﻘَﻴْﺖُ ﻟَﻪُ ﻭِﺳَﺎﺩَﺓً ﻣِﻦْ ﺃَﺩَﻡٍ ﺣَﺸْﻮُﻫَﺎ ﻟِﻴﻒٌ، ﻓَﺠَﻠَﺲَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻷَﺭْﺽِ، ﻭَﺻَﺎﺭَﺕِ ﺍﻟﻮِﺳَﺎﺩَﺓُ ﺑَﻴْﻨِﻲ
ﻭَﺑَﻴْﻨَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻣَﺎ ﻳَﻜْﻔِﻴﻚَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺛَﻼَﺛَﺔُ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ:
ﺧَﻤْﺴًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﺒْﻌًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺗِﺴْﻌًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻋَﺸْﺮَﺓَ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﻻَ ﺻَﻮْﻡَ ﻓَﻮْﻕَ
ﺻَﻮْﻡِ ﺩَﺍﻭُﺩَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﺷَﻄْﺮَ ﺍﻟﺪَّﻫَﺮِ، ﺻُﻢْ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻭَﺃَﻓْﻄِﺮْ ﻳَﻮْﻣًﺎ »
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সূত্রে
বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আমার সাওমের
আলোচনা করায় তিনি আমার এখানে আগমন করেন।
আমি তাঁর জন্য খেজুরের ছালে পরিপূর্ণ চামড়ার
বালিশ (হেলান দিয়ে বসার জন্য) পেশ করলাম।
তিনি মাটিতে বসে পড়লেন। বালিশটি তাঁর ও
আমার মাঝে পড়ে থাকল। তিনি বললেন, প্রতি
মাসে তুমি তিন দিন সাওম রাখলে হয় না?
‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি
বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (আরো)। তিনি বললেন
সাতদিন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! (আরো)।
তিনি বললেন, নয় দিন। আমি বললাম, ইয়া
রাসুলাল্লাহ! (আরো)। তিনি বললেন, এগারো দিন।
এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, দাঊদ আলাইহিস সালামের সাওমের চেয়ে
উত্তম সাওম আর হয় না। অর্ধেক বছর, একদিন সাওম
পালন কর ও একদিন ছেড়ে দাও”। [183]
সাওমে বীয বা প্রতিমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে
সাওম পালন করা
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺃَﻭْﺻَﺎﻧِﻲ ﺧَﻠِﻴﻠِﻲ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑِﺜَﻼَﺙٍ: ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺛَﻼَﺛَﺔِ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻭَﺭَﻛْﻌَﺘَﻲِ
ﺍﻟﻀُّﺤَﻰ، ﻭَﺃَﻥْ ﺃُﻭﺗِﺮَ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺃَﻧَﺎﻡَ »
“আমার বন্ধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ
দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সাওম পালন
করা এবং দু’রাক‘আত সালাতুদ-দোহা এবং ঘুমানোর
পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা”। [184]
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔ ﺯَﻭْﺝ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﺃَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻳَﺼُﻮﻡُ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔَ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ؟ » ﻗَﺎﻟَﺖْ: «ﻧَﻌَﻢْ » ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻬَﺎ: «ﻣِﻦْ ﺃَﻱِّ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﻛَﺎﻥَ
ﻳَﺼُﻮﻡُ؟ » ﻗَﺎﻟَﺖْ: « ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻳُﺒَﺎﻟِﻲ ﻣِﻦْ ﺃَﻱِّ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ ﻳَﺼُﻮﻡُ »
এক তাবে‘ঈ বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের স্ত্রী ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে জানতে
চাইলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম পালন
করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি পূনরায় তাকে
জিজ্ঞাসা করলাম, মাসের কোনো কোনো দিন
তিনি সাওম পালন করতেন? ‘আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, তিনি মাসের যে
কোনো দিন সাওম পালন করতে দ্বিধা করতেন না।
[185]
সাওম পালনকারী কারো দাওয়াতে সাড়া দেওয়া
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦ ﻋُﻤَﺮ ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺫَﻫَﺐَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺪَّﺍﻋِﻲ , ﻓَﺈِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ , ﺩَﻋَﺎ ﺑِﺎﻟْﺒَﺮَﻛَﺔِ , ﺛُﻢَّ
ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ , ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﺟَﻠَﺲَ ﻓَﺄَﻛَﻞَ.
ﻗَﺎﻝَ ﻧَﺎﻓِﻊٌ: ﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: " ﺇﺫﺍ ﺩﻋﻴﺘﻢ ﺇﻟﻰ
ﻛﺮﺍﻉ ﻓﺄﺟﻴﺒﻮﺍ »
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেউ
দাওয়াত দিলে তিনি সেখানে যেতেন। সাওম
পালনকারী হলে সেখানে গিয়ে বরকতের দো‘আ
করে ফিরে আসতেন আর সাওম পালনকারী না হলে
বসতেন এবং খেতেন।
নাফি‘ রহ. বলেন, ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের বকরীর
পায়া খাওয়ার জন্যও দাওয়াত দেওয়া হয় তবুও
তোমরা তাতে সাড়া দিও”। [186]
জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﻓَﻠْﻴُﺠِﺐْ، ﻓَﺈِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﻃَﻌِﻢَ، ﻭَﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺗَﺮَﻙَ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺬْﻛُﺮِ ﺍﺑْﻦُ
ﺍﻟْﻤُﺜَﻨَّﻰ: ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ »
“যখন তোমাদের কাউকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত
দেওয়া হয়, তখন সে যেন দাওয়াতে সাড়া দেয়।
তারপর ইচ্ছা করলে আহার করবে, না হয় না করবে।
ইবন মুসান্না রহ. তার বর্ণনায় পানাহারের দিকে
কথাটি উল্লেখ করেন নি।” [187]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ، ﻓَﻠْﻴُﺠِﺐْ، ﻓَﺈِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ، ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ، ﻓَﻠْﻴَﻄْﻌَﻢْ »
“যখন তোমাদের কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয় সে যেন
তাতে সাড়া দেয়। যদি সে সাওম পালনকারী হয়
তাহলে সে (ওখানে গিয়ে) দো‘আ ও সালাতরত
থাকবে। আর যদি সাওম পালনকারী না হয় তাহলে
সে আহার করবে।” [188]
সাওম পালনকারীকে খাবারের জন্য ডাকলে সে যেন
বলে, আমি সাওম পালনকারী
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋِﻲَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﻃَﻌَﺎﻡٍ، ﻭَﻫُﻮَ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ: ﺇِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻢٌ »
“তোমাদের সাওমরত কোনো ব্যক্তিকে যদি খানা
খাওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়, তবে তার বলা উচিতৎ
আমি সাওম পালনকারী”। [189]
কারো সাথে দেখা করতে গেলে নফল সাওম ভঙ্গ না
করা
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻋَﻠَﻰ ﺃُﻡِّ ﺳُﻠَﻴْﻢٍ، ﻓَﺄَﺗَﺘْﻪُ ﺑِﺘَﻤْﺮٍ ﻭَﺳَﻤْﻦٍ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻋِﻴﺪُﻭﺍ
ﺳَﻤْﻨَﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺳِﻘَﺎﺋِﻪِ، ﻭَﺗَﻤْﺮَﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﻭِﻋَﺎﺋِﻪِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻢٌ ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻡَ ﺇِﻟَﻰ ﻧَﺎﺣِﻴَﺔٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺒَﻴْﺖِ،
ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻟﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔِ، ﻓَﺪَﻋَﺎ ﻟِﺄُﻡِّ ﺳُﻠَﻴْﻢٍ ﻭَﺃَﻫْﻞِ ﺑَﻴْﺘِﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﺃُﻡُّ ﺳُﻠَﻴْﻢٍ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻥَّ
ﻟِﻲ ﺧُﻮَﻳْﺼَّﺔً، ﻗَﺎﻝَ: ﻣَﺎ ﻫِﻲَ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﺧَﺎﺩِﻣُﻚَ ﺃَﻧَﺲٌ، ﻓَﻤَﺎ ﺗَﺮَﻙَ ﺧَﻴْﺮَ ﺁﺧِﺮَﺓٍ ﻭَﻻَ ﺩُﻧْﻴَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺩَﻋَﺎ ﻟِﻲ
ﺑِﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺭْﺯُﻗْﻪُ ﻣَﺎﻟًﺎ ﻭَﻭَﻟَﺪًﺍ، ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟَﻪُ ﻓِﻴﻪِ، ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﻟَﻤِﻦْ ﺃَﻛْﺜَﺮِ ﺍﻷَﻧْﺼَﺎﺭِ ﻣَﺎﻟًﺎ،
ﻭَﺣَﺪَّﺛَﺘْﻨِﻲ ﺍﺑْﻨَﺘِﻲ ﺃُﻣَﻴْﻨَﺔُ: ﺃَﻧَّﻪُ ﺩُﻓِﻦَ ﻟِﺼُﻠْﺒِﻲ ﻣَﻘْﺪَﻡَ ﺣَﺠَّﺎﺝٍ ﺍﻟﺒَﺼْﺮَﺓَ ﺑِﻀْﻊٌ ﻭَﻋِﺸْﺮُﻭﻥَ ﻭَﻣِﺎﺋَﺔٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﺍﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻣَﺮْﻳَﻢَ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﺑْﻦُ ﺃَﻳُّﻮﺏَ، ﻗَﺎﻝَ: ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺣُﻤَﻴْﺪٌ، ﺳَﻤِﻊَ ﺃَﻧَﺴًﺎ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ،
ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার
মাতা) উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার ঘরে
আগমান করলেন। তিনি তাঁর সামনে খেজুর ও ঘি
পেশ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের ঘি মশকে এবং
খেজুর তার বরতনে রেখে দাও। কারণ আমি সাওম
পালনকারী। এরপর তিনি ঘরের এক পাশে গিয়ে নফল
সালাত আদায় করলেন এবং উম্মে সুলাইম
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ও তাঁর পরিজনের জন্য দো‘আ
করলেন। উম্মে সুলাইম আরয করলেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! আমার একটি ছোট ছেলে আছে। তিনি
বললেন, কে সে? উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
বললেন, আপনার খাদেম আনাস। তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার জন্য
দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণের দো‘আ
করলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তুমি তাকে
মাল ও সন্তান-সন্ততি দান কর এবং তাকে বরকত
দাও। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি
আনসারগণের মধ্যে অধিক সম্পদশালীদের একজন
এবং আমার কন্যা আমাকে জানিয়েছে
যে, হাজ্জাজ (ইবন ইউসুফ) এর বসরায় আগমনের পূর্ব
পর্যন্ত একশত বিশের অধিক আমার সন্তান মারা
গেছে।
ইবন আবু মারইয়াম রহ. হুমায়দ রহ. আনাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করতে
শুনেছেন।” [190]
সাওম পালনকারীকে ইফতার করানোর সাওয়াব
যায়েদ ইবন খালিদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ﻣَﻦْ ﻓَﻄَّﺮَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﺟْﺮِﻫِﻢْ، ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻘُﺺَ ﻣِﻦْ ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ »
“কেউ যদি কোনো সাওম পালনকারীকে ইফতার
করায় তবে তার জন্যও অনুরূপ (সিয়ামের) সাওয়াব
হবে। কিন্তু এতে সাওম পালনকারীর সাওয়াবে
কোনো ঘাটতি হবে না”। [191]
মাসের শেষ ভাগে সাওম পালন
‘ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﻋِﻤْﺮَﺍﻥَ ﺑْﻦِ ﺣُﺼَﻴْﻦٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﺄَﻟَﻪُ ﺃَﻭْ
ﺳَﺄَﻝَ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻭَﻋِﻤْﺮَﺍﻥُ ﻳَﺴْﻤَﻊُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻓُﻼَﻥٍ، ﺃَﻣَﺎ ﺻُﻤْﺖَ ﺳَﺮَﺭَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻇُﻨُّﻪُ
ﻗَﺎﻝَ: ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ: ﻻَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﻓْﻄَﺮْﺕَ ﻓَﺼُﻢْ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ، ﻟَﻢْ
ﻳَﻘُﻞِ ﺍﻟﺼَّﻠْﺖُ: ﺃَﻇُﻨُّﻪُ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ: ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺛَﺎﺑِﺖٌ: ﻋَﻦْ ﻣُﻄَﺮِّﻑٍ، ﻋَﻦْ
ﻋِﻤْﺮَﺍﻥَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻣِﻦْ ﺳَﺮَﺭِ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে
অথবা (বর্ণনাকারী বলেন) অন্য এক ব্যক্তিকে
জিজ্ঞাসা করেন এবং ‘ইমরান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
তা শুনেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, হে অমুকের পিতা! তুমি কি এ
মাসের শেষ ভাগে সাওম পালন কর নি?
(বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয় (আমার ওস্তাদ)
বলেছেন, অর্থাৎ রমযান। লোকটি উত্তর দিল, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! না। তিনি বললেন, যখন সাওম পালন
শেষ করবে তখন দু’দিন সাওম পালন করে নিবে।
আমার মনে হয় সালত রহ. রমযান শব্দটি বর্ণনা
করেন নি। সাবিত রহ. ‘ইমরান সূত্রে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
শা‘বানের শেষভাগে বলে উল্লেখ করেছেন।
আবু ‘আব্দুল্লাহ বুখারী রহ. বলেন, শা’বান শব্দটি
অধিকতর সহীহ।” [192]
জুমু‘আর দিনে সাওম পালন
মুহাম্মদ ইবন ‘আব্বাদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, আমি জাবির ইবন ‘আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে,
« ﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻧَﻌَﻢْ، ﺯَﺍﺩَ ﻏَﻴْﺮُ ﺃَﺑِﻲ
ﻋَﺎﺻِﻢٍ، ﻳَﻌْﻨِﻲ : ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻔَﺮِﺩَ ﺑِﺼَﻮْﻡٍ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি
জুমু‘আর দিনে (নফল) সাওম পালন করতে নিষেধ
করেছেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবু ‘আসিম
রহ. ব্যতীত অন্যেরা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন
যে, পৃথকভাবে জুমু‘আর দিনের সাওম পালনকে
নিষেধ করেছেন।” [193]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে,
« ﻻَ ﻳَﺼُﻮﻣَﻦَّ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻗَﺒْﻠَﻪُ ﺃَﻭْ ﺑَﻌْﺪَﻩُ »
“তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমু‘আর দিনে সাওম পালন
না করে; কিন্তু তার আগে একদিন বা পরের দিন
(যদি পালন করে তবে জুমু‘আর দিনে পালন করা
যায়)”। [194]
জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﻫِﻲَ ﺻَﺎﺋِﻤَﺔٌ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﺻُﻤْﺖِ
ﺃَﻣْﺲِ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻻَ، ﻗَﺎﻝَ: ﺗُﺮِﻳﺪِﻳﻦَ ﺃَﻥْ ﺗَﺼُﻮﻣِﻲ ﻏَﺪًﺍ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻻَ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺄَﻓْﻄِﺮِﻱ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺣَﻤَّﺎﺩُ
ﺑْﻦُ ﺍﻟﺠَﻌْﺪِ: ﺳَﻤِﻊَ ﻗَﺘَﺎﺩَﺓَ، ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﺑُﻮ ﺃَﻳُّﻮﺏَ، ﺃَﻥَّ ﺟُﻮَﻳْﺮِﻳَﺔَ، ﺣَﺪَّﺛَﺘْﻪُ: ﻓَﺄَﻣَﺮَﻫَﺎ ﻓَﺄَﻓْﻄَﺮَﺕْ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর
দিনে তাঁর নিকট প্রবেশ করেন তখন তিনি
(জুযাইরিয়া) সাওম পালনরত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে
জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি গতকাল সাওম পালন
করেছিলে? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা
করলেন, তুমি কি আগামীকাল সাওম পালনের ইচ্ছা
রাখ? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে সাওম
ভেঙ্গে ফেল। হাম্মাদ ইবনুল জা‘দ রহ. স্বীয় সূত্রে
জুয়াইরিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণনা
করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে আদেশ দেন এবং তিনি সাওম
ভঙ্গ করেন”। [195]
সাওম পালনের ব্যাপারে কোনো দিন কি নির্দিষ্ট
করা যায়?
‘আলকামা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻌَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ: ﻫَﻞْ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﺨْﺘَﺺُّ ﻣِﻦَ
ﺍﻷَﻳَّﺎﻡِ ﺷَﻴْﺌًﺎ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﻻَ، ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻤَﻠُﻪُ ﺩِﻳﻤَﺔً، ﻭَﺃَﻳُّﻜُﻢْ ﻳُﻄِﻴﻖُ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﻄِﻴﻖُ »
“আমি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে
জিজ্ঞাসা করলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কোনো দিন কোনো
কাজের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতেন? উত্তরে তিনি
বলেলেন, না; বরং তাঁর ‘আমল স্থায়ী হতো এবং
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে
সব ‘আমল করার শক্তি সামর্থ্য রাখতেন তোমাদের
মধ্যে কে আছে যে সে সবের সামর্থ্য রাখে?” [196]
শাওয়াল মাসে ছয়টি সাওম পালন
আবু আইয়্যুব আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ﻣَﻦْ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗْﺒَﻌَﻪُ ﺳِﺘًّﺎ ﻣِﻦْ ﺷَﻮَّﺍﻝٍ، ﻛَﺎﻥَ ﻛَﺼِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ »
“রমযান মাসের সাওম পালন করে পরে শাওয়াল
মাসে ছয় দিন সাওম পালন করা সারা বছর সাওম
রাখার মত”। [197]
যিলহজ মাসের সাওম পালন
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﻗَﻂُّ »
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে (যিলহজ্জের) দশম তারিখে কখনও
সাওম পালন করতে দেখি নি।” [198]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত যে,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻢْ ﻳَﺼُﻢِ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ »
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (যিলহজ্জের)
দশ তারিখে সাওম পালন করেন নি”। [199]
ইবন ‘আববাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺍﻟْﻌَﻤَﻞُ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺢُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﺣَﺐُّ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣِﻦْ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄَﻳَّﺎﻡِ » ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ،
ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻟَّﺎ
ﺭَﺟُﻞٌ ﺧَﺮَﺝَ ﺑِﻨَﻔْﺴِﻪِ ﻭَﻣَﺎﻟِﻪِ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺮْﺟِﻊْ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ »
“আল্লাহ তা‘আলার নিকট দিনসমুহের মধ্যে যিলহজ
মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমল অধিক প্রিয়।
সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্!
আল্লাহর
রাস্তায় জিহাদ করাও কি ঐরূপ উত্তম আমল নয়?
তিনি বলেন না, আল্লাহ রাস্তায় জিহাদ
করাও নয়। অবশ্য
যে ব্যক্তি স্বীয় জানমালসহ রাস্তায় বের হওয়ার
পর আর প্রত্যাবর্তন করে না, তার ব্যাপারটি
স্বতন্ত্র”। [200]
‘আরাফাহ দিবসে সাওম পালন
উম্মুল ফাদল বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা
সূত্রে বর্ণনা করেন যে,
« ﺃَﻥَّ ﻧَﺎﺳًﺎ ﺗَﻤَﺎﺭَﻭْﺍ ﻋِﻨْﺪَﻫَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺮَﻓَﺔَ ﻓِﻲ ﺻَﻮْﻡِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ
ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ: ﻫُﻮَ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ: ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺼَﺎﺋِﻢٍ، ﻓَﺄَﺭْﺳَﻠَﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺑِﻘَﺪَﺡِ ﻟَﺒَﻦٍ ﻭَﻫُﻮَ ﻭَﺍﻗِﻒٌ ﻋَﻠَﻰ
ﺑَﻌِﻴﺮِﻩِ، ﻓَﺸَﺮِﺑَﻪُ »
“কিছুসংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম পালন
সম্পর্কে তাঁর কাছে সন্দেহ প্রকাশ করে। তাদের
কেউ বলল, তিনি সাওম পালন করেছেন। আর কেউ
বলল, না, তিনি করেন নি। এতে উম্মুল ফাদল
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এক পেয়ালা দুধ রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট
পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা পান করে নিলেন।
এ সময় তিনি উঠের পিঠে (‘আরাফাতে) উকূফ
অবস্থায় ছিলেন।” [201]
মায়মূনা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত
যে, তিনি বললেন,
« ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺷَﻜُّﻮﺍ ﻓِﻲ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺮَﻓَﺔَ، ﻓَﺄَﺭْﺳَﻠَﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ
ﻣَﻴْﻤُﻮﻧَﺔُ ﺑِﺤِﻠَﺎﺏِ ﺍﻟﻠَّﺒَﻦِ، ﻭَﻫُﻮَ ﻭَﺍﻗِﻒٌ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻮْﻗِﻒِ، ﻓَﺸَﺮِﺏَ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳَﻨْﻈُﺮُﻭﻥَ ﺇِﻟَﻴْﻪِ »
“কিছু সংখ্যক লোক ‘আরাফাতের দিনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাওম পালন
সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি স্বল্প পরিমাণ
দুধ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের নিকট পাঠিয়ে দিলে তিনি তা
পান করলেন ও লোকেরা তা প্রত্যক্ষ করছিল। তখন
তিনি (‘আরাফাতে) অবস্থান স্থলে উকূফ
করছিলেন”। [202]
আবু কাতাদা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত,
» ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻣِﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﻐَﻀِﺐَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﺭَﺿِﻴﻨَﺎ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﺭَﺑًّﺎ، ﻭَﺑِﺎﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺩِﻳﻨًﺎ، ﻭَﺑِﻤُﺤَﻤَّﺪٍ
ﺭَﺳُﻮﻟًﺎ، ﻭَﺑِﺒَﻴْﻌَﺘِﻨَﺎ ﺑَﻴْﻌَﺔً. ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺴُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻟَﺎ ﺻَﺎﻡَ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﺃَﻭْ ﻣَﺎ
ﺻَﺎﻡَ ﻭَﻣَﺎ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺴُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ ﻭَﺇِﻓْﻄَﺎﺭِ ﻳَﻮْﻡٍ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻣَﻦْ ﻳُﻄِﻴﻖُ ﺫَﻟِﻚَ » ﻗَﺎﻝَ:
ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡٍ، ﻭَﺇِﻓْﻄَﺎﺭِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻟَﻴْﺖَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻗَﻮَّﺍﻧَﺎ ﻟِﺬَﻟِﻚَ » ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ
ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡٍ، ﻭَﺇِﻓْﻄَﺎﺭِ ﻳَﻮْﻡٍ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺫَﺍﻙَ ﺻَﻮْﻡُ ﺃَﺧِﻲ ﺩَﺍﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡ ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ
ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ؟ ﻗَﺎﻝَ: « ﺫَﺍﻙَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻓِﻴﻪِ، ﻭَﻳَﻮْﻡٌ ﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺃَﻭْ ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻓِﻴﻪِ ﻗَﺎﻝَ:
ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺻَﻮْﻡُ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٍ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻬْﺮٍ، ﻭَﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﺻَﻮْﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮِ ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ
ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺮَﻓَﺔَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳُﻜَﻔِّﺮُ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔَ ﺍﻟْﻤَﺎﺿِﻴَﺔَ ﻭَﺍﻟْﺒَﺎﻗِﻴَﺔَ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ
ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳُﻜَﻔِّﺮُ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔَ ﺍﻟْﻤَﺎﺿِﻴَﺔَ ﻭَﻓِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﻣِﻦْ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺷُﻌْﺒَﺔَ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺳُﺌِﻞَ
ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ؟ ﻓَﺴَﻜَﺘْﻨَﺎ ﻋَﻦْ ﺫِﻛْﺮِ ﺍﻟْﺨَﻤِﻴﺲِ ﻟَﻤَّﺎ ﻧُﺮَﺍﻩُ ﻭَﻫْﻤًﺎ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। এতে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অন্তুষ্ট হলেন। তখন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন,
আমরা আল্লাহর ওপর (আমাদের) রব
হিসেবে, ইসলামের ওপর (আমাদের) দীন
হিসেবে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের ওপর (আমাদের) রাসূল হিসেবে এবং
আমাদের কৃত বায়‘আতের ওপর আমরা সন্তুষ্ট। অতঃপর
সারা বছর সাওম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলো। তিনি বললেন, সে ব্যক্তি সাওম পালন করে
নি, ইফতারও করে নি বা সে ব্যক্তি সাওম পালন
করে নি এবং সাওমহীনও থাকে নি। অতঃপর
একাধারে দুই দিন সাওম পালন করা ও এক দিন সাওম
পালন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো।
তিনি বললেন এভাবে সাওম পালনের সামর্থ্য কার
আছে? অতঃপর একদিন সাওম পালন ও দু দিন সাওম
ত্যাগ করা সস্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি
বললেন, আল্লাহ যেন আমাদের এরূপ সাওম পালনের
সামর্থ্য দান করেন। অতঃপর একদিন সাওম পালন
করা ও একদিন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলো। তিনি বললেন, তা আমার ভাই দাঊদ
আলাইহিস সালামের সাওম। অতঃপর সোমবারের
সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন,
এই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনই আমি
নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি বা আমার ওপর (কুরআন)
নাযিল করা হয়েছে। আরও বললেন, প্রতি মাসে তিন
দিন এবং গোটা রমযান মাস সাওম পালন করাই
হলো সারা বছর সাওম পালনের সমতুল্য। অতঃপর
‘আরাফাহ দিবসের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলে তিনি বললেন, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী
বছরের শুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। অতঃপর
‘আশুরার সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি
বললেন, তাতে বিগত বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে
যাবে। এই হাদীসে শু‘বা রহ.-এর বর্ণনায় আরও
আছে, অতঃপর সোমবার ও বৃহস্প্রতিবারের সাওম
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। কিন্তু আমাদের
মতে বৃহস্পতিবারের কথা ভুলবশত বর্ণিত
হয়েছে, তাই আমরা তার উল্লেখ থেকে বিরত
থাকলাম।”[203]
ঈদের দিনে সাওম পালন
বনু আযহারের আযাদকৃত গোলাম আবু ‘উবায়দ রহ.
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﺍﻟﻌِﻴﺪَ ﻣَﻊَ ﻋُﻤَﺮَ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺨَﻄَّﺎﺏِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: «ﻫَﺬَﺍﻥِ ﻳَﻮْﻣَﺎﻥِ ﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻣِﻬِﻤَﺎ: ﻳَﻮْﻡُ ﻓِﻄْﺮِﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﺻِﻴَﺎﻣِﻜُﻢْ، ﻭَﺍﻟﻴَﻮْﻡُ ﺍﻵﺧَﺮُ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﻥَ
ﻓِﻴﻪِ ﻣِﻦْ ﻧُﺴُﻜِﻜُﻢْ »
“আমি একবার ঈদে উমার ইবন খাত্তাব
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সঙ্গে ছিলাম, তখন তিনি
বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এই দুই দিনে সাওম পালন করতে নিষেধ
করেছেন। (ঈদুল ফিতরের দিন) যে দিন তোমরা
তোমাদের সাওম ছেড়ে দাও। আরেক দিন, যেদিন
তোমরা তোমাদের কুরবানীর গোশত খাও।” [204]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ، ﻭَﻳَﻮْﻡِ
ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দু’দিন সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন। এক হলো
কুরবানীর দিন আর দ্বিতীয় হলো ঈদুল ফিতরের
দিন।”[205]
কাযাআ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﺣَﺪِﻳﺜًﺎ ﻓَﺄَﻋْﺠَﺒَﻨِﻲ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ: ﺁﻧْﺖَ ﺳَﻤِﻌْﺖَ ﻫَﺬَﺍ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺄَﻗُﻮﻝُ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﺳْﻤَﻊْ؟ ﻗَﺎﻝَ:
ﺳَﻤِﻌْﺘُﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﻟَﺎ ﻳَﺼْﻠُﺢُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ: ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ ﻭَﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“আমি আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে একটি
হাদীস শ্রবণ করেছি। হাদীসটি আমার কাছে খুবই
ভালো লেগেছে। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা
করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে আপনি এ হাদীস শুনেছেন
কি? তিনি বললেন, যে কথা আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনি নি
এমন কথা তাঁর দিকে সম্বোধন করে আমি বলতে
পারি কি? আমি শুনেছি তিনি বলেছেন, দু’দিন
সাওম পালন করা শুদ্ধ নয়, ঈদুল আযহার দিন এবং ঈদুল
ফিতরের দিন।” [206]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ، ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻭَﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দু’দিন অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর দিন
সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।” [207]
যিয়াদ ইবন জুবায়র রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﻧِّﻲ ﻧَﺬَﺭْﺕُ ﺃَﻥْ ﺃَﺻُﻮﻡَ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻓَﻮَﺍﻓَﻖَ
ﻳَﻮْﻡَ ﺃَﺿْﺤَﻰ ﺃَﻭْ ﻓِﻄْﺮٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ: ﺃَﻣَﺮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺑِﻮَﻓَﺎﺀِ ﺍﻟﻨَّﺬْﺭِ،
ﻭَﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ »
“এক ব্যক্তি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট
এসে বললেন, আমি এক দিন সাওম পালন করার মানত
করেছিলাম। ঘটনাক্রমে তা ঈদুল আযহা বা ঈদুল
ফিতরের দিন হয়ে গেছে। তখন তিনি
বললেন, আল্লাহ তা‘আলা মানত পূর্ণ করার নির্দেশ
দিয়েছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এ দিন সাওম পালন করতে নিষেধ
করেছেন।” [208]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
« ﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻣَﻴْﻦِ: ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ، ﻭَﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা -এ দু’দিন সাওম পালন
করতে নিষেধ করেছেন।” [209]
আবু সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
« ﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ، ﻭَﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻤَّﺎﺀِ، ﻭَﺃَﻥْ
ﻳَﺤْﺘَﺒِﻲَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻓِﻲ ﺛَﻮْﺏٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ، ﻭَﻋَﻦْ ﺻَﻼَﺓٍ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ ﻭَﺍﻟﻌَﺼْﺮِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন সাওম
পালন করা থেকে, ‘সাম্মা’ ধরনের কাপড় পরিধান
করতে, এক কাপড় পরিধানরত অবস্থায় দুই হাঁটু তুলে
নিতম্বের উপর বসতে (কেননা এতে সতর প্রকাশ
পাওয়ার আশংকা রয়েছে) এবং ফজর ও ‘আসরের পরে
সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।” [210]
কুরবানীর দিনে সাওম পালন
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﻳُﻨْﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻣَﻴْﻦِ، ﻭَﺑَﻴْﻌَﺘَﻴْﻦِ: ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ، ﻭَﺍﻟﻤُﻼَﻣَﺴَﺔِ ﻭَﺍﻟﻤُﻨَﺎﺑَﺬَﺓِ »
“দু’দিনের সাওম ও দু’প্রকারের ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ
করা হয়েছে, ঈদুল ফিতর ও কুরবানীর (দিনের) সাওম
এবং মুলামাসা (পণ্য স্পর্শ করলেই ক্রয় বাধ্য হয়ে
যাওয়া)ও মুনাবাযা (ক্রেতার প্রতি নিক্ষেপ করলেই
ক্রয় বাধ্য হওয়া) পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় থেকে
নিষেধ করা হয়েছে”। [211]
যিয়াদ ইবন জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺭَﺟُﻞٌ ﻧَﺬَﺭَ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻡَ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻗَﺎﻝَ: ﺃَﻇُﻨُّﻪُ
ﻗَﺎﻝَ: ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ، ﻓَﻮَﺍﻓَﻖَ ﺫَﻟِﻚَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋِﻴﺪٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ: ﺃَﻣَﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻮَﻓَﺎﺀِ ﺍﻟﻨَّﺬْﺭِ ﻭَﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﻴَﻮْﻡِ »
“এক ব্যক্তি এসে ‘আব্দুল্লাহ ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলল যে, এক ব্যক্তি কোনো
এক দিনের সাওম পালন করার মানত করেছে, আমার
মনে হয় সে সোমবারের কথা বলেছিল। ঘটনাক্রমে ঐ
দিন ঈদের দিন পড়ে যায়। ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আল্লাহ তা‘আলা
মানত পুরা করার নির্দেশ দিয়েছেন আর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ (ঈদের) দিনে
সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন।” [212]
আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে (সনদসহ)
বর্ণিত, যিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বারোটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ
করেছেন, তিনি বলেন,
« ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻤَﻠِﻚِ ﺑْﻦُ ﻋُﻤَﻴْﺮٍ، ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻗَﺰَﻋَﺔَ ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺃَﺑَﺎ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪْﺭِﻱَّ ﺭَﺿِﻲَ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ : ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻏَﺰَﺍ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺛِﻨْﺘَﻲْ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﻏَﺰْﻭَﺓً ﻗَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ
ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺄَﻋْﺠَﺒْﻨَﻨِﻲ، ﻗَﺎﻝَ: ﻻَ ﺗُﺴَﺎﻓِﺮِ ﺍﻟﻤَﺮْﺃَﺓُ ﻣَﺴِﻴﺮَﺓَ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ
ﺇِﻟَّﺎ ﻭَﻣَﻌَﻬَﺎ ﺯَﻭْﺟُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺫُﻭ ﻣَﺤْﺮَﻡٍ، ﻭَﻻَ ﺻَﻮْﻡَ ﻓِﻲ ﻳَﻮْﻣَﻴْﻦِ : ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﺍﻷَﺿْﺤَﻰ، ﻭَﻻَ ﺻَﻼَﺓَ ﺑَﻌْﺪَ
ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻄْﻠُﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ، ﻭَﻻَ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟﻌَﺼْﺮِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻐْﺮُﺏَ، ﻭَﻻَ ﺗُﺸَﺪُّ ﺍﻟﺮِّﺣَﺎﻝُ ﺇِﻟَّﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺛَﻼَﺛَﺔِ
ﻣَﺴَﺎﺟِﺪَ: ﻣَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟﺤَﺮَﺍﻡِ، ﻭَﻣَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻷَﻗْﺼَﻰ، ﻭَﻣَﺴْﺠِﺪِﻱ ﻫَﺬَﺍ »
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে চারটি কথা শুনেছি, যা আমার খুব ভাল
লেগেছে। তিনি বলেছেন, স্বামী অথবা মাহরাম
(যার সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধ) পুরুষ ছাড়া কোনো
নারী যেন দুই দিনের দূরত্বের সফর না করে। ঈদুল
ফিতর ও কুরবানীর দিনে সাওম নেই। ফজরের
সালাতের পরে সূর্যোদয় এবং ‘আসরের সালাতের
পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো সালাত নেই। মসজিদে
হারাম, মসজিদে আকসা ও আমার এই মসজিদ ব্যতীত
অন্য কোনো মসজিদের উদ্দেশ্যে কেউ যেন সফর না
করে।”[213]
আইয়ামুত তাশরিকে সাওম পালন
হিশাম রহ. তার পিতার থেকে বর্ণনা করেন যে,
«ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ ﺑِﻤِﻨًﻰ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺃَﺑُﻮﻫَﺎ ﻳَﺼُﻮﻣُﻬَﺎ »
“আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা আইয়ামুত তাশরিকে
মিনায় সাওম পালন করতেন, তার পিতাও সে দিন
গুলোতে সাওম পালন করতেন”। [214]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও ইবন উমার
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে
বলেন,
«ﻟَﻢْ ﻳُﺮَﺧَّﺺْ ﻓِﻲ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻤْﻦَ، ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺠِﺪِ ﺍﻟﻬَﺪْﻱَ »
“যাঁর নিকট কুরবানীর পশু নেই তিনি ছাড়া অন্য
কারও জন্য আইয়্যামে তাশরীকে সাওম পালন করার
অনুমতি দেওয়া হয় নি”। [215]
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻟِﻤَﻦْ ﺗَﻤَﺘَّﻊَ ﺑِﺎﻟﻌُﻤْﺮَﺓِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺤَﺞِّ ﺇِﻟَﻰ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺮَﻓَﺔَ، ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺠِﺪْ ﻫَﺪْﻳًﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺼُﻢْ، ﺻَﺎﻡَ
ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﻣِﻨًﻰ »
“যে ব্যক্তি একই সঙ্গে হজ ও ‘উমরা পালনের সুযোগ
লাভ করলো সে ‘আরাফাত দিবস পর্যন্ত সাওম পালন
করবে।
সে যদি কুরবানী না করতে পারে এবং সাওমও
পালন না করে থাকে তবে মিনার দিনগুলোতে
সাওম পালন করবে”। [216]
নুবাইশা আল-হুযালী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﺃَﻛْﻞٍ ﻭَﺷُﺮْﺏٍ »
“আইয়্যামে তাশরীক পানাহারের দিন”। [217]
কা‘ব ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑَﻌَﺜَﻪُ ﻭَﺃَﻭْﺱَ ﺑْﻦَ ﺍﻟْﺤَﺪَﺛَﺎﻥِ ﺃَﻳَّﺎﻡَ ﺍﻟﺘَّﺸْﺮِﻳﻖِ، ﻓَﻨَﺎﺩَﻯ
«ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﺃَﻳَّﺎﻡُ ﻣِﻨًﻰ ﺃَﻳَّﺎﻡُ ﺃَﻛْﻞٍ ﻭَﺷُﺮْﺏٍ »
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে এবং আউস ইবন
হাদসান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে আইয়্যামে
তাশরীকের সময় পাঠালেন এবং বলে দিলেন
তোমরা ঘোষণা করে দাও যে, মুমিনগণই জান্নাতে
প্রবেশ করবে এবং আইয়্যামে মিনা (আইয়্যামে
তাশরীক) পানাহার করবার দিন।” [218]
আশুরার দিনে সাওম পালন
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻗُﺮَﻳْﺶٌ ﺗَﺼُﻮﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻫَﺎﺟَﺮَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ، ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓُﺮِﺽَ ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻗَﺎﻝَ:
«ﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺗَﺮَﻛَﻪُ »
“জাহেলী যুগে কুরাইশের লোকেরা ‘আশুরার দিন
সাওম পালন করতো। রমযানের সাওম ফরয হওয়ার
পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এবং মুসলিমগণ এ দিন সাওম রাখতেন।
অতঃপর মদীনায় হিজরত করার পরার পর যখন
রমযানের সাওম ফরয হলো তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে
চায় ঐ দিনের সাওম রাখতে পারে আর যে চায় নাও
রাখতে পারে।” [219]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﺎﻡُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡُ ﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ
ﺗَﺮَﻛَﻪُ »
“রমযানের সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিনে সাওম পালন করার নির্দেশ দিতেন।
যখন রমযানের সাওম ফরয করা হলো তখন যার ইচ্ছা
সে আশুরার দিনে সাওম পালন করতো আর যার ইচ্ছা
সে তা ছেড়ে দিতো”। [220]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺄْﻣُﺮُ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳُﻔْﺮَﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓُﺮِﺽَ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻛَﺎﻥَ ﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻡَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺃَﻓْﻄَﺮَ »
“কুরায়শরা জাহিলী যুগে ‘আশুরার দিন সাওম
পালন করত। রমযানের সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
এদিন সাওম পালন করার নির্দেশ দিতেন। রমযানের
সাওম ফরয হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যার
ইচ্ছা, সে এদিন সাওম পালন করবে, আর যার ইচ্ছা
সে তা ছেড়ে দেবে”। [221]
‘আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে
(সনদসহ) বর্ণিত,
«ﻋَﻦْ ﻧَﺎﻓِﻊٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﺃَﻥَّ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ
ﻳَﺼُﻮﻣُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺻَﺎﻣَﻪُ، ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤُﻮﻥَ ﻗَﺒْﻞَ
ﺃَﻥْ ﻳُﻔْﺘَﺮَﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍﻓْﺘُﺮِﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﺇِﻥَّ
ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻓَﻤَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺻَﺎﻣَﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﺷَﺎﺀَ ﺗَﺮَﻛَﻪُ »
“জাহেলী যুগে লোকেরা আশুরার দিন সাওম
রাখতো। রমযানের সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এবং মুসলিমগণ এ দিন সাওম রাখতেন। অতঃপর যখন
রমযানের সাওম ফরয হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর দিনগুলোর
মধ্যে ‘আশুরাও একটি দিন। কাজেই যে চায় ঐ দিনের
সাওম রাখতে পারে আর যে চায় নাও রাখতে
পারে।” [222]
ইবন ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
«ﺃَﻧَّﻪُ ﺫُﻛِﺮَ ﻋِﻨْﺪَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻣَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺼُﻤْﻪُ،
ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺮِﻩَ ﻓَﻠْﻴَﺪَﻋْﻪُ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সামনে ‘আশুরা সর্ম্পকে কথা উঠলো। তিনি
বললেন, “জাহেলী যুগের লোকেরা ঐ দিন
সাওম রাখতো। সুতরাং এখন তোমাদের কেউ যদি ঐ
দিন সাওম রাখা পছন্দ করে তাহলে সে ঐ দিন
সাওম রাখতে পারে। আর অপছন্দ করলে সে নাও
রাখতে পারে”। [223]
নাফে‘ বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
তার কাছে বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘আশুরার
দিন বলতে শুনেছেন,
« ﺇِﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ، ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻣَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺼُﻤْﻪُ، ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ
ﻳَﺘْﺮُﻛَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺘْﺮُﻛْﻪُ » ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﻮَﺍﻓِﻖَ ﺻِﻴَﺎﻣَﻪُ "
“আজকের এ দিনে জাহেলী যুগের লোকেরা সাওম
রাখতো। সুতরাং যে ব্যক্তি এ দিনের সাওম রাখা
পছন্দ করে সে যেন ( এ দিনে ) সাওম রাখে। আর যে
ব্যক্তি অপছন্দ করে সে যেন এ দিনের সাওম থেকে
বিরত থাকে। আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঐ দিন
সাওম রাখলো না। কিন্তু যেসব দিনে তিনি সাওম
রাখার অভ্যস্ত ছিলেন এর কোনো একদিন ‘আশুরা
হলে তিনি সেদিনও সাওম রাখতেন”। [224]
‘আব্দুর রহমান ইবন ইয়াযীদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺚُ ﺑْﻦُ ﻗَﻴْﺲٍ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺘَﻐَﺪَّﻯ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﺩْﻥُ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟْﻐَﺪَﺍﺀِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻭَﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﻫَﻞْ ﺗَﺪْﺭِﻱ ﻣَﺎ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ؟ ﻗَﺎﻝَ:
ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻮَ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻫُﻮَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ
ﻳَﻨْﺰِﻝَ ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻧَﺰَﻝَ ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺗُﺮِﻙَ » ﻭﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﻛُﺮَﻳْﺐٍ ﺗَﺮَﻛَﻪُ ».
“আশ‘আস ইবন কায়স রহ. আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট গেলেন, তখন তিনি
দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, হে আবু
মুহাম্মদ! তুমি খাবার জন্য কাছে এসো। তিনি
বললেন, আজ কি ‘আশুরার দিন নয়? তিনি
বললেন, তুমি কি জানো ‘আশুরা দিবস কী? আশ‘আস
রহ. বললেন, সে আবার কী? তিনি বললেন, রমযানের
সাওম ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম পালন
করতেন। যখন রমযানের সাওম ফরয হলো তখন তা
ছেড়ে দেওয়া হলো”। [225]
কায়স ইবন সাকান রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺃَﻥَّ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺚَ ﺑْﻦَ ﻗَﻴْﺲٍ، ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ
ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﺩْﻥُ ﻓَﻜُﻞْ، ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺛُﻢَّ ﺗُﺮِﻙَ »
“আশুরার দিন আশ‘আস ইবন কায়স রহ. আব্দুল্লাহ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে আসলেন। এ সময় তিনি
আহার করছিলেন। তিনি আশ‘আসকে লক্ষ্য করে
বললেন, হে আবু মুহাম্মদ! নিকটে এসো, খানা খাও।
তিনি বললেন, আমি তো সাওম পালন করছি। এ কথা
শুনে ‘আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমরা
এ সাওম পালন করতাম। পরে তা ছেড়ে দেওয়া
হয়েছে।” [226]
‘আলকামা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺚُ ﺑْﻦُ ﻗَﻴْﺲٍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﻋَﺒْﺪِ
ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ، ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻗَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﺎﻡُ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﺰِﻝَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻧَﺰَﻝَ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﺗُﺮِﻙَ، ﻓَﺈِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ ﻓَﺎﻃْﻌَﻢْ »
“আশ‘আস ইবন কায়স রহ. ইবন মাসউদ
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট গেলেন। সেটা ‘আশুরার
দিন ছিল। তখন তিনি খানা খাচ্ছিলেন। এ দেখে
আশ‘আস রহ. বললেন, হে ‘আব্দুর রহমানের পিতা! আজ
তো ‘আশুরার দিন। তিনি বললেন, রমযানের সাওম
ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনে সাওম পালন”। [227]
জাবির ইবন সামুরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺄْﻣُﺮُﻧَﺎ ﺑِﺼِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻳَﺤُﺜُّﻨَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ،
ﻭَﻳَﺘَﻌَﺎﻫَﺪُﻧَﺎ ﻋِﻨْﺪَﻩُ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓُﺮِﺽَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥُ، ﻟَﻢْ ﻳَﺄْﻣُﺮْﻧَﺎ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻨْﻬَﻨَﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺘَﻌَﺎﻫَﺪْﻧَﺎ ﻋِﻨْﺪَﻩُ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিন আমাদেরকে সাওম পালনের নির্দেশ
দিতেন। তিনি এ ব্যাপারে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত
করতেন এবং এ বিষয়ে তিনি আমাদের খোঁজ-খবর
নিতেন। কিন্তু যখন রমযানের সাওম ফরয হলো, তখন
তিনি আমাদেরকে আদেশও করেন নি, বাধ্যও করেন
নি এবং কোনো খোঁজ-খবর আর নেন নি।” [228]
হুমাইদ ইবন ‘আব্দুর রহমান রহ. থেকে (সনদসহ) বর্ণিত,
«ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺷِﻬَﺎﺏٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺣُﻤَﻴْﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ، ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﻤِﻊَ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔَ ﺑْﻦَ ﺃَﺑِﻲ ﺳُﻔْﻴَﺎﻥَ،
ﺧَﻄِﻴﺒًﺎ ﺑِﺎﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻓِﻲ ﻗَﺪْﻣَﺔٍ ﻗَﺪِﻣَﻬَﺎ ﺧَﻄَﺒَﻬُﻢْ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻳْﻦَ ﻋُﻠَﻤَﺎﺅُﻛُﻢْ؟ ﻳَﺎ
ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ، ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻟِﻬَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡُ
ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻜْﺘُﺐِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺻِﻴَﺎﻣَﻪُ، ﻭَﺃَﻧَﺎ ﺻَﺎﺋِﻢٌ، ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﺼُﻮﻡَ ﻓَﻠْﻴَﺼُﻢْ،
ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ ﻳُﻔْﻄِﺮَ ﻓَﻠْﻴُﻔْﻄِﺮْ »
“তিনি একদিন মু‘আবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে মদীনায় খুতবায় বলতে
শুনলেন অর্থাৎ যখন মদীনায় এসেছিলেন তখন
‘আশুরার দিবসে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে খুতবা
দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, হে
মদীনাবাসী! তোমাদের ‘আলেমগণ
কোথায়? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে এ দিন সম্পর্কে বলতে শুনেছি যে, এ
হলো ‘আশুরা দিবস। তোমাদের ওপর এ দিনের
সাওম ফরয করেন নি। তবে আমি সাওম পালন করছি।
তাই তোমাদের মধ্যে যে সাওম পালন করতে পছন্দ
করে, সে পালন করবে আর যে পছন্দ করে নি সে করবে
না।” [229]
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻗَﺪِﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﻓَﻮَﺟَﺪَ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ
ﻓَﺴُﺌِﻠُﻮﺍ ﻋَﻦْ ﺫَﻟِﻚَ؟ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ: ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃَﻇْﻬَﺮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻮﺳَﻰ، ﻭَﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﻋَﻠَﻰ
ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ، ﻓَﻨَﺤْﻦُ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ ﺗَﻌْﻈِﻴﻤًﺎ ﻟَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﻧَﺤْﻦُ ﺃَﻭْﻟَﻰ
ﺑِﻤُﻮﺳَﻰ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺄَﻣَﺮَ ﺑِﺼَﻮْﻣِﻪِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
(হিজরত করে) মদীনায় এলেন এবং তিনি
ইয়াহূদীদেরকে ‘আশুরার দিন সাওম পালন করতে
দেখতে পেলেন। এরপর তাদেরকে এ সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করার পর তারা বলল, এ সে দিন যে দিন
আল্লাহ মূসা আলাইহিস সালাম ও বনী ইসরাঈলকে
ফির‘আউনের ওপর বিজয়ী করেছিলেন। তাঁর
সম্মানার্থে আমরা সাওম পালন করে থাকি। তখন
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, “আমরা তোমাদের চেয়েও মূসা আলাইহিস
সালামের অধিক নিকটবর্তী। অতঃপর তিনি এ
দিনে সাওম পালন করার নির্দেশ দিলেন”। [230]
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ
ﻓَﻮَﺟَﺪَ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩَ ﺻِﻴَﺎﻣًﺎ، ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻬُﻢْ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: «ﻣَﺎ
ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺗَﺼُﻮﻣُﻮﻧَﻪُ؟ » ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ: ﻫَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ، ﺃَﻧْﺠَﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻮﺳَﻰ ﻭَﻗَﻮْﻣَﻪُ،
ﻭَﻏَﺮَّﻕَ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻭَﻗَﻮْﻣَﻪُ، ﻓَﺼَﺎﻣَﻪُ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺷُﻜْﺮًﺍ، ﻓَﻨَﺤْﻦُ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﻓَﻨَﺤْﻦُ ﺃَﺣَﻖُّ ﻭَﺃَﻭْﻟَﻰ ﺑِﻤُﻮﺳَﻰ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺼَﺎﻣَﻪُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ »
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করে ইয়াহূদীদেরকে
‘আশুরার দিন সাওম পালনরত দেখতে পেলেন। এরপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোনো দিনের সাওম
পালন করছ? তারা বলল, এ মহান দিন আল্লাহ মুসা
আলাইহিস সালাম ও তাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি
দিয়েছেন এবং ফির‘আউন ও তার জাতিকে ডুবিয়ে
দিয়েছেন। এরপর মুসা আলাইহিস সালাম কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করার লক্ষ্যে এ দিনে সাওম পালন করেছেন।
তাই আমরাও এ দিনে সাওম পালন করছি। তারপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, “আমরা তো তোমাদের থেকে মূসা
আলাইহিস সালামের অধিক নিকটবর্তী এবং
হকদার। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাওম পালন করলেন এবং সাওম পালন
করার জন্য সকলকে নির্দেশ দিলেন”। [231]
আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﺗُﻌَﻈِّﻤُﻪُ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ، ﻭَﺗَﺘَّﺨِﺬُﻩُ ﻋِﻴﺪًﺍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺻُﻮﻣُﻮﻩُ ﺃَﻧْﺘُﻢْ »
“ইয়াহূদী সম্প্রদায় ‘আশুরা দিবসের সম্মান প্রদর্শন
করতো এবং তারা এ দিনকে ঈদ বলে গণ্য করতো।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এ দিনে সাওম পালন
কর”। [232]
আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺃَﻫْﻞُ ﺧَﻴْﺒَﺮَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻳَﺘَّﺨِﺬُﻭﻧَﻪُ ﻋِﻴﺪًﺍ ﻭَﻳُﻠْﺒِﺴُﻮﻥَ ﻧِﺴَﺎﺀَﻫُﻢْ ﻓِﻴﻪِ ﺣُﻠِﻴَّﻬُﻢْ
ﻭَﺷَﺎﺭَﺗَﻬُﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: « ﻓَﺼُﻮﻣُﻮﻩُ ﺃَﻧْﺘُﻢْ »
“খায়বারের ইয়াহূদীরা ‘আশুরার দিন সাওম পালন
করত, তারা এ দিনকে ঈদরূপে বরণ করত এবং তারা
তাদের মহিলাদেরকে অলঙ্কার ও উত্তম পোশাকে
সুসজ্জিত করত। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এ দিনে
সাওম পালন কর”। [233]
‘উবায়দুল্লাহ ইবন আবু ইয়াযীদ রহ. থেকে বর্ণিত,
তিনি ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে
শুনেছেন,
« ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻِﻴَﺎﻡِ ﻳَﻮْﻡِ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻋَﻠِﻤْﺖُ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﺻَﺎﻡَ ﻳَﻮْﻣًﺎ ﻳَﻄْﻠُﺐُ ﻓَﻀْﻠَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺄَﻳَّﺎﻡِ ﺇِﻟَّﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻭَﻟَﺎ ﺷَﻬْﺮًﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺸَّﻬْﺮَ ﻳَﻌْﻨِﻲ
ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ».
“ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে ‘আশুরার
দিনে সাওম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার
পর তিনি বললেন, এ দিন ব্যতীত রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো দিনকে
অন্য দিনের তূলনায় উত্তম মনে করে সেদিনে সাওম
পালন করেছেন বলে আমার জানা নেই। অনুরূপভাবে
রমযান ব্যতীত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কোনো মাসকে অন্য মাসের তুলনায়
শ্রেষ্ঠ মনে করে সাওম পালন করেছেন বলেও আমার
জানা নেই।” [234]
হাকাম ইবন ‘আরাজ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺍﻧْﺘَﻬَﻴْﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﺘَﻮَﺳِّﺪٌ ﺭِﺩَﺍﺀَﻩُ ﻓِﻲ ﺯَﻣْﺰَﻡَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ:
ﺃَﺧْﺒِﺮْﻧِﻲ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﺫَﺍ ﺭَﺃَﻳْﺖَ ﻫِﻠَﺎﻝَ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡِ ﻓَﺎﻋْﺪُﺩْ، ﻭَﺃَﺻْﺒِﺢْ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊِ
ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺼُﻮﻣُﻪُ ﻗَﺎﻝَ: ﻧَﻌَﻢْ »
“আমি ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার কাছে
পৌঁছলাম। এ সময় তিনি যমযমের কাছে চাদর
বিছানো অবস্থায় বসা ছিলেন। তখন আমি তাঁকে
বললাম! আমাকে ‘আশুরা দিবসের সাওম পালন
সম্পর্কে সংবাদ দিন। উত্তরে তিনি
বললেন, মুহাররম মাসের চাঁদ দেখার পর তুমি এর
তারিখগুলো গুণে রাখবে। এরপর নবম তারিখে সাওম
অবস্থায় তোমার যেন ভোর হয়। তখন আমি তাঁকে
জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সেদিন সাওম পালন
করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, করেছেন”। [235]
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺣِﻴﻦَ ﺻَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﻭَﺃَﻣَﺮَ ﺑِﺼِﻴَﺎﻣِﻪِ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻧَّﻪُ ﻳَﻮْﻡٌ ﺗُﻌَﻈِّﻤُﻪُ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻُﻤْﻨَﺎ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊَ ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺄْﺕِ ﺍﻟْﻌَﺎﻡُ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞُ،
ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﻮُﻓِّﻲَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন ‘আশুরার দিন সাওম পালন করেন এবং
লোকদেরকে সাওম পালনের নির্দেশ দেন তখন
সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইয়াহূদী এবং
নাসারা এ দিনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে
থাকে। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইনশাআল্লাহ
আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও সাওম পালন
করব। বর্ণনাকারী বলেন, এখনো আগামী বছর আসে
নি, এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের মৃত্যু হয়ে যায়।” [236]
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ:
«ﻟَﺌِﻦْ ﺑَﻘِﻴﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﻗَﺎﺑِﻞٍ ﻟَﺄَﺻُﻮﻣَﻦَّ ﺍﻟﺘَّﺎﺳِﻊَ » ﻭَﻓِﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺃَﺑِﻲ ﺑَﻜْﺮٍ: ﻗَﺎﻝَ: ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ
‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি যদি আগামী বছর
বেচে থাকি তবে মুহাররমের নবম তারিখেও সাওম
পালন করব”। আবু বকর রহ. বলেন, নবম তারিখই হচ্ছে
‘আশুরার দিন।[237]
সালামা ইবন আকও‘য়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
« ﺑَﻌَﺚَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺳْﻠَﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ، ﻓَﺄَﻣَﺮَﻩُ ﺃَﻥْ ﻳُﺆَﺫِّﻥَ
ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ: « ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻢْ ﻳَﺼُﻢْ، ﻓَﻠْﻴَﺼُﻢْ ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﻛَﻞَ، ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ ﺻِﻴَﺎﻣَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিন আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তিকে
নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন লোকদের মধ্যে এ
কথা ঘোষণা করে যে যে সাওম পালন করেনি, সে
যেন সাওম পালন করে এবং যে আহার করেছে, সে
যেন রাত পর্যন্ত তার সাওম স্পর্শ করে”। [238]
রুবায়্যি‘ বিনত মু‘য়াওয়ায ইবন ‘আফরা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«ﺃَﺭْﺳَﻞَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻏَﺪَﺍﺓَ ﻋَﺎﺷُﻮﺭَﺍﺀَ ﺇِﻟَﻰ ﻗُﺮَﻯ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِ، ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺣَﻮْﻝَ
ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ: ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ ﺻَﻮْﻣَﻪُ، ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺻْﺒَﺢَ ﻣُﻔْﻄِﺮًﺍ، ﻓَﻠْﻴُﺘِﻢَّ ﺑَﻘِﻴَّﺔَ ﻳَﻮْﻣِﻪِ
ﻓَﻜُﻨَّﺎ، ﺑَﻌْﺪَ ﺫَﻟِﻚَ ﻧَﺼُﻮﻣُﻪُ، ﻭَﻧُﺼَﻮِّﻡُ ﺻِﺒْﻴَﺎﻧَﻨَﺎ ﺍﻟﺼِّﻐَﺎﺭَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠﻪُ، ﻭَﻧَﺬْﻫَﺐُ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ، ﻓَﻨَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠُّﻌْﺒَﺔَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌِﻬْﻦِ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻜَﻰ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻄَّﻌَﺎﻡِ ﺃَﻋْﻄَﻴْﻨَﺎﻫَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ
ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟْﺈِﻓْﻄَﺎﺭِ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
‘আশুরার দিন ভোরে এক ব্যক্তিকে মদীনার
পার্শবর্তী আনসারী সাহাবীদের জনপদে এ
নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন এ ঘোষণা করে
দেয় যে, সাওমরত অবস্থায় যার ভোর হয়েছে, সে
যেন তার দিনকে পূর্ণ করে। আর যার ইফতার অবস্থায়
ভোর হয়েছে, সে যেন তার দিনের অবশিষ্ট অংশ
পানাহার থেকে বিরত অবস্থায় পূর্ণ করে। এরপর
আমরা এ দিন সাওম পালন করতাম এবং আমাদের
ছোট ছোট সন্তানদেরকেও আল্লাহ চাহে তো সাওম
পালনে অভ্যস্ত করে তুলতাম। আমরা তাদেরকে
মসজিদে নিয়ে যেতাম এবং তাদের জন্য পশমের
খেলনা বানিয়ে দিতাম। যখন তারা খাওয়ার জন্য
কাঁদত, তখন আমরা তাদেরকে সে খেলনা প্রদান
করতাম। এমনি করে ইফতারের সময় হয়ে যেত।” [239]
সোমবার ও বৃহস্পতিবার সাওম পালন
আবু কাতাদা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু
থেকে বর্ণিত,
« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﺍﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻓِﻴﻪِ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻭَﻓِﻴﻪِ
ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻲَّ »
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
কাছে সোমবারের সাওম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলে তিনি বলেন, ঐ দিন আমার জন্ম হয়েছে এবং ঐ
দিন আমার ওপর (কুরআন) নাযিল হয়েছে”। [240]
‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺘَﺤَﺮَّﻯ ﺻَﻮْﻡَ ﺍﻻِﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟﺨَﻤِﻴﺲِ » .
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোম ও
বৃহস্পতিবারের সাওমের প্রতি খুবই খেয়াল
রাখতেন”। [241]
কেউ স্বাভাবিক সাওমের সাথে অন্য কিছু যেমন চুপ
থাকা ইত্যাদি মিশ্রিত করে
ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺑَﻴْﻨَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺨْﻄُﺐُ، ﺇِﺫَﺍ ﻫُﻮَ ﺑِﺮَﺟُﻞٍ ﻗَﺎﺋِﻢٍ، ﻓَﺴَﺄَﻝَ ﻋَﻨْﻪُ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﺃَﺑُﻮ
ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ، ﻧَﺬَﺭَ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮﻡَ ﻭَﻻَ ﻳَﻘْﻌُﺪَ، ﻭَﻻَ ﻳَﺴْﺘَﻈِﻞَّ، ﻭَﻻَ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢَ، ﻭَﻳَﺼُﻮﻡَ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﻣُﺮْﻩُ ﻓَﻠْﻴَﺘَﻜَﻠَّﻢْ ﻭَﻟْﻴَﺴْﺘَﻈِﻞَّ ﻭَﻟْﻴَﻘْﻌُﺪْ، ﻭَﻟْﻴُﺘِﻢَّ ﺻَﻮْﻣَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻮَﻫَّﺎﺏِ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ
ﺃَﻳُّﻮﺏُ، ﻋَﻦْ ﻋِﻜْﺮِﻣَﺔَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ »
“একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
খুতবা প্রদান করছিলেন। এক ব্যক্তিকে দাঁড়ানো
দেখে তার সম্পর্কে লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা
করলেন। লোকেরা বলল যে, এ লোকটির নাম আবু
ইসরাঈল। সে মানত করেছে যে, দাঁড়িয়ে
থাকবে, বসবে না, ছায়াতে যাবে না, কারও সঙ্গে
কথা বলবে না এবং সাওম পালন করবে। নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
লোকটিকে বলে দাও সে যেন কথা বলে, ছায়াতে
যায়, বসে এবং তার সাওম সমাপ্ত করে। ‘আব্দুল
ওয়াহহাব, আইউব ও ‘ইকরামা রহ. এর সূত্রে নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অত্র
হাদীস বর্ণনা করেছেন।” [242]
রমযানে ‘উমরা পালনের ফযীলত
ইবন‘ আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,
«ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﺤَﺞَّ ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻟِﺰَﻭْﺟِﻬَﺎ ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤَﻠِﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻋِﻨْﺪِﻱ ﻣَﺎ ﺃُﺣِﺠُّﻚِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ
ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤَﻠِﻚَ ﻓُﻠَﺎﻥٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺫَﺍﻙَ ﺣَﺒِﻴﺲٌ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ، ﻓَﺄَﺗَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺇِﻥَّ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗِﻲ ﺗَﻘْﺮَﺃُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺳَﺄَﻟَﺘْﻨِﻲ ﺍﻟْﺤَﺞَّ
ﻣَﻌَﻚَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ: ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﻣَﺎ ﻋِﻨْﺪِﻱ ﻣَﺎ ﺃُﺣِﺠُّﻚِ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﺃَﺣِﺠَّﻨِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤَﻠِﻚَ ﻓُﻠَﺎﻥٍ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ: ﺫَﺍﻙَ ﺣَﺒِﻴﺲٌ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺃَﻣَﺎ
ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﻮْ ﺃَﺣْﺠَﺠْﺘَﻬَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻭَﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺃَﻣَﺮَﺗْﻨِﻲ ﺃَﻥْ ﺃَﺳْﺄَﻟَﻚَ ﻣَﺎ ﻳَﻌْﺪِﻝُ ﺣَﺠَّﺔً
ﻣَﻌَﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ: ﺃَﻗْﺮِﺋْﻬَﺎ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺑَﺮَﻛَﺎﺗِﻪِ،
ﻭَﺃَﺧْﺒِﺮْﻫَﺎ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻌْﺪِﻝُ ﺣَﺠَّﺔً ﻣَﻌِﻲ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻋُﻤْﺮَﺓً ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
হজের (বিদায় হজ) ইচ্ছা পোষণ করলে জনৈকা
মহিলা (উম্মে মা‘কাল) তার
স্বামীকেবলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার নিকট এমন
কোনো উট নেই, যার দ্বারা আমি তোমাকে হজে
গমনের ব্যবস্থা করতে পারি।তখন সে স্ত্রীলোক
বলেন, আমাকে আপনার অমুক উটের দ্বারা হজে
প্রেরণের ব্যবস্থা করুন।জবাবে তিনি (স্বামী)
বললেন, এটা (উক্ত উট) তো
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য আবদ্ধ। তখন উক্ত
ব্যক্তি (স্বামী) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হয়ে বলেন,
আমার স্ত্রী আপনাকে সালাম বলেছেন। আর তিনি
আমার নিকট আপনার সাথে হজে যাওয়ার জন্য
বায়না ধরেছেন এবং বলেছেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হজে
গমনের ব্যবস্থা করে দিন। তখন আমি তাকে বলছি,
আমার নিকট এমন কিছু নেই, যার দ্বারা আমি
তোমাকে হজে পাঠাতে পারি। তখন সে বলেছে,
আমাকে আপনার অমুক উষ্ট্রযোগেহজে প্রেরণ করুন।
তখন আমি তাকে বলি, এ উট তো আল্লাহর রাস্তায়
জিহাদের জন্য আবদ্ধ অর্থাৎ নির্ধারিত।
এতদশ্রবণে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার পক্ষ থেকে তাকে
সালাম দেবে এবং বলবে, রমযানে উমরা পালন
আমার সাথে হজের সওয়াবের সমতুল্য হবে।” [243]
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﺄﻣﻮﻥ ﺍﻷﺯﻫﺮﻱ
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ﻣﺮﺍﺟﻌﺔ: ﺩ / ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺯﻛﺮﻳﺎ
উৎস: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ,
সৌদিআরব
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন